
আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের অপার কৃপায় আরেকটি রমজান মাস আমরা লাভ করেছি, আলহামদুলিল্লাহ। মহান আল্লাহর দরবারে আমাদের বিনীত প্রার্থনা থাকবে, হে দয়াময়! তোমার এ দুর্বল বান্দাদের পাপ ক্ষমা করে এ বরকতময় মাসে বিশ্বকে তোমার রহমতের চাদরে আবৃত করে নাও আর বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ যেন শান্তি ও নির্ভয়ে তোমার ধ্যানে মগ্ন থেকে অতিবাহিত করতে পারে।
আমরা সবাই জানি, পবিত্র মাহে রমজান সিয়াম সাধনার মাস, আল্লাহ রাব্বুল আলামিনকে একান্ত করে পাওয়ার মাস এবং সকল পাপ ক্ষমার মাস। এই বরকত ও আশিসমণ্ডিত মাসকে লাভ করার জন্য প্রত্যেক মুমিন-মুত্তাকি বান্দারা অধীর আগ্রহে অপেক্ষমাণ থাকেন।
পবিত্র এ মাসকে তিন দশকে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম দশক রহমতের, দ্বিতীয় দশক মাগফিরাতের আর তৃতীয় দশক হলো নাজাতের। পবিত্র মাহে রমজান শুরু হয়েছে। এটি হচ্ছে পবিত্র রমজানের প্রথম দশক অর্থাৎ রহমতের দশক। এই দশকে আমাদের সবার মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে এ কামনাই হওয়া উচিত, তাঁর কাছ থেকে যেন আমরা বেশি বেশি রহমত লাভ করতে পারি এবং তাঁর রহমতের চাদরে যেন আমাদেরকে আবৃত করে রাখেন।
পবিত্র এই রমজানে মুমিন-মুত্তাকিদের আধ্যাত্মিক বাগানে ঘটবে নব-বসন্তের সমারোহ। আর স্বর্গীয় আনন্দে মুমিন-মুত্তাকিদের হৃদয়ভুবন আলোকিত হয়ে উঠবে। আল্লাহ পাকের পবিত্র বান্দারা জানেন, এই রহমতের দশকে আল্লাহ তায়ালা রহমতের বৃষ্টির পানি দ্বারা তাদেরকে সিক্ত করবেন এবং তাদের তৃষ্ণা মেটাবেন। আর এ কারণেই আল্লাহ পাকের নেক বান্দারা আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের রহমত থেকে কখনো নিরাশ হোন না এবং সামান্য অজুহাত দেখিয়ে রোজা পরিত্যাগ করেন না।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র মাহে রমজানের গুরুত্ব সম্পর্কে বলেন, ‘হে যারা ইমান এনেছ! তোমাদের জন্য সেভাবে রোজা রাখা বিধিবদ্ধ করা হলো, যেভাবে তোমাদের পূর্ববর্তীদের জন্য বিধিবদ্ধ করা হয়েছিল, যেন তোমরা মুত্তাকি হতে পারো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৩)
পবিত্র কোরআনের ওই আয়াত থেকে যে বিষয়টি স্পষ্ট হয়, তা হলো ধর্মীয় অনুষ্ঠান হিসেবে রোজা অর্থাৎ উপবাসব্রত পালন করা কোনো না কোনো আকারে সকল ধর্মেই ছিল, আছে। অধিকাংশ ধর্মে এবং নিম্ন, মধ্য ও উচ্চ শ্রেণির কৃষ্টির মধ্যে উপবাসব্রত একটি সাধারণভাবে নির্দেশিত ব্যাপার। আর যেখানে এ ধরনের নির্দেশ নেই, সেখানেও প্রাকৃতিক প্রয়োজনের তাগিদে অনেকেই উপবাস করে থাকেন।
