নিউইয়র্কের টিনএজারদের মধ্যে এখন অনেকেই সংকটকালীন সময়ে আছে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে তাদের একধরনের যুদ্ধ করতে হয়। এর ওপর বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ইন্টারনেট দুনিয়ার সঙ্গে বেশি সময় কাটানো এবং বিভিন্ন ধরনের গেম খেলার কারণে তারা বাস্তবতার চাইতে অনেক দূরে অবস্থান করছে। ইন্টারনেটের বিভিন্ন সাইটে গিয়ে সম্পৃক্ত হয়ে তারা নিজের প্রাত্যহিক ও সামাজিক জীবনে তেমন মনোনিবেশ করতে পারছে না। অনেক সময় নিজের শরীরের যত্ন নেওয়া, খাওয়াদাওয়া, পড়ালেখা, সামাজিকতা ঠিকমতো করতে পারছে না। এগুলো তার ব্যক্তিগত জীবনে অনেক বেশি প্রভাব ফেলছে। ইন্টারনেটের বদৌলতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ভিডিও দেখছে। এই চাপ নিজে নিজে সামলাতে না পেরে এবং বাস্তব জীবনে পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের সঙ্গে তার কষ্ট শেয়ার করতে না পারায় নিজের ভেতরেই কষ্টগুলো জমে থাকছে। এসব কষ্ট থেকে সারাক্ষণ মন-মেজাজ খারাপ থাকছে। এ কারণে ঠিকমতো লেখাপড়া করতে পারছে না। ফলে রেজাল্ট খারাপ করছে। কেউ কেউ ক্লাসে ফেলও করছে। কলেজ ড্রপ আউট কিংবা স্কুল ড্রপ আউট হওয়ার মতো ঘটনাও ঘটছে।
সূত্র জানায়, টিনএজার বয়সে পরিবারের চিরচেনা সন্তানের হঠাৎ পরিবর্তন, যেমন কাউকে না মানা, নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নেওয়া, বাবা-মায়ের পরামর্শ না শোনা, উচ্চস্বরে কথা বলা, সবার সঙ্গে মেজাজ খারাপ করার ঘটনায় মা-বাবা অবাক বনে যান। তারা সন্তানকে কিছু বলতেও পারছেন না আবার বোঝাতেও ব্যর্থ হচ্ছেন। অভিভাবকেরা ভালোর জন্য কিছু করতে বললেও সন্তান মনে করছে তারা ঠিক বলছেন না এবং তারা তার শত্রু। এ নিয়ে পারিবারিক সংকটও তৈরি হচ্ছে। সন্তানের শারীরিক, মানসিক ক্ষতি হওয়া ছাড়াও এসব কারণে বাবা-মায়েরও স্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে। তারাও সন্তানের চিন্তায় অফিসে কাজকর্মে মনোযোগ দিতে পারছেন না। সন্তানের চিন্তায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে তারা অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন। চিন্তা করছেন, তারা কার জন্য এত পরিশ্রম করে কাজ করছেন ও অর্থ উপার্জন করছেন। সন্তান যদি কথা না শোনে তাহলে এত পরিশ্রম করে কী লাভ? আর আমেরিকান ড্রিম পূরণ হবে নাকি স্বপ্ন ভঙ্গ হবে। সব মিলিয়ে করোনা-পরবর্তী সময়ে এই সংকট চরম আকার ধারণ করেছে।
টিনএজারদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে কাজ করে এমন সূত্র জানায়, বিভিন্ন ধরনের মানসিক সমস্যাসহ মনের ওপর চাপ তৈরি হওয়ার কারণগুলো দূর করতে নিউইয়র্ক সিটি, স্টেট ও ফেডারেল থেকে বিভিন্ন ধরনের সহায়তা নেওয়ার জন্য প্রোগ্রাম অফার করা হচ্ছে। কেউ যাতে জীবনের নানামুখী চাপে থেকে নিজের ক্ষতি না করে কিংবা লেখাপড়ার ক্ষতি না করে এবং কোনো ধরনের অপরাধে না জড়ায়। হতাশা ও ব্যর্থতা থেকে আত্মহত্যা করার মতো সিদ্ধান্ত না নেয়। টিনএজার থেকে শুরু করে যেকোনো বয়সের মানুষকে আত্মহত্যার হাত থেকে বাঁচানোর জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা করা হয়েছে স্টেট ও সিটির পক্ষ থেকে।
