বগুড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ৪ আগস্ট জেলার বিভিন্ন স্থানে গুলি, ককটেল বিস্ফোরণ, ধারালো অস্ত্রের আঘাত ও মারপিটে নিহত পাঁচজনের মরদেহ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুকান্ত সাহা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে এ নির্দেশ দেন।
মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ধারণে সদর থানায় দায়ের করা ওই সব মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা কবর থেকে মরদেহ উত্তোলনের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন। বগুড়া কোর্ট ইন্সপেক্টর মোসাদ্দেক হোসেন এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন- বগুড়া সদর উপজেলার চক আকাশতারা গ্রামের মৃত কফিল উদ্দিন খানের ছেলে রিকশাচালক কমর উদ্দিন খান বাঙ্গি, শিবগঞ্জ উপজেলার পীরব ইউনিয়নের পলিকান্দা গ্রামের সেকেন্দার আলীর ছেলে স্কুলশিক্ষক সেলিম হোসেন, সদর উপজেলার এরুলিয়া ইউনিয়নের বানদীঘি পূর্বপাড়া গ্রামের রিকশাচালক আবদুল মান্নান, একই এলাকার কসাই রিপন ফকির এবং গাবতলী উপজেলার গোড়দহ উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত মুসা সরদারে ছেলে শ্রমিক দল নেতা জিল্লুর সরদার।
পুলিশ, এজাহার সূত্র ও স্বজনরা জানান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ৪ আগস্ট বগুড়া শহরের নবাববাড়ি সড়কে ডায়াবেটিস হাসপাতালের সামনে আসামিদের গুলি, ককটেল বিস্ফোরণ ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রিকশাচালক কমর উদ্দিন বাঙ্গী গুরুতর আহত হন। তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করার পর তিনি মারা যান।
একই দিন শহরের সাতমাথায় জেলা পরিষদের ডাকবাংলোর সামনে শিক্ষক সেলিম হোসেনকে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হত্যা করা হয়। শহরের কাঁঠালতলা এলাকায় আসামিদের গুলি ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হন রিকশাচালক আবদুল মান্নান। পরে তিনি বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে মারা যান।
শহরের ঝাউতলা এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া পালটা ধাওয়াকালে কসাই রিপন ফকির গুরুতর আহত হন। বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
একই দিন দুপুরে শহরের ঝাউতলা এলাকায় আসামিদের গুলি ও ককটেল ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হন শ্রমিক দল নেতা জিল্লুর রহমান। তাকে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে কমর উদ্দিন বাঙ্গী, সেলিম হোসেন, আব্দুল মান্নান, রিপন ফকির ও জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর পর বগুড়া শজিমেক হাসপাতাল মর্গে লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়নি। স্বজনরা লাশ বাড়িতে নিয়ে কবরস্থানে দাফন করেন। পরবর্তীতে এ পাঁচটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় স্বজনরা সদর থানায় পৃথক হত্যা মামলা করেন।
এসব মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহেনা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জান খান কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক আইজিপিসহ পুলিশের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক এমপি মজিবর রহমান মজনু, সাধারণ সম্পাদক, সাবেক এমপি রাগেবুল আহসান রিপু, স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের দায়িত্বশীল নেতা, কয়েকজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
বগুড়া কোর্ট ইন্সপেক্টর মোসাদ্দেক হোসেন জানান, সদর থানায় দায়ের করা পাঁচটি মামলায় হত্যার প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হতে তদন্তকারী কর্মকর্তারা লাশ উত্তোলনের সিদ্ধান্ত নেন। এ ব্যাপারে অনুমতি চেয়ে তারা গত মাসের শেষের দিকে বগুড়া অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক সুকান্ত সাহা লাশগুলো উত্তোলন করতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ দেন। একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লাশগুলো উত্তোলন ও ময়নাতদন্ত শেষে যথাযথ মর্যাদায় পুনরায় দাফনের নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ আদেশের অনুলিপি বগুড়া শজিমেক হাসপাতালের পরিচালক ও সদর থানার ওসিকে পাঠানো হয়েছে।
সদর থানার ওসি এসএম মঈনুদ্দীন জানান, ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের পরপরই কবর থেকে পাঁচজনের মরদেহ উত্তোলন করা হবে। ময়নাতদন্তের পর মরদেহগুলো পুনরায় দাফন করা হবে।
এর আগে ছুরিকাঘাতে নিহত নবম শ্রেণির স্কুলছাত্র সাব্বির হোসেনের মরদেহ ৭১ দিন পর গত ১৬ অক্টোবর গাবতলী উপজেলার সুখানপুকুর ইউনিয়নের তেলীহাটা মধ্যপাড়া গ্রামের কবরস্থান থেকে তোলা হয়। সাব্বির গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিকালে সৈয়দ আহম্মদ কলেজ স্টেশন এলাকায় আনন্দ মিছিলে অংশ নেয়। মিছিল শেষে বাড়ি ফেরার পথে সোনাতলা উপজেলার শিহিপুর এলাকায় পৌঁছলে তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। স্বজনরা ময়নাতদন্ত ছাড়াই তার মরদেহ দাফন করেন। ময়নাতদন্ত শেষে সাব্বিরের মরদেহ পুনরায় দাফন করা হয়েছে।
ঠিকানা/এএস
মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ধারণে সদর থানায় দায়ের করা ওই সব মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা কবর থেকে মরদেহ উত্তোলনের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন। বগুড়া কোর্ট ইন্সপেক্টর মোসাদ্দেক হোসেন এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন- বগুড়া সদর উপজেলার চক আকাশতারা গ্রামের মৃত কফিল উদ্দিন খানের ছেলে রিকশাচালক কমর উদ্দিন খান বাঙ্গি, শিবগঞ্জ উপজেলার পীরব ইউনিয়নের পলিকান্দা গ্রামের সেকেন্দার আলীর ছেলে স্কুলশিক্ষক সেলিম হোসেন, সদর উপজেলার এরুলিয়া ইউনিয়নের বানদীঘি পূর্বপাড়া গ্রামের রিকশাচালক আবদুল মান্নান, একই এলাকার কসাই রিপন ফকির এবং গাবতলী উপজেলার গোড়দহ উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত মুসা সরদারে ছেলে শ্রমিক দল নেতা জিল্লুর সরদার।
পুলিশ, এজাহার সূত্র ও স্বজনরা জানান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ৪ আগস্ট বগুড়া শহরের নবাববাড়ি সড়কে ডায়াবেটিস হাসপাতালের সামনে আসামিদের গুলি, ককটেল বিস্ফোরণ ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রিকশাচালক কমর উদ্দিন বাঙ্গী গুরুতর আহত হন। তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করার পর তিনি মারা যান।
একই দিন শহরের সাতমাথায় জেলা পরিষদের ডাকবাংলোর সামনে শিক্ষক সেলিম হোসেনকে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হত্যা করা হয়। শহরের কাঁঠালতলা এলাকায় আসামিদের গুলি ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হন রিকশাচালক আবদুল মান্নান। পরে তিনি বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে মারা যান।
শহরের ঝাউতলা এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া পালটা ধাওয়াকালে কসাই রিপন ফকির গুরুতর আহত হন। বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
একই দিন দুপুরে শহরের ঝাউতলা এলাকায় আসামিদের গুলি ও ককটেল ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হন শ্রমিক দল নেতা জিল্লুর রহমান। তাকে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে কমর উদ্দিন বাঙ্গী, সেলিম হোসেন, আব্দুল মান্নান, রিপন ফকির ও জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর পর বগুড়া শজিমেক হাসপাতাল মর্গে লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়নি। স্বজনরা লাশ বাড়িতে নিয়ে কবরস্থানে দাফন করেন। পরবর্তীতে এ পাঁচটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় স্বজনরা সদর থানায় পৃথক হত্যা মামলা করেন।
এসব মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহেনা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জান খান কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক আইজিপিসহ পুলিশের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক এমপি মজিবর রহমান মজনু, সাধারণ সম্পাদক, সাবেক এমপি রাগেবুল আহসান রিপু, স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের দায়িত্বশীল নেতা, কয়েকজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
বগুড়া কোর্ট ইন্সপেক্টর মোসাদ্দেক হোসেন জানান, সদর থানায় দায়ের করা পাঁচটি মামলায় হত্যার প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হতে তদন্তকারী কর্মকর্তারা লাশ উত্তোলনের সিদ্ধান্ত নেন। এ ব্যাপারে অনুমতি চেয়ে তারা গত মাসের শেষের দিকে বগুড়া অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক সুকান্ত সাহা লাশগুলো উত্তোলন করতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ দেন। একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লাশগুলো উত্তোলন ও ময়নাতদন্ত শেষে যথাযথ মর্যাদায় পুনরায় দাফনের নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ আদেশের অনুলিপি বগুড়া শজিমেক হাসপাতালের পরিচালক ও সদর থানার ওসিকে পাঠানো হয়েছে।
সদর থানার ওসি এসএম মঈনুদ্দীন জানান, ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের পরপরই কবর থেকে পাঁচজনের মরদেহ উত্তোলন করা হবে। ময়নাতদন্তের পর মরদেহগুলো পুনরায় দাফন করা হবে।
এর আগে ছুরিকাঘাতে নিহত নবম শ্রেণির স্কুলছাত্র সাব্বির হোসেনের মরদেহ ৭১ দিন পর গত ১৬ অক্টোবর গাবতলী উপজেলার সুখানপুকুর ইউনিয়নের তেলীহাটা মধ্যপাড়া গ্রামের কবরস্থান থেকে তোলা হয়। সাব্বির গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিকালে সৈয়দ আহম্মদ কলেজ স্টেশন এলাকায় আনন্দ মিছিলে অংশ নেয়। মিছিল শেষে বাড়ি ফেরার পথে সোনাতলা উপজেলার শিহিপুর এলাকায় পৌঁছলে তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। স্বজনরা ময়নাতদন্ত ছাড়াই তার মরদেহ দাফন করেন। ময়নাতদন্ত শেষে সাব্বিরের মরদেহ পুনরায় দাফন করা হয়েছে।
ঠিকানা/এএস