
ঢাকার ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরসহ পুরো বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে নিউইয়র্কে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। গত ৫ ফেব্রুয়ারি বুধবার নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে ডাইভারসিটি প্লাজায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। নিউইয়র্কের প্রবীণ সাংবাদিক, লেখক এবং কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্টরা প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে বলা হয়, ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িটি মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বহন করছে। স্বাধীনতা বিরোধিরা তা মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে বলে সভায় বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ’ ব্যানারে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর, বাঙালির চেতনায় ও মুক্তিযুদ্ধের স্থাপনায় আঘাতের বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াবার এখনই সময়। মুক্তিযুদ্ধের সুতিকাগার হিসেবে পরিচিত ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের এই বাড়িটি ঐতিহাসিক এবং কালের স্বাক্ষী হিসেবে সারা দুনিয়ার মানুষের কাছে পরিচিত ছিল বলে বক্তারা দোষিদের গ্রেফতার করে শাস্তি দেওয়ার আহবান জানান।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগও ডাইভারসিটি প্লাজায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। সংগঠনের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদসহ নেতা-কর্মিরা অংশ নেন। সমাবেশ শেষে এক মিছিল বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের নিন্দা : যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ড. নুরুন নবী এবং সাধারণ সম্পাদক রানা হাসান মাহমুদ গত ৬ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, অবৈধ দখলদার স্বৈরাচার ইউনূসের প্রত্যক্ষ মদদে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূতিকাগার ধানমন্ডির ঐতিহাসিক ৩২ নম্বরের বাড়িটি ভেঙে ফেলেছে। আজ জাতির জীবনে এক কালো দিন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত এই বাড়িটি বাঙালীর ইতিহাসের তীর্থস্থান। এই বাড়ীটি ধ্বংস করে ’৭১ এর পরাজিত শক্তি নিজেরদেরকে বাংলাদেশের গণশত্রু হিসেবে আবারও প্রমাণ করলো। এদের বিরুদ্ধে লড়াই করা এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে শত্রু মুক্ত করা আজ প্রতিটি বাংলাদেশির কর্তব্য।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ বাংলাদেশকে শত্রুমুক্ত করার এই সংগ্রামে জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতিটি নির্দেশ আগের মতই অক্ষরে অক্ষরে পালন করার জন্য বদ্ধপরিকর। জাতীয় বেঈমান, গরীবের রক্তচোষা স্বৈরাচারী ইউনূস এবং তার দখলদার বাহিনীর স্বরূপ বিশ্বাসীর কাছে উন্মোচনে যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রতিটি কর্মী দৃঢ় প্রত্যয়ে শপথ নিচ্ছে।
মুজাহিদ আনসারীর সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন- প্রবীণ সাংবাদিক সৈয়দ মুহম্মদ উল্লাহ. মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত বিশ্বাস, ড. ওবায়দুল্লাহ মামুন, গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক সৈয়দ জাকির আহমেদ রনি, কমরেড জাকির হোসেন বাচ্চু, সংগঠক আলী হাসান কিবরিয়া অনু প্রমুখ। সমাবেশ সমন্বয় করেন সনজীবন কুমার ও সৈয়দ জাকির আহমেদ রনি।
সমাবেশে জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগানে নেতৃত্ব প্রদানকারীদের মধ্যে ছিলেন- গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম যোদ্ধা আল আমিন বাবু, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের যুক্তরাষ্ট্র শাখার সভাপতি আব্দুল কাদের মিয়া, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য আফসার আহমেদ, অজিৎ ভৌমিক, রাজিব আহসান, আওয়ামী লীগ নেতা খালেদুজ্জামান প্রদীপ, দীনেশ মজুমদার, তুহিন মাহফুজ প্রমুখ।
