প্রবাসের অন্যতম বড় আঞ্চলিক সংগঠন চট্টগ্রাম সমিতির নির্বাচন আগামী ২০ অক্টোবর রোববার। এদিন নিউইয়র্ক সিটির চারটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে তাহের-আরিফ এবং মাকসুদ-মাসুদ প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।
এদিকে ১৫ অক্টোবর মঙ্গলবার নির্বাচনী বিধিমালা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের মুখপাত্র শাহাব উদ্দিন সাগর জানান, ২০ অক্টোবর রোববার ভোটগ্রহণ হবে। নির্বাচনে চারটি কেন্দ্রের মধ্যে ব্রকলিন ও জ্যামাইকা কেন্দ্রে সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা এবং কানেকটিকাটের স্ট্যামফোর্ড ও পেনসিলভেনিয়ার আপার ডারবিতে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হবে। নির্বাচনে প্রার্থী ও ভোটারদের নির্বাচনী বিধিমালা মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে।
নির্বাচনে সর্বমোট ২ হাজার ৮৯৪ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। যার মধ্যে সাধারণ ভোটার ২ হাজার ৬৬৩ জন এবং লাইফ মেম্বার ২৩৩ জন।
এদিকে এবারের নির্বাচনে তাহের-আরিফ এবং মাকসুদ-মাসুদ প্যানেলের প্রার্থীরা দিনরাত প্রচার অব্যাহত রেখেছেন। তারা প্রার্থীদের কাছে নিজেদের যোগ্যতা তুলে ধরে ভোট প্রার্থনা করছেন।
তাহের-আরিফ প্যানেলের পক্ষে বিবৃতি : এই প্যানেলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির পক্ষে সদস্য সচিব কামাল হোসেন মিঠু মঙ্গলবার রাতে একটি বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিটি বলা হয়েছে- চট্টগ্রাম অ্যাসোসিয়েশান অব নর্থ আমেরিকা ইনক একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠন। এই সংগঠনের সাথে বহু নেতা কর্মী এবং তাদের পরিবারের ত্যাগ, তিতীক্ষা, ভালোবাসা, সমাজসেবার ইতিহাস ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। কমিটি কিংবা নির্বাচন আসে এবং চলে যায়। থেকে যায় ভ্রার্তৃত্ববোধ, হাসি-কান্নায় বিজড়িত স্মৃতি। দিনশেষে আমরা সবাই চাটগাঁইয