ঠিকানার গত ৪ ডিসেম্বর সংখ্যার শেষ পৃষ্ঠার শীর্ষ শিরোনাম ‘প্রবাসী বলেই বৈষম্য’-এমন একটি নিউজ প্রকাশিত হয়েছে। নিচে শিরোনামেরই অংশ হিসেবে আরও রয়েছে, ‘রাজউকের ফ্ল্যাটের আবেদনে আড়াই লাখ টাকা বেশি ফি’ এবং ‘বিদেশে পাসপোর্ট আবেদন ও নবায়নেও দ্বিগুণ ব্যয়’। এ রকম একটি খবরের প্রতি প্রবাসী মাত্রই নজরে পড়ার কথা। প্রবাসীরা স্বদেশে সবকিছু ফেলে এলেও দেশের জন্য প্রাণ কাঁদলে এবং দেশের ও আত্মীয়স্বজনের সমস্যা-সংকটে তাদের সব সাধ্য নিয়ে পাশে দাঁড়ালেও প্রবাসীরা দেশে গেলেই নানা বৈষম্য, বঞ্চনার শিক্ষার হন। দেশে গেলে তাদের সঙ্গে বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান যে ব্যবহার ও আচরণ করে, তা রীতিমতো বৈষম্য ও প্রবঞ্চনামূলক। সে জন্য বারবার এ রকম সংবাদ প্রকাশিত হয় এবং বিভিন্ন কলাম ও প্রতিবেদনও লিখতে হয়।
স্বাধীনতার পর প্রায় ১৯৭২ সাল থেকেই প্রবাসীরা দেশে গেলে দেশের বিভিন্ন সরকারি অফিস এবং আত্মীয়স্বজনসহ দেশের মানুষের কাছ থেকে যে আচরণ পান, তা যেমন অনাকাক্সিক্ষত, তেমনি অমানবিক। তাদের কাছে প্রবাসীরা সে আচরণ কখনো প্রত্যাশা করেন না। প্রবাসীদের জমিজমা বেদখল হওয়ার খবর পাওয়া যায়। কিন্তু প্রবাসীরা তার প্রতিকার পান না। প্রবাসীরা রাস্তাঘাটে চলাচলে সমস্যায় পড়লে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা পাওয়া দুর্লভ। ছিনতাইকারীদের খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব খোয়ালেও তার কোনো প্রতিকার নেই। জমিজমার বিরোধে অনেক প্রবাসী প্রাণ পর্যন্ত হারান। এ ক্ষেত্রে প্রায়ই প্রতিবেশী বা আত্মীয়স্বজনকে এই অপরাধ করতে দেখা যায়। কিন্তু মামলা-মোকদ্দমা করেও কোনো প্রবাসী কোনো সুফল পেয়েছেন বলে জানা যায় না।
আসলে স্বদেশ গমনে প্রবাসীদের দুর্ভোগ শুরু হয় বিমানবন্দর থেকেই। বিমানবন্দরে প্রবাসীদের লাগেজ এমনভাবে চেক করা হয়, দেখে মনে হবে যেন বিদেশ থেকে চোর বা ডাকাত এসেছে। প্রবাসীদের প্রতি স্বদেশের অনেক প্রতিষ্ঠানও বৈষম্যমূলক আচরণ করছে বলে যে সংবাদ পাওয়া যায়-এবারের সম্পাদকীয়র ভিত্তি সেই সংবাদটি। গত ৪ ডিসেম্বর যে সংবাদটি ‘প্রবাসী বলেই বৈষম্য’ শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছে, সেই সংবাদটিই এবারের সম্পাদকীয় প্রতিপাদ্য। সংবাদটিতে সরকারি দুটি প্রতিষ্ঠান প্রবাসীদের প্রতি যে বৈষম্যমূলক নীতি গ্রহণ করেছে, সেটাকে কেন্দ্র করেই এই প্রতিবেদন। যেখানে প্রবাসীদের প্রতি বৈষম্যমূলক দুটি ঘটনার কথাই উল্লেখ করা হয়েছে।
রাজউকের ফ্ল্যাটের আবেদনে আড়াই লাখ টাকা বেশি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে প্রবাসীদের জন্য (এক)। বিদেশে পাসপোর্ট আবেদনে এবং নবায়নেও দ্বিগুণ ব্যয় নির্ধারিত হয়েছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য (দুই)। প্রবাসীদের জন্য এই বৈষম্যমূলক মনোভাব বাংলাদেশ সরকারের, যা প্রবাসীদের সহজভাবে মেনে নেওয়া সহজ হচ্ছে না। বাংলাদেশ সরকারের এটা দারুণ বিমাতাসুলভ নীতি বলে প্রবাসীদের মনে ক্ষোভের জন্ম দিচ্ছে। গালভরা বুলিতে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স-যোদ্ধা বলে প্রশংসা করা হয়। কথায় বলে, ‘মুখের কথায় চিড়ে ভিজে না’। বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা সচল থাকে প্রবাসীদের রেমিট্যান্সেÑএ রকম কথাও অহরহ শুনতে পাওয়া যায় বাংলাদেশের সরকার পরিচালক এবং অর্থনীতিবিদ যারা বাংলাদেশের অর্থনীতির খোঁজখবর রাখেন, তাদের কথা।
সরকার এবং সরকারি অফিস-আদালত এমনকি প্রবাসে যেসব দূতাবাস, হাইকমিশন ও কনস্যুলেট আছে, সব জায়গাতেই প্রবাসীরা বিমাতাসুলভ ব্যবহার পেয়ে থাকে। কথায় বলে, ‘মুখে মধু অন্তরে বিষ’। প্রবাসীদের নিয়ে সরকারি মনোভাব সে রকমই। ‘এক যাত্রায় দুই ফল’ যে প্রবাদ আছে, প্রবাসীদের ক্ষেত্রে সে প্রবাদ যেন যথাযোগ্য। সম্প্রতি ঢাকায় রাজউকের কিছু ফ্ল্যাট, যা নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। সেখানে প্রবাসীদের জন্য কিছু ফ্ল্যাট রাখা হয়েছে। সে নিয়ে প্রবাসী ও স্বদেশিদের মধ্যে যে বৈষম্য রাখা হয়েছে, তা প্রবাসীদের জন্য রীতিমতো অবমাননাকর।
ফ্ল্যাটের জন্য একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের অর্থের ফি ধার্য করা হয়েছে। সেই আবেদন ফিতে স্বদেশি ও প্রবাসীদের যে পার্থক্য করা হয়েছে, তা রীতিমতো বৈষম্যমূলক ও অমর্যাদাকর। যে সংবাদটি ঠিকানার ৪ ডিসেম্বর সংখ্যায় শেষ পৃষ্ঠায় ‘প্রবাসী বলেই বৈষম্য’ শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছে, প্রবাসীদের প্রতি বৈষম্য দিয়েই তার সূচনা হয়েছে। ফ্ল্যাটের জন্য দেশের মানুষের জন্য চার লাখ টাকা আর যারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে প্রবাসী জীবনে শত বঞ্চনা সয়ে অর্থ উপার্জন করে তার অনেকটা অংশ দেশে মা-বোন, আত্মীয়স্বজনের জন্য পাঠান এবং বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখেন, তাদের প্রতি এই মনোভাব কাক্সিক্ষত হতে পারে না।
শুধু ফ্ল্যাটের আবেদন ফিতেই যে বৈষম্য, তা নয়। আরও অনেক ক্ষেত্রেই এই বৈষম্য দৃশ্যমান। যেমন ‘বিদেশে পাসপোর্ট আবেদন ও নবায়ন ফি’ও স্বদেশিদের তুলনায় প্রবাসীদের জন্য দ্বিগুণ। একজন প্রবাসী তো (এখানে নাম উল্লেখ করা হলো না) আক্ষেপ করে বলেই ফেললেন, বিদেশে কনস্যুলেটে মনে হয় তারা রাজা আর প্রবাসীরা প্রজা। বঞ্চনা আরও আছে। ভোটার না হতে পারার বঞ্চনা। সংসদে প্রবাসীদের আসন সংরক্ষণের দাবি পূরণ না হওয়ার বঞ্চনা। নিউইয়র্ক-ঢাকা সরাসরি বিমান চালু না হওয়ার বঞ্চনা। না, বিষয়টি কিছুতেই তেমন না। প্রবাসীদের সেবা দেওয়ার জন্যই কিন্তু প্রতিটি দূতাবাসে কনস্যুলেট রাখা হয়েছে। তাদের সুনামের সঙ্গে দেশের সুনাম জড়িত। বিষয়টি সবাই খেয়াল রাখবেন। সরকার পরিবর্তন হয়েছে। রাষ্ট্র সংস্কারের অঙ্গীকার নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার এসেছে। প্রবাসীরাও তাদের প্রতি বৈষম্যের অবসানে সব ক্ষেত্রে গণমুখী পরিবর্তন আশা করেন।
স্বাধীনতার পর প্রায় ১৯৭২ সাল থেকেই প্রবাসীরা দেশে গেলে দেশের বিভিন্ন সরকারি অফিস এবং আত্মীয়স্বজনসহ দেশের মানুষের কাছ থেকে যে আচরণ পান, তা যেমন অনাকাক্সিক্ষত, তেমনি অমানবিক। তাদের কাছে প্রবাসীরা সে আচরণ কখনো প্রত্যাশা করেন না। প্রবাসীদের জমিজমা বেদখল হওয়ার খবর পাওয়া যায়। কিন্তু প্রবাসীরা তার প্রতিকার পান না। প্রবাসীরা রাস্তাঘাটে চলাচলে সমস্যায় পড়লে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা পাওয়া দুর্লভ। ছিনতাইকারীদের খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব খোয়ালেও তার কোনো প্রতিকার নেই। জমিজমার বিরোধে অনেক প্রবাসী প্রাণ পর্যন্ত হারান। এ ক্ষেত্রে প্রায়ই প্রতিবেশী বা আত্মীয়স্বজনকে এই অপরাধ করতে দেখা যায়। কিন্তু মামলা-মোকদ্দমা করেও কোনো প্রবাসী কোনো সুফল পেয়েছেন বলে জানা যায় না।
আসলে স্বদেশ গমনে প্রবাসীদের দুর্ভোগ শুরু হয় বিমানবন্দর থেকেই। বিমানবন্দরে প্রবাসীদের লাগেজ এমনভাবে চেক করা হয়, দেখে মনে হবে যেন বিদেশ থেকে চোর বা ডাকাত এসেছে। প্রবাসীদের প্রতি স্বদেশের অনেক প্রতিষ্ঠানও বৈষম্যমূলক আচরণ করছে বলে যে সংবাদ পাওয়া যায়-এবারের সম্পাদকীয়র ভিত্তি সেই সংবাদটি। গত ৪ ডিসেম্বর যে সংবাদটি ‘প্রবাসী বলেই বৈষম্য’ শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছে, সেই সংবাদটিই এবারের সম্পাদকীয় প্রতিপাদ্য। সংবাদটিতে সরকারি দুটি প্রতিষ্ঠান প্রবাসীদের প্রতি যে বৈষম্যমূলক নীতি গ্রহণ করেছে, সেটাকে কেন্দ্র করেই এই প্রতিবেদন। যেখানে প্রবাসীদের প্রতি বৈষম্যমূলক দুটি ঘটনার কথাই উল্লেখ করা হয়েছে।
রাজউকের ফ্ল্যাটের আবেদনে আড়াই লাখ টাকা বেশি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে প্রবাসীদের জন্য (এক)। বিদেশে পাসপোর্ট আবেদনে এবং নবায়নেও দ্বিগুণ ব্যয় নির্ধারিত হয়েছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য (দুই)। প্রবাসীদের জন্য এই বৈষম্যমূলক মনোভাব বাংলাদেশ সরকারের, যা প্রবাসীদের সহজভাবে মেনে নেওয়া সহজ হচ্ছে না। বাংলাদেশ সরকারের এটা দারুণ বিমাতাসুলভ নীতি বলে প্রবাসীদের মনে ক্ষোভের জন্ম দিচ্ছে। গালভরা বুলিতে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স-যোদ্ধা বলে প্রশংসা করা হয়। কথায় বলে, ‘মুখের কথায় চিড়ে ভিজে না’। বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা সচল থাকে প্রবাসীদের রেমিট্যান্সেÑএ রকম কথাও অহরহ শুনতে পাওয়া যায় বাংলাদেশের সরকার পরিচালক এবং অর্থনীতিবিদ যারা বাংলাদেশের অর্থনীতির খোঁজখবর রাখেন, তাদের কথা।
