২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচনে বাংলাদেশ পার্লামেন্টের ৩০০টি আসনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ২২৪টি আসনে জয়লাভ করে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করে। নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে একই দলের ৬২ জন এবং জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য দল পায় ১৪টি আসন। নামে বিভিন্ন দল হলেও এসব দলের প্রাপ্ত আসনগুলো আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে বণ্টিত হয়। সমঝোতার অংশ হিসেবে এসব আসনে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কোনো প্রার্থী দেওয়া হয়নি। সেই হিসাবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সব সদস্যই ছিলেন সরকারি দল সমর্থিত এবং প্রকৃত অর্থে সেই সংসদে কোনো বিরোধী সংসদ সদস্য ছিলেন না, যে কারণে সেই সংসদ ছিল একদলীয় সংসদ। শুধু লোক দেখানোর খাতিরে সংসদে জাতীয় পার্টিকে বিরোধী দলের মর্যাদা দেওয়া হয়।
২০২৪ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক মিডিয়া আল-জাজিরায় ‘The Minister’s Millions’ শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বছরে ১৩ হাজার ডলার বেতনের বাংলাদেশের সাবেক এক মন্ত্রী কর্তৃক যুক্তরাজ্যে ৩৬০টিসহ আরও কয়েকটি শহরে বাড়ি ক্রয়ের চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ পায়। যুক্তরাজ্য ছাড়া অন্য যেসব শহরে তার বাড়ি ক্রয়ের তথ্য উঠে আসে, সেগুলো হলো দুবাই, সিঙ্গাপুর, কুয়ালালামপুর ও নিউইয়র্ক। বর্তমান বাজারে ওই বেতনে পরিবারের সব দৈনন্দিন ও অন্যান্য ব্যয় মিটিয়ে কীভাবে এত বিপুলসংখ্যক বাড়ি ক্রয় করা সম্ভব-সেটা ভাবার বিষয় বৈকি।
যে মন্ত্রীর কথা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, তিনি হলেন স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভার সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। চট্টগ্রামের আনোয়ারা থেকে নির্বাচিত সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বাবা মরহুম আখতারুজ্জামান চৌধুরীও ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও মন্ত্রী। তিনি বেসরকারি খাতে প্রতিষ্ঠিত ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের মালিক। ব্যাপক দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ পাচার ছাড়া এত বিপুলসংখ্যক বাড়িঘরের মালিক হওয়া যে কোনোভাবেই সম্ভব নয়, সেটা একজন শিশুও জানে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সাল থেকে যুক্তরাজ্যে তার বাড়ি কেনার মহাযাত্রা শুরু হয়, যা ২০১৯ সালে মন্ত্রী হওয়ার পর ব্যাপক গতি পায়। আল-জাজিরাকে তিনি গর্বভরে জানান, তার পিতা শেখ হাসিনার খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন এবং তিনিও তার ব্যতিক্রম নন। হাসিনা হলেন তার বস এবং যুক্তরাজ্যে তার ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কে হাসিনা পূর্ণ ওয়াকিবহাল আছেন। বর্তমানে সাইফুজ্জামান লন্ডনে ১৪ মিলিয়ন ডলারে কেনা এক বিলাসবহুল বাড়িতে থাকছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এতে আরও বলা হয়, রোলস রয়েলসহ একাধিক দামি গাড়ি ছাড়াও তিনি দামি স্যুট ও কুমিরের চামড়ার তৈরি জুতা পরেন।
বাংলাদেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে বিগত বছরগুলোতে আর্থিক খাতে দুর্নীতির তথ্য উদ্্ঘাটনের জন্য কমিটি কর্তৃক সম্প্রতি প্রকাশিত শ্বেতপত্রে বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারের তথ্য বেরিয়ে এসেছে। সাইফুজ্জামান চৌধুরীর দুর্নীতি তথা অর্থ পাচারের ঘটনা দুর্নীতির মহাসিন্ধুতে কয়েক ফোঁটা জলবিন্দু মাত্র।
শেখ হাসিনা নিজেই যেখানে স্বীকার করেছেন তার পিয়ন ৪০০ কোটি টাকার মালিক এবং সে হেলিকপ্টার দিয়ে যাতায়াত করে, সেখানে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর মতো রাঘাব-বোয়ালদের দুর্নীতি যে পর্বতসম হবে, তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
শেখ হাসিনা, সালমান এফ রহমান, সাবের হোসেন চৌধুরী, বেনজীর আহমদ (সাবেক আইজিপি), জেনারেল (অব.) আজিজ আহমদ (সাবেক সেনাপ্রধান), মতিউর রহমান (জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক কর্মকর্তা), লিয়াকত আলী লাকী (সাবেক ডিজি, শিল্পকলা একাডেমি) প্রমুখসহ অন্যান্য অসংখ্য অনুরূপ রাঘব-বোয়ালের কথা না হয় বাদই দেওয়া গেল।
বাংলাদেশকে উন্নয়নের সড়কে ধাবমান করে ইউরোপ-আমেরিকার মতো একটি দেশ উপহার দেওয়ায় শেখ হাসিনার গালগল্পের সবকিছুই ছিল দেশের মানুষকে ধোঁকা ও বোকা বানিয়ে নিজের ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের পকেট ভারী করার একটি ব্লুপ্রিন্ট। এই ব্লুপ্রিন্টের একমাত্র লক্ষ্য ছিল, নিজের ক্ষমতাকে আরও বহু বছর ধরে সুরক্ষিত রাখতে যেসব ব্যক্তি সহায়তা করতে পারবেন, তাদেরকে দুর্নীতির সুযোগ করে দিয়ে তাদেরকে হাতে রাখা, যাতে অন্য কেউ তার ক্ষমতার প্রতি হুমকি (Threat) হয়ে দাঁড়াতে না পারে।
ঢাকার ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারে সম্প্রতি দুদকের বরাত দিয়ে হাসিনা ও তার পুত্র জয় কর্তৃক যুক্তরাষ্ট্রে ৩০০ মিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগ নিয়ে দুদক তদন্ত করছে বলে বলা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের তদন্তকারী সংস্থা এফবিআইয়ের প্রাথমিক তদন্তে হাসিনা ও জয় কর্তৃক টাকা পাচারের তথ্য পাওয়া গেছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়। ব্রিটিশ টেরিটরি কেম্যান আইল্যান্ড ও হংকংয়ের বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ওই টাকা পাচার করা হয় বলে জানানো হয়। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, মার্কিন জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র ট্রায়াল অ্যাটর্নি লিন্ডা স্যামুয়েলস এফবিআইকে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৩০০ মিলিয়ন ডলার জমা হওয়ার তথ্য জানান।
দুর্নীতি কমবেশি সব দেশেই হয়। কিন্তু বিগত দেড় দশকে বাংলাদেশের জনগণের অর্থের সঙ্গে যে মাত্রায় পুকুরচুরির ঘটনা সংঘটিত হয়েছে, তার তুলনা বিরল। যে কারণে বাংলাদেশের জনৈক রাজনৈতিক বিশ্লেষক হাসিনা ও দুর্নীতি সমার্থক (Synonymous) বলে মন্তব্য করেছেন। পাপ বাপকেও ছাড়ে না, এই প্রবাদ বাক্যটি যে নেহাত কথার কথা নয়, তার সত্যতা প্রতিষ্ঠার জন্য শেখ হাসিনা ও তার দুর্নীতিবাজ দোসরদের আইনের আওতায় এনে তাদের উপযুক্ত বিচার এবং সেই মোতাবেক শাস্তি প্রদান করা আবশ্যক বলে মনে করি। এটা হলে আগামী দিনে দুর্নীতি একেবারে নির্মূল করা সম্ভব না হলেও তা বহুলাংশে সীমিত (minimize) করা যাবে বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি।
লেখক : কলামিস্ট
২০২৪ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক মিডিয়া আল-জাজিরায় ‘The Minister’s Millions’ শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বছরে ১৩ হাজার ডলার বেতনের বাংলাদেশের সাবেক এক মন্ত্রী কর্তৃক যুক্তরাজ্যে ৩৬০টিসহ আরও কয়েকটি শহরে বাড়ি ক্রয়ের চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ পায়। যুক্তরাজ্য ছাড়া অন্য যেসব শহরে তার বাড়ি ক্রয়ের তথ্য উঠে আসে, সেগুলো হলো দুবাই, সিঙ্গাপুর, কুয়ালালামপুর ও নিউইয়র্ক। বর্তমান বাজারে ওই বেতনে পরিবারের সব দৈনন্দিন ও অন্যান্য ব্যয় মিটিয়ে কীভাবে এত বিপুলসংখ্যক বাড়ি ক্রয় করা সম্ভব-সেটা ভাবার বিষয় বৈকি।
যে মন্ত্রীর কথা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, তিনি হলেন স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভার সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। চট্টগ্রামের আনোয়ারা থেকে নির্বাচিত সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বাবা মরহুম আখতারুজ্জামান চৌধুরীও ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও মন্ত্রী। তিনি বেসরকারি খাতে প্রতিষ্ঠিত ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের মালিক। ব্যাপক দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ পাচার ছাড়া এত বিপুলসংখ্যক বাড়িঘরের মালিক হওয়া যে কোনোভাবেই সম্ভব নয়, সেটা একজন শিশুও জানে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সাল থেকে যুক্তরাজ্যে তার বাড়ি কেনার মহাযাত্রা শুরু হয়, যা ২০১৯ সালে মন্ত্রী হওয়ার পর ব্যাপক গতি পায়। আল-জাজিরাকে তিনি গর্বভরে জানান, তার পিতা শেখ হাসিনার খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন এবং তিনিও তার ব্যতিক্রম নন। হাসিনা হলেন তার বস এবং যুক্তরাজ্যে তার ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কে হাসিনা পূর্ণ ওয়াকিবহাল আছেন। বর্তমানে সাইফুজ্জামান লন্ডনে ১৪ মিলিয়ন ডলারে কেনা এক বিলাসবহুল বাড়িতে থাকছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এতে আরও বলা হয়, রোলস রয়েলসহ একাধিক দামি গাড়ি ছাড়াও তিনি দামি স্যুট ও কুমিরের চামড়ার তৈরি জুতা পরেন।
বাংলাদেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে বিগত বছরগুলোতে আর্থিক খাতে দুর্নীতির তথ্য উদ্্ঘাটনের জন্য কমিটি কর্তৃক সম্প্রতি প্রকাশিত শ্বেতপত্রে বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারের তথ্য বেরিয়ে এসেছে। সাইফুজ্জামান চৌধুরীর দুর্নীতি তথা অর্থ পাচারের ঘটনা দুর্নীতির মহাসিন্ধুতে কয়েক ফোঁটা জলবিন্দু মাত্র।
শেখ হাসিনা নিজেই যেখানে স্বীকার করেছেন তার পিয়ন ৪০০ কোটি টাকার মালিক এবং সে হেলিকপ্টার দিয়ে যাতায়াত করে, সেখানে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর মতো রাঘাব-বোয়ালদের দুর্নীতি যে পর্বতসম হবে, তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
শেখ হাসিনা, সালমান এফ রহমান, সাবের হোসেন চৌধুরী, বেনজীর আহমদ (সাবেক আইজিপি), জেনারেল (অব.) আজিজ আহমদ (সাবেক সেনাপ্রধান), মতিউর রহমান (জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক কর্মকর্তা), লিয়াকত আলী লাকী (সাবেক ডিজি, শিল্পকলা একাডেমি) প্রমুখসহ অন্যান্য অসংখ্য অনুরূপ রাঘব-বোয়ালের কথা না হয় বাদই দেওয়া গেল।
বাংলাদেশকে উন্নয়নের সড়কে ধাবমান করে ইউরোপ-আমেরিকার মতো একটি দেশ উপহার দেওয়ায় শেখ হাসিনার গালগল্পের সবকিছুই ছিল দেশের মানুষকে ধোঁকা ও বোকা বানিয়ে নিজের ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের পকেট ভারী করার একটি ব্লুপ্রিন্ট। এই ব্লুপ্রিন্টের একমাত্র লক্ষ্য ছিল, নিজের ক্ষমতাকে আরও বহু বছর ধরে সুরক্ষিত রাখতে যেসব ব্যক্তি সহায়তা করতে পারবেন, তাদেরকে দুর্নীতির সুযোগ করে দিয়ে তাদেরকে হাতে রাখা, যাতে অন্য কেউ তার ক্ষমতার প্রতি হুমকি (Threat) হয়ে দাঁড়াতে না পারে।
ঢাকার ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারে সম্প্রতি দুদকের বরাত দিয়ে হাসিনা ও তার পুত্র জয় কর্তৃক যুক্তরাষ্ট্রে ৩০০ মিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগ নিয়ে দুদক তদন্ত করছে বলে বলা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের তদন্তকারী সংস্থা এফবিআইয়ের প্রাথমিক তদন্তে হাসিনা ও জয় কর্তৃক টাকা পাচারের তথ্য পাওয়া গেছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়। ব্রিটিশ টেরিটরি কেম্যান আইল্যান্ড ও হংকংয়ের বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ওই টাকা পাচার করা হয় বলে জানানো হয়। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, মার্কিন জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র ট্রায়াল অ্যাটর্নি লিন্ডা স্যামুয়েলস এফবিআইকে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৩০০ মিলিয়ন ডলার জমা হওয়ার তথ্য জানান।
দুর্নীতি কমবেশি সব দেশেই হয়। কিন্তু বিগত দেড় দশকে বাংলাদেশের জনগণের অর্থের সঙ্গে যে মাত্রায় পুকুরচুরির ঘটনা সংঘটিত হয়েছে, তার তুলনা বিরল। যে কারণে বাংলাদেশের জনৈক রাজনৈতিক বিশ্লেষক হাসিনা ও দুর্নীতি সমার্থক (Synonymous) বলে মন্তব্য করেছেন। পাপ বাপকেও ছাড়ে না, এই প্রবাদ বাক্যটি যে নেহাত কথার কথা নয়, তার সত্যতা প্রতিষ্ঠার জন্য শেখ হাসিনা ও তার দুর্নীতিবাজ দোসরদের আইনের আওতায় এনে তাদের উপযুক্ত বিচার এবং সেই মোতাবেক শাস্তি প্রদান করা আবশ্যক বলে মনে করি। এটা হলে আগামী দিনে দুর্নীতি একেবারে নির্মূল করা সম্ভব না হলেও তা বহুলাংশে সীমিত (minimize) করা যাবে বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি।
লেখক : কলামিস্ট