
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৩০ বা ৩১ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদ্্যাপিত হবে। এবার রোজা ২৯টি হবে এমনটা ধরে নিয়েই ৩০ মার্চ রোববার ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন নিউইয়র্কের বিভিন্ন মসজিদের ইমামগণ। ২৯ মার্চ চাঁদ দেখা গেলে ঈদ উদযাপিত হবে ৩০ মার্চ, আর ওইদিন চাঁদ দেখা না গেলে ঈদ হবে ৩১ মার্চ। সে ক্ষেত্রে রোজা হবে ৩০টি। ইতিমধ্যে অনেকেই কেনাকাটা সম্পন্ন করেছেন। শেষ মুহূর্তেও বিভিন্ন দোকানপাটে চলছে ঈদের কেনাকাটা। গ্রোসারিগুলোতে ঈদের দিনের খাবারের জন্য বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন জিনিস। যারা এখনো ঈদের কেনাকাটা করেননি, তারা কেনাকাটা করছেন। চাঁদরাতেও অনেকেই কেনাকাটা করবেন। তবে গত দুই বছরের তুলনায় এবার দোকানপাটগুলোতে ভিড় কম। একদিকে জিনিসপত্রের দাম বেশি, অন্যদিকে আইসের অভিযানের ভয়ে অনেক মানুষ বাইরে বের হচ্ছেন না। তা ছাড়া যাদের কাজকর্ম করার লিগ্যাল অথরাইজেশন নেই, তারা তেমন কাজ করতে পারছেন না। ফলে বিপুলসংখ্যক মানুষের তেমন আয় নেই। এদিকে ঈদের কেনাকাটা করার জন্য নিউইয়র্কে আসছেন পেনসিলভানিয়া, নিউজার্সি ও কানেক্টিকাটের কিছু মানুষ। তারা তাদের পছন্দের দোকান থেকে জিনিস কেনাকাটা করছেন। সেই সঙ্গে খাবারের জিনিসপত্রও কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে ঈদকে সামনে রেখে প্রবাস থেকে অনেকেই তাদের বাবা-মা এবং পরিবার-পরিজন যারা দেশে আছেন, তাদের জন্য অর্থ পাঠিয়েছেন। এখন অনেক মানুষ ফিতরা আদায় করছেন। কোনো কোনো পরিবার তাদের ফিতরার অর্থ দেশে পাঠিয়ে দিয়েছেন আবার কোনো কোনো মানুষ এখানেই ফিতরার অর্থ দিচ্ছেন। এখানে দান-সদকা ও ফিতরা-জাকাতের জন্য বক্স থাকে। সেসব বক্সে মানুষ দান করেন। ইতিমধ্যে একে অপরকে ঈদের জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। আমেরিকায় সাধারণত ঈদের দিনে একে অপরকে দাওয়াত করেন। কেউ কেউ আবার ঈদ করার জন্য আত্মীয়স্বজনের বাসায় চলে যান।
ঈদের প্রস্তুতির সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন মসজিদে চলছে ঈদ জামাতের প্রস্তুতি। নিউইয়র্ক ছাড়াও নিউজার্সি, কানেক্টিকাটসহ বিভিন্ন স্টেটে বাংলাদেশি ও বিভিন্ন দেশের মুসলমানরা বসবাস করেন। সেসব স্থানেও ঈদের প্রস্তুতি চলছে। দিন যত যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্টেট ও সিটিতে মসজিদের সংখ্যা বাড়ছে। নিউইয়র্ক সিটিতে মসজিদের সংখ্যা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। নিউইয়র্ক সিটির বিভিন্ন মসজিদ পরিচালনা পরিষদের নেতারা নিজ নিজ এলাকার মসজিদে ঈদ জামাতের ব্যবস্থা করছেন। যেসব মসজিদের উদ্যোগে ঈদের জামাত মসজিদের বাইরে, রাস্তায়, স্কুলের মাঠে অথবা খোলা স্থানে হবে, সেখানে তারা সিটি কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের কাছ থেকে অনুমতি নিচ্ছেন।
নিউইয়র্কের বিভিন্ন মসজিদের প্রধান ইমাম ও পরিচালনা পরিষদের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা সুষ্ঠুভাবে ঈদের জামাত সম্পন্ন করতে আগাম সব ব্যবস্থা নিচ্ছেন। ঈদ নামাজের জন্য পুলিশের অনুমতি নিচ্ছেন। তারা ঈদের নামাজে আসা মুসল্লিদের অজু করে জায়নামাজ সঙ্গে নিয়ে আসার অনুরোধ জানিয়েছেন। কারণ যেসব মসজিদে ঈদের জামাত স্কুলের মাঠ কিংবা খোলা রাস্তায় অনুষ্ঠিত হবে, সেখানে মসজিদের পক্ষ থেকে নামাজের জন্য কেবল পলিথিন বিছানো হবে, কার্পেট বিছানো হবে না। ফলে মুসল্লিরা যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে নামাজ পড়তে পারেন, সে জন্যই জায়নামাজ নিয়ে আসার জন্য বলা হয়েছে।
