বাংলাদেশের রাজনীতিতে জমিয়ে কূটনীতিক আর আমলারা

প্রকাশ : ০৩ অগাস্ট ২০২৩, ১৩:২৮ , অনলাইন ভার্সন
বাংলায় প্রবাদ আছে, ‘গাছেরটাও খায়/তলারটাও কুড়ায়!’ অর্থাৎ সমাজে-রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মানো এমন ভাগ্যবান মানুষ আছেন, যাদের ‘পাত পাড়া’ থাকে লাভজনক সব স্থানে। তারা থাকেন লাভের আগে আর গন্ডগোলের পেছনে। তারা কারা? বর্তমান সময়ে তাদের পরিচয় আমলা এবং কূটনীতিক।
অনেকে বলবেন, কূটনীতিক এবং আমলারা তাদের যোগ্যতা দিয়ে এই সৌভাগ্য অর্জন করেছেন। এই যোগ্যতা বলতে তাদের মধ্যে অনেকেই বাঘা বাঘা ছাত্র ছিলেন। ক্লাসে সারা জীবন প্রথম-দ্বিতীয় হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইতিহাস এবং অন্যান্য বিষয়ে শিক্ষকতা করেছেন। তারা আইসিএস/পিসিএস/বিসিএসের মতো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় বা খুব ভালো ফল করে এসব চাকরি পেয়েছেন। পরে আরও সব কঠিন কঠিন পরীক্ষায় পাস করে করে এবং পদোন্নতি পেয়ে পেয়ে বড় বড়, ঝানু ঝানু আমলা হয়েছেন। কেউ দেশের মধ্যেই আমলাগিরি করেন। কেউ সচিব, উপসচিব, যুগ্ম সচিব হন। কেউ রাষ্ট্রের মর্যাদা নিয়ে বিদেশে গিয়ে কূটনীতিকের দায়িত্ব পালন করেন।
সব দেশেই এসব উচ্চশ্রেণির সরকারি চাকরির জন্য কঠোরভাবে চাকরির শর্ত, নিয়ম-কানুন, নীতি-নৈতিকতা মেনে চলতে হয়। একে সরকারি পরিভাষায় ‘কোড অব কন্ডাক্ট’ বলা হয়ে থাকে। কমবেশি সব দেশেই এই নিয়ম কঠোরভাবে মেনে চলতে হয় সরকারি চাকুরেদের। অমান্য করলে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে জবাবদিহি করতে হয়। অনেক সময় আদালতে উঠতে হয় এবং শাস্তি ভোগ করতে হয়। এ নিয়ে অনেক সত্য এবং কল্পকাহিনি শোনা যায়। বিশেষ করে, বাংলাদেশে এখন ‘সেই রামও নেই, সেই অযোধ্যাও নেই’। ‘বিশেষ করে বাংলাদেশ’ বলার কারণ, অন্যান্য দেশে আমলাদের কমবেশি কোড অব কন্ডাক্ট মেনে চলতে হলেও বাংলাদেশে সেসব মান্য করার কোনো দায় কারও মধ্যে দেখা যায় না।
সে কারণে অনেক সিনিয়র রাজনীতিবিদের মুখেও হতাশা ব্যক্ত করে শোনা যায়, ‘এ দেশে একজন পিয়নের যে দাম আছে, রাজনীতিকদের সে মূল্যও নেই।’ তিনি নিশ্চয় পিয়নদের খাটো করে দেখানোর জন্য বা অসম্মান করে ও কথা বলেননি। নিজেদের অসহায়ত্ব প্রকাশ করতেই তুলনামূলক এই দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছেন। সে ক্ষেত্রে আমলা ও কূটনীতিকেরা দাপিয়ে চলছেন। তাই তো পত্রিকায় নিউজ হয়, ‘রাজনীতিতে আমলা, কোণঠাসা নেতারা’ এবং কূটনীতিকদেরও বাংলাদেশে তাদের কূটনৈতিক শিষ্টাচার মেনে না চলায় তাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সতর্ক করে দিতে হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে নিয়ে ১৩টি দেশের রাষ্ট্রদূতকে তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন করে দেওয়া হয়। এবং তাদেরকে সতর্ক করে দেওয়ার সংবাদও পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। দুটি খবরই প্রকাশিত হয়েছে ঠিকানার ২৬ জুলাই সংখ্যার প্রথম পাতায়।
আসলে শৃঙ্খলা রক্ষা করে যার যে কাজ, সেই কাজ নিষ্ঠার সঙ্গে প্রতিপালন করাটাই সাধারণ মানুষ প্রত্যাশা করে। লাইন ভেঙে কেউ আগে গিয়ে সুবিধা নিতে চাইলে মানুষ যেমন ক্ষুব্ধ হয়, এ ক্ষেত্রেও তেমনটাই ঘটে। ভালো রেজাল্ট করতে যেমন মেধা এবং অধ্যবসায় লাগে, একজন বড় নেতাও এমনি এমনি হওয়া যায় না। তাকেও অনেক পরীক্ষা দিতে হয় জনতার কাছে। অনেক কষ্ট, অনেক জেল-জুলুম সইতে হয়। অনেক সময় মৃত্যুবরণ পর্যন্ত করতে হয়। ঘর-সংসারের খেয়াল রাখা যায় না। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং চার জাতীয় নেতা তার জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত।
শেষ কথা, সবাই যদি দেশপ্রেম, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং মানবিক বোধ নিয়ে যার যার কাজ করে যান, তবে আর কোনো কথা বলার থাকে না। আসলে বিপত্তি তখনই ঘটে, যখন কেউ লোভের বৃত্তে আটকা পড়ে দেশ ও দশকে বড় না ভেবে নিজের স্বার্থলাভে জ্ঞানশূন্য ছুটতে থাকে, তখন। আমাদের ভেতরে লোভ ও স্বার্থচিন্তাই আমাদের আদর্শচ্যুত ও পথভ্রষ্ট করে তোলে। সবাই যদি নিজ নিজ সীমার মধ্যে থেকে দেশপ্রেমের চেতনায় কাজ করতে পারেন, তবে আর কোনো গোল বাধে না।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041