সাধুপুরুষ ও দিব্যজ্ঞানীগণের অভিজ্ঞতা থেকে যে বিষয়টি জানা যায়, তা হলো আধ্যাত্মিক উন্নতি ও মনের পবিত্রতা সাধনের জন্য শারীরিক সম্পর্কসমূহ কিছুটা ছিন্ন করা এবং সাংসারিক বন্ধন থেকে কিছুটা মুক্তিলাভ করা একান্তই প্রয়োজন।
তবে ইসলাম এই উপবাসব্রতের মধ্যে নবরূপ, নব অর্থ ও নবতম আধ্যাত্মিক তাৎপর্য আরোপ করেছে। পবিত্র মাহে রমজানের এই রোজাকে অর্থাৎ উপবাস পালনকে ইসলাম পূর্ণমাত্রার আত্মোৎসর্গ মনে করে থাকে। যিনি রোজা পালন করেন, তিনি যে কেবল শরীর রক্ষাকারী খাদ্য পানীয় থেকেই বিরত থাকেন, তা নয় বরং তিনি সন্তানাদি জন্মদান তথা বংশবৃদ্ধির ক্রিয়াকলাপ থেকেও দূরে থাকেন এবং সমস্ত পাপ কাজ থেকেও বিরত থাকেন। তাই যিনি রোজা রাখেন, তিনি তার অসাধারণ আত্মত্যাগের এবং তার প্রস্তুতির কথা আল্লাহ পাককে জানিয়ে দেন আর তার হৃদয় এই ঘোষণাও দেয়, আমি কেবল আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টি লাভের আশায় রোজা রাখছি। এ ছাড়া তার হৃদয় এটাও বলে, যেহেতু আমি আল্লাহর জন্য রোজা রাখছি এবং সকল প্রকার পাপ কাজ থেকে বিরত থাকার অঙ্গীকার করছি, তাই প্রয়োজন বোধে আমি আমার প্রভু ও সৃষ্টিকর্তার খাতিরে আমার সবকিছু, এমনকি আমার জীবন পর্যন্ত কোরবানি করে দিতে দ্বিধাগ্রস্ত হব না।
পবিত্র মাহে রমজান আসে আমাদের জন্য অবারিত ইবাদত-বন্দেগির বাড়তি সুযোগ নিয়ে। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আল্লাহর নেক বান্দারা অন্বেষণ করেন কীভাবে আল্লাহ পাকের নৈকট্য অর্জন করা যায়।
ইসলামে রোজার মাহাত্ম্য অতি ব্যাপক। এই মাহাত্ম্য ও মর্যাদাকে বোঝাতে গিয়ে আমাদের প্রিয় নবী হজরত মোহাম্মদ মোস্তফা (সা.) বলেছেন, ‘প্রতিটি জিনিসের জন্য নির্দিষ্ট দরজা থাকে আর ইবাদতের দরজা হচ্ছে রোজা।’ (জামেউস সগির) তিনি (সা.) আরও বলেছেন, ‘রোজা ঢালস্বরূপ এবং আগুন থেকে রক্ষা পাওয়ার একটি নিরাপদ দুর্গ।’ (মুসনাদ আহমদ বিন হাম্বল) যদিও আমরা সবাই জানি, পবিত্র রমজান বড়ই কল্যাণমণ্ডিত মাস, দোয়ার মাস। তার পরও আমরা অনেকেই এই মাসের ইবাদত-বন্দেগি থেকে গাফেল থাকি। অন্যান্য মাসের মতোই এই পবিত্র মাসটিকে হেলায় কাটিয়ে দিই।
আমরা যারা পবিত্র এই মাসটিতে প্রবেশ করার তওফিক লাভ করেছি, তারা কিন্তু সৌভাগ্যবান। অনেকেই হয়তো আশায় ছিলেন কিন্তু লাভ করতে পারেননি, না ফেরার দেশে চলে গেছেন। তাই আমাদেরকে এ মাসের পুরো ফায়দা অর্জন করতে হবে। আমাদের প্রত্যেকের উচিত হবে, পবিত্র রমজানের মাহাত্ম্য ও গুরুত্ব বুঝে রমজান থেকে কল্যাণমণ্ডিত হওয়া। আমরা যদি হজরত রাসুল করিম (সা.)-এর জীবনে রমজানের দিনগুলোর দিকে লক্ষ করি, তাহলে দেখতে পাই, তিনি (সা.) রমজানে কত বেশি নফল ইবাদত আর দান-খয়রাত করতেন। অন্য সময়ের তুলনায় রমজানে মহানবীর (সা.) ইবাদত আর দান-খয়রাত আরও বেশি গতিলাভ করত আর পবিত্র মাহে রমজানের রাতগুলো মহানবী (সা.) অনেক বেশি ইবাদত-বন্দেগিতে কাটাতেন। মহানবী (সা.)-এর নফল নামাজ আর দোয়ার আহাজারিতে জেগে থাকত নিঝুম রাতগুলো। এ ছাড়া এই মাসে তিনি (সা.) কোরআন শিক্ষা, শেখানো ও শোনার প্রতি অনেক বেশি গুরুত্ব দিতেন।
আমাদের সবার উচিত হবে, এ পবিত্র মাস থেকে পুরোপুরি ফায়দা হাসিল করা, রমজানের কল্যাণরাজি দ্বারা নিজেদের সুশোভিত করা, যেন এ রমজানে কোরআন তেলাওয়াতের গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে ওঠে আমাদের চারপাশ, যেন কোরআনের আলোয় আলোকিত হয় সমগ্র বিশ্ব।
এ ছাড়া তারাবি, তাহাজ্জুদ প্রভৃতি সুন্নত-নফল নামাজ আর দোয়ার মাধ্যমে জাগিয়ে রাখি আমাদের রাতগুলো আর দিনগুলোও যেন কাটাই আল্লাহর স্মরণে। আল্লাহর সঙ্গে যেন আমাদের বিশেষ এক সম্পর্ক সৃষ্টি হয়ে যায় এই রহমতের দশক থেকেই আর পরবর্তীতে যেন আমাদের জীবনে লাভ হয় সেই সৌভাগ্যমণ্ডিত রজনীর। তাই আল্লাহকে লাভ করতে হলে রমজানের প্রথম দিন থেকেই রাতগুলো ইবাদতে জাগ্রত রাখতে হবে আর দিনগুলোকেও সাজাতে হবে পবিত্র সব কর্ম দ্বারা।
মহান আল্লাহ পাকের দরবারে এই মিনতি করি, হে আল্লাহ! তুমি আমাদেরকে পবিত্র এই রমজানে তোমার রহমত, মাগফিরাত আর নাজাত থেকে আমাদের বঞ্চিত করো না এবং মুসলিম বিশ্বকে সব ধরনের বিপদাপদ থেকে রক্ষা করো।
হে রাব্বুল আলামিন! পুরো রমজানে যেন সুস্থতার সঙ্গে তোমার ইবাদত, তোমার অধিকার এবং তোমার বান্দার অধিকার পুরো দিতে পারি। সেই সঙ্গে তোমার সকল আদেশ-নিষেধ মেনে যেন পবিত্র এই মাসটি কাটাতে পারি, সেই তওফিক দান করো এবং তোমার রহমতের ছায়াতলে আশ্রয় দান করো, আমিন।
লেখক : ইসলামি গবেষক ও কলামিস্ট
আমরা সবাই জানি, পবিত্র মাহে রমজান সিয়াম সাধনার মাস, আল্লাহ রাব্বুল আলামিনকে একান্ত করে পাওয়ার মাস এবং সকল পাপ ক্ষমার মাস। এই বরকত ও আশিসমণ্ডিত মাসকে লাভ করার জন্য প্রত্যেক মুমিন-মুত্তাকি বান্দারা অধীর আগ্রহে অপেক্ষমাণ থাকেন।
পবিত্র এ মাসকে তিন দশকে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম দশক রহমতের, দ্বিতীয় দশক মাগফিরাতের আর তৃতীয় দশক হলো নাজাতের। পবিত্র মাহে রমজান শুরু হয়েছে। এটি হচ্ছে পবিত্র রমজানের প্রথম দশক অর্থাৎ রহমতের দশক। এই দশকে আমাদের সবার মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে এ কামনাই হওয়া উচিত, তাঁর কাছ থেকে যেন আমরা বেশি বেশি রহমত লাভ করতে পারি এবং তাঁর রহমতের চাদরে যেন আমাদেরকে আবৃত করে রাখেন।
পবিত্র এই রমজানে মুমিন-মুত্তাকিদের আধ্যাত্মিক বাগানে ঘটবে নব-বসন্তের সমারোহ। আর স্বর্গীয় আনন্দে মুমিন-মুত্তাকিদের হৃদয়ভুবন আলোকিত হয়ে উঠবে। আল্লাহ পাকের পবিত্র বান্দারা জানেন, এই রহমতের দশকে আল্লাহ তায়ালা রহমতের বৃষ্টির পানি দ্বারা তাদেরকে সিক্ত করবেন এবং তাদের তৃষ্ণা মেটাবেন। আর এ কারণেই আল্লাহ পাকের নেক বান্দারা আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের রহমত থেকে কখনো নিরাশ হোন না এবং সামান্য অজুহাত দেখিয়ে রোজা পরিত্যাগ করেন না।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র মাহে রমজানের গুরুত্ব সম্পর্কে বলেন, ‘হে যারা ইমান এনেছ! তোমাদের জন্য সেভাবে রোজা রাখা বিধিবদ্ধ করা হলো, যেভাবে তোমাদের পূর্ববর্তীদের জন্য বিধিবদ্ধ করা হয়েছিল, যেন তোমরা মুত্তাকি হতে পারো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৩)
পবিত্র কোরআনের ওই আয়াত থেকে যে বিষয়টি স্পষ্ট হয়, তা হলো ধর্মীয় অনুষ্ঠান হিসেবে রোজা অর্থাৎ উপবাসব্রত পালন করা কোনো না কোনো আকারে সকল ধর্মেই ছিল, আছে। অধিকাংশ ধর্মে এবং নিম্ন, মধ্য ও উচ্চ শ্রেণির কৃষ্টির মধ্যে উপবাসব্রত একটি সাধারণভাবে নির্দেশিত ব্যাপার। আর যেখানে এ ধরনের নির্দেশ নেই, সেখানেও প্রাকৃতিক প্রয়োজনের তাগিদে অনেকেই উপবাস করে থাকেন।
সাধুপুরুষ ও দিব্যজ্ঞানীগণের অভিজ্ঞতা থেকে যে বিষয়টি জানা যায়, তা হলো আধ্যাত্মিক উন্নতি ও মনের পবিত্রতা সাধনের জন্য শারীরিক সম্পর্কসমূহ কিছুটা ছিন্ন করা এবং সাংসারিক বন্ধন থেকে কিছুটা মুক্তিলাভ করা একান্তই প্রয়োজন।
তবে ইসলাম এই উপবাসব্রতের মধ্যে নবরূপ, নব অর্থ ও নবতম আধ্যাত্মিক তাৎপর্য আরোপ করেছে। পবিত্র মাহে রমজানের এই রোজাকে অর্থাৎ উপবাস পালনকে ইসলাম পূর্ণমাত্রার আত্মোৎসর্গ মনে করে থাকে। যিনি রোজা পালন করেন, তিনি যে কেবল শরীর রক্ষাকারী খাদ্য পানীয় থেকেই বিরত থাকেন, তা নয় বরং তিনি সন্তানাদি জন্মদান তথা বংশবৃদ্ধির ক্রিয়াকলাপ থেকেও দূরে থাকেন এবং সমস্ত পাপ কাজ থেকেও বিরত থাকেন। তাই যিনি রোজা রাখেন, তিনি তার অসাধারণ আত্মত্যাগের এবং তার প্রস্তুতির কথা আল্লাহ পাককে জানিয়ে দেন আর তার হৃদয় এই ঘোষণাও দেয়, আমি কেবল আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টি লাভের আশায় রোজা রাখছি। এ ছাড়া তার হৃদয় এটাও বলে, যেহেতু আমি আল্লাহর জন্য রোজা রাখছি এবং সকল প্রকার পাপ কাজ থেকে বিরত থাকার অঙ্গীকার করছি, তাই প্রয়োজন বোধে আমি আমার প্রভু ও সৃষ্টিকর্তার খাতিরে আমার সবকিছু, এমনকি আমার জীবন পর্যন্ত কোরবানি করে দিতে দ্বিধাগ্রস্ত হব না।
পবিত্র মাহে রমজান আসে আমাদের জন্য অবারিত ইবাদত-বন্দেগির বাড়তি সুযোগ নিয়ে। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আল্লাহর নেক বান্দারা অন্বেষণ করেন কীভাবে আল্লাহ পাকের নৈকট্য অর্জন করা যায়।
ইসলামে রোজার মাহাত্ম্য অতি ব্যাপক। এই মাহাত্ম্য ও মর্যাদাকে বোঝাতে গিয়ে আমাদের প্রিয় নবী হজরত মোহাম্মদ মোস্তফা (সা.) বলেছেন, ‘প্রতিটি জিনিসের জন্য নির্দিষ্ট দরজা থাকে আর ইবাদতের দরজা হচ্ছে রোজা।’ (জামেউস সগির) তিনি (সা.) আরও বলেছেন, ‘রোজা ঢালস্বরূপ এবং আগুন থেকে রক্ষা পাওয়ার একটি নিরাপদ দুর্গ।’ (মুসনাদ আহমদ বিন হাম্বল) যদিও আমরা সবাই জানি, পবিত্র রমজান বড়ই কল্যাণমণ্ডিত মাস, দোয়ার মাস। তার পরও আমরা অনেকেই এই মাসের ইবাদত-বন্দেগি থেকে গাফেল থাকি। অন্যান্য মাসের মতোই এই পবিত্র মাসটিকে হেলায় কাটিয়ে দিই।
আমরা যারা পবিত্র এই মাসটিতে প্রবেশ করার তওফিক লাভ করেছি, তারা কিন্তু সৌভাগ্যবান। অনেকেই হয়তো আশায় ছিলেন কিন্তু লাভ করতে পারেননি, না ফেরার দেশে চলে গেছেন। তাই আমাদেরকে এ মাসের পুরো ফায়দা অর্জন করতে হবে। আমাদের প্রত্যেকের উচিত হবে, পবিত্র রমজানের মাহাত্ম্য ও গুরুত্ব বুঝে রমজান থেকে কল্যাণমণ্ডিত হওয়া। আমরা যদি হজরত রাসুল করিম (সা.)-এর জীবনে রমজানের দিনগুলোর দিকে লক্ষ করি, তাহলে দেখতে পাই, তিনি (সা.) রমজানে কত বেশি নফল ইবাদত আর দান-খয়রাত করতেন। অন্য সময়ের তুলনায় রমজানে মহানবীর (সা.) ইবাদত আর দান-খয়রাত আরও বেশি গতিলাভ করত আর পবিত্র মাহে রমজানের রাতগুলো মহানবী (সা.) অনেক বেশি ইবাদত-বন্দেগিতে কাটাতেন। মহানবী (সা.)-এর নফল নামাজ আর দোয়ার আহাজারিতে জেগে থাকত নিঝুম রাতগুলো। এ ছাড়া এই মাসে তিনি (সা.) কোরআন শিক্ষা, শেখানো ও শোনার প্রতি অনেক বেশি গুরুত্ব দিতেন।
আমাদের সবার উচিত হবে, এ পবিত্র মাস থেকে পুরোপুরি ফায়দা হাসিল করা, রমজানের কল্যাণরাজি দ্বারা নিজেদের সুশোভিত করা, যেন এ রমজানে কোরআন তেলাওয়াতের গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে ওঠে আমাদের চারপাশ, যেন কোরআনের আলোয় আলোকিত হয় সমগ্র বিশ্ব।
এ ছাড়া তারাবি, তাহাজ্জুদ প্রভৃতি সুন্নত-নফল নামাজ আর দোয়ার মাধ্যমে জাগিয়ে রাখি আমাদের রাতগুলো আর দিনগুলোও যেন কাটাই আল্লাহর স্মরণে। আল্লাহর সঙ্গে যেন আমাদের বিশেষ এক সম্পর্ক সৃষ্টি হয়ে যায় এই রহমতের দশক থেকেই আর পরবর্তীতে যেন আমাদের জীবনে লাভ হয় সেই সৌভাগ্যমণ্ডিত রজনীর। তাই আল্লাহকে লাভ করতে হলে রমজানের প্রথম দিন থেকেই রাতগুলো ইবাদতে জাগ্রত রাখতে হবে আর দিনগুলোকেও সাজাতে হবে পবিত্র সব কর্ম দ্বারা।
মহান আল্লাহ পাকের দরবারে এই মিনতি করি, হে আল্লাহ! তুমি আমাদেরকে পবিত্র এই রমজানে তোমার রহমত, মাগফিরাত আর নাজাত থেকে আমাদের বঞ্চিত করো না এবং মুসলিম বিশ্বকে সব ধরনের বিপদাপদ থেকে রক্ষা করো।
হে রাব্বুল আলামিন! পুরো রমজানে যেন সুস্থতার সঙ্গে তোমার ইবাদত, তোমার অধিকার এবং তোমার বান্দার অধিকার পুরো দিতে পারি। সেই সঙ্গে তোমার সকল আদেশ-নিষেধ মেনে যেন পবিত্র এই মাসটি কাটাতে পারি, সেই তওফিক দান করো এবং তোমার রহমতের ছায়াতলে আশ্রয় দান করো, আমিন।
লেখক : ইসলামি গবেষক ও কলামিস্ট