কোথায়, কখন ঈদের জামাত : জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের (জেএমসি) উদ্যোগে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে জ্যামাইকার টমাস এডিসন হাইস্কুলের মাঠে। প্রতিবছরের মতো এবারও সেখানে একটি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হতে পারে সকাল ১০টায়। ইতিমধ্যে সেখানে ঈদের নামাজের ব্যবস্থা করার জন্য কর্তৃপক্ষ অনুমোদনও পেয়েছে। জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের পরিচালনা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আফতাব উদ্দিন মান্নান বলেন, এখন আবহাওয়া ভালো। রোদ আছে। তবে বৃষ্টির সম্ভাবনা দেখছি সেদিন। ৩০ মার্চ ঈদ হতে পারে। আমরা ৩০ মার্চ ঈদ হবে বলে আশা করছি। ঈদ ৩০ মার্চ হোক আর ৩১ মার্চ হোক, আমরা সব সময়ের জন্য প্রস্তুত। এ জন্য আমরা টমাস এডিসনের মাঠেই ঈদের জামাতের আয়োজন করছি। যারা নামাজ পড়তে আসবেন, তারা স্বাভাবিক সময়ের মতোই আসতে পারবেন। আমরা আশা করছি, অত্যন্ত সুন্দর পরিবেশে জামাতের আয়োজন করতে পারব।
তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করছি, এবারের ঈদের নামাজে ১০ হাজারের বেশি মুসল্লি উপস্থিত থাকবেন। যদি বৃষ্টি হয়, তাহলে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে মসজিদে। সে ক্ষেত্রে তিন থেকে চারটি জামাত অনুষ্ঠিত হতে পারে। জামাতগুলো হবে সকাল ৮টা, ৯টা ও ১০টায়। একটি অতিরিক্ত জামাতের ব্যবস্থা করা হবে, তা হবে ১১টায়। এখানে পুরুষের পাশাপাশি নারী ও শিশুদের জন্যও নামাজের ব্যবস্থা থাকবে। আর মাঠে নামাজ হলে সেখানেও নারী, পুরুষ ও শিশু সবার জন্য ঈদের নামাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এস্টোরিয়ার আল আমিন জামে মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টারে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। মসজিদ পরিচালনা পরিষদের সূত্রে জানা গেছে, গতবারের মতো এবারও এস্টোরিয়ার ৩৬ স্ট্রিটে ঈদের নামাজের জামাত সকাল সাড়ে আটটায় অনুষ্ঠিত হবে। আবহাওয়া খারাপ হলে মসজিদের ভেতরে কমপক্ষে তিনটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত সকাল সাতটায়, দ্বিতীয় জামাত সকাল আটটায় এবং তৃতীয় জামাত সকাল নয়টায় হবে। মহিলাদের জন্য আলাদা নামাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তৃতীয় জামাতে মহিলারা অংশগ্রহণ করতে পারবেন। যারা নামাজ পড়তে যাবেন, তারা সঙ্গে জায়নামাজ নিয়ে যাবেন। তারা আশা করছেন, খোলা স্থানেই ঈদের নামাজের ব্যবস্থা করতে পারবেন।
আল আরাফা ইসলামিক সেন্টারের উদ্যোগের জ্যামাইকায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। তাদের নতুন মসজিদে বিপুলসংখ্যক মানুষ অংশ নেবেন বলে আশা করছেন এর পরিচালনা পরিষদের নেতারা। জানা গেছে, গত বছরের মতো এবারও মসজিদ ও এর বাইরে খোলা জায়গায় সকালে জামাত হবে একটি। এ জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তবে বৃষ্টি হলে মসজিদে ঈদের নামাজের ব্যবস্থা করার প্রস্তুতি রয়েছে। সে ক্ষেত্রে একাধিক জামাত অনুষ্ঠিত হতে পারে। বৃষ্টি হলে মসজিদে প্রথম জামাত সকাল সাতটায়, দ্বিতীয় জামাত সকাল আটটায়, তৃতীয় জামাত সকাল নয়টায় এবং চতুর্থ জামাত সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হতে পারে। ঈদের আগের রাতে তারা মসজিদে এ বিষয়ে ঘোষণাও দেবেন। সেখানে জামাতে আসা শিশুদের জন্য থাকবে কটন ক্যান্ডি ও বেলুন।
জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায় নিউইয়র্ক ঈদগাহর উদ্যোগে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে পাঁচটি। প্রতি এক ঘণ্টা পরপর ঈদের জামাত হবে। প্রথম জামাত সকাল সাতটায়। এরপর আটটা, নয়টা, দশটা ও এগারোটায় শেষ জামাত হবে। বৃষ্টি হলে কাবাব কিংয়ের দোতলায় ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে পরপর পাঁচটি জামাতের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান মাওলানা কাজী কাইয়্যূম। তিনি বলেন, আমরা প্রতিবছর ডাইভারসিটি প্লাজায় ঈদের নামাজের ব্যবস্থা করে থাকি। এবারও করছি। নামাজের জন্য ইতিমধ্যে অনুমতিও নেওয়া হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, আবহাওয়া ভালো থাকবে। সেই হিসেবে ডাইভারসিটি প্লাজায়ই নামাজ হবে। ঈদের নামাজে অংশ নিতে কমিউনিটির সবাইকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, উম্মুল কুরার ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ঈদ হবে আগামী ৩০ মার্চ। ধারণা করছি, এবার রোজা ২৯টি হবে। তিনি বলেন, এখনো যারা জাকাত ও ফিতরার অর্থ দেননি, তারা যেন দ্রুত দিয়ে দেন। কারণ এটি আগেভাগে পেলে ডিস্ট্রিবিউশন করতে সুবিধা হয়। কেউ যদি মনে করেন, এই খাতে দেওয়া অর্থের জন্য তিনি ট্যাক্স ক্রেডিট নেবেন, তাহলে তারা অবশ্যই একটি নন-প্রফিট সংস্থার অর্গানাইজেশনে দান করবেন। তবে এতিম ও দরিদ্রদের এই অর্থ দেওয়া উত্তম। খেয়াল রাখতে হবে, জাকাত ও ফিতরার অর্থ যেন কোনো বিশেষ গোষ্ঠীর হাতে না যায়। আর অর্থদানের মানি রিসিপ্ট নিতে হবে, তাহলে প্রমাণ থাকবে।
দারুস সালাম মসজিদে ঈদের চারটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। সেখানকার মাওলানা আব্দুল মুকিত জানান, ঈদের দিনে প্রথম জামাত হবে সকাল সাড়ে সাতটায়। দ্বিতীয় জামাত সাড়ে আটটায়, তৃতীয় জামাত সকাল সাড়ে নয়টায় ও শেষ ও চতুর্থ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে দশটায়। সবাইকে ওজু করে আসার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। দারুস সালামের মাধ্যমে যারা ফিতরার অর্থ প্রদান করতে চান, তারা ফিতরার অর্থ দিতে পারবেন। জাকাত ও সদকার অর্থও দিতে পারবেন। এবারের ফিতরা সর্বনিম্ম ১৫ ডলার। প্রথম জামাত ছাড়া অন্য সব জামাতে মহিলাদের নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে।
ওজনপার্কের আল ফুরকান মসজিদে ঈদের নামাজের ব্যবস্থা করা হবে ৭৭ অ্যান্ড গ্ল্যানেমার অ্যাভিনিউ, ওজনপার্কে। এখানে দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। সেখানকার পরিচালনা পরিষদের নেতা বদরুল হোসেন খান বলেন, একেকটি জামাতে আশা করছি দেড় হাজার থেকে দুই হাজার মানুষ অংশ নেবেন। প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল আটটায় আর দ্বিতীয় জামাত হবে নয়টায়। পাশাপাশি বৃষ্টি হলে মসজিদে নামাজের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বৃষ্টি হলে চারটি জামাত হবে। আমরা সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি, সেই সঙ্গে নামাজে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।
ফুলতলী জামে মসজিদেও ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। তারা প্রতিবছর খোলা মাঠে নামাজের ব্যবস্থা করে। এবারও একই রকম হবে। তবে শীত বেশি ও বৃষ্টি হলে মসজিদের ভেতরে ঈদ জামাত হতে পারে।
আল কুবা ইসলামিক সেন্টার অব জ্যামাইকার উদ্যোগে সাউথ জ্যামাইকার পিএস ৫০ স্কুলের মাঠে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে প্রায় দেড় হাজার মানুষের নামাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানে এবার ষষ্ঠবারের মতো জামাত অনুষ্ঠিত হবে। বৃষ্টি হলে ঈদের জামাত হবে তিনটি। এর সঙ্গে সম্পৃক্ত কমিউনিটি লিডার এবং কমিউনিটি বোর্ড ১২ এর এরিয়া চেয়ার ও বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী বলেন, এবার ষষ্ঠবারের মতো এখানে ঈদের নামাজের ব্যবস্থা করছি। আশা করছি, কমপক্ষে দেড় হাজার মানুষ জামাতে উপস্থিত হয়ে নামাজ পড়বেন। গত ঈদে এখানে এক হাজারের বেশি মানুষ জামাতে অংশ নেন। এবারও আশা করছি তেমনই হবে অথবা এর চেয়ে বেশি মানুষ ঈদের জামাতে অংশ নেবেন। বাইরে নামাজ হলে তা হবে সকাল আটটায়। আর বৃষ্টি হলে জামাত হবে তিনটি। সকাল সাড়ে সাতটায় একটি। দ্বিতীয় জামাত সাড়ে আটটায়, সাড়ে নয়টায় তৃতীয় নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। আমরা সাউথ জ্যামাইকার সব মুসলিমকে নামাজে অংশগ্রহণ করার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।
ইস্ট এলমহার্স্টে ইস্ট এলমহার্স্ট জামে মসজিদ অ্যান্ড মুসলিম সেন্টারের উদ্যোগে পিএস ১২৭ এর মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। একটি জামাত হলে সেটি মাঠে হবে সকাল নয়টায়। আর বৃষ্টি হলে প্রস্তুতি হিসেবে মসজিদের ভেতরে দুটি জামাতের ব্যবস্থা করা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে প্রথম জামাত সকাল আটটায় আর দ্বিতীয় জামাত সকাল নয়টায় অনুষ্ঠিত হবে। আয়োজকেরা বড় পরিসরে ঈদের নামাজের আয়োজন করছেন। আশা করছেন, এখানকার স্থানীয় মানুষের পাশাপাশি আশপাশের এলাকা থেকেও মুসল্লিরা ঈদের নামাজে শরিক হবেন। সেখানকার পরিচালনা পরিষদের সভাপতি আব লেইস বলেন, আমরা ঈদের নামাজের জন্য খোলা মাঠে যেমন ব্যবস্থা রেখেছি, মসজিদের ভেতরেও প্রস্তুতি রেখেছি। আশা করছি, আমাদের এলাকার মুসলিম মানুষেরা আসবেন ও জামাতে শরিক হবেন।
