গ্রহাণুতে মিলল ‘প্রাণের গঠনমূলক উপাদান’, দাবি বিজ্ঞানীদের

প্রকাশ : ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ১৩:০৭ , অনলাইন ভার্সন
এক গ্রহাণুতে ‘প্রাণের গঠনমূলক উপাদানে’র সন্ধান মিলেছে বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। গবেষকরা বলেছেন, ‘বেন্নু’ নামের গ্রহাণু থেকে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার সংগ্রহ করা নমুনায় কেবল প্রাণের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানই মেলেনি, বরং প্রাচীন জলাধারের এক ভূগর্ভস্থ অবশিষ্টাংশও পাওয়া গেছে। এসব অনুসন্ধান থেকে জোরালো ইঙ্গিত মেলে, পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব এসেছিল সম্ভবত আমাদের গ্রহে আছড়ে পড়া কোনো গ্রহাণু থেকে। সেইসব উপাদানে পানি থাকতে পারে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট। আর প্রাণধারণে অতি প্রয়োজনীয় হচ্ছে পানি।
“আর এসব উপাদান থেকে প্রাণ তৈরির বিভিন্ন ধাপের জন্য এ ধরনের পরিবেশ গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে,” বলেছেন এ গবেষণার অন্যতম প্রধান লেখক ও ‘স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশন’-এর টিম ম্যাককয়।

২০২৩ সালে পৃথিবীর কাছাকাছি গ্রহাণু বেন্নু থেকে একশ ২২ গ্রাম ধূলিকণা ও নুড়িপাথর কুড়িয়ে আনে নাসার ‘ওসিরিস-রেক্স’ মহাকাশযান।

সাড়ে[ চারশ কোটি বছর আগে সৌরজগতের গঠনের অবশিষ্টাংশ এ বেন্নু গ্রহাণুর মূল্যবান কালো দানার সামান্য অংশ আলাদাভাবে দেওয়া হয়েছিল দুটি গবেষণা দলকে। তাদের এ গবেষণাপত্রটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘নেচার’ ও ‘নেচার অ্যাস্ট্রোনমি জার্নাল’-এ।

পরিমাণে অল্প হলেও এটি সোডিয়াম সমৃদ্ধ বিভিন্ন খনিজ পদার্থ, অ্যামিনো অ্যাসিড, অ্যামোনিয়া আকারে নাইট্রোজেন, এমনকি জেনেটিক কোডের কিছু অংশের উপস্থিতি থাকলে তা নিশ্চিত করার জন্য যথেষ্ট।

বেন্নুতে পাওয়া কিছু লবণের সঙ্গে মিল রয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ার মোহাভি মরুভূমি ও আফ্রিকার সাহারার শুষ্ক হ্রদের তলদেশে পাওয়া লবণের সঙ্গে। পৃথিবীর এ অঞ্চলে উল্কাপিণ্ড আছড়ে পড়লে সেখানে এমন উপাদান রয়ে যেতে পারে বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের।

“এ আবিষ্কারটি কেবল গ্রহাণু থেকে সরাসরি সংগ্রহ করা নমুনা বিশ্লেষণের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। এরপর পৃথিবীতে সাবধানে এগুলো সংরক্ষণ করেছেন বিজ্ঞানীরা,” বলেছেন ‘ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সে টোকিও’-এর ইয়াসুহিতো সেকিন। এ গবেষণার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না তিনি।
‘ন্যাশনাল মিউজিয়াম অফ ন্যাচারাল হিস্ট্রি’র উল্কাপিণ্ডের কিউরেটর ম্যাককয় বলেছেন, সোডিয়ামসমৃদ্ধ লবণাক্ত পানি বা লবণাক্ত পরিবেশের সঙ্গে প্রাণের উপাদানের সংমিশ্রণ ঘটানোই ‘আসলে প্রাণ তৈরির পথ’।

“এসব প্রক্রিয়া সম্ভবত ঘটেছিল অনেক আগে। যা আমাদের ধারণার চেয়েও অনেক বেশি বড় পরিসরে ছিল।”

নাসার ড্যানিয়েল গ্লাভিন বলেছেন, সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হচ্ছে, এতে রয়েছে অ্যামোনিয়াসহ নাইট্রোজেনের প্রাচুর্য।

বেন্নুর নমুনায় পাওয়া সব ধরনের জৈব অণু উল্কাপিণ্ডে আগে শনাক্ত করা হলেও গ্লাভিন বলছেন, বেন্নু থেকে পাওয়া এসব নমুনা অকাট্য, কারণ এগুলো “মহাকাশে গঠিত প্রকৃত বহির্জাগতিক জৈব পদার্থ, যা পৃথিবী থেকে দূষণের ফলে তৈরি হয়নি, বরং মহাকাশেই তৈরি হয়েছে এগুলো।”

আধা কিলোমিটার আকারের এ বেন্নু মূলত অনেক বড় আকারের গ্রহাণুর অংশ ছিল, যা অন্যান্য মহাকাশ শিলার মাধ্যমে আঘাত পেয়ে ছিটকে গেছে।

এ সর্বশেষ গবেষণার ফলাফল থেকে ইঙ্গিত মেলে, গুহাণুর মূল দেহে হ্রদ বা সমুদ্রের বিস্তৃত এক ভূগর্ভস্থ নেটওয়ার্ক ছিল, যার পানি বাষ্পীভূত হয়ে রেখে গেছে লবণাক্ততার চিহ্ন।

‘ইউনিভার্সিটি অফ অ্যারিজোনা’র প্রধান বিজ্ঞানী ও এ গবেষণার গবেষক এবং এ মিশনের প্রধান দান্তে লরেত্তা বলেছেন, প্রাথমিক গবেষণার অংশ হিসেবে বেন্নুর টুকরো বিশ্লেষণ করছে বিশ্বজুড়ে থাকা ৬০টি ল্যাব।
বিজ্ঞানীরা জোর দিয়ে বলেছেন, বেন্নুর এসব নমুনা ভালভাবে বোঝার জন্য আরও পরীক্ষার প্রয়োজন। সেইসঙ্গে আরও গ্রহাণু ও ধূমকেতুর নমুনা পৃথিবীতে নিয়ে আসা দরকার। এ বছর গ্রহাণু নমুনা আনার জন্য এক অভিযান চালুর পরিকল্পনা করছে চীন।

সবশেষে “আমরা কি একা?” এমন প্রশ্ন করেন ম্যাককয় এবং বলেন, “এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করছি আমরা।”

ঠিকানা/এসআর
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078