কোনো মানুষের যদি কোনো ধরনের মানসিক সমস্যা থাকে, তার কোনো কিছুই ভালো না লাগে, হতাশা আসে, নিজের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলে, জীবনের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে, তাহলে তিনি কীভাবে সেখান থেকে ফিরে আসতে পারেন, সে ব্যাপারে ফর্মুলা দেওয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টার মেন্টাল হেলথ সেবার ব্যবস্থা রয়েছে। কেউ চাইলে মানসিক স্বাস্থ্যের সহায়তার জন্য ফোন করতে পারেন। নাম-পরিচয় গোপন রেখেও সহায়তা দেওয়া হবে। কেউ যদি তার সমস্যা মোবাইল থেকে এসএমএস লিখে পাঠান, তারা এর সমাধানও দিচ্ছেন। পাশাপাশি এসব তথ্য তাদের কাছে সর্বোচ্চ তিন মাস থাকবে। তিন মাস পর তা অটোমেটিক্যালি মুছে যায়। এ ক্ষেত্রে শর্ত হচ্ছে, তার বিষয়টি পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানো হবে বলে উল্লেখ রয়েছে।
সূত্র জানায়, অনেক অভিভাবকই আছেন, সন্তানের এসব সমস্যা জিইয়ে রাখেন, লোকে জানবে বলে তারা সমস্যার সমাধান করতে চাইলেও পারেন না। আবার ভালো রিসোর্সও পান না যে তার সন্তানকে নিয়ে সেখানে যাবেন। সন্তানেরাও পরিবারের কারও কাছে তার সমস্যার কথা বলতে চায় না। মনে করে বাবা-মা কী বলবে। তাই এগুলো নিয়ে চুপ করে থাকে। বাইরের মানুষের সঙ্গে টুকটাক কথা বললেও ঘরে একেবারেই কথা বলে না। ফলে সংকট বাড়তেই থাকে।
এসব বিষয়ে কাজ করে, এ রকম একটি সূত্র জানায়, এ ধরনের সমস্যা তারা অনেক পাচ্ছেন, তবে টিনএজার স্টুডেন্টদের মধ্যে তা বেশি। তাদের পরামর্শ বাবা-মাকে এ ব্যাপারে অনেক বেশি সহনশীল হতে হবে। সন্তানকে অভয় দিতে হবে। তার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। কথা বলতে হবে। তার কষ্ট ও সমস্যাটি কী, তা জানতে হবে। প্রয়োজন হলে তার স্কুল কিংবা কলেজের কাউন্সিলরের সঙ্গে কথা বলতে হবে। তারা বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধানে কাজ করেন। কাউন্সিলররা জানেন, একজন স্টুডেন্টের কী ধরনের সহায়তা প্রয়োজন, সে অনুযায়ী তারা পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
ওই সূত্রের ভাষ্য, কোনো মানুষ যখন নানা সমস্যার মধ্যে থাকে, তখন মনে করে তার জীবনে সব শেষ। তখন নিজের জীবনের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলে। তার মধ্যে হতাশা তৈরি হয়। এই হতাশা থেকে মানুষ অনেক কিছু করে ফেলতে পারে। তাই আমরা চেষ্টা করি তাদেরকে সহায়তা করার। কর্মব্যস্ততার কারণে অনেক অভিভাবক তাদের টিনএজার সন্তানদের সময় দিতে পারেন না। কিন্তু সন্তানের স্বার্থে বাবা-মায়ের উচিত যে করেই হোক সন্তানের জন্য সময় বের করা। সমস্যাগ্রস্ত সন্তানদের বাবা-মায়ের উচিত সন্তানের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলা। তাদের সঙ্গে কথা বললে অনেক সমস্যার শুরুতেই সমাধান হতে পারে। জানার চেষ্টা করতে হবে, সন্তানটি কার সঙ্গে মিশছে। কোনো খারাপ সঙ্গ তাকে বিপথগামী করছে কি না। এটাও জানার চেষ্টা করতে হবে, সে কোনো সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে কি না। যদি তেমনটি হয়ে থাকে, তাহলে তাকে সেখান থেকে রক্ষা করার জন্য সব ধরনের উদ্যোগ নিতে হবে। মনে রাখতে হবে, সন্তানের সুখে-দুঃখে পাশে থাকতে হবে। তার স্বপ্নগুলো পূরণ করার জন্য সহায়তা দিতে হবে। তাকে