ওয়াশিংটনে সমাবেশ ১৩ ফেব্রুয়ারি : বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর ৬ মাসে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে সক্ষম হননি অধ্যাপক ইউনূস। এমনকি, সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়েও লুটেরা-দুর্বৃত্ত এবং বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের হত্যা, বাড়ি-ঘরে লুটের পর গুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে। প্রকাশ্য দিবালোকে আগাম ঘোষণা দিয়ে এহেন অপকর্মে লিপ্তদের গ্রেপ্তার দূরের কথা, বরং উৎসাহিত করা হচ্ছে। তাই মুহম্মদ ইউনূসের শান্তিতে নোবেল পুরস্কারটি অবিলম্বে কেড়ে নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। এমন আকুতি বিশ্ব সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে উচ্চারিত হয় গত ৯ ফেব্রুয়ারি রোববার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কে আওয়ামী পরিবারের সমাবেশে।
রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডিতে ৩২ নম্বর বাড়িটি আবারো লুটের পর ধ্বংসাবশেষে আগুন ধরিয়ে দেয়ার প্রতিবাদ এবং অবিলম্বে এহেন অপকর্ম বন্ধের দাবিতে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে আওয়ামী লীগ নেতা ড. প্রদীপ কর উপরোক্ত আহবান জানান।
তিনি বলেন, ১৩ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটন ডিসিতে হোয়াইট হাইজে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মোদির বৈঠকের সময় বাইরে আমরা শান্তি সমাবেশ করবো এবং বাংলাদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ট্রাম্পের হস্তক্ষেপ কামনা করবো। কারণ, বাংলাদেশকে সুপরিকল্পিতভাবে জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ধর্মীয় লেবাসে ছাত্র নামধারি জঙ্গিদের নেপথ্যে ছিল বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকারউজ্জামান। তিনি শেখ হাসিনাকে দেশত্যাগে বাধ্য করেছেন এবং তারপরই গণমাধ্যমে বলেছেন যে, বাংলাদেশের জনগণের নিরাপত্তার দায়িত্ব আমার। অথচ ৫ আগস্ট দুপুরের পর থেকে শুরু হয় শেখ হাসিনার সমর্থকদের হত্যা, নির্যাতন, বাড়ি-ঘরে লুটতরাজ ও অগ্নিসংযোগের ভয়ংকর ঘটনাবলি। শতশত পুলিশকে জঙ্গিরা হত্যা করেছে। পুলিশকে থানার ভেতরে রেখে আগুন দিয়ে পুড়ানোর ঘটনাও ঘটেছে। এ ধরনের হিংস্র আচরণে লিপ্তদের দমন করা দূরের কথা নিবৃত করতেও ন্যূনতম ভ’মিকা পালন করেনি সেনাবাহিনী। ড. প্রদীপ কর প্রচন্ড ক্ষোভের সাথে সেনাবাহিনীর রহস্যজনক নিরবতার নিন্দা করে বলেন, যারা নিজ দেশের মানুষের শান্তি রক্ষায় চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছেন, তারা কীভাবে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালন করেন? এ ব্যাপারেও ট্রাম্পের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে।
আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীগণের এই সমাবেশ সঞ্চালনাকালে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী বলেন, রাজপথে আন্দোলনের পাশাপাশি আমাদেরকে ক’টনৈতিক তৎপরতাও অব্যাহত রাখতে হবে। স্মারকলিপি দিতে হবে জাতিসংঘে, কংগ্রেস ও হোয়াইট হাউজে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, মানবাধিকার কাউন্সিল এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচকেও দিতে হবে স্মারকলিপি। এটা সময়ের দাবি।
একমাত্র কন্যার বিয়ে উপলক্ষে সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করেছেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাজী এনাম। তিনি বলেন, অসহনীয় পরিস্থিতিতে নিপতিত গোটা বাংলাদেশ। কারো নিরাপত্তা নেই। অধ্যাপক ইউনূসের জঙ্গিবাহিনীর অত্যাচার-নির্যাতনে অতীষ্ঠ সাধারণ মানুষ। দরিদ্র মানুষের আয় কমেছে। অন্যদিকে বেড়েছে দ্রব্যমূল্য। এহেন অপশাসনের অবসান চাচ্ছেন সকলে।
