জাতিসংঘ মহাসচিবের সফর সুবাতাস বাংলাদেশে

প্রকাশ : ২০ মার্চ ২০২৫, ০৪:৪৯ , অনলাইন ভার্সন
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস চার দিনের বাংলাদেশ সফর শেষে ফিরে এসেছেন নিজ কর্মস্থল নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে। বাংলাদেশে এ মুহূর্তে অনেক সংকট, যা থেকে জলদি বা কোনো জাদুমন্তরে মুক্ত হওয়ার আশা করা যায় না।
১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর, যাদের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হলো, তাদের নেতৃত্বেও স্বাধীনতার প্রত্যাশা, ৩০ লাখ শহীদ এবং দুই লাখ মা-বোন, যারা দখলদার বাহিনীর যৌন লালসা মেটাতে সম্ভ্রম দিল, তাদের স্বপ্নও পূরণ হলো না। মানুষ ক্রমাগত নিম্নমুখী জীবনের দিকে ধাবিত হলো। এরপর স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, স্বাধীনতার ঘোষক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ঘাতকদের হাতে নিহত হলেন। ক্ষমতার পালাবদল হলো, কিন্তু মানুষের জীবনমান উন্নত হলো না।
প্রতিটি রদবদলের পর যারা এলেন, তারা সঙ্গে নিয়ে এলেন শত রকমের অঙ্গীকার আর প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি। কিন্তু কাজের বেলায় দেখা গেল, ‘যায় দিন ভালো/আসে দিন খারাপ’। দেখা গেল, কে কত নিচে নামতে পারে, কে কত বেশি জনগণের ওপর দুর্ভোগের বোঝা তুলে দিতে পারে, তার প্রতিযোগিতা। ৫৪ বছর ধরে আসা-যাওয়া, ক্ষমতাসীনদের কে কত বেশি জুলম করতে পারে দেশ ও জনগণের ওপর, সেই প্রতিযোগিতাই দেখতে থাকল।
সর্বশেষ ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতন ঘটিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার এখন ক্ষমতায়। তাদের ক্ষেত্রে যায় দিন ভালো, আসে দিন খারাপÑএমন উদাহরণ যেন না হয়, সেটা সবারই চাওয়া। ড. ইউনূসের সরকার ইতিমধ্যে অনেক সাফল্য দেখাতে পেরেছে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যর্থতার ছাপও আছে। বর্তমান সময়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিম্নমুখী। ধর্ষণ, বিশেষ করে শিশুধর্ষণের মতো বর্বরতা বেড়ে গেছে। কিন্তু পুলিশ প্রশাসনের কোনো টনক নড়ছে না।
এমন এক সময়ে আলোর ঝলক ছড়িয়ে বাংলাদেশ সফর করলেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতারেস। তিনি এমন কোনো ধন্বন্তরি মহৌষধ নিয়ে যাননি, যে মহৌষধে বাংলাদেশের সব রোগ সেরে যাবে। তবে অন্তত একটি রোগ, যা প্রায় ৮ বছর ধরে বাংলাদেশের গলার কাঁটা হয়ে আছে, সেই রোহিঙ্গা সংকটের সম্পূর্ণ সমাধান দিয়ে যেতে না পারলেও সংকট সমাধানে একটি আশা-জাগানিয়া পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণে জাতিসংঘের মহাসচিব এই সফর করেছেন। ১৩ থেকে ১৬ মার্চ পর্যন্ত সফরকালে তিনি কক্সবাজারের উখিয়ায় অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হাজার হাজার রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করেছেন। ঢাকায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সিভিল সোসাইটি ও তরুণ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তিনি একটি সংবাদ সম্মেলনেও বক্তৃতা করেন। চার দিনের সফর পর্যবেক্ষণ করলে এ কথা স্পষ্ট, বাংলাদেশের জনগণের অন্তর্নিহিত প্রত্যাশার প্রতিধ্বনিই তিনি করেছেন। কিন্তু সমস্যা সমাধানে সুনির্দিষ্ট কোন পথ দেখিয়ে রেখে যেতে পারেননি। 
এ কথা নিশ্চিত করে বলা না গেলেও, এটা অধিক বলা হবে না, বাংলাদেশের কূটনীতিবিদেরা যদি পরিপক্কতার পরিচয় দিতে পারেন, তবে তারা রোহিঙ্গা সংকটের একটি সম্মানজনক সমাধান বের করে আনতে সক্ষম হতেন। ঠিকানা তার সম্পাদকীয়তে বারবার বলতে চেয়েছে, দ্বিপক্ষীয় নয়, বহুপক্ষীয় আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়েই রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান সম্ভব হতে পারে। বাংলাদেশের সে সময়ের সরকার এতে কর্ণপাত করেনি। এখন সেটাই প্রমাণিত হচ্ছে। রাজনীতিতে একগুঁয়েমি বা অহংকার চলে না। বিশ্বপল্লির দর্শনে আমরা সবাই একে অপরের ওপর কমবেশি নির্ভরশীল, এ কথা যারা মনে রাখে আখেরে তাদেরই লাভ হয়।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078