ওজনপার্কের বড় জামাত অনুষ্ঠিত হবে আল আমান মসজিদে। সেখানেও বিপুলসংখ্যক মানুষ জামাতে অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ব্রুকলিনে বায়তুল জান্না জামে মসজিদ অ্যান্ড মুসলিম কমিউনিটি সেন্টারের উদ্যোগে ব্রুকলিনের ৫৬৯ মাকডোনাল্ড অ্যাভিনিউ চার্চ অ্যাভিনিউ সিতে খোলা রাস্তায় ঈদের নামাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বৃষ্টি না হলে সেখানে ঈদের জামাত হবে একটি। এটি হতে পারে সকাল নয়টায়। বৃষ্টি হলে ঈদের জামাত হবে পরপর পাঁচটি। প্রতি আধঘণ্টা পরপর ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান সেখানকার পরিচালনা পরিষদের নেতা মো. দিদারুল আলম। তিনি বলেন, আমরা প্রতিবছরই এখানে নামাজের ব্যবস্থা করি। পাঁচ থেকে ছয় হাজার মানুষ ঈদের নামাজে শরিক হবেন বলে আশা করছি। আমরা প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছি। সাড়ে ছয়টায় প্রথম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এরপর বাকি চারটি জামাত আধঘণ্টা পরপর হবে।
ব্রঙ্কসে বায়তুল ইসলাম মসজিদ অ্যান্ড কমিউনিটি সেন্টারের উদ্যোগে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে দুটি। মসজিদের ভেতরেই এই জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত হবে সকাল সাড়ে সাতটায় আর দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে আটটায়। এটি ২১০৭ ডেভিডসন অ্যাভিনিউতে অবস্থিত। এই তথ্য জানিয়েছেন সেখানকার ইমাম মাওলানা মাহবুবুর রহমান।
দারুল উলুম নিউইয়র্কের উদ্যোগে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। সেখানকার পরিচালনা পরিষদের সভাপতি জানান, আমরা এবার ঈদ জামাতের ব্যবস্থা করেছি একটি। সকাল সাড়ে সাতটায় এই জামাত অনুষ্ঠিত হবে। আমরা সৌদি আরবের সাথে মিলিয়ে নয়, স্থানীয় এলাকার চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ঈদ জামাতের আয়োজন করি। যদি এখানে চাঁদ দেখা যায় ২৯ মার্চ তাহলে ৩০ মার্চ ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। আর যদি ৩০ মার্চ চাঁদ দেখা যায়, তাহলে ঈদ উদযাপিত হবে ৩১ মার্চ। ১৫০-১০ হিলসাইড অ্যাভিনিউতে এই মসজিদের অবস্থান।
আমেরিকান ইসলামিক সেন্টারের উদ্যোগে মোট পাঁচটি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে প্রথম জামাত সকাল সাতটায় ও দ্বিতীয় জামাত সকাল আটটায় অনুষ্ঠিত হবে মসজিদের ভেতরে। আর তৃতীয় জামাত সকাল নয়টা, চতুর্থ জামাত সকাল ১০টায় এবং পঞ্চম জামাত বেলা এগারোটায় পার্কে অনুষ্ঠিত হবে। বৃষ্টি হলে ও শীত বেশি থাকলে সবগুলো জামাত অনুষ্ঠিত হবে মসজিদের ভেতরে।
ব্রঙ্কসে বাংলাবাজার জামে মসজিদের উদ্যোগে বৃষ্টি ও শীত বেশি না হলে খোলা আকাশের নিচে ঈদুল ফিতরের বিশাল জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এটি হতে পারে পিএস ১০৬ স্কুলের প্লে গ্রাউন্ডে। বৃষ্টি হলে মসজিদে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। যারা নামাজ পড়তে আসবেন, তাদের জায়নামাজ নিয়ে আসতে হবে। মহিলাদের জন্য ঈদের জামাতের ব্যবস্থা রয়েছে।
রিয়াজুল জান্নাহ ইসলামিক সেন্টার ইনকের উদ্যোগে বৃষ্টি না হলে ও শীত বেশি না হলে জ্যামাইকার মারকোনি পার্কের পিএস-৪৮-এ ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হতে পারে। এটি ১৫৭ স্ট্রিট এবং ১০৮ অ্যাভিনিউ। সকল মুসলমানকে নামাজ আদায় করার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। জানা গেছে, নামাজে মুসল্লিদের নিজস্ব জায়নামাজ নিয়ে যেতে হবে। যদি কারও চেয়ার লাগে, তাকে চেয়ার নিয়ে যেতে হবে। চাঁদ রাতে তারা নামাজের চূড়ান্ত সময়সূচি ও স্থান বলে দেবেন। ৩০ মার্চ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