মানসিকভাবে সাপোর্ট দিতে হবে। এ বিষয়ে একজন শিক্ষক বলেন, করোনার পর অনেক সন্তানেরই সমস্যা হয়েছে। ওই সময়ে ইনপারসন স্কুল-কলেজে পড়া না থাকায় অনেকেই রিমোট লার্নিং করেছে। তখন অনেকেই যথাযথভাবে লেখাপড়া করেনি। করোনা-পরবর্তী সময়েও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লেগেছে। করোনার কারণে অনেকেই সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। নতুন করে আর বন্ধুদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করছে না। এসএমএস বার্তার ওপর এবং বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে বার্তা পাঠায়। কিন্তু কথা বলে না। ফলে তারা মানসিকভাবে সমস্যাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য পরিবারের উচিত কাউন্সিলরের সহায়তা এবং ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সমস্যা শুরু হতে যেমন সময় লাগে, তেমনি সমাধান হতেও সময় লাগে। এ ক্ষেত্রে পরিবারের সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। সন্তানকে বেড়াতে নিয়ে যেতে হবে। তাকে স্বপ্নপূরণের জন্য সহায়তা করতে হবে। বিভিন্ন এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে। পাশাপাশি বন্ধু তৈরি করতে হবে, যারা তাকে সামাজিকভাবে মিশতে ও ভালো থাকতে সহায়তা করতে পারে। যারা লেখাপড়ায় খারাপ করছে, তারা তার টিচারের সঙ্গে, কাউন্সিলরের সঙ্গে কথা বলতে পারে। প্রয়োজন হলে ডাক্তারের কাছে গিয়ে সহায়তা নিতে পারে। নিয়মিত কাউন্সেলিং একজন স্টুডেন্টের স্বপ্নপূরণ করার জন্য সহায়ক হবে।
বাংলাদেশি কমিউনিটির সমস্যাগ্রস্ত সন্তানদের নিয়ে কাজ করছে এমন একটি সূত্র জানায়, আমাদের কমিউনিটিতেও কিছু সন্তান এ ধরনের সমস্যার মধ্যে রয়েছে। তাদের সমস্যাগুলো জিইয়ে না রেখে সমাধানের জন্য তার পরিবারকে এগিয়ে আসতে হবে। অনেকেই সমস্যার মধ্যে থাকলেও কাউন্সেলিং করতে চান না। মনে করেন এটা তার প্রয়োজন নেই। কিন্তু যখন কোনো টিনএজারের লেখাপড়ার রেজাল্ট খারাপ হচ্ছে, কারও সঙ্গে মিশছে না, অনলাইনের বিভিন্ন ধরনের ডিভাইস নিয়ে ব্যস্ত থাকছে, ভিডিও দেখছে, কারও কথা শুনছে না; তখন মা-বাবার উচিত ওই সন্তানকে বুঝিয়ে অথবা কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনা।
সূত্র জানায়, টিনএজার বয়সে পরিবারের চিরচেনা সন্তানের হঠাৎ পরিবর্তন, যেমন কাউকে না মানা, নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নেওয়া, বাবা-মায়ের পরামর্শ না শোনা, উচ্চস্বরে কথা বলা, সবার সঙ্গে মেজাজ খারাপ করার ঘটনায় মা-বাবা অবাক বনে যান। তারা সন্তানকে কিছু বলতেও পারছেন না আবার বোঝাতেও ব্যর্থ হচ্ছেন। অভিভাবকেরা ভালোর জন্য কিছু করতে বললেও সন্তান মনে করছে তারা ঠিক বলছেন না এবং তারা তার শত্রু। এ নিয়ে পারিবারিক সংকটও তৈরি হচ্ছে। সন্তানের শারীরিক, মানসিক ক্ষতি হওয়া ছাড়াও এসব কারণে বাবা-মায়েরও স্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে। তারাও সন্তানের চিন্তায় অফিসে কাজকর্মে মনোযোগ দিতে পারছেন না। সন্তানের চিন্তায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে তারা অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন। চিন্তা করছেন, তারা কার জন্য এত পরিশ্রম করে কাজ করছেন ও অর্থ উপার্জন করছেন। সন্তান যদি কথা না শোনে তাহলে এত পরিশ্রম করে কী লাভ? আর আমেরিকান ড্রিম পূরণ হবে নাকি স্বপ্ন ভঙ্গ হবে। সব মিলিয়ে করোনা-পরবর্তী সময়ে এই সংকট চরম আকার ধারণ করেছে।
টিনএজারদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে কাজ করে এমন সূত্র জানায়, বিভিন্ন ধরনের মানসিক সমস্যাসহ মনের ওপর চাপ তৈরি হওয়ার কারণগুলো দূর করতে নিউইয়র্ক সিটি, স্টেট ও ফেডারেল থেকে বিভিন্ন ধরনের সহায়তা নেওয়ার জন্য প্রোগ্রাম অফার করা হচ্ছে। কেউ যাতে জীবনের নানামুখী চাপে থেকে নিজের ক্ষতি না করে কিংবা লেখাপড়ার ক্ষতি না করে এবং কোনো ধরনের অপরাধে না জড়ায়। হতাশা ও ব্যর্থতা থেকে আত্মহত্যা করার মতো সিদ্ধান্ত না নেয়। টিনএজার থেকে শুরু করে যেকোনো বয়সের মানুষকে আত্মহত্যার হাত থেকে বাঁচানোর জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা করা হয়েছে স্টেট ও সিটির পক্ষ থেকে।
কোনো মানুষের যদি কোনো ধরনের মানসিক সমস্যা থাকে, তার কোনো কিছুই ভালো না লাগে, হতাশা আসে, নিজের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলে, জীবনের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে, তাহলে তিনি কীভাবে সেখান থেকে ফিরে আসতে পারেন, সে ব্যাপারে ফর্মুলা দেওয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টার মেন্টাল হেলথ সেবার ব্যবস্থা রয়েছে। কেউ চাইলে মানসিক স্বাস্থ্যের সহায়তার জন্য ফোন করতে পারেন। নাম-পরিচয় গোপন রেখেও সহায়তা দেওয়া হবে। কেউ যদি তার সমস্যা মোবাইল থেকে এসএমএস লিখে পাঠান, তারা এর সমাধানও দিচ্ছেন। পাশাপাশি এসব তথ্য তাদের কাছে সর্বোচ্চ তিন মাস থাকবে। তিন মাস পর তা অটোমেটিক্যালি মুছে যায়। এ ক্ষেত্রে শর্ত হচ্ছে, তার বিষয়টি পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানো হবে বলে উল্লেখ রয়েছে।
সূত্র জানায়, অনেক অভিভাবকই আছেন, সন্তানের এসব সমস্যা জিইয়ে রাখেন, লোকে জানবে বলে তারা সমস্যার সমাধান করতে চাইলেও পারেন না। আবার ভালো রিসোর্সও পান না যে তার সন্তানকে নিয়ে সেখানে যাবেন। সন্তানেরাও পরিবারের কারও কাছে তার সমস্যার কথা বলতে চায় না। মনে করে বাবা-মা কী বলবে। তাই এগুলো নিয়ে চুপ করে থাকে। বাইরের মানুষের সঙ্গে টুকটাক কথা বললেও ঘরে একেবারেই কথা বলে না। ফলে সংকট বাড়তেই থাকে।
এসব বিষয়ে কাজ করে, এ রকম একটি সূত্র জানায়, এ ধরনের সমস্যা তারা অনেক পাচ্ছেন, তবে টিনএজার স্টুডেন্টদের মধ্যে তা বেশি। তাদের পরামর্শ বাবা-মাকে এ ব্যাপারে অনেক বেশি সহনশীল হতে হবে। সন্তানকে অভয় দিতে হবে। তার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। কথা বলতে হবে। তার কষ্ট ও সমস্যাটি কী, তা জানতে হবে। প্রয়োজন হলে তার স্কুল কিংবা কলেজের কাউন্সিলরের সঙ্গে কথা বলতে হবে। তারা বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধানে কাজ করেন। কাউন্সিলররা জানেন, একজন স্টুডেন্টের কী ধরনের সহায়তা প্রয়োজন, সে অনুযায়ী তারা পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
ওই সূত্রের ভাষ্য, কোনো মানুষ যখন নানা সমস্যার মধ্যে থাকে, তখন মনে করে তার জীবনে সব শেষ। তখন নিজের জীবনের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলে। তার মধ্যে হতাশা তৈরি হয়। এই হতাশা থেকে মানুষ অনেক কিছু করে ফেলতে পারে। তাই আমরা চেষ্টা করি তাদেরকে সহায়তা করার। কর্মব্যস্ততার কারণে অনেক অভিভাবক তাদের টিনএজার সন্তানদের সময় দিতে পারেন না। কিন্তু সন্তানের স্বার্থে বাবা-মায়ের উচিত যে করেই হোক সন্তানের জন্য সময় বের করা। সমস্যাগ্রস্ত সন্তানদের বাবা-মায়ের উচিত সন্তানের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলা। তাদের সঙ্গে কথা বললে অনেক সমস্যার শুরুতেই সমাধান হতে পারে। জানার চেষ্টা করতে হবে, সন্তানটি কার সঙ্গে মিশছে। কোনো খারাপ সঙ্গ তাকে বিপথগামী করছে কি না। এটাও জানার চেষ্টা করতে হবে, সে কোনো সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে কি না। যদি তেমনটি হয়ে থাকে, তাহলে তাকে সেখান থেকে রক্ষা করার জন্য সব ধরনের উদ্যোগ নিতে হবে। মনে রাখতে হবে, সন্তানের সুখে-দুঃখে পাশে থাকতে হবে। তার স্বপ্নগুলো পূরণ করার জন্য সহায়তা দিতে হবে। তাকে মানসিকভাবে সাপোর্ট দিতে হবে। এ বিষয়ে একজন শিক্ষক বলেন, করোনার পর অনেক সন্তানেরই সমস্যা হয়েছে। ওই সময়ে ইনপারসন স্কুল-কলেজে পড়া না থাকায় অনেকেই রিমোট লার্নিং করেছে। তখন অনেকেই যথাযথভাবে লেখাপড়া করেনি। করোনা-পরবর্তী সময়েও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লেগেছে। করোনার কারণে অনেকেই সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। নতুন করে আর বন্ধুদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করছে না। এসএমএস বার্তার ওপর এবং বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে বার্তা পাঠায়। কিন্তু কথা বলে না। ফলে তারা মানসিকভাবে সমস্যাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য পরিবারের উচিত কাউন্সিলরের সহায়তা এবং ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সমস্যা শুরু হতে যেমন সময় লাগে, তেমনি সমাধান হতেও সময় লাগে। এ ক্ষেত্রে পরিবারের সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। সন্তানকে বেড়াতে নিয়ে যেতে হবে। তাকে স্বপ্নপূরণের জন্য সহায়তা করতে হবে। বিভিন্ন এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে। পাশাপাশি বন্ধু তৈরি করতে হবে, যারা তাকে সামাজিকভাবে মিশতে ও ভালো থাকতে সহায়তা করতে পারে। যারা লেখাপড়ায় খারাপ করছে, তারা তার টিচারের সঙ্গে, কাউন্সিলরের সঙ্গে কথা বলতে পারে। প্রয়োজন হলে ডাক্তারের কাছে গিয়ে সহায়তা নিতে পারে। নিয়মিত কাউন্সেলিং একজন স্টুডেন্টের স্বপ্নপূরণ করার জন্য সহায়ক হবে।
বাংলাদেশি কমিউনিটির সমস্যাগ্রস্ত সন্তানদের নিয়ে কাজ করছে এমন একটি সূত্র জানায়, আমাদের কমিউনিটিতেও কিছু সন্তান এ ধরনের সমস্যার মধ্যে রয়েছে। তাদের সমস্যাগুলো জিইয়ে না রেখে সমাধানের জন্য তার পরিবারকে এগিয়ে আসতে হবে। অনেকেই সমস্যার মধ্যে থাকলেও কাউন্সেলিং করতে চান না। মনে করেন এটা তার প্রয়োজন নেই। কিন্তু যখন কোনো টিনএজারের লেখাপড়ার রেজাল্ট খারাপ হচ্ছে, কারও সঙ্গে মিশছে না, অনলাইনের বিভিন্ন ধরনের ডিভাইস নিয়ে ব্যস্ত থাকছে, ভিডিও দেখছে, কারও কথা শুনছে না; তখন মা-বাবার উচিত ওই সন্তানকে বুঝিয়ে অথবা কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনা।