
বাঙালি কি আবার হাইকোর্ট দেখতে চলেছে। হায়রে বাঙালি! সব আমলেই কেবল হাইকোর্ট দেখল। সবার মুখেই কেবল হাইকোর্টের কথা শুনে গেল। শেষ পর্যন্ত সবই অশ্বডিম্ব। কিন্তু দেখল না কিছুই, পেল না কিছুই। নেতাজি সুভাষ বসু, সূর্যসেন, ক্ষুদিরাম, তিতুমীর-আরও কত কত নাম। জীবন দিলেন তারা, মসনদ পেল নেহরু ও জিন্নাহ গংরা। তারপর পাকিস্তানি শেকল থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কত কত জনের জীবন গেল। সেই বরকত, সালাম, রফিক, জব্বার থেকে শুরু। ২০২৪-এ সাঈদ, মুগ্ধ। তাদের রক্ত ছুঁয়ে শপথ নিল জনগণের মুক্তিÑসব আমলেই রক্ত শপথ। কারও রক্ত বৃথা যেতে দেওয়া হবে না। রক্তের ঋণ শোধ করার শপথ নিয়েই সবাই ক্ষমতায় বসল। কেউ বসার স্বপ্নে বিভোর। যারা বসেছে সবাই বাঙালিকে হাইকোর্ট দেখিয়ে গেল।
২০২৪-এর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতন ঘটল। বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্ব, শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. ইউনূসের নেতৃত্বে ৮ আগস্ট গঠিত হলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ইতিমধ্যে এই সরকার সাত মাস পূর্ণ করেছে। এই সময়ে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন নীতিগত সিদ্ধান্ত, রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ, কূটনৈতিক অগ্রগতি এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনতে গৃহীত পদক্ষেপ নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা হয়েছে। গত সাত মাসে এই সরকার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে অগ্রগতির কথা বলেছে।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই রাষ্ট্র সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দেয়। এই লক্ষ্যে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, পুলিশ, বিচার বিভাগ এবং দুর্নীতি দমন কমিশনÑএই ছয়টি ক্ষেত্রে সংস্কার আনার জন্য পৃথক কমিশন গঠন করা হয়। অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও অন্তর্বর্তী সরকার কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা দেশের অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমাতে ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। রিজার্ভ ব্যবস্থাপনায় কঠোরতা এবং মুদ্রানীতিতে কিছু কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ কর ছাড়ের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। দেশের রপ্তানি খাত, বিশেষ করে তৈরি পোশাকশিল্পকে চাঙা করতে বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ চালু করা হয়েছে।
ইউনূস সরকারের সাত মাসের অন্যতম বড় সাফল্য আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বাংলাদেশের অবস্থান আরও সুদৃঢ় হয়েছে এবং মানবাধিকার ইস্যুতে সরকার তার নীতি তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও চীনের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্ব নিয়ে আলোচনা চলছে, যা ভবিষ্যতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বিশ্ব রাজনীতিতে বাংলাদেশের অবস্থান আরও দৃঢ় করতে সরকার কৌশলী ভূমিকা রাখছে, যা ভবিষ্যতের জন্য ইতিবাচক ইঙ্গিত বহন করছে।
সরকার গঠনের পর থেকে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারকে সবচেয়ে কঠিন যে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে, তা হলো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন। দায়িত্ব গ্রহণের সময় থেকেই সরকার দেশের নিরাপত্তাব্যবস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য কঠোর অবস্থান গ্রহণের ঘোষণা দেয়। সন্ত্রাস দমন, সীমান্ত অপরাধ, চোরাচালান এবং শহরাঞ্চলে নিরাপত্তা জোরদার করার ওপর ছিল সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব। তবু এখনো দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়নি। খুন, রাহাজানি, ধর্ষণ, চুরি-ডাকাতি হচ্ছে। রাস্তাঘাটে জনগণের নিরাপত্তার অভাব। বিবেকবান প্রকৃত জনদরদি মানুষ এসবের অবসান চায়।
অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান প্রতিশ্রুতি ছিল একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন। সরকার বলছে, সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করেই চলতি বছরের ডিসেম্বরে বা আগামী বছরের মার্চে নির্বাচন আয়োজন করা হবে। বিএনপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দল নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি জানাচ্ছে, যা নিয়ে আলোচনা চলছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
তবে বিতর্ক চলছে সংসদ নির্বাচন আগে নাকি স্থানীয় নির্বাচন আগে, সংস্কার আগে নাকি নির্বাচন আগে, সংসদ নির্বাচন আগে নাকি গণপরিষদ নির্বাচন আগেÑএসব নিয়ে। কেউ বলে সবকিছুর আগে স্বৈরাচারের বিচার, কেউ শেখ হাসিনার ফাঁসির আগে কোনো নির্বাচনের কথা শুনতে চায় না, কেউ বলে দেশের আইনশৃঙ্খলা নাজুক, পুলিশের মনোবল দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার অনুকূল নয়। এখানে জনগণের কোনো কথা নেই। যারা বারবার রক্ত দিয়ে, জীবন দিয়ে সবকিছু বদলে দেয়, তাদের কথা কেউ শুনতে চায় না। তারা কী চায়, কে শোনে সে কথা।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি দেশীয় সব শক্তি এবং আমেরিকাসহ বিশ্বের সব শক্তির যে সমর্থন, শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়া ড. ইউনূস সেই শক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশকে একটা স্থিতিশীল ও সম্মানজনক পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারবেন বলে আমাদের বিশ্বাস। বাঙালি অনেক কলা খেয়েছে, অনেক হাইকোর্ট দেখেছে। এবারও অনেকে হাইকোর্ট দেখানোর অপচেষ্টা করছে বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু ড. ইউনূসের দৃঢ়তার কাছে তাদের এই অপচেষ্টা ধোপে টিকবে বলে মনে হচ্ছে না। আমরাও সেটাই বিশ্বাস করতে চাই।
২০২৪-এর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতন ঘটল। বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্ব, শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. ইউনূসের নেতৃত্বে ৮ আগস্ট গঠিত হলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ইতিমধ্যে এই সরকার সাত মাস পূর্ণ করেছে। এই সময়ে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন নীতিগত সিদ্ধান্ত, রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ, কূটনৈতিক অগ্রগতি এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনতে গৃহীত পদক্ষেপ নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা হয়েছে। গত সাত মাসে এই সরকার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে অগ্রগতির কথা বলেছে।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই রাষ্ট্র সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দেয়। এই লক্ষ্যে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, পুলিশ, বিচার বিভাগ এবং দুর্নীতি দমন কমিশনÑএই ছয়টি ক্ষেত্রে সংস্কার আনার জন্য পৃথক কমিশন গঠন করা হয়। অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও অন্তর্বর্তী সরকার কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা দেশের অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমাতে ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। রিজার্ভ ব্যবস্থাপনায় কঠোরতা এবং মুদ্রানীতিতে কিছু কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ কর ছাড়ের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। দেশের রপ্তানি খাত, বিশেষ করে তৈরি পোশাকশিল্পকে চাঙা করতে বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ চালু করা হয়েছে।
ইউনূস সরকারের সাত মাসের অন্যতম বড় সাফল্য আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বাংলাদেশের অবস্থান আরও সুদৃঢ় হয়েছে এবং মানবাধিকার ইস্যুতে সরকার তার নীতি তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও চীনের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্ব নিয়ে আলোচনা চলছে, যা ভবিষ্যতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বিশ্ব রাজনীতিতে বাংলাদেশের অবস্থান আরও দৃঢ় করতে সরকার কৌশলী ভূমিকা রাখছে, যা ভবিষ্যতের জন্য ইতিবাচক ইঙ্গিত বহন করছে।
সরকার গঠনের পর থেকে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারকে সবচেয়ে কঠিন যে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে, তা হলো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন। দায়িত্ব গ্রহণের সময় থেকেই সরকার দেশের নিরাপত্তাব্যবস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য কঠোর অবস্থান গ্রহণের ঘোষণা দেয়। সন্ত্রাস দমন, সীমান্ত অপরাধ, চোরাচালান এবং শহরাঞ্চলে নিরাপত্তা জোরদার করার ওপর ছিল সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব। তবু এখনো দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়নি। খুন, রাহাজানি, ধর্ষণ, চুরি-ডাকাতি হচ্ছে। রাস্তাঘাটে জনগণের নিরাপত্তার অভাব। বিবেকবান প্রকৃত জনদরদি মানুষ এসবের অবসান চায়।
অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান প্রতিশ্রুতি ছিল একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন। সরকার বলছে, সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করেই চলতি বছরের ডিসেম্বরে বা আগামী বছরের মার্চে নির্বাচন আয়োজন করা হবে। বিএনপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দল নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি জানাচ্ছে, যা নিয়ে আলোচনা চলছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
তবে বিতর্ক চলছে সংসদ নির্বাচন আগে নাকি স্থানীয় নির্বাচন আগে, সংস্কার আগে নাকি নির্বাচন আগে, সংসদ নির্বাচন আগে নাকি গণপরিষদ নির্বাচন আগেÑএসব নিয়ে। কেউ বলে সবকিছুর আগে স্বৈরাচারের বিচার, কেউ শেখ হাসিনার ফাঁসির আগে কোনো নির্বাচনের কথা শুনতে চায় না, কেউ বলে দেশের আইনশৃঙ্খলা নাজুক, পুলিশের মনোবল দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার অনুকূল নয়। এখানে জনগণের কোনো কথা নেই। যারা বারবার রক্ত দিয়ে, জীবন দিয়ে সবকিছু বদলে দেয়, তাদের কথা কেউ শুনতে চায় না। তারা কী চায়, কে শোনে সে কথা।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি দেশীয় সব শক্তি এবং আমেরিকাসহ বিশ্বের সব শক্তির যে সমর্থন, শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়া ড. ইউনূস সেই শক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশকে একটা স্থিতিশীল ও সম্মানজনক পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারবেন বলে আমাদের বিশ্বাস। বাঙালি অনেক কলা খেয়েছে, অনেক হাইকোর্ট দেখেছে। এবারও অনেকে হাইকোর্ট দেখানোর অপচেষ্টা করছে বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু ড. ইউনূসের দৃঢ়তার কাছে তাদের এই অপচেষ্টা ধোপে টিকবে বলে মনে হচ্ছে না। আমরাও সেটাই বিশ্বাস করতে চাই।