হাজী এনাম উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরাও চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিনাতিপাত করছেন। তাই আমাদেরকে সরব থাকতে হবে। আন্তর্জাতিক মহলকে কনভিন্স করতে হবে জঙ্গিদের আস্তানায় পরিণত হবার আগেই মুহম্মদ ইউনূসকে অপসারণের জন্যে। বিশেষ করে হোয়াইট হাউজকে জানাতে হবে বাংলাদেশের হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কেউই নিরাপদ নন। টোকাইদের রাজত্ব চলছে। যখোন যাকে খুশি গ্রেফতার-নির্যাতন করা হচ্ছে। হত্যা করা হচ্ছে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের।
এ সময় আরো বক্তব্য দেন নিউইয়র্ক অঞ্চলে সর্ববৃহৎ সামাজিক সংগঠন ‘বাংলাদেশ সোসাইটি’র ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম ভূঁইয়া, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন দেওয়ান ও আবুল হাছিব মামুন, শিক্ষা সম্পাদক এম এ করিম জাহাঙ্গীর, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ বখতিয়ার, উপদেষ্টা হাকিকুল ইসলাম খোকন, শাহীন আজমল, শেখ আতিকুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল ইসলাম লিটন, মো. ইকবাল হোসেন, শেখ জামাল হোসেন, জালালউদ্দিন জলিল, রুমানা আকতার, মোহাম্মদ জাফরউল্লাহ, শাহীন শেখ, স্বীকৃতি বড়ুয়া, নিশাত মৃধা, নুরুজ্জামান সর্দার, মোল্লা মাসুদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাঈদুর রহমান, রফিকুল ইসলাম, টি মোল্লাহ, অধীর কুমার শিকদার, মোহাম্মদ আখতার হোসেন, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট আব্দুল কাদের মিয়া, ম্যানহাটান বরো আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি আবুল কাশেম, ছাত্রলীগ নেতা নাহিদুল সৈকত, হৃদয় মিয়া, স্বপ্নীল খান, ফিদা হোসেন প্রমুখ।
সমাবেশ থেকে জানানো হয় যে, হোয়াইট হাউজের মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্যে নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটস, জ্যামাইকা, ব্রঙ্কস, ব্রুকলিন থেকে ৪টি বাস যাবে। কানেকটিকাট, নিউজার্সি, পেনসিলভেনিয়া, ভার্জিনিয়া, ম্যারিল্যান্ড, বস্টন থেকেও প্রবাসীরা যাবেন। সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত চলবে মানববন্ধনের কর্মসূচি।
সমাবেশে বলা হয়, ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িটি মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বহন করছে। স্বাধীনতা বিরোধিরা তা মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে বলে সভায় বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ’ ব্যানারে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর, বাঙালির চেতনায় ও মুক্তিযুদ্ধের স্থাপনায় আঘাতের বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াবার এখনই সময়। মুক্তিযুদ্ধের সুতিকাগার হিসেবে পরিচিত ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের এই বাড়িটি ঐতিহাসিক এবং কালের স্বাক্ষী হিসেবে সারা দুনিয়ার মানুষের কাছে পরিচিত ছিল বলে বক্তারা দোষিদের গ্রেফতার করে শাস্তি দেওয়ার আহবান জানান।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগও ডাইভারসিটি প্লাজায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। সংগঠনের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদসহ নেতা-কর্মিরা অংশ নেন। সমাবেশ শেষে এক মিছিল বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের নিন্দা : যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ড. নুরুন নবী এবং সাধারণ সম্পাদক রানা হাসান মাহমুদ গত ৬ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, অবৈধ দখলদার স্বৈরাচার ইউনূসের প্রত্যক্ষ মদদে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূতিকাগার ধানমন্ডির ঐতিহাসিক ৩২ নম্বরের বাড়িটি ভেঙে ফেলেছে। আজ জাতির জীবনে এক কালো দিন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত এই বাড়িটি বাঙালীর ইতিহাসের তীর্থস্থান। এই বাড়ীটি ধ্বংস করে ’৭১ এর পরাজিত শক্তি নিজেরদেরকে বাংলাদেশের গণশত্রু হিসেবে আবারও প্রমাণ করলো। এদের বিরুদ্ধে লড়াই করা এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে শত্রু মুক্ত করা আজ প্রতিটি বাংলাদেশির কর্তব্য।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ বাংলাদেশকে শত্রুমুক্ত করার এই সংগ্রামে জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতিটি নির্দেশ আগের মতই অক্ষরে অক্ষরে পালন করার জন্য বদ্ধপরিকর। জাতীয় বেঈমান, গরীবের রক্তচোষা স্বৈরাচারী ইউনূস এবং তার দখলদার বাহিনীর স্বরূপ বিশ্বাসীর কাছে উন্মোচনে যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রতিটি কর্মী দৃঢ় প্রত্যয়ে শপথ নিচ্ছে।
মুজাহিদ আনসারীর সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন- প্রবীণ সাংবাদিক সৈয়দ মুহম্মদ উল্লাহ. মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত বিশ্বাস, ড. ওবায়দুল্লাহ মামুন, গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক সৈয়দ জাকির আহমেদ রনি, কমরেড জাকির হোসেন বাচ্চু, সংগঠক আলী হাসান কিবরিয়া অনু প্রমুখ। সমাবেশ সমন্বয় করেন সনজীবন কুমার ও সৈয়দ জাকির আহমেদ রনি।
সমাবেশে জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগানে নেতৃত্ব প্রদানকারীদের মধ্যে ছিলেন- গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম যোদ্ধা আল আমিন বাবু, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের যুক্তরাষ্ট্র শাখার সভাপতি আব্দুল কাদের মিয়া, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য আফসার আহমেদ, অজিৎ ভৌমিক, রাজিব আহসান, আওয়ামী লীগ নেতা খালেদুজ্জামান প্রদীপ, দীনেশ মজুমদার, তুহিন মাহফুজ প্রমুখ।
ওয়াশিংটনে সমাবেশ ১৩ ফেব্রুয়ারি : বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর ৬ মাসে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে সক্ষম হননি অধ্যাপক ইউনূস। এমনকি, সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়েও লুটেরা-দুর্বৃত্ত এবং বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের হত্যা, বাড়ি-ঘরে লুটের পর গুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে। প্রকাশ্য দিবালোকে আগাম ঘোষণা দিয়ে এহেন অপকর্মে লিপ্তদের গ্রেপ্তার দূরের কথা, বরং উৎসাহিত করা হচ্ছে। তাই মুহম্মদ ইউনূসের শান্তিতে নোবেল পুরস্কারটি অবিলম্বে কেড়ে নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। এমন আকুতি বিশ্ব সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে উচ্চারিত হয় গত ৯ ফেব্রুয়ারি রোববার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কে আওয়ামী পরিবারের সমাবেশে।
রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডিতে ৩২ নম্বর বাড়িটি আবারো লুটের পর ধ্বংসাবশেষে আগুন ধরিয়ে দেয়ার প্রতিবাদ এবং অবিলম্বে এহেন অপকর্ম বন্ধের দাবিতে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে আওয়ামী লীগ নেতা ড. প্রদীপ কর উপরোক্ত আহবান জানান।
তিনি বলেন, ১৩ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটন ডিসিতে হোয়াইট হাইজে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মোদির বৈঠকের সময় বাইরে আমরা শান্তি সমাবেশ করবো এবং বাংলাদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ট্রাম্পের হস্তক্ষেপ কামনা করবো। কারণ, বাংলাদেশকে সুপরিকল্পিতভাবে জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ধর্মীয় লেবাসে ছাত্র নামধারি জঙ্গিদের নেপথ্যে ছিল বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকারউজ্জামান। তিনি শেখ হাসিনাকে দেশত্যাগে বাধ্য করেছেন এবং তারপরই গণমাধ্যমে বলেছেন যে, বাংলাদেশের জনগণের নিরাপত্তার দায়িত্ব আমার। অথচ ৫ আগস্ট দুপুরের পর থেকে শুরু হয় শেখ হাসিনার সমর্থকদের হত্যা, নির্যাতন, বাড়ি-ঘরে লুটতরাজ ও অগ্নিসংযোগের ভয়ংকর ঘটনাবলি। শতশত পুলিশকে জঙ্গিরা হত্যা করেছে। পুলিশকে থানার ভেতরে রেখে আগুন দিয়ে পুড়ানোর ঘটনাও ঘটেছে। এ ধরনের হিংস্র আচরণে লিপ্তদের দমন করা দূরের কথা নিবৃত করতেও ন্যূনতম ভ’মিকা পালন করেনি সেনাবাহিনী। ড. প্রদীপ কর প্রচন্ড ক্ষোভের সাথে সেনাবাহিনীর রহস্যজনক নিরবতার নিন্দা করে বলেন, যারা নিজ দেশের মানুষের শান্তি রক্ষায় চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছেন, তারা কীভাবে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালন করেন? এ ব্যাপারেও ট্রাম্পের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে।
আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীগণের এই সমাবেশ সঞ্চালনাকালে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী বলেন, রাজপথে আন্দোলনের পাশাপাশি আমাদেরকে ক’টনৈতিক তৎপরতাও অব্যাহত রাখতে হবে। স্মারকলিপি দিতে হবে জাতিসংঘে, কংগ্রেস ও হোয়াইট হাউজে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, মানবাধিকার কাউন্সিল এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচকেও দিতে হবে স্মারকলিপি। এটা সময়ের দাবি।
একমাত্র কন্যার বিয়ে উপলক্ষে সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করেছেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাজী এনাম। তিনি বলেন, অসহনীয় পরিস্থিতিতে নিপতিত গোটা বাংলাদেশ। কারো নিরাপত্তা নেই। অধ্যাপক ইউনূসের জঙ্গিবাহিনীর অত্যাচার-নির্যাতনে অতীষ্ঠ সাধারণ মানুষ। দরিদ্র মানুষের আয় কমেছে। অন্যদিকে বেড়েছে দ্রব্যমূল্য। এহেন অপশাসনের অবসান চাচ্ছেন সকলে।
হাজী এনাম উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরাও চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিনাতিপাত করছেন। তাই আমাদেরকে সরব থাকতে হবে। আন্তর্জাতিক মহলকে কনভিন্স করতে হবে জঙ্গিদের আস্তানায় পরিণত হবার আগেই মুহম্মদ ইউনূসকে অপসারণের জন্যে। বিশেষ করে হোয়াইট হাউজকে জানাতে হবে বাংলাদেশের হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কেউই নিরাপদ নন। টোকাইদের রাজত্ব চলছে। যখোন যাকে খুশি গ্রেফতার-নির্যাতন করা হচ্ছে। হত্যা করা হচ্ছে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের।
এ সময় আরো বক্তব্য দেন নিউইয়র্ক অঞ্চলে সর্ববৃহৎ সামাজিক সংগঠন ‘বাংলাদেশ সোসাইটি’র ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম ভূঁইয়া, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন দেওয়ান ও আবুল হাছিব মামুন, শিক্ষা সম্পাদক এম এ করিম জাহাঙ্গীর, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ বখতিয়ার, উপদেষ্টা হাকিকুল ইসলাম খোকন, শাহীন আজমল, শেখ আতিকুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল ইসলাম লিটন, মো. ইকবাল হোসেন, শেখ জামাল হোসেন, জালালউদ্দিন জলিল, রুমানা আকতার, মোহাম্মদ জাফরউল্লাহ, শাহীন শেখ, স্বীকৃতি বড়ুয়া, নিশাত মৃধা, নুরুজ্জামান সর্দার, মোল্লা মাসুদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাঈদুর রহমান, রফিকুল ইসলাম, টি মোল্লাহ, অধীর কুমার শিকদার, মোহাম্মদ আখতার হোসেন, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট আব্দুল কাদের মিয়া, ম্যানহাটান বরো আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি আবুল কাশেম, ছাত্রলীগ নেতা নাহিদুল সৈকত, হৃদয় মিয়া, স্বপ্নীল খান, ফিদা হোসেন প্রমুখ।
সমাবেশ থেকে জানানো হয় যে, হোয়াইট হাউজের মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্যে নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটস, জ্যামাইকা, ব্রঙ্কস, ব্রুকলিন থেকে ৪টি বাস যাবে। কানেকটিকাট, নিউজার্সি, পেনসিলভেনিয়া, ভার্জিনিয়া, ম্যারিল্যান্ড, বস্টন থেকেও প্রবাসীরা যাবেন। সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত চলবে মানববন্ধনের কর্মসূচি।