একদা ড. কামাল হোসেনকে প্রেসিডেন্ট পদে দেখতে চেয়েছিলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আইনী লড়াইয়ে পরস্পরের যুথবদ্ধ লড়াই ইতিহাস হয়ে আছে। ১৯৯২-এ ‘গণফোরাম’ গঠনকালে কামাল-ইউনূস ছিলেন একই মঞ্চে। ‘আমার দল’ শিরোনামে প্রবন্ধ পড়েন ড. ইউনূস। গ্রামীণ ব্যাংকে পদ হারালে ইউনূসকে আইনগত সাহারা দেন ড. কামাল। ফলে দু’জনই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘চিরশত্রু’ বনে যান। সেই কামাল-ইউনূস মেলবন্ধনে এখন নতুন দেয়াল। বিষয় বিপ্লবী সরকার কর্তৃক নতুন সংবিধান রচনার ঘটনা। দেশের প্রথম সংবিধান রচনাকারী ড. কামাল হোসেন তাতে বাধা হয়েছেন।
জুলাই-আগস্ট ছাত্র-গণ-অভ্যুত্থানের ফসল ‘অন্তর্বর্তী সরকার’। বিপ্লবের মাধ্যমে গত ৮ আগস্ট গঠিত হয় সরকারটি। ড. ইউনূসের নেতৃত্বে উপদেষ্টারা শপথ নেন সংবিধান মেনে। যদিও সরকারের চোখে-মুখে-দেহে লাল বিদ্রোহের উন্মাদনা। কিন্তু সরকারের দু’পা জড়ানো রয়েছে সংবিধানের বেড়িতে। ফলে বিপ্লব বনাম সাংবিধানিক জটিলতায় এখন দেশ। ছাত্র-গণ-অভ্যুত্থানের পর ‘নতুন সংবিধানে’র দাবি তোলেন কেউ কেউ। বলেন, আওয়ামী লীগ একদলীয়ভাবে এটি রচনা ও অনুমোদন করেছে। ১৯৭৩-এর নভেম্বরে প্রণীত সংবিধান এখন অচল।
প্রবাসী রাজনৈতিক গবেষক ড. আলী রীয়াজও তেমনটি বলেন। আমেরিকার ইলিনয় রাজ্যে তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানে শিক্ষকতা করেন। বলেছিলেন, সংস্কার নয়, নতুন সংবিধান প্রয়োজন বাংলাদেশের। অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার প্রশ্নে ৬টি কমিশন গঠন করেছে। সংবিধান বিষয়ক কমিশন সেগুলোর মধ্যে অন্যতম গুরুত্ববহ। প্রথমে সিনিয়র আইনজীবী ড. শাহদীন মালিককে চেয়ারম্যান করা হয়। পরে প্রবাসীশিক্ষক ড. আলী রীয়াজ সে পদে বসেন। ধারণা যে, সরকার নতুন সংবিধানের পক্ষে। কিন্তু সরকারকে পরোক্ষভাবে চ্যালেঞ্জ করেছেন ড. কামাল হোসেন। বয়োবৃদ্ধ এই সংবিধান বিশেষজ্ঞ হাঁটছেন উল্টোপথে। বলেছেন, কলমের খোঁচায় সংবিধান পরিবর্তন সম্ভব করা নয়। এটি জনগণের সম্পদ, যা বাতিল হতে পারে না।
গত ৪ নভেম্বর ‘সংবিধান দিবসে’ বিরোধ উস্কে দেন ড. কামাল। বলেন, সংবিধানের অনেক বিষয় ২০-২৫ বছরে গুরুত্ব হারায়। ফলে সংসদে দুই-তৃতীয়াংশের মতামতে সংশোধনী আসে। এ পর্যন্ত ১৫-১৬টি সংশোধনী এসেছে। জনগণ চাইলে নতুন সংশোধনী আবারও আসবে। কিন্তু সম্পূর্ণ বাতিল ও নতুন একটি গ্রহণ করা সম্ভব না। সংবিধান দিবসে সুপ্রিমকোর্ট মিলনীতে ছিলো সভা। গণমুখী আইনজীবীদের সভাটিতে সভাপতিত্বে অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী। অধিকাংশ বক্তাই ছিলেন পুরনো সংবিধান সুরক্ষার পক্ষে। তাদের মতে, চলমান সংবিধানে প্রধান দলগুলোর স্পর্শ আছে। অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নেই এটি বাতিল বা সংশোধনের। প্রস্তাবনা থাকতে পারে, তবে অদল-বদলের সুযোগ নেই। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমেই পরিবর্তন আনা সম্ভব। রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর অপসারণ বা পদত্যাগ ঘটেনি। সাংবিধানিক জটিলতায় বিষয়টি আটকে আছে বলে প্রকাশ। রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ করলে প্রথমত স্পিকার দায়িত্ব নেন। ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীর স্থলে যেমনটি স্পিকার জমিরউদ্দীন সরকার। কিন্তু রহস্যজনকভাবে স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরী পদত্যাগ করেছেন। হাসিনা জমানায় চারবার স্পিকার হয়েছিলেন তিনি। আ’লীগের চাপে গত সেপ্টেম্বর মাসে পদত্যাগ করেন বলে প্রকাশ। এর পরপরই হাসিনার পদত্যাগপত্র, চুপ্পু অপসারণ প্রসঙ্গটি আসে। বর্তমানে বিপদে আছেন সাবেক স্পিকার শিরিন শারমিন। রংপুরে একটি হত্যা মামলার আসামী। লাল পাসপোর্ট হারিয়ে সবুজ পাসপোর্ট প্রাপ্তির চেষ্টা চালাচ্ছেন। কিন্তু এ বিষয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ইতোমধ্যে স্পিকার-এর ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব নিয়েছেন ড. আসিফ নজরুল। আইন উপদেষ্টা হিসেবে পদাধিকারবলে তিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছেন। ফলে রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ করলে ড. নজরুল ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হতে পারেন। সাংবিধানের আলোকে এমনটি ঘটার সম্ভাবনা ঢের। রাজনীতি ও পেশাগত দায়িত্ব থেকে অবসরে গেছেন ড. কামাল। নিজ প্রতিষ্ঠিত ‘গণফোরাম’ সংগঠনে এখন প্রধান উপদেষ্টা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকালে বিপ্লবের পক্ষে ছিলেন তিনি। কন্যা ব্যারিস্টার সারা হোসেনও আন্দোলনের পক্ষে সরব ছিলেন। প্রফেসর ইউনূস সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হওয়ায় শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। অসুস্থ শরীরে ড. ইউনূসের রাষ্ট্রীয় আবাসন যমুনা’য় গেছেন। সেই মধুরতম সম্পর্কে এখন প্রশ্নবোধক চিহ্ন। প্রথম সংবিধান সুুরক্ষায় তিনি জীবনপ্রাণ চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছেন। ফলে সাংবিধানিক জটিলতায় ইউনূসের বিপ্লবী সরকার বিপদাপন্ন।
জুলাই-আগস্ট ছাত্র-গণ-অভ্যুত্থানের ফসল ‘অন্তর্বর্তী সরকার’। বিপ্লবের মাধ্যমে গত ৮ আগস্ট গঠিত হয় সরকারটি। ড. ইউনূসের নেতৃত্বে উপদেষ্টারা শপথ নেন সংবিধান মেনে। যদিও সরকারের চোখে-মুখে-দেহে লাল বিদ্রোহের উন্মাদনা। কিন্তু সরকারের দু’পা জড়ানো রয়েছে সংবিধানের বেড়িতে। ফলে বিপ্লব বনাম সাংবিধানিক জটিলতায় এখন দেশ। ছাত্র-গণ-অভ্যুত্থানের পর ‘নতুন সংবিধানে’র দাবি তোলেন কেউ কেউ। বলেন, আওয়ামী লীগ একদলীয়ভাবে এটি রচনা ও অনুমোদন করেছে। ১৯৭৩-এর নভেম্বরে প্রণীত সংবিধান এখন অচল।
প্রবাসী রাজনৈতিক গবেষক ড. আলী রীয়াজও তেমনটি বলেন। আমেরিকার ইলিনয় রাজ্যে তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানে শিক্ষকতা করেন। বলেছিলেন, সংস্কার নয়, নতুন সংবিধান প্রয়োজন বাংলাদেশের। অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার প্রশ্নে ৬টি কমিশন গঠন করেছে। সংবিধান বিষয়ক কমিশন সেগুলোর মধ্যে অন্যতম গুরুত্ববহ। প্রথমে সিনিয়র আইনজীবী ড. শাহদীন মালিককে চেয়ারম্যান করা হয়। পরে প্রবাসীশিক্ষক ড. আলী রীয়াজ সে পদে বসেন। ধারণা যে, সরকার নতুন সংবিধানের পক্ষে। কিন্তু সরকারকে পরোক্ষভাবে চ্যালেঞ্জ করেছেন ড. কামাল হোসেন। বয়োবৃদ্ধ এই সংবিধান বিশেষজ্ঞ হাঁটছেন উল্টোপথে। বলেছেন, কলমের খোঁচায় সংবিধান পরিবর্তন সম্ভব করা নয়। এটি জনগণের সম্পদ, যা বাতিল হতে পারে না।
গত ৪ নভেম্বর ‘সংবিধান দিবসে’ বিরোধ উস্কে দেন ড. কামাল। বলেন, সংবিধানের অনেক বিষয় ২০-২৫ বছরে গুরুত্ব হারায়। ফলে সংসদে দুই-তৃতীয়াংশের মতামতে সংশোধনী আসে। এ পর্যন্ত ১৫-১৬টি সংশোধনী এসেছে। জনগণ চাইলে নতুন সংশোধনী আবারও আসবে। কিন্তু সম্পূর্ণ বাতিল ও নতুন একটি গ্রহণ করা সম্ভব না। সংবিধান দিবসে সুপ্রিমকোর্ট মিলনীতে ছিলো সভা। গণমুখী আইনজীবীদের সভাটিতে সভাপতিত্বে অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী। অধিকাংশ বক্তাই ছিলেন পুরনো সংবিধান সুরক্ষার পক্ষে। তাদের মতে, চলমান সংবিধানে প্রধান দলগুলোর স্পর্শ আছে। অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নেই এটি বাতিল বা সংশোধনের। প্রস্তাবনা থাকতে পারে, তবে অদল-বদলের সুযোগ নেই। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমেই পরিবর্তন আনা সম্ভব। রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর অপসারণ বা পদত্যাগ ঘটেনি। সাংবিধানিক জটিলতায় বিষয়টি আটকে আছে বলে প্রকাশ। রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ করলে প্রথমত স্পিকার দায়িত্ব নেন। ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীর স্থলে যেমনটি স্পিকার জমিরউদ্দীন সরকার। কিন্তু রহস্যজনকভাবে স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরী পদত্যাগ করেছেন। হাসিনা জমানায় চারবার স্পিকার হয়েছিলেন তিনি। আ’লীগের চাপে গত সেপ্টেম্বর মাসে পদত্যাগ করেন বলে প্রকাশ। এর পরপরই হাসিনার পদত্যাগপত্র, চুপ্পু অপসারণ প্রসঙ্গটি আসে। বর্তমানে বিপদে আছেন সাবেক স্পিকার শিরিন শারমিন। রংপুরে একটি হত্যা মামলার আসামী। লাল পাসপোর্ট হারিয়ে সবুজ পাসপোর্ট প্রাপ্তির চেষ্টা চালাচ্ছেন। কিন্তু এ বিষয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ইতোমধ্যে স্পিকার-এর ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব নিয়েছেন ড. আসিফ নজরুল। আইন উপদেষ্টা হিসেবে পদাধিকারবলে তিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছেন। ফলে রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ করলে ড. নজরুল ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হতে পারেন। সাংবিধানের আলোকে এমনটি ঘটার সম্ভাবনা ঢের। রাজনীতি ও পেশাগত দায়িত্ব থেকে অবসরে গেছেন ড. কামাল। নিজ প্রতিষ্ঠিত ‘গণফোরাম’ সংগঠনে এখন প্রধান উপদেষ্টা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকালে বিপ্লবের পক্ষে ছিলেন তিনি। কন্যা ব্যারিস্টার সারা হোসেনও আন্দোলনের পক্ষে সরব ছিলেন। প্রফেসর ইউনূস সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হওয়ায় শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। অসুস্থ শরীরে ড. ইউনূসের রাষ্ট্রীয় আবাসন যমুনা’য় গেছেন। সেই মধুরতম সম্পর্কে এখন প্রশ্নবোধক চিহ্ন। প্রথম সংবিধান সুুরক্ষায় তিনি জীবনপ্রাণ চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছেন। ফলে সাংবিধানিক জটিলতায় ইউনূসের বিপ্লবী সরকার বিপদাপন্ন।