
যাদের রাজনৈতিক আবেদন অনুমোদন পায় তাদের যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাসাইলি বলা হয়। এক বছর পর তারা গ্রিনকার্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন। অর্থাৎ তারা যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পান। ৫ বছর বসবাসের পর তারা দেশটির নাগরিকত্ব লাভের যোগ্য হন। কিন্তু ট্রাম্প্র প্রশাসন অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেপ্তারে ইমিগ্রেশন ক্র্যাকডাউন শুরু করলে গ্রিনকার্ডধারীদেরও ঘুম কেড়ে নিয়েছেন। রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের পর যারা গ্রিনকার্ড পেয়েছেন তারাও হুমকির মুখে পড়েছেন। রিভিউ করার হচ্ছে তাদের অনেকের আবেদন।
সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় কঠিন হয়ে পড়েছে। আইনের দৃশ্যত কোনো পরিবর্তন না হলেও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে অভিবাসনবিরোধী মনোভাব প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তর থেকে মাঠ পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। তাই রাজনৈতিক আবেদনের নামে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেওয়া নানা তথ্য এখন সহজে বিশ্বাস করছেন না অভিবাসন কর্মকর্তারা। ফলে সবকিছু যাচাই করতে সময় লাগছে। এ কারণে হাজার হাজার রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী রয়েছেন আতঙ্ক ও উদ্বেগের মধ্যে। অন্যদিকে যারা ইতিমধ্যে গ্রিনকার্ড পেয়েছেন তাদের অনেকের আবেদন পুনর্বিবেচনার জন্য ডাক পড়েছে।
প্রবাসী বাংলাদেশি এক তরুণ জানান, তিনি যে ল’ ফার্মের মাধ্যমে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছিলেন, সেই অ্যাটনি অফিস থেকে গত সপ্তাহে জানানো হয়েছে যে তার আবেদন রিভিউ করা হবে। এজন্য পুনরায় ইন্টারভিউর মুখোমুখি হতে হবে তাকে। বিষয়টি তাকে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় ফেলেছে। তিনি বলেন, আর এক বছর পর যেখানে তিনি নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করবেন বলে মনস্থির করেছেন, সেখানে তাকে নতুন করে ইমিগ্রেশনের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
ওই তরুণ জানান, আওয়ামী লীগ শাসনামলে তিনি রাজনৈতিক আশ্রয় করেছিলেন। এলডিপি নামে একটি সংঠনের কর্মী পরিচয়ে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদনে তিনি উল্লেখ করেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার তাকে গ্রেপ্তার ও হয়রানি করেছে। তাকে যে কোনো সময় ঘুম করতে পারে। তার জীবন হুমকি মুখে পড়েছে। দেশে ফিরে গেলে তাকে মেরে ফেলা হতে পারে। নতুন করে ইন্টারভিউয়ের ডাক পড়ায় তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করছেন, বর্তমানে দেশে অন্তর্বর্তী সরকার। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় নেই। এ কারণে তার আশ্রয় বাতিল করে দেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে।
এদিকে কিছুদিন আগেও রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীরা ওয়ার্ক অথোরাইজেশন (ওয়ার্ক পারমিট) এক মাসের মধ্যে পেয়ে যেতেন। গেল দুই-তিন মাস থেকে ওয়ার্ক অথোরাইজেশন পেতে বিলম্ব হচ্ছে।হোমল্যান্ড সিকিউরিটির কর্মকর্তা (অ্যাসাইলাম অফিসার) কর্তৃক নির্ধারণ করা সাক্ষাৎকারের দিনক্ষণ পাওয়ার বিষয়টিও আছে আগের মতোই। আবেদন করার পর সাক্ষাৎকারের জন্য ডাক পেতে সময় লাগছে আড়াই থেকে তিন বছর। আবার কারও কারও এর চেয়ে বেশি সময়।
যুক্তরাষ্ট্রে ইন্টারন্যাশনাল বার অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী বলেন, আমেরিকার পরিবর্তিত পরিস্থিতি বা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন আদেশে সৃষ্ট বাস্তবতায় রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন বাড়ছে। অনেকেই আগের মামলাও চালু করছেন। এই মুহূর্তে এই আবেদন প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকলে তিনি এদেশে বৈধ অভিবাসী বলে বিবেচিত হতে পারেন। তবে ক্রিমিনাল রেকর্ড থাকলে তার জন্য আমেরিকা আতঙ্কের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিউইয়র্কে এজন অভিঞ্জ প্যারালিগ্যাল বলেন, আমেরিকায় রাজনৈতিক আশ্রয় আগেও কঠিন ছিল। তবে এখন আরও বেশি কঠিন। বিপুল পরিমাণ আবেদন জমা থাকার কারণে সাক্ষাৎকার পেতে বিলম্ব হচ্ছে। তিনি বলেন, খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য করা আবেদনের ৮০ ভাগই ‘না’ হয়ে যাচ্ছে। যারা সঠিক তথ্য এবং প্রকৃতপক্ষে নিজ নিজ দেশে ঝুঁকির মধ্যে আছেন এবং তা প্রমাণ করতে পারছেন তাঁদের আবেদন মঞ্জুর হচ্ছে। তবে এই হার অনেক কম। বেশিরভাগ আবেদন ঝুলিয়ে রাখা হচ্ছে।
অতি সম্প্রতি বাংলাদেশের গণমাধ্যমে কর্মরত একজন সাংবাদিকের রাজনৈতিক আশ্রয় না হয়ে গেছে। তিনি বাংলাদেশে নিজের ও পরিবারের ঝুঁকি দেখিয়ে আশ্রয়ের আবেদন করেছিলেন। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি কর্মকর্তারা কয়েক ঘণ্টার বক্তব্য শোনার পর তাঁর আবেদন এক্সিকিউটিভ অফিস অব ইমিগ্রেশন রিভিউ বা ইমিগ্রেশন কোর্টে পাঠিয়ে দিয়েছেন। অ্যাটর্নিরা বলছেন, এভাবে প্রায় প্রতিদিনই আবেদন নাকচ হচ্ছে। অ্যাসাইলাম কর্মকর্তারা আবেদনকারীর বক্তব্যে সন্তুষ্ট না হওয়ার কারণে আবেদনগুলো নাকচ হয়ে যাচ্ছে।
আইনজ্ঞরা বলছেন, প্রতিবছর অন্তত এক লাখ অভিবাসী আমেরিকায় আশ্রয়ের আবেদন করে থাকেন। পাঁচটি বিষয়ে অ্যাসাইলাম বা আশ্রয়ের জন্য আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। গত কয়েক বছর বিশ্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতির বাস্তবতায় বিভিন্ন দেশের মতো আমেরিকায় বেড়েছে অ্যাসাইলাম প্রার্থীর সংখ্যা। এর মধ্যে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন উল্লেখ করার মতো। কয়েক বছরে প্রায় ১০ হাজার বাংলাদেশি রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছেন।
আইনজ্ঞরা বলছেন, রাজনৈতিক আশ্রয়ের সময় কোনোভাবে মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া যাবে না। প্রকৃতপক্ষেই যদি নিজ দেশে কেউ ঝুঁকির মধ্যে থাকেন, সে বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণসহ রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করা যেতে পারে। তবে বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট ভিন্ন। আগের সরকারের আমলে যারা আবেদন করেছিলেন এবং গ্রিনকার্ড পেয়েছেন তাদের অনেকের আবেদন রিভিউ করা হচ্ছে। এটি অনেকের জন্য আতঙ্কের।
সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় কঠিন হয়ে পড়েছে। আইনের দৃশ্যত কোনো পরিবর্তন না হলেও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে অভিবাসনবিরোধী মনোভাব প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তর থেকে মাঠ পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। তাই রাজনৈতিক আবেদনের নামে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেওয়া নানা তথ্য এখন সহজে বিশ্বাস করছেন না অভিবাসন কর্মকর্তারা। ফলে সবকিছু যাচাই করতে সময় লাগছে। এ কারণে হাজার হাজার রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী রয়েছেন আতঙ্ক ও উদ্বেগের মধ্যে। অন্যদিকে যারা ইতিমধ্যে গ্রিনকার্ড পেয়েছেন তাদের অনেকের আবেদন পুনর্বিবেচনার জন্য ডাক পড়েছে।
প্রবাসী বাংলাদেশি এক তরুণ জানান, তিনি যে ল’ ফার্মের মাধ্যমে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছিলেন, সেই অ্যাটনি অফিস থেকে গত সপ্তাহে জানানো হয়েছে যে তার আবেদন রিভিউ করা হবে। এজন্য পুনরায় ইন্টারভিউর মুখোমুখি হতে হবে তাকে। বিষয়টি তাকে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় ফেলেছে। তিনি বলেন, আর এক বছর পর যেখানে তিনি নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করবেন বলে মনস্থির করেছেন, সেখানে তাকে নতুন করে ইমিগ্রেশনের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
ওই তরুণ জানান, আওয়ামী লীগ শাসনামলে তিনি রাজনৈতিক আশ্রয় করেছিলেন। এলডিপি নামে একটি সংঠনের কর্মী পরিচয়ে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদনে তিনি উল্লেখ করেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার তাকে গ্রেপ্তার ও হয়রানি করেছে। তাকে যে কোনো সময় ঘুম করতে পারে। তার জীবন হুমকি মুখে পড়েছে। দেশে ফিরে গেলে তাকে মেরে ফেলা হতে পারে। নতুন করে ইন্টারভিউয়ের ডাক পড়ায় তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করছেন, বর্তমানে দেশে অন্তর্বর্তী সরকার। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় নেই। এ কারণে তার আশ্রয় বাতিল করে দেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে।
এদিকে কিছুদিন আগেও রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীরা ওয়ার্ক অথোরাইজেশন (ওয়ার্ক পারমিট) এক মাসের মধ্যে পেয়ে যেতেন। গেল দুই-তিন মাস থেকে ওয়ার্ক অথোরাইজেশন পেতে বিলম্ব হচ্ছে।হোমল্যান্ড সিকিউরিটির কর্মকর্তা (অ্যাসাইলাম অফিসার) কর্তৃক নির্ধারণ করা সাক্ষাৎকারের দিনক্ষণ পাওয়ার বিষয়টিও আছে আগের মতোই। আবেদন করার পর সাক্ষাৎকারের জন্য ডাক পেতে সময় লাগছে আড়াই থেকে তিন বছর। আবার কারও কারও এর চেয়ে বেশি সময়।
যুক্তরাষ্ট্রে ইন্টারন্যাশনাল বার অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী বলেন, আমেরিকার পরিবর্তিত পরিস্থিতি বা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন আদেশে সৃষ্ট বাস্তবতায় রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন বাড়ছে। অনেকেই আগের মামলাও চালু করছেন। এই মুহূর্তে এই আবেদন প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকলে তিনি এদেশে বৈধ অভিবাসী বলে বিবেচিত হতে পারেন। তবে ক্রিমিনাল রেকর্ড থাকলে তার জন্য আমেরিকা আতঙ্কের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিউইয়র্কে এজন অভিঞ্জ প্যারালিগ্যাল বলেন, আমেরিকায় রাজনৈতিক আশ্রয় আগেও কঠিন ছিল। তবে এখন আরও বেশি কঠিন। বিপুল পরিমাণ আবেদন জমা থাকার কারণে সাক্ষাৎকার পেতে বিলম্ব হচ্ছে। তিনি বলেন, খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য করা আবেদনের ৮০ ভাগই ‘না’ হয়ে যাচ্ছে। যারা সঠিক তথ্য এবং প্রকৃতপক্ষে নিজ নিজ দেশে ঝুঁকির মধ্যে আছেন এবং তা প্রমাণ করতে পারছেন তাঁদের আবেদন মঞ্জুর হচ্ছে। তবে এই হার অনেক কম। বেশিরভাগ আবেদন ঝুলিয়ে রাখা হচ্ছে।
অতি সম্প্রতি বাংলাদেশের গণমাধ্যমে কর্মরত একজন সাংবাদিকের রাজনৈতিক আশ্রয় না হয়ে গেছে। তিনি বাংলাদেশে নিজের ও পরিবারের ঝুঁকি দেখিয়ে আশ্রয়ের আবেদন করেছিলেন। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি কর্মকর্তারা কয়েক ঘণ্টার বক্তব্য শোনার পর তাঁর আবেদন এক্সিকিউটিভ অফিস অব ইমিগ্রেশন রিভিউ বা ইমিগ্রেশন কোর্টে পাঠিয়ে দিয়েছেন। অ্যাটর্নিরা বলছেন, এভাবে প্রায় প্রতিদিনই আবেদন নাকচ হচ্ছে। অ্যাসাইলাম কর্মকর্তারা আবেদনকারীর বক্তব্যে সন্তুষ্ট না হওয়ার কারণে আবেদনগুলো নাকচ হয়ে যাচ্ছে।
আইনজ্ঞরা বলছেন, প্রতিবছর অন্তত এক লাখ অভিবাসী আমেরিকায় আশ্রয়ের আবেদন করে থাকেন। পাঁচটি বিষয়ে অ্যাসাইলাম বা আশ্রয়ের জন্য আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। গত কয়েক বছর বিশ্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতির বাস্তবতায় বিভিন্ন দেশের মতো আমেরিকায় বেড়েছে অ্যাসাইলাম প্রার্থীর সংখ্যা। এর মধ্যে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন উল্লেখ করার মতো। কয়েক বছরে প্রায় ১০ হাজার বাংলাদেশি রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছেন।
আইনজ্ঞরা বলছেন, রাজনৈতিক আশ্রয়ের সময় কোনোভাবে মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া যাবে না। প্রকৃতপক্ষেই যদি নিজ দেশে কেউ ঝুঁকির মধ্যে থাকেন, সে বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণসহ রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করা যেতে পারে। তবে বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট ভিন্ন। আগের সরকারের আমলে যারা আবেদন করেছিলেন এবং গ্রিনকার্ড পেয়েছেন তাদের অনেকের আবেদন রিভিউ করা হচ্ছে। এটি অনেকের জন্য আতঙ্কের।