কী সময় পার করছি আমরা

প্রকাশ : ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ১১:১৪ , অনলাইন ভার্সন
কী এক ক্রান্তিকাল পার করছি আমরা। চারদিকে অন্ধকার অন্ধকার ভাব। এক অস্থির সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি আমরা। গন্তব্য নির্দিষ্ট নয়, তবু হাঁটছি। সামনে সূর্যের রেখা নাকি কালো কালো গহ্বর, জানা নেই কারও। বিস্ময়, এক মহা অশান্তি। কোথাও যুদ্ধ, কোথাও নির্বাচনী উত্তাপ, কোথাও রাজনীতির কালবৈশাখী।
দুটো বিষয় আজকের সম্পাদকীয়ের প্রতিপাদ্য। একটি বাংলাদেশ নিয়ে, আরেকটি যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন। দুটিই আমাদের গভীরভাবে স্পর্শ করে। করার কারণও যথেষ্ট। একটি আমাদের ফেলে আসা জন্মভূমি। আরেকটি শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে পাওয়া আবাসস্থল, কর্মস্থল এবং স্বপ্নপূরণের কাক্সিক্ষত দেশ। যে দেশে আকাশছোঁয়ার স্বপ্ন দেখা যায়। বিশেষ করে, আমাদের আগামী প্রজন্ম, আমাদের সন্তান-সন্ততির ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার স্বপ্নপুরী।
যে সংবাদটিকে ভিত্তি করে সম্পাদকীয়, তার একটি যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন নিয়ে লেখা, সেটির শিরোনাম ‘প্রেসিডেন্ট নির্বাচন-২০২৪ : জনমতের অনিশ্চয়তার ঝড়ে লন্ডভন্ড উভয় শিবির’। বাংলাদেশের বিষয়টির শিরোনাম ‘শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক অভিলাষ/ নির্বাচন নিয়ে ধোঁয়াশা’। যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ৫ নভেম্বর। একেবারে দরজায় কড়া নাড়ছে। তবে নির্বাচনী লড়াই শুরু হয়েছে আগে থেকেই। দু-একটা বিতর্কও হয়ে গেছে। রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প গত নির্বাচনে পরাজিত হয়ে এবার আবার প্রার্থী হয়েছেন। বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ডেমোক্র্যাট পার্টির প্রার্থী হওয়া থেকে সরে দাঁড়ানোয় ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস প্রার্থী হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।
যেহেতু নির্বাচন আসন্ন, তাই দুই প্রার্থীই নির্বাচনী প্রচারণায় যুক্তরাষ্ট্রের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত চষে বেড়াচ্ছেন। সময় খুব কম, তাই দুই প্রার্থীই ঝড়ের গতিতে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু দুই প্রার্থীই জনমত জরিপে নির্বাচনী ফল নিয়ে নির্ভার হতে পারছেন না। তাই তো প্রতিদ্বন্দ্বী উভয় প্রার্থীর শিবিরে দুশ্চিন্তার ছাপ লক্ষ করা যাচ্ছে। নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, ঝড় ঘনীভূত হচ্ছে।
সিএনএনের এক জরিপে দেখা যায়, জাতীয় পর্যায়ে ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী কমলা হ্যারিসের প্রতি গড়ে ৫০ শতাংশ ভোটার এবং রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি গড়ে ৪৭ শতাংশ ভোটার সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। অন্য আরেক প্রতিবেদনে ভোটারদের ৫০ শতাংশের পছন্দ কমলা হ্যারিসকে। ৪৮ শতাংশ ভোটারের পছন্দ ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। তালিকাভুক্ত ভোটারদের ৪৯ শতাংশ কমলার প্রতি এবং ৪৭ শতাংশ ভোটারের সমর্থন ট্রাম্পের প্রতি প্রকাশ পেয়েছে।
এ রকম পরিস্থিতিতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস মিলছে। নিজেদের ধারণা ব্যক্ত করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ রকম ন্যূনতম জনমতের ব্যবধানে জয়ের পাল্লা শেষ পর্যন্ত কার দিকে ঝোঁকে, সেটা এ মুহূর্তে বলে দেওয়া খুবই মুশকিল। তাই ক্ষমতার মসনদে কে বসবেন, তা কেউই বলতে পারছেন না। খেলা এখন পর্যন্ত ড্র বলেই মনে করা হচ্ছে। শেষ হাসিটা যে কে হাসেন, তা নির্ধারিত হবে চূড়ান্ত ফল প্রকাশের মধ্য দিয়ে।
‘শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক অভিলাষ/ নির্বাচন নিয়ে ধোঁয়াশা’ শিরোনামের খবরটিতে বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক বাস্তবতা তুলে ধরে বলা হয়েছে, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। কবে হবে নির্বাচন-দুই বা তিন বছরের মধ্যে নাকি অনির্দিষ্টকালের জন্য ঝুলে থাকবে-এ প্রশ্ন উঠছে। প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্বাচনী পরিকল্পনা ও ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া আদৌ শান্তিপূর্ণভাবে হবে কি না, তা নিয়েও সন্দেহ-সংশয় ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে।’
অবশ্য এই নির্বাচনী ধোঁয়াশা অনেকটাই কেটে যাওয়ার কথা গত ১৬ অক্টোবর আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের কথায়। তিনি বিশিষ্ট সাংবাদিক মতিউর রহমান চৌধুরীর সঙ্গে এক টক শোতে বলেছেন, ২০২৫ সালের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের পর ড. আসিফ নজরুলই সর্বাধিক প্রভাবশালী সদস্য বলে মনে করা হয়। তাহলে তো এটুকু সময় অন্তর্বর্তী সরকারের পাওয়ার কথা এবং একই সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে দুর্ভাবনায় না ভুগে রাজনৈতিক দলগুলোর এখন নির্বাচনের দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত।
একটা কথা আমাদের মনে রাখলে ভালো হয়, রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে তোলা যায় সহজেই কিন্তু পরিস্থিতি সহনশীল করে রাখতে পারাটাই দেশ ও জাতির জন মঙ্গল-এ কথা নিশ্চয় সবাই মানেন। দেশের পানি অনেকবার ঘোলা হয়েছে। দেশ নিয়ে ষড়যন্ত্রের কথাও অনেক শুনেছে দেশের মানুষ। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর সবাই মিলে যদি আমরা দেশটাকে একটা স্থায়ী স্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যেতে পারি, তাহলে সেটাই হবে আমাদের বড় অর্জন। এখন আমরা যে একটা ক্রান্তিকাল পার করছি, সেটাও কেটে যাবে-দেশটা যদি একটা স্থায়ী স্থিতিশীলতার দিকে পরিচালিত হয়। দেশবাসী সেটাই প্রত্যাশা করে রাজনীতিবিদদের কাছে।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078