মসজিদ আবু হুরায়রা ইসলামিক সেন্টার অব জ্যাকসন হাইটস ইনকের উদ্যোগে ঈদের বিশাল জামাত অনুষ্ঠিত হবে মসজিদের সামনে। একটি ঈদের জামাত হতে পারে সকাল নয়টায়। মহিলাদের জন্য নামাজের সুব্যবস্থা আছে। প্রতিকূল আবহাওয়ার ক্ষেত্রে মসজিদের ভেতরে তিনটি জামাত অনুষ্ঠিত হতে পারে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় জামাতে মহিলাদের জন্য নামাজের ব্যবস্থা থাকবে। এখানে অজু করে জায়নামাজ সাথে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে। গাড়ি পার্কিংয়ের নিয়মও অনুসরণ করতে হবে।
এদিকে ঈদকে সামনে রেখে প্রবাস থেকে অনেকেই তাদের বাবা-মা এবং পরিবার-পরিজন যারা দেশে আছেন, তাদের জন্য অর্থ পাঠিয়েছেন। এখন অনেক মানুষ ফিতরা আদায় করছেন। কোনো কোনো পরিবার তাদের ফিতরার অর্থ দেশে পাঠিয়ে দিয়েছেন আবার কোনো কোনো মানুষ এখানেই ফিতরার অর্থ দিচ্ছেন। এখানে দান-সদকা ও ফিতরা-জাকাতের জন্য বক্স থাকে। সেসব বক্সে মানুষ দান করেন। ইতিমধ্যে একে অপরকে ঈদের জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। আমেরিকায় সাধারণত ঈদের দিনে একে অপরকে দাওয়াত করেন। কেউ কেউ আবার ঈদ করার জন্য আত্মীয়স্বজনের বাসায় চলে যান।
ঈদের প্রস্তুতির সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন মসজিদে চলছে ঈদ জামাতের প্রস্তুতি। নিউইয়র্ক ছাড়াও নিউজার্সি, কানেক্টিকাটসহ বিভিন্ন স্টেটে বাংলাদেশি ও বিভিন্ন দেশের মুসলমানরা বসবাস করেন। সেসব স্থানেও ঈদের প্রস্তুতি চলছে। দিন যত যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্টেট ও সিটিতে মসজিদের সংখ্যা বাড়ছে। নিউইয়র্ক সিটিতে মসজিদের সংখ্যা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। নিউইয়র্ক সিটির বিভিন্ন মসজিদ পরিচালনা পরিষদের নেতারা নিজ নিজ এলাকার মসজিদে ঈদ জামাতের ব্যবস্থা করছেন। যেসব মসজিদের উদ্যোগে ঈদের জামাত মসজিদের বাইরে, রাস্তায়, স্কুলের মাঠে অথবা খোলা স্থানে হবে, সেখানে তারা সিটি কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের কাছ থেকে অনুমতি নিচ্ছেন।
নিউইয়র্কের বিভিন্ন মসজিদের প্রধান ইমাম ও পরিচালনা পরিষদের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা সুষ্ঠুভাবে ঈদের জামাত সম্পন্ন করতে আগাম সব ব্যবস্থা নিচ্ছেন। ঈদ নামাজের জন্য পুলিশের অনুমতি নিচ্ছেন। তারা ঈদের নামাজে আসা মুসল্লিদের অজু করে জায়নামাজ সঙ্গে নিয়ে আসার অনুরোধ জানিয়েছেন। কারণ যেসব মসজিদে ঈদের জামাত স্কুলের মাঠ কিংবা খোলা রাস্তায় অনুষ্ঠিত হবে, সেখানে মসজিদের পক্ষ থেকে নামাজের জন্য কেবল পলিথিন বিছানো হবে, কার্পেট বিছানো হবে না। ফলে মুসল্লিরা যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে নামাজ পড়তে পারেন, সে জন্যই জায়নামাজ নিয়ে আসার জন্য বলা হয়েছে।
কোথায়, কখন ঈদের জামাত : জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের (জেএমসি) উদ্যোগে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে জ্যামাইকার টমাস এডিসন হাইস্কুলের মাঠে। প্রতিবছরের মতো এবারও সেখানে একটি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হতে পারে সকাল ১০টায়। ইতিমধ্যে সেখানে ঈদের নামাজের ব্যবস্থা করার জন্য কর্তৃপক্ষ অনুমোদনও পেয়েছে। জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের পরিচালনা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আফতাব উদ্দিন মান্নান বলেন, এখন আবহাওয়া ভালো। রোদ আছে। তবে বৃষ্টির সম্ভাবনা দেখছি সেদিন। ৩০ মার্চ ঈদ হতে পারে। আমরা ৩০ মার্চ ঈদ হবে বলে আশা করছি। ঈদ ৩০ মার্চ হোক আর ৩১ মার্চ হোক, আমরা সব সময়ের জন্য প্রস্তুত। এ জন্য আমরা টমাস এডিসনের মাঠেই ঈদের জামাতের আয়োজন করছি। যারা নামাজ পড়তে আসবেন, তারা স্বাভাবিক সময়ের মতোই আসতে পারবেন। আমরা আশা করছি, অত্যন্ত সুন্দর পরিবেশে জামাতের আয়োজন করতে পারব।
তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করছি, এবারের ঈদের নামাজে ১০ হাজারের বেশি মুসল্লি উপস্থিত থাকবেন। যদি বৃষ্টি হয়, তাহলে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে মসজিদে। সে ক্ষেত্রে তিন থেকে চারটি জামাত অনুষ্ঠিত হতে পারে। জামাতগুলো হবে সকাল ৮টা, ৯টা ও ১০টায়। একটি অতিরিক্ত জামাতের ব্যবস্থা করা হবে, তা হবে ১১টায়। এখানে পুরুষের পাশাপাশি নারী ও শিশুদের জন্যও নামাজের ব্যবস্থা থাকবে। আর মাঠে নামাজ হলে সেখানেও নারী, পুরুষ ও শিশু সবার জন্য ঈদের নামাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এস্টোরিয়ার আল আমিন জামে মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টারে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। মসজিদ পরিচালনা পরিষদের সূত্রে জানা গেছে, গতবারের মতো এবারও এস্টোরিয়ার ৩৬ স্ট্রিটে ঈদের নামাজের জামাত সকাল সাড়ে আটটায় অনুষ্ঠিত হবে। আবহাওয়া খারাপ হলে মসজিদের ভেতরে কমপক্ষে তিনটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত সকাল সাতটায়, দ্বিতীয় জামাত সকাল আটটায় এবং তৃতীয় জামাত সকাল নয়টায় হবে। মহিলাদের জন্য আলাদা নামাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তৃতীয় জামাতে মহিলারা অংশগ্রহণ করতে পারবেন। যারা নামাজ পড়তে যাবেন, তারা সঙ্গে জায়নামাজ নিয়ে যাবেন। তারা আশা করছেন, খোলা স্থানেই ঈদের নামাজের ব্যবস্থা করতে পারবেন।
আল আরাফা ইসলামিক সেন্টারের উদ্যোগের জ্যামাইকায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। তাদের নতুন মসজিদে বিপুলসংখ্যক মানুষ অংশ নেবেন বলে আশা করছেন এর পরিচালনা পরিষদের নেতারা। জানা গেছে, গত বছরের মতো এবারও মসজিদ ও এর বাইরে খোলা জায়গায় সকালে জামাত হবে একটি। এ জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তবে বৃষ্টি হলে মসজিদে ঈদের নামাজের ব্যবস্থা করার প্রস্তুতি রয়েছে। সে ক্ষেত্রে একাধিক জামাত অনুষ্ঠিত হতে পারে। বৃষ্টি হলে মসজিদে প্রথম জামাত সকাল সাতটায়, দ্বিতীয় জামাত সকাল আটটায়, তৃতীয় জামাত সকাল নয়টায় এবং চতুর্থ জামাত সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হতে পারে। ঈদের আগের রাতে তারা মসজিদে এ বিষয়ে ঘোষণাও দেবেন। সেখানে জামাতে আসা শিশুদের জন্য থাকবে কটন ক্যান্ডি ও বেলুন।
জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায় নিউইয়র্ক ঈদগাহর উদ্যোগে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে পাঁচটি। প্রতি এক ঘণ্টা পরপর ঈদের জামাত হবে। প্রথম জামাত সকাল সাতটায়। এরপর আটটা, নয়টা, দশটা ও এগারোটায় শেষ জামাত হবে। বৃষ্টি হলে কাবাব কিংয়ের দোতলায় ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে পরপর পাঁচটি জামাতের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান মাওলানা কাজী কাইয়্যূম। তিনি বলেন, আমরা প্রতিবছর ডাইভারসিটি প্লাজায় ঈদের নামাজের ব্যবস্থা করে থাকি। এবারও করছি। নামাজের জন্য ইতিমধ্যে অনুমতিও নেওয়া হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, আবহাওয়া ভালো থাকবে। সেই হিসেবে ডাইভারসিটি প্লাজায়ই নামাজ হবে। ঈদের নামাজে অংশ নিতে কমিউনিটির সবাইকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, উম্মুল কুরার ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ঈদ হবে আগামী ৩০ মার্চ। ধারণা করছি, এবার রোজা ২৯টি হবে। তিনি বলেন, এখনো যারা জাকাত ও ফিতরার অর্থ দেননি, তারা যেন দ্রুত দিয়ে দেন। কারণ এটি আগেভাগে পেলে ডিস্ট্রিবিউশন করতে সুবিধা হয়। কেউ যদি মনে করেন, এই খাতে দেওয়া অর্থের জন্য তিনি ট্যাক্স ক্রেডিট নেবেন, তাহলে তারা অবশ্যই একটি নন-প্রফিট সংস্থার অর্গানাইজেশনে দান করবেন। তবে এতিম ও দরিদ্রদের এই অর্থ দেওয়া উত্তম। খেয়াল রাখতে হবে, জাকাত ও ফিতরার অর্থ যেন কোনো বিশেষ গোষ্ঠীর হাতে না যায়। আর অর্থদানের মানি রিসিপ্ট নিতে হবে, তাহলে প্রমাণ থাকবে।
দারুস সালাম মসজিদে ঈদের চারটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। সেখানকার মাওলানা আব্দুল মুকিত জানান, ঈদের দিনে প্রথম জামাত হবে সকাল সাড়ে সাতটায়। দ্বিতীয় জামাত সাড়ে আটটায়, তৃতীয় জামাত সকাল সাড়ে নয়টায় ও শেষ ও চতুর্থ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে দশটায়। সবাইকে ওজু করে আসার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। দারুস সালামের মাধ্যমে যারা ফিতরার অর্থ প্রদান করতে চান, তারা ফিতরার অর্থ দিতে পারবেন। জাকাত ও সদকার অর্থও দিতে পারবেন। এবারের ফিতরা সর্বনিম্ম ১৫ ডলার। প্রথম জামাত ছাড়া অন্য সব জামাতে মহিলাদের নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে।
ওজনপার্কের আল ফুরকান মসজিদে ঈদের নামাজের ব্যবস্থা করা হবে ৭৭ অ্যান্ড গ্ল্যানেমার অ্যাভিনিউ, ওজনপার্কে। এখানে দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। সেখানকার পরিচালনা পরিষদের নেতা বদরুল হোসেন খান বলেন, একেকটি জামাতে আশা করছি দেড় হাজার থেকে দুই হাজার মানুষ অংশ নেবেন। প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল আটটায় আর দ্বিতীয় জামাত হবে নয়টায়। পাশাপাশি বৃষ্টি হলে মসজিদে নামাজের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বৃষ্টি হলে চারটি জামাত হবে। আমরা সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি, সেই সঙ্গে নামাজে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।
ফুলতলী জামে মসজিদেও ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। তারা প্রতিবছর খোলা মাঠে নামাজের ব্যবস্থা করে। এবারও একই রকম হবে। তবে শীত বেশি ও বৃষ্টি হলে মসজিদের ভেতরে ঈদ জামাত হতে পারে।
আল কুবা ইসলামিক সেন্টার অব জ্যামাইকার উদ্যোগে সাউথ জ্যামাইকার পিএস ৫০ স্কুলের মাঠে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে প্রায় দেড় হাজার মানুষের নামাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানে এবার ষষ্ঠবারের মতো জামাত অনুষ্ঠিত হবে। বৃষ্টি হলে ঈদের জামাত হবে তিনটি। এর সঙ্গে সম্পৃক্ত কমিউনিটি লিডার এবং কমিউনিটি বোর্ড ১২ এর এরিয়া চেয়ার ও বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী বলেন, এবার ষষ্ঠবারের মতো এখানে ঈদের নামাজের ব্যবস্থা করছি। আশা করছি, কমপক্ষে দেড় হাজার মানুষ জামাতে উপস্থিত হয়ে নামাজ পড়বেন। গত ঈদে এখানে এক হাজারের বেশি মানুষ জামাতে অংশ নেন। এবারও আশা করছি তেমনই হবে অথবা এর চেয়ে বেশি মানুষ ঈদের জামাতে অংশ নেবেন। বাইরে নামাজ হলে তা হবে সকাল আটটায়। আর বৃষ্টি হলে জামাত হবে তিনটি। সকাল সাড়ে সাতটায় একটি। দ্বিতীয় জামাত সাড়ে আটটায়, সাড়ে নয়টায় তৃতীয় নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। আমরা সাউথ জ্যামাইকার সব মুসলিমকে নামাজে অংশগ্রহণ করার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।
ইস্ট এলমহার্স্টে ইস্ট এলমহার্স্ট জামে মসজিদ অ্যান্ড মুসলিম সেন্টারের উদ্যোগে পিএস ১২৭ এর মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। একটি জামাত হলে সেটি মাঠে হবে সকাল নয়টায়। আর বৃষ্টি হলে প্রস্তুতি হিসেবে মসজিদের ভেতরে দুটি জামাতের ব্যবস্থা করা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে প্রথম জামাত সকাল আটটায় আর দ্বিতীয় জামাত সকাল নয়টায় অনুষ্ঠিত হবে। আয়োজকেরা বড় পরিসরে ঈদের নামাজের আয়োজন করছেন। আশা করছেন, এখানকার স্থানীয় মানুষের পাশাপাশি আশপাশের এলাকা থেকেও মুসল্লিরা ঈদের নামাজে শরিক হবেন। সেখানকার পরিচালনা পরিষদের সভাপতি আব লেইস বলেন, আমরা ঈদের নামাজের জন্য খোলা মাঠে যেমন ব্যবস্থা রেখেছি, মসজিদের ভেতরেও প্রস্তুতি রেখেছি। আশা করছি, আমাদের এলাকার মুসলিম মানুষেরা আসবেন ও জামাতে শরিক হবেন।
ওজনপার্কের বড় জামাত অনুষ্ঠিত হবে আল আমান মসজিদে। সেখানেও বিপুলসংখ্যক মানুষ জামাতে অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ব্রুকলিনে বায়তুল জান্না জামে মসজিদ অ্যান্ড মুসলিম কমিউনিটি সেন্টারের উদ্যোগে ব্রুকলিনের ৫৬৯ মাকডোনাল্ড অ্যাভিনিউ চার্চ অ্যাভিনিউ সিতে খোলা রাস্তায় ঈদের নামাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বৃষ্টি না হলে সেখানে ঈদের জামাত হবে একটি। এটি হতে পারে সকাল নয়টায়। বৃষ্টি হলে ঈদের জামাত হবে পরপর পাঁচটি। প্রতি আধঘণ্টা পরপর ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান সেখানকার পরিচালনা পরিষদের নেতা মো. দিদারুল আলম। তিনি বলেন, আমরা প্রতিবছরই এখানে নামাজের ব্যবস্থা করি। পাঁচ থেকে ছয় হাজার মানুষ ঈদের নামাজে শরিক হবেন বলে আশা করছি। আমরা প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছি। সাড়ে ছয়টায় প্রথম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এরপর বাকি চারটি জামাত আধঘণ্টা পরপর হবে।
ব্রঙ্কসে বায়তুল ইসলাম মসজিদ অ্যান্ড কমিউনিটি সেন্টারের উদ্যোগে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে দুটি। মসজিদের ভেতরেই এই জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত হবে সকাল সাড়ে সাতটায় আর দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে আটটায়। এটি ২১০৭ ডেভিডসন অ্যাভিনিউতে অবস্থিত। এই তথ্য জানিয়েছেন সেখানকার ইমাম মাওলানা মাহবুবুর রহমান।
দারুল উলুম নিউইয়র্কের উদ্যোগে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। সেখানকার পরিচালনা পরিষদের সভাপতি জানান, আমরা এবার ঈদ জামাতের ব্যবস্থা করেছি একটি। সকাল সাড়ে সাতটায় এই জামাত অনুষ্ঠিত হবে। আমরা সৌদি আরবের সাথে মিলিয়ে নয়, স্থানীয় এলাকার চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ঈদ জামাতের আয়োজন করি। যদি এখানে চাঁদ দেখা যায় ২৯ মার্চ তাহলে ৩০ মার্চ ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। আর যদি ৩০ মার্চ চাঁদ দেখা যায়, তাহলে ঈদ উদযাপিত হবে ৩১ মার্চ। ১৫০-১০ হিলসাইড অ্যাভিনিউতে এই মসজিদের অবস্থান।
আমেরিকান ইসলামিক সেন্টারের উদ্যোগে মোট পাঁচটি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে প্রথম জামাত সকাল সাতটায় ও দ্বিতীয় জামাত সকাল আটটায় অনুষ্ঠিত হবে মসজিদের ভেতরে। আর তৃতীয় জামাত সকাল নয়টা, চতুর্থ জামাত সকাল ১০টায় এবং পঞ্চম জামাত বেলা এগারোটায় পার্কে অনুষ্ঠিত হবে। বৃষ্টি হলে ও শীত বেশি থাকলে সবগুলো জামাত অনুষ্ঠিত হবে মসজিদের ভেতরে।
ব্রঙ্কসে বাংলাবাজার জামে মসজিদের উদ্যোগে বৃষ্টি ও শীত বেশি না হলে খোলা আকাশের নিচে ঈদুল ফিতরের বিশাল জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এটি হতে পারে পিএস ১০৬ স্কুলের প্লে গ্রাউন্ডে। বৃষ্টি হলে মসজিদে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। যারা নামাজ পড়তে আসবেন, তাদের জায়নামাজ নিয়ে আসতে হবে। মহিলাদের জন্য ঈদের জামাতের ব্যবস্থা রয়েছে।
রিয়াজুল জান্নাহ ইসলামিক সেন্টার ইনকের উদ্যোগে বৃষ্টি না হলে ও শীত বেশি না হলে জ্যামাইকার মারকোনি পার্কের পিএস-৪৮-এ ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হতে পারে। এটি ১৫৭ স্ট্রিট এবং ১০৮ অ্যাভিনিউ। সকল মুসলমানকে নামাজ আদায় করার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। জানা গেছে, নামাজে মুসল্লিদের নিজস্ব জায়নামাজ নিয়ে যেতে হবে। যদি কারও চেয়ার লাগে, তাকে চেয়ার নিয়ে যেতে হবে। চাঁদ রাতে তারা নামাজের চূড়ান্ত সময়সূচি ও স্থান বলে দেবেন। ৩০ মার্চ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
মসজিদ আবু হুরায়রা ইসলামিক সেন্টার অব জ্যাকসন হাইটস ইনকের উদ্যোগে ঈদের বিশাল জামাত অনুষ্ঠিত হবে মসজিদের সামনে। একটি ঈদের জামাত হতে পারে সকাল নয়টায়। মহিলাদের জন্য নামাজের সুব্যবস্থা আছে। প্রতিকূল আবহাওয়ার ক্ষেত্রে মসজিদের ভেতরে তিনটি জামাত অনুষ্ঠিত হতে পারে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় জামাতে মহিলাদের জন্য নামাজের ব্যবস্থা থাকবে। এখানে অজু করে জায়নামাজ সাথে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে। গাড়ি পার্কিংয়ের নিয়মও অনুসরণ করতে হবে।