সরকার এবং সরকারি অফিস-আদালত এমনকি প্রবাসে যেসব দূতাবাস, হাইকমিশন ও কনস্যুলেট আছে, সব জায়গাতেই প্রবাসীরা বিমাতাসুলভ ব্যবহার পেয়ে থাকে। কথায় বলে, ‘মুখে মধু অন্তরে বিষ’। প্রবাসীদের নিয়ে সরকারি মনোভাব সে রকমই। ‘এক যাত্রায় দুই ফল’ যে প্রবাদ আছে, প্রবাসীদের ক্ষেত্রে সে প্রবাদ যেন যথাযোগ্য। সম্প্রতি ঢাকায় রাজউকের কিছু ফ্ল্যাট, যা নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। সেখানে প্রবাসীদের জন্য কিছু ফ্ল্যাট রাখা হয়েছে। সে নিয়ে প্রবাসী ও স্বদেশিদের মধ্যে যে বৈষম্য রাখা হয়েছে, তা প্রবাসীদের জন্য রীতিমতো অবমাননাকর।
ফ্ল্যাটের জন্য একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের অর্থের ফি ধার্য করা হয়েছে। সেই আবেদন ফিতে স্বদেশি ও প্রবাসীদের যে পার্থক্য করা হয়েছে, তা রীতিমতো বৈষম্যমূলক ও অমর্যাদাকর। যে সংবাদটি ঠিকানার ৪ ডিসেম্বর সংখ্যায় শেষ পৃষ্ঠায় ‘প্রবাসী বলেই বৈষম্য’ শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছে, প্রবাসীদের প্রতি বৈষম্য দিয়েই তার সূচনা হয়েছে। ফ্ল্যাটের জন্য দেশের মানুষের জন্য চার লাখ টাকা আর যারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে প্রবাসী জীবনে শত বঞ্চনা সয়ে অর্থ উপার্জন করে তার অনেকটা অংশ দেশে মা-বোন, আত্মীয়স্বজনের জন্য পাঠান এবং বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখেন, তাদের প্রতি এই মনোভাব কাক্সিক্ষত হতে পারে না।
শুধু ফ্ল্যাটের আবেদন ফিতেই যে বৈষম্য, তা নয়। আরও অনেক ক্ষেত্রেই এই বৈষম্য দৃশ্যমান। যেমন ‘বিদেশে পাসপোর্ট আবেদন ও নবায়ন ফি’ও স্বদেশিদের তুলনায় প্রবাসীদের জন্য দ্বিগুণ। একজন প্রবাসী তো (এখানে নাম উল্লেখ করা হলো না) আক্ষেপ করে বলেই ফেললেন, বিদেশে কনস্যুলেটে মনে হয় তারা রাজা আর প্রবাসীরা প্রজা। বঞ্চনা আরও আছে। ভোটার না হতে পারার বঞ্চনা। সংসদে প্রবাসীদের আসন সংরক্ষণের দাবি পূরণ না হওয়ার বঞ্চনা। নিউইয়র্ক-ঢাকা সরাসরি বিমান চালু না হওয়ার বঞ্চনা। না, বিষয়টি কিছুতেই তেমন না। প্রবাসীদের সেবা দেওয়ার জন্যই কিন্তু প্রতিটি দূতাবাসে কনস্যুলেট রাখা হয়েছে। তাদের সুনামের সঙ্গে দেশের সুনাম জড়িত। বিষয়টি সবাই খেয়াল রাখবেন। সরকার পরিবর্তন হয়েছে। রাষ্ট্র সংস্কারের অঙ্গীকার নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার এসেছে। প্রবাসীরাও তাদের প্রতি বৈষম্যের অবসানে সব ক্ষেত্রে গণমুখী পরিবর্তন আশা করেন।