
শেখ মুজিব-সর্বকালের সেরা বাঙালির মধ্যে অন্যতম একজন বলে বিশ্বে পরিচিত, স্বীকৃত। সব দেশে সব কালেই রাজনৈতিক দেশনেতাদের আদর্শ, আচরণ এবং দৃষ্টিভঙ্গি সব মানুষের কাছে সমান গ্রহণযোগ্য হয় না। গণতান্ত্রিক ভাবধারায় একজন নেতার আদর্শগত দৃষ্টিভঙ্গির সম্পূর্ণ বিরোধী গোষ্ঠী থাকে, দল থাকে, দ্বন্দ্ব থাকে। সেটাই স্বাভাবিক। শেখ মুজিবেরও ছিল। বিশেষত, তিনি যখন স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান, তখন তাঁর নেতৃত্বের ধরন, নবগঠিত একটি দেশের শাসনপ্রণালি, তার সাংবিধানিক আদর্শ ইত্যাদি নিয়ে নানান ভিন্নমত এবং বিরোধিতা এসেছে। সবচেয়ে প্রবল ছিল ভাষাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন, যার মধ্যে ধর্মীয় সাদৃশ্য অপেক্ষা বাঙালি জাতীয়তাভিত্তিক সাংস্কৃতিক সাদৃশ্যই ছিল অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ, সেই চেতনাকেই মন থেকে গ্রহণ করতে না পারা। সবচেয়ে দুঃখজনক হলো এই, রাজনৈতিকভাবে তার মোকাবিলা না করে সেনা অভ্যুত্থান ঘটল। শেখ মুজিবের মতো বিরল ব্যক্তিত্বের মানুষকে সপরিবারে জঘন্যতম নৃশংসতায় হত্যা করা হলো।
বাংলাদেশ সৃষ্টির পেছনে শেখ মুজিবের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলে ইতিহাসকে মানুষের কাছে বিকৃত করার নিন্দনীয় চেষ্টা চলেছেÑশুধু রাজনৈতিক স্বার্থে। কিন্তু সাধারণ মানুষ? যাদের কোনো রাজনৈতিক স্বার্থ নেই, ক্ষমতার স্বার্থ নেই, তারা কেন ইতিহাসকে ভুলে যাবেন? শেখ মুজিবকে জাতির জনক, বঙ্গবন্ধু আখ্যা তো এমনি এমনি দেওয়া হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের অবিস্মরণীয় জন-জাগরণ কি ৭ই মার্চের ভাষণের প্রতিফলন নয়? তাঁর সেই ভাষণ দেশ-বিদেশের সমস্ত বাঙালিকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। পাকিস্তানপন্থী রাজাকারদের আতঙ্ক ধরিয়ে দিয়েছিল। সেই আতঙ্ক থেকেই তো বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষিত বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীদের গণহারে হত্যা করা হয়। একটা জাতিকে অপমান ও দুর্বল করে দেওয়ার সহজ হাতিয়ার হচ্ছে নারীর ওপর নির্যাতন, অত্যাচার। সেসব নৃশংসতার দিনে শেখ মুজিব ছিলেন একমাত্র মুক্তির প্রতীক। তাঁকে সামনে রেখেই মুক্তিযোদ্ধারা লড়েছে, স্বাধীন মুজিবনগর স্থাপিত হয়েছে। ইন্দিরা গান্ধীর সহযোগিতা নিয়েছেন, কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন, কিন্তু সেনাবাহিনীকে রাখতে চাননি। স্বাধীন দেশের নাগরিকেরা নিজেরাই তাদের দেশ গড়ে তুলবে, প্রতিরক্ষার ব্যবস্থা করবেÑএই ছিল তাঁর বক্তব্য। সেই জোরালো কণ্ঠ, দেশের স্বাধীনতার জন্য জোরালো সাহসের জন্যই তিনি জাতির জনকে পরিণত হয়েছিলেন। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের সকল বাঙালির কাছেই তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধু, বাঙালির আইকন। তিনি জাতির একটা প্রতীকস্বরূপ। তাঁর কন্যা দীর্ঘদিন রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে স্বৈরাচার, দুর্নীতি, স্বজন-পোষণসহ অনেক অভিযোগ, অনেক ক্ষোভ এবং গণরোষে ক্ষমতার অবসান। গণতান্ত্রিক দেশে নাগরিকের ক্ষোভ জন্ম নিলে শাসককে তার ফল ভোগ করতেই হবে। কিন্তু কন্যার অপরাধের কারণে তার পিতাকে কলঙ্কিত করা হবে কেন? শেখ মুজিব আর শেখ হাসিনাকে কি কোনো প্রকারেই এক মানদণ্ডে বিচার করা যায়? পাশাপাশি আসনে বসানো যায়? শেখ মুজিব শুধু হাসিনার পিতা নন, তিনি বাংলাদেশের আপামর কোটি জনতারও জনকের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত। ইতিহাসের অপব্যাখ্যা দিয়ে তাঁর প্রতি ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছে খুব পরিকল্পিতভাবে। তাঁর ভাবমূর্তিকে কলঙ্কিত করা, তাঁর প্রতিকৃতিতে কালিমা লেপন করা, মূর্তি ভাঙা ইত্যাদির দ্বারা আজ বাংলাদেশ নিজের মর্যাদাকেই নিচে নামিয়ে আনছে, কলঙ্কিত করছে। বত্রিশ নাম্বার ধানমন্ডির বাড়ি তাঁর ব্যক্তিগত নিজস্ব বাসভবন নয়, বাংলাদেশের উত্থান-পতনের নানান ইতিহাসের সাক্ষী এই ভবন। তাকে ধূলিসাৎ করে দেশ তার নিজের সৃষ্টির ইতিহাসেরই অমর্যাদা করেছে, যা একপ্রকার নিজস্ব পিতৃসত্তাকেই অস্বীকার করার শামিল।
এই মুহূর্তে দেশ খুব কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের অবস্থা একেবারে দিশেহারা। একই অবস্থা দেশের সাধারণ মানুষের। বহু রকম বিভ্রান্তিকর প্রচার-অপপ্রচারে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত। জেনে কিংবা না জেনে দেশকে বিদেশি মৌলবাদী শক্তির হাতে তুলে দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের মতো এক চিরস্থায়ী অশান্তির দিকে ঠেলে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে মত্ত কিছু মানুষ। বাঙালি জাতি বরাবর নানান আক্রমণের শিকার হয়েছে, পঙ্গু করে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। ধর্ম নয়, জাতি নয়, সম্প্রদায় নয়Ñমানুষের চেয়ে বড়ো কিছু নয়, নহে কিছু মহীয়ানÑজাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই বাণীই ছিল যাঁর আদর্শ। আসুন, আমরা সেই মানুষটির প্রতি যথাযথ মর্যাদা প্রদান করি। রাজনৈতিক উত্থান-পতন থাকবে, ক্ষমতার পটপরিবর্তন হবে, কিন্তু জাতি হিসেবে বাংলাদেশের রূপকার শেখ মুজিবের আসন অপরিবর্তিত থাকবে। দেশের ও বিদেশের সমস্ত বাংলাভাষী মানুষের কাছে আবেদনÑআসুন, আমরা যার যেখানে সামর্থ্য সেই অনুসারে বঙ্গবন্ধুর মর্যাদা রক্ষায় সচেষ্ট হই। বিভ্রান্ত মানুষজনের হিংসার বিরুদ্ধে হিংসা দিয়ে নয়, আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধা দিয়েই তাদের বিভ্রান্তি নিরসনের চেষ্টা করি, জাতির জনকের মর্যাদার অর্থ বাংলাদেশের মর্যাদা, বাংলাদেশবাসীর মর্যাদা।
আমাদের এই প্রচেষ্টার প্রথম এবং অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হচ্ছে শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত স্থান, ভবন, প্রতীক এবং মূর্তির প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের উদ্যোগ নেওয়া। বিকৃত প্রচারে বিভ্রান্ত হয়ে যারা বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে ভুল ধারণা পোষণ করছেন, তাদের সামনে সঠিক বিষয় ও ভাবনাগুলো তুলে ধরা, যাতে বাংলা ও বাঙালি জাতির মর্যাদা ও গৌরবের বিষয়গুলোর প্রতি আমরা শ্রদ্ধা না হারাই। পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশে যারা শেখ মুজিব ও তাঁর আত্মত্যাগকে মর্যাদার দৃষ্টিতে দেখতে ভালোবাসেন, তাঁদের প্রতিও আবেদন থাকবে-বঙ্গবন্ধুর সম্মানজনক স্মৃতি রক্ষার্থে আপনারাও এগিয়ে আসুন। কলকাতায় বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত কারমাইকেল হোস্টেল এবং তদানীন্তন ইসলামিয়া কলেজে (বর্তমানে মৌলানা আজাদ কলেজ) তাঁর প্রতি সম্মান জ্ঞাপনের যথাযোগ্য মর্যাদাপূর্ণ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সে জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃপক্ষের নিকট আমরা কৃতজ্ঞতা পোষণ করি। ভারত তথা পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান শাসন কর্তৃপক্ষকে আমরা অনুরোধ করিÑএই বিভ্রান্তিকর সময়ে বাঙালি জাতির ঐক্যের প্রতীক শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি মর্যাদা প্রদানের উদ্দেশে কলকাতায় প্রকাশ্য কোনো উপযুক্ত স্থানে তাঁর একটি মূর্তি স্থাপন করা হোক। অন্ধ মৌলবাদিতা ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ হবে একটি প্রতীকী অথচ জনমানুষের সামনে সত্যিকারের মানবতাবাদী অসাম্প্রদায়িক চেতনার পক্ষে একটি বার্তা, একটি আহ্বান, যা এই সময়ে অত্যন্ত দরকারি একটি পদক্ষেপ।
-ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফোরামের পক্ষে, বস্টন।
বাংলাদেশ সৃষ্টির পেছনে শেখ মুজিবের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলে ইতিহাসকে মানুষের কাছে বিকৃত করার নিন্দনীয় চেষ্টা চলেছেÑশুধু রাজনৈতিক স্বার্থে। কিন্তু সাধারণ মানুষ? যাদের কোনো রাজনৈতিক স্বার্থ নেই, ক্ষমতার স্বার্থ নেই, তারা কেন ইতিহাসকে ভুলে যাবেন? শেখ মুজিবকে জাতির জনক, বঙ্গবন্ধু আখ্যা তো এমনি এমনি দেওয়া হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের অবিস্মরণীয় জন-জাগরণ কি ৭ই মার্চের ভাষণের প্রতিফলন নয়? তাঁর সেই ভাষণ দেশ-বিদেশের সমস্ত বাঙালিকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। পাকিস্তানপন্থী রাজাকারদের আতঙ্ক ধরিয়ে দিয়েছিল। সেই আতঙ্ক থেকেই তো বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষিত বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীদের গণহারে হত্যা করা হয়। একটা জাতিকে অপমান ও দুর্বল করে দেওয়ার সহজ হাতিয়ার হচ্ছে নারীর ওপর নির্যাতন, অত্যাচার। সেসব নৃশংসতার দিনে শেখ মুজিব ছিলেন একমাত্র মুক্তির প্রতীক। তাঁকে সামনে রেখেই মুক্তিযোদ্ধারা লড়েছে, স্বাধীন মুজিবনগর স্থাপিত হয়েছে। ইন্দিরা গান্ধীর সহযোগিতা নিয়েছেন, কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন, কিন্তু সেনাবাহিনীকে রাখতে চাননি। স্বাধীন দেশের নাগরিকেরা নিজেরাই তাদের দেশ গড়ে তুলবে, প্রতিরক্ষার ব্যবস্থা করবেÑএই ছিল তাঁর বক্তব্য। সেই জোরালো কণ্ঠ, দেশের স্বাধীনতার জন্য জোরালো সাহসের জন্যই তিনি জাতির জনকে পরিণত হয়েছিলেন। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের সকল বাঙালির কাছেই তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধু, বাঙালির আইকন। তিনি জাতির একটা প্রতীকস্বরূপ। তাঁর কন্যা দীর্ঘদিন রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে স্বৈরাচার, দুর্নীতি, স্বজন-পোষণসহ অনেক অভিযোগ, অনেক ক্ষোভ এবং গণরোষে ক্ষমতার অবসান। গণতান্ত্রিক দেশে নাগরিকের ক্ষোভ জন্ম নিলে শাসককে তার ফল ভোগ করতেই হবে। কিন্তু কন্যার অপরাধের কারণে তার পিতাকে কলঙ্কিত করা হবে কেন? শেখ মুজিব আর শেখ হাসিনাকে কি কোনো প্রকারেই এক মানদণ্ডে বিচার করা যায়? পাশাপাশি আসনে বসানো যায়? শেখ মুজিব শুধু হাসিনার পিতা নন, তিনি বাংলাদেশের আপামর কোটি জনতারও জনকের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত। ইতিহাসের অপব্যাখ্যা দিয়ে তাঁর প্রতি ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছে খুব পরিকল্পিতভাবে। তাঁর ভাবমূর্তিকে কলঙ্কিত করা, তাঁর প্রতিকৃতিতে কালিমা লেপন করা, মূর্তি ভাঙা ইত্যাদির দ্বারা আজ বাংলাদেশ নিজের মর্যাদাকেই নিচে নামিয়ে আনছে, কলঙ্কিত করছে। বত্রিশ নাম্বার ধানমন্ডির বাড়ি তাঁর ব্যক্তিগত নিজস্ব বাসভবন নয়, বাংলাদেশের উত্থান-পতনের নানান ইতিহাসের সাক্ষী এই ভবন। তাকে ধূলিসাৎ করে দেশ তার নিজের সৃষ্টির ইতিহাসেরই অমর্যাদা করেছে, যা একপ্রকার নিজস্ব পিতৃসত্তাকেই অস্বীকার করার শামিল।
এই মুহূর্তে দেশ খুব কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের অবস্থা একেবারে দিশেহারা। একই অবস্থা দেশের সাধারণ মানুষের। বহু রকম বিভ্রান্তিকর প্রচার-অপপ্রচারে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত। জেনে কিংবা না জেনে দেশকে বিদেশি মৌলবাদী শক্তির হাতে তুলে দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের মতো এক চিরস্থায়ী অশান্তির দিকে ঠেলে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে মত্ত কিছু মানুষ। বাঙালি জাতি বরাবর নানান আক্রমণের শিকার হয়েছে, পঙ্গু করে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। ধর্ম নয়, জাতি নয়, সম্প্রদায় নয়Ñমানুষের চেয়ে বড়ো কিছু নয়, নহে কিছু মহীয়ানÑজাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই বাণীই ছিল যাঁর আদর্শ। আসুন, আমরা সেই মানুষটির প্রতি যথাযথ মর্যাদা প্রদান করি। রাজনৈতিক উত্থান-পতন থাকবে, ক্ষমতার পটপরিবর্তন হবে, কিন্তু জাতি হিসেবে বাংলাদেশের রূপকার শেখ মুজিবের আসন অপরিবর্তিত থাকবে। দেশের ও বিদেশের সমস্ত বাংলাভাষী মানুষের কাছে আবেদনÑআসুন, আমরা যার যেখানে সামর্থ্য সেই অনুসারে বঙ্গবন্ধুর মর্যাদা রক্ষায় সচেষ্ট হই। বিভ্রান্ত মানুষজনের হিংসার বিরুদ্ধে হিংসা দিয়ে নয়, আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধা দিয়েই তাদের বিভ্রান্তি নিরসনের চেষ্টা করি, জাতির জনকের মর্যাদার অর্থ বাংলাদেশের মর্যাদা, বাংলাদেশবাসীর মর্যাদা।
আমাদের এই প্রচেষ্টার প্রথম এবং অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হচ্ছে শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত স্থান, ভবন, প্রতীক এবং মূর্তির প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের উদ্যোগ নেওয়া। বিকৃত প্রচারে বিভ্রান্ত হয়ে যারা বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে ভুল ধারণা পোষণ করছেন, তাদের সামনে সঠিক বিষয় ও ভাবনাগুলো তুলে ধরা, যাতে বাংলা ও বাঙালি জাতির মর্যাদা ও গৌরবের বিষয়গুলোর প্রতি আমরা শ্রদ্ধা না হারাই। পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশে যারা শেখ মুজিব ও তাঁর আত্মত্যাগকে মর্যাদার দৃষ্টিতে দেখতে ভালোবাসেন, তাঁদের প্রতিও আবেদন থাকবে-বঙ্গবন্ধুর সম্মানজনক স্মৃতি রক্ষার্থে আপনারাও এগিয়ে আসুন। কলকাতায় বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত কারমাইকেল হোস্টেল এবং তদানীন্তন ইসলামিয়া কলেজে (বর্তমানে মৌলানা আজাদ কলেজ) তাঁর প্রতি সম্মান জ্ঞাপনের যথাযোগ্য মর্যাদাপূর্ণ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সে জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃপক্ষের নিকট আমরা কৃতজ্ঞতা পোষণ করি। ভারত তথা পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান শাসন কর্তৃপক্ষকে আমরা অনুরোধ করিÑএই বিভ্রান্তিকর সময়ে বাঙালি জাতির ঐক্যের প্রতীক শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি মর্যাদা প্রদানের উদ্দেশে কলকাতায় প্রকাশ্য কোনো উপযুক্ত স্থানে তাঁর একটি মূর্তি স্থাপন করা হোক। অন্ধ মৌলবাদিতা ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ হবে একটি প্রতীকী অথচ জনমানুষের সামনে সত্যিকারের মানবতাবাদী অসাম্প্রদায়িক চেতনার পক্ষে একটি বার্তা, একটি আহ্বান, যা এই সময়ে অত্যন্ত দরকারি একটি পদক্ষেপ।
-ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফোরামের পক্ষে, বস্টন।