স্বাধীনতা, প্রিয় স্বাধীনতা

প্রকাশ : ২৬ মার্চ ২০২৫, ২৩:০৩ , অনলাইন ভার্সন
মার্চ আমাদের স্বাধীনতার মাস। ২৬ মার্চ বাঙালির স্বাধীনতা দিবস। ২৬ মার্চ বর্বরোচিত আক্রমণ নেমে এসেছিল স্বাধীনতাকামী বাঙালিদের ওপর। তাই ওই দিনকেই নির্ধারণ করা হয় বাঙালিদের স্বাধীনতা দিবস। দিনটি যেমন আনন্দের, তেমনি গভীর বেদনার। স্বাধীনতার ইতিহাস কমবেশি সব দেশেরই ত্যাগ, রক্তপাত আর জীবনহানির। রক্ত দেয়নি, জীবন দেয়নি অথচ স্বাধীনতা এসেছে, এমন সৌভাগ্যবান জাতি খুব কমই পাওয়া যায় ইতিহাস ঘাঁটলে। কিন্তু ২৬ মার্চের আগের রাতে ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নিয়ে ঘুমন্ত বাঙালি জাতির ওপর যে দানবীয় হত্যাযজ্ঞ চালায় পাকিস্তানিরা, তার নজির দ্বিতীয় আর নেই।
যেকোনো মানুষের স্বাধীনতা তার জন্মগত অধিকার। অথচ বিশ্বে গরিষ্ঠ মানুষকে পরাধিনতার গ্লানি নিয়ে বেঁচে থাকতে হচ্ছে। স্বাধীনতা চাইতে গেলে নেমে আসে দখলদার শাসকদের অকথ্য নিপীড়ন, নির্যাতন, কখনো মৃত্যুর মতো চরম দণ্ড। তা সত্ত্বেও মুক্তির মহানন্দে মানুষ হাসতে হাসতে প্রাণ দেয়। মুক্তিকামী মানুষই জীবনের বিনিময়ে জীবনের গান গাইতে পারে। গাইতে পারে স্বাধীনতার জন্য জীবন দেওয়ার গান। যারা স্বাধীনতার জন্য জীবন দেয়, জীবনদানের পূর্বে তারা প্রাণখুলে গাইতে পারে : ‘যারা স্বর্গগত তারা এখনো জানে/ স্বর্গের চেয়ে প্রিয় জন্মভূমি।’
তাই তো ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা আর দুই লক্ষাধিক মা-বোনের সম্ভ্রমহানি করেও স্বাধীনতার আকাক্সক্ষা থেকে বাঙালিকে নিবৃত্ত করতে পারেনি বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ পাকিস্তান সেনাবাহিনী। পাকিস্তানি জেনারেল, যাকে অনেকে কসাই বলে জানত, সেই টিক্কা খান ‘বাংলাদেশে’ এসেই হুংকার ছেড়ে বলে, ‘মানুষ চাই না, মাটি চাই।’ তাদের অহংকার বাঙালিরা চূর্ণ করে দেয় মাত্র ৯ মাসে। দম্ভ, অহংকার সব বাংলার কাদা পানিতে বিসর্জন দিয়ে ৯৩ হাজার সৈন্যকে মাথা নিচু করে বিদায় নিতে হয়। বাঘা বাঘা সব জেনারেল পরাজিতের খাতায় নাম লিখিয়ে বাংলার মাটি থেকে দেশের পথ ধরে নতমুখে। এত সাহস, এত শক্তি বাঙালিদের ধমনিতে বয়ে গেল কীভাবে? আসলে স্বাধীনতার আকাক্সক্ষা মানুষকে সাহসী করে তোলে। স্বাধীনতাকামী মানুষের সামনে সব ভয় তুচ্ছ-সব বাধাবিঘ্ন দু’পায়ে মাড়িয়ে চলার স্পর্ধা তাদের বুকজুড়ে। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম/ এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ বাঙালির স্বাধীনতার আকাক্সক্ষাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছিল।
মহাকালের বিচারে ৫৪ বছর খুব বড় সময় নয়। তবে এ সময়ের ব্যবধানে কোনো কোনো জাতির অনেক দূর এগিয়ে যাওয়ার নজিরও আছে। আজ আমাদের বিচার-বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন, স্বাধীনতার পর আমরা কতটা এগিয়েছি, কী ছিল আমাদের লক্ষ্য ও প্রত্যাশা, পূরণ হয়েছে কতটা। কোথায় আমাদের ব্যর্থতা, কী এর কারণ। স্বাধীনতার অন্যতম লক্ষ্য যদি হয় ভৌগোলিকভাবে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র বা ভূখণ্ডের অধিকারী হওয়া, তাহলে তা অর্জিত হয়েছে। তবে শুধু এটুকুই মানুষের প্রত্যাশা ছিল না। পাকিস্তানের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হয়ে দেশে একটি কার্যকর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা এবং জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তিসহ মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা=এ প্রত্যাশাও ছিল সমান। তবে স্বাধীনতার পর দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পেলেও তা হোঁচট খেয়েছে বারবার। বজায় থাকেনি এর ধারাবাহিকতা। ফলে আজও প্রাতিষ্ঠানিকতা পায়নি গণতন্ত্র।
গত বছর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে সাড়ে ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে। নোবেলজয়ী ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বর্তমানে দেশ চালাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। এই সরকারের কাছে জাতির প্রত্যাশা অনেক। পূর্ববর্তী সরকারের বৈষম্যমূলক অপশাসন, রাষ্ট্রযন্ত্রের সকল ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও দলীয়করণ, প্রতিপক্ষকে দমন করার জন্য মিথ্যা মামলা, গুম-খুন-হামলা, ব্যবসায়ীদের অবৈধ সিন্ডিকেট-এসব গণবিরোধী তৎপরতার আশু বিলুপ্তি চায় সাধারণ মানুষ। মোটকথা, অন্তর্বর্তী সরকার একটি গণতান্ত্রিক ধারায় দেশকে ফেরত আনবেÑএই প্রত্যাশা সবার।
স্বাধীনতার জন্য এখন পর্যন্ত যারা জীবন দিয়েছেন, জীবিত মুক্তিযোদ্ধা, সম্ভ্রম হারানো মা-বোন-সবাইকে সশ্রদ্ধ সালাম। ঠিকানার সব পাঠক, লেখক, বিজ্ঞাপনদাতা, শুভানুধ্যায়ী-সবাইকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078