রাজধানীর কোল ঘেঁষে টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন নিয়ে তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের মধ্যে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রথম পর্ব এবং ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা অনুষ্ঠানের অনুমতি দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
তুরাগ নদের তীরে গত ১৭ ডিসেম্বর ভোরবেলা তাবলিগ জামাতের দুই গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়ে গেল। দীর্ঘদিন যাবৎ তাবলিগ জামাতের মধ্যে বিভেদ ও দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে বাতিল ও নানা বক্তব্যের জেরে এই দ্বন্দ্ব চরমে রূপ নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে উদ্ভূত নতুন কিছু অনুষঙ্গ।
এদিকে তাবলিগ জামাতের উভয় পক্ষ পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন, সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি পালন করছে। মাওলানা জুবায়ের আহমেদের অনুসারীরা বলছেন, ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারীদের জোড় ইজতেমা করার সরকারি অনুমোদন নেই। তারা জোরপূর্বক তা করতে চায়। এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা রয়েছে। এ নিয়ে মামলায়ও জড়িয়েছে দুই পক্ষ। জোড় ইজতেমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে সাদপন্থীদের শীর্ষ মুরব্বি সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলামসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে গত রোববার টঙ্গী পশ্চিম থানায় মামলা করেছেন মোহাম্মদ হোসেন নামে জুবায়েরপন্থী এক সাথি।
জননিরাপত্তা বিভাগের একাধিক সূত্র জানায়, বৈঠকে দুই পক্ষকে সমঝোতায় আনার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হবে।
জননিরাপত্তা বিভাগের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, যদি তারা সমঝোতায় না আসেন, তাহলে প্রয়োজনে ইজতেমার অনুমতি বাতিল করা হতে পারে। কোনো অবস্থায়ই সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে দিতে পারে না। কারণ তৃতীয় পক্ষ এর সুযোগ নিতে চেষ্টা করবে।
তাবলিগ জামাতকে বলা হয় সবচেয়ে বড় অরাজনৈতিক একটি ধর্মীয় সংগঠন। সেখানে প্রতিবছর ইজতেমার সময় সব রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাসী মুসলিমগণ যোগ দিয়ে থাকেন। পবিত্র হজের পর তুরাগের তাবলিগ সম্মেলন মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম জমায়েত। ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বাইরে তাবলিগের শিক্ষা ও আদর্শ প্রচারিত হওয়ায় এর একটি বৈশ্বিক পরিচিতি রয়েছে। প্রতিবছর বিশ্বের প্রতিটি স্থান থেকে ৭০-৮০টি দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমান টঙ্গীর তীরে আসেন ইসলামের শান্তির বাণী শুনে নিজেকে সুশীতল করে সেই বাণী পুনরায় সারা বিশ্বের মানুষের মাঝে দ্বিনি দাওয়াত হিসেবে প্রচারের জন্য।
সাদ অনুসারীদের জোড় ইজতেমা ঠেকাতে গত রোববার বিকেলে ইজতেমা মাঠে অবস্থানের ঘোষণা দেন মাওলানা মামুনুল হক। এরপর রাত থেকেই ইজতেমা মাঠে দলে দলে প্রবেশ করতে থাকেন জুবায়ের অনুসারীরা।
সাম্প্রতিক ঘটনায় টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা মাঠে তিন মুসল্লি নিহতের ঘটনায় সাদপন্থীদের মুখপাত্র মুফতি মুয়াজ বিন নূরের (৪০) তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
এমন পরিস্থিতিতে টঙ্গীর সহিংস ঘটনার পর জনমনে ইজতেমা হওয়া, না হওয়া নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন, আদৌ কি হচ্ছে ইজতেমা? যদিও হত্যা মামলা রুজু হওয়ায় এই ঘটনা একটি আইনি সমস্যা তৈরি করেছে, তবুও এটাকে শক্ত হাতে সমাধান করতে তৎপরতা ও সমাধানে কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকার।
এ বিষয়ে তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ (শুরায়ে নেজাম)-এর মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান বলেন, নির্ধারিত সময়েই বিশ্ব ইজতেমা পালন করা হবে। সাদপন্থীরা ইজতেমা করতে চাইলে কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে।
ইজতেমার মাঠে সহিংস ঘটনার জেরে সৃষ্ট উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দুই পক্ষের সঙ্গেই বৈঠক করেছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ কয়েকজন উপদেষ্টা। সচিবালয়ে বৈঠকের পর হেফাজতে ইসলামের আলোচিত নেতা মাওলানা মামুনুল হক সাংবাদিকদের জানান, এবার সাদপন্থীরা আর ইজতেমা করার সুযোগ পাবে না। তাদের সেই সুযোগ দেওয়া হবে না।
সাম্প্রতিক ঘটনার বিষয়ে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি আবদুল মালেক বলেছেন, দ্বীনের কাজে বিভক্তির কারণ হচ্ছে হক ও সঠিক পথ ছেড়ে বিচ্যুত ব্যক্তির অনুসরণ করা। এ বিভক্তি দূর করে একতাবদ্ধ হওয়ার একমাত্র সমাধান হচ্ছে সে পথ ছেড়ে হকের পথে ফিরে আসা।
ঠিকানা/এনআই
তুরাগ নদের তীরে গত ১৭ ডিসেম্বর ভোরবেলা তাবলিগ জামাতের দুই গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়ে গেল। দীর্ঘদিন যাবৎ তাবলিগ জামাতের মধ্যে বিভেদ ও দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে বাতিল ও নানা বক্তব্যের জেরে এই দ্বন্দ্ব চরমে রূপ নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে উদ্ভূত নতুন কিছু অনুষঙ্গ।
এদিকে তাবলিগ জামাতের উভয় পক্ষ পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন, সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি পালন করছে। মাওলানা জুবায়ের আহমেদের অনুসারীরা বলছেন, ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারীদের জোড় ইজতেমা করার সরকারি অনুমোদন নেই। তারা জোরপূর্বক তা করতে চায়। এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা রয়েছে। এ নিয়ে মামলায়ও জড়িয়েছে দুই পক্ষ। জোড় ইজতেমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে সাদপন্থীদের শীর্ষ মুরব্বি সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলামসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে গত রোববার টঙ্গী পশ্চিম থানায় মামলা করেছেন মোহাম্মদ হোসেন নামে জুবায়েরপন্থী এক সাথি।
জননিরাপত্তা বিভাগের একাধিক সূত্র জানায়, বৈঠকে দুই পক্ষকে সমঝোতায় আনার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হবে।
জননিরাপত্তা বিভাগের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, যদি তারা সমঝোতায় না আসেন, তাহলে প্রয়োজনে ইজতেমার অনুমতি বাতিল করা হতে পারে। কোনো অবস্থায়ই সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে দিতে পারে না। কারণ তৃতীয় পক্ষ এর সুযোগ নিতে চেষ্টা করবে।
তাবলিগ জামাতকে বলা হয় সবচেয়ে বড় অরাজনৈতিক একটি ধর্মীয় সংগঠন। সেখানে প্রতিবছর ইজতেমার সময় সব রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাসী মুসলিমগণ যোগ দিয়ে থাকেন। পবিত্র হজের পর তুরাগের তাবলিগ সম্মেলন মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম জমায়েত। ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বাইরে তাবলিগের শিক্ষা ও আদর্শ প্রচারিত হওয়ায় এর একটি বৈশ্বিক পরিচিতি রয়েছে। প্রতিবছর বিশ্বের প্রতিটি স্থান থেকে ৭০-৮০টি দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমান টঙ্গীর তীরে আসেন ইসলামের শান্তির বাণী শুনে নিজেকে সুশীতল করে সেই বাণী পুনরায় সারা বিশ্বের মানুষের মাঝে দ্বিনি দাওয়াত হিসেবে প্রচারের জন্য।
সাদ অনুসারীদের জোড় ইজতেমা ঠেকাতে গত রোববার বিকেলে ইজতেমা মাঠে অবস্থানের ঘোষণা দেন মাওলানা মামুনুল হক। এরপর রাত থেকেই ইজতেমা মাঠে দলে দলে প্রবেশ করতে থাকেন জুবায়ের অনুসারীরা।
সাম্প্রতিক ঘটনায় টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা মাঠে তিন মুসল্লি নিহতের ঘটনায় সাদপন্থীদের মুখপাত্র মুফতি মুয়াজ বিন নূরের (৪০) তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
এমন পরিস্থিতিতে টঙ্গীর সহিংস ঘটনার পর জনমনে ইজতেমা হওয়া, না হওয়া নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন, আদৌ কি হচ্ছে ইজতেমা? যদিও হত্যা মামলা রুজু হওয়ায় এই ঘটনা একটি আইনি সমস্যা তৈরি করেছে, তবুও এটাকে শক্ত হাতে সমাধান করতে তৎপরতা ও সমাধানে কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকার।
এ বিষয়ে তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ (শুরায়ে নেজাম)-এর মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান বলেন, নির্ধারিত সময়েই বিশ্ব ইজতেমা পালন করা হবে। সাদপন্থীরা ইজতেমা করতে চাইলে কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে।
ইজতেমার মাঠে সহিংস ঘটনার জেরে সৃষ্ট উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দুই পক্ষের সঙ্গেই বৈঠক করেছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ কয়েকজন উপদেষ্টা। সচিবালয়ে বৈঠকের পর হেফাজতে ইসলামের আলোচিত নেতা মাওলানা মামুনুল হক সাংবাদিকদের জানান, এবার সাদপন্থীরা আর ইজতেমা করার সুযোগ পাবে না। তাদের সেই সুযোগ দেওয়া হবে না।
সাম্প্রতিক ঘটনার বিষয়ে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি আবদুল মালেক বলেছেন, দ্বীনের কাজে বিভক্তির কারণ হচ্ছে হক ও সঠিক পথ ছেড়ে বিচ্যুত ব্যক্তির অনুসরণ করা। এ বিভক্তি দূর করে একতাবদ্ধ হওয়ার একমাত্র সমাধান হচ্ছে সে পথ ছেড়ে হকের পথে ফিরে আসা।
ঠিকানা/এনআই