তখন স্কুলে পড়ি। একটি বাংলা ছবি দেখি। ছবিটির নাম অশিক্ষিত। চমৎকার ছবি। ছবিটির একটি গানের দুটি লাইন এ রকম : ‘মাস্টার সাব আমি নাম দস্তখত শিখতে চাই, কোনো দিন কেউ যেন বলতে না পারে তোমার ছাত্রের বুদ্ধি নাই।’
গানের কথাগুলো অর্থ বহন করে। সম্পূর্ণ গানের কথাগুলোতে একটি মেসেজ আছে। ছাত্রের অধিকারলিপি। অক্ষর জ্ঞানার্জন করবে। শিক্ষক সকাতরে শিখিয়ে দিচ্ছেন। বুঝিয়ে দিচ্ছেন। ছাত্র-শিক্ষকের চুপিচুপি পাঠশালা। শিক্ষকের মানবিক স্নেহ জাগে। তাদের সম্পর্কÑনাড়ির টান-প্রকাণ্ড ভালোবাসা। অনেক আগের ছবি। তখন সমাজকে অনুপ্রাণিত করে। অনেকেই অক্ষরজ্ঞান শুরু করে। অনেকেই হাত বাড়িয়ে দেয়। ছবির পরিচালককে আজও আমি কৃতজ্ঞতা জানাই।
সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা। মেয়েটির নাম মুনতাহা। বয়স পাঁচ-ছয় বছর (যদি ভুল না হয়)। ফুটফুটে শিশু। তাকে নিয়ে লিখব? কলম চলছে না। আমি ব্যক্তিগতভাবে ভাষাহারা, বাক্যহীনা, নিষ্পাপ শিশু। ছবিটি দেখতে পারি না। শিশুটির বাবা-মায়ের কথাও মনে হয়।
অশিক্ষিত ছবিটির সঙ্গে এই ঘটনা মিলিয়ে দেখি। আকাশ-জমিন পার্থক্য। যেখানে রহমত একজন বয়স্ক ছাত্র। আর শিক্ষক ৯-১০ বছর। কী মধুর সে সম্পর্ক। কী আত্মিক সম্পর্ক।
যদিও ছবির গল্প। ছবি তো মানুষের কথা বলে। সমাজের কথা বলে।
সমাজের একটি উদাহরণ থেকে আমরা শিক্ষা নিই। আসলে চাইলেই শিক্ষক হওয়া যায় না। যে কেউ শিক্ষা দিতেও পারবেন না। পরিবারের সাবধানতা, নিরাপত্তা এসব প্রশ্ন চলে আসে। দূরত্ব বজায় রেখে চলতে হবে। পরিবারের নিরাপত্তার দায়িত্ব সর্বপ্রথম।
সহজ-সরল দুটি পরিবার। প্রতিবেশী মেয়েটি শিক্ষিকা। আসলে ৩০-৪০ বছরের আগের সমাজ আর এখনকার সমাজচিত্র ভিন্ন। আস্থা-বিশ্বাস-সততা এই বিশ্লেষণগুলো খুব কম দেখা যায়। মানুষ ভরসা ও আস্থার জায়গাটি হারিয়ে ফেলতে বসেছে।
শিশু কোথায় ভালো থাকবে? কার হেফাজতে থাকবে? কোথায় নিরাপদ থাকবে? এসব ভাবনা নিশ্চিত হতে হবে। এসব বিষয় যত বেশি ভাবা যাবে, তত মঙ্গল। মানুষ মানুষের অবলম্বন। এসব কল্যাণ কামনাÑতিন-চার যুগ আগে দেখা যেত। এখনকার সমাজে কখনো কখনো দুষ্প্রাপ্য।
ফিরে আসি সেখানে। যে মেয়েটি শিশুটিকে পড়াতেন, ছোটখাটো অভিযোগ ছিল। নিষ্পাপ শিশুটির ওপর আক্রোশ কেন? সে রহস্য বুঝি না। হতে পারে সমাজের অতি সাধারণ মেয়ে।
শিশু মায়ের বুকে থাকবে। ঘুমপাড়ানির গান শুনবে। এমনটি না হয়ে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
মেয়েটি কি অসুস্থ?
মেয়েটি কি পাগল?
বিকৃত মানসিকতা?
অথবা আরও অন্য কিছু?
কেন এই বীভৎসতা?
যে শিশুকে ভালোবাসতে জানে না, সে হিংস্র হায়েনা।
যে শিশুকে ভালোবাসতে জানে না, সে বাঘিনী?
অথবা হতে পারে ভিন্ন গ্রহের অমানুষ।
লেখক : ঢাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী।
গানের কথাগুলো অর্থ বহন করে। সম্পূর্ণ গানের কথাগুলোতে একটি মেসেজ আছে। ছাত্রের অধিকারলিপি। অক্ষর জ্ঞানার্জন করবে। শিক্ষক সকাতরে শিখিয়ে দিচ্ছেন। বুঝিয়ে দিচ্ছেন। ছাত্র-শিক্ষকের চুপিচুপি পাঠশালা। শিক্ষকের মানবিক স্নেহ জাগে। তাদের সম্পর্কÑনাড়ির টান-প্রকাণ্ড ভালোবাসা। অনেক আগের ছবি। তখন সমাজকে অনুপ্রাণিত করে। অনেকেই অক্ষরজ্ঞান শুরু করে। অনেকেই হাত বাড়িয়ে দেয়। ছবির পরিচালককে আজও আমি কৃতজ্ঞতা জানাই।
সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা। মেয়েটির নাম মুনতাহা। বয়স পাঁচ-ছয় বছর (যদি ভুল না হয়)। ফুটফুটে শিশু। তাকে নিয়ে লিখব? কলম চলছে না। আমি ব্যক্তিগতভাবে ভাষাহারা, বাক্যহীনা, নিষ্পাপ শিশু। ছবিটি দেখতে পারি না। শিশুটির বাবা-মায়ের কথাও মনে হয়।
অশিক্ষিত ছবিটির সঙ্গে এই ঘটনা মিলিয়ে দেখি। আকাশ-জমিন পার্থক্য। যেখানে রহমত একজন বয়স্ক ছাত্র। আর শিক্ষক ৯-১০ বছর। কী মধুর সে সম্পর্ক। কী আত্মিক সম্পর্ক।
যদিও ছবির গল্প। ছবি তো মানুষের কথা বলে। সমাজের কথা বলে।
সমাজের একটি উদাহরণ থেকে আমরা শিক্ষা নিই। আসলে চাইলেই শিক্ষক হওয়া যায় না। যে কেউ শিক্ষা দিতেও পারবেন না। পরিবারের সাবধানতা, নিরাপত্তা এসব প্রশ্ন চলে আসে। দূরত্ব বজায় রেখে চলতে হবে। পরিবারের নিরাপত্তার দায়িত্ব সর্বপ্রথম।
সহজ-সরল দুটি পরিবার। প্রতিবেশী মেয়েটি শিক্ষিকা। আসলে ৩০-৪০ বছরের আগের সমাজ আর এখনকার সমাজচিত্র ভিন্ন। আস্থা-বিশ্বাস-সততা এই বিশ্লেষণগুলো খুব কম দেখা যায়। মানুষ ভরসা ও আস্থার জায়গাটি হারিয়ে ফেলতে বসেছে।
শিশু কোথায় ভালো থাকবে? কার হেফাজতে থাকবে? কোথায় নিরাপদ থাকবে? এসব ভাবনা নিশ্চিত হতে হবে। এসব বিষয় যত বেশি ভাবা যাবে, তত মঙ্গল। মানুষ মানুষের অবলম্বন। এসব কল্যাণ কামনাÑতিন-চার যুগ আগে দেখা যেত। এখনকার সমাজে কখনো কখনো দুষ্প্রাপ্য।
ফিরে আসি সেখানে। যে মেয়েটি শিশুটিকে পড়াতেন, ছোটখাটো অভিযোগ ছিল। নিষ্পাপ শিশুটির ওপর আক্রোশ কেন? সে রহস্য বুঝি না। হতে পারে সমাজের অতি সাধারণ মেয়ে।
শিশু মায়ের বুকে থাকবে। ঘুমপাড়ানির গান শুনবে। এমনটি না হয়ে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
মেয়েটি কি অসুস্থ?
মেয়েটি কি পাগল?
বিকৃত মানসিকতা?
অথবা আরও অন্য কিছু?
কেন এই বীভৎসতা?
যে শিশুকে ভালোবাসতে জানে না, সে হিংস্র হায়েনা।
যে শিশুকে ভালোবাসতে জানে না, সে বাঘিনী?
অথবা হতে পারে ভিন্ন গ্রহের অমানুষ।
লেখক : ঢাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী।