কানাডার পার্লামেন্টে ২১ ফেব্রুয়ারি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ বিল পাস 

প্রকাশ : ৩১-০৩-২০২৩ ১২:৪৬:৫০ পিএম , অনলাইন ভার্সন
বাংলাদেশ ছাড়া কানাডাই বিশ্বের প্রথম দেশ, যারা ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিল। প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসাবে পালন করতে একটি আইন করেছে কানাডার পার্লামেন্ট। 

৩০ মার্চ (বৃহস্পতিবার) কানাডার হাউজ অব কমন্সে ‘ইন্টারন্যাশনাল মাদার ল্যাঙ্গোয়েজ অ্যাক্ট’ পাস করা হয় বলে অটোয়ায় বাংলাদেশ হাই কমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। 

কানাডার হাউজ অব কমন্সে বাংলাদেশের হাই কমিশনার খলিলুর রহমান, পাশে সেনেটর মবিনা এস জাফর
 
সেখানে বলা হয়, “এই বিল পাসের মাধ্যমে কানাডা এখন থেকে প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি সরকারিভাবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে পালন করবে। এটা বাংলাদেশি-কানাডিয়ানদের জন্য এবং সারা বিশ্বের মাতৃভাষাপ্রেমিদের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।” 

বাংলাদেশ ছাড়া কানাডাই বিশ্বের প্রথম দেশ, যারা ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিল।

ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন অবসানের পর ভারতকে মাঝে রেখে পূর্ব ও পশ্চিমে দুটি অংশ নিয়ে পাকিস্তান নামে যে রাষ্ট্রটি গঠিত হয়েছিল, তাতে শুরুতেই নিপীড়ণের শিকার হয় বাঙালিরা। 

পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে ফুঁসে ওঠে বাঙালি; ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বুকের রক্ত ঢেলে তারা ছিনিয়ে আনে মায়ের ভাষার অধিকার।

এর দুই বছর পর ১৯৫৪ সালের ৭ মে পাকিস্তানের পার্লামেন্ট বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসাবে স্বীকার করে প্রস্তাব গ্রহণ করে। সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি কার্যকর হতে লেগেছিল আরও দুই বছর। 

বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনেই তৈরি হয়েছিল বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের পথ, যে পথ ধরে বাঙালি এগিয়ে যায় স্বাধীনতার সংগ্রামে, পাকিস্তান থেকে আলদা রাষ্ট্র হয়ে একাত্তরে আত্মপ্রকাশ ঘটে বাংলাদেশের।

কানাডার হাউজ অব কমন্সে বাংলাদেশের হাই কমিশনার খলিলুর রহমান, পাশে সেনেটর মবিনা এস জাফর
ভ্যাঙ্কুভারের মাদার ল্যাংগুয়েজ লাভার্স অব দ্য ওয়ার্ল্ড সোসাইটির রফিকুল ইসলাম ও আবদুস সালামের প্রাথমিক আবেদন এবং পরে সরকারের উদ্যোগে ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কোর প্যারিস অধিবেশনে একুশে ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ ঘোষণা করা হয়। ২০০০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে দিবসটি জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোতে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে। 

হাই কমিশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “এই শুভক্ষণে ১৯৯৯ সালে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে ইউনেস্কোর এবং পরবর্তীতে জাতিসংঘের স্বীকৃত আদায়ে মরহুর রফিকুল ইসলাম ও আব্দুস সালাম, এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদানকে আমরা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি।” 

বিলটি পার্লামেন্টে উত্থাপন করেন হাউজ অব কমন্সের সদস্য কেন হার্ডি। এর ওপর আলোচনা ও পাসের সময় বিলটির সমর্থনকারী সেনেটর মবিনা এস জাফর এবং কানাডায় বাংলাদেশের হাই কমিশনার খলিলুর রহমানও উপস্থিত ছিলেন। 

এই বিলটি কানাডার পার্লামেন্টে নেওয়ার ক্ষেত্রে মাদার ল্যাংগুয়েজ লাভার্স অব দ্য ওয়ার্ল্ড সোসাইটির সভাপতি আমিনুল ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। সে জন্য তার প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয় হাই কমিশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে। 

সেখানে বলা হয়, “আমরা আমিনুল ইসলামের অবদানকে বিশেষভাবে স্মরণ করি, যিনি এক দশকের বেশি সময় ধরে বিলটি পাসের জন্য চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। হাই কমিশনার খলিলুর রহমানও এই লক্ষ্য অর্জনে গত দুই বছর ধরে হাউজ অব কমন্স সদস্য ও সেনেটরদের সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করেছেন।” 

হাই কমিশন বলছে, “বিলটি পাস হওয়া ভাষা ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্যের প্রতি কানাডার অঙ্গীকারের প্রমাণ। এই বিলটি স্মরণ করিয়ে দেয় যে ভাষা হল মানুষের পরিচিতি ও সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের অপরিহার্য উপাদান। ভাষার বৈচিত্র্যকে সম্মান করা, রক্ষা করা, বর্ধন করা আমাদের সবার দায়িত্ব।” 

ঠিকানা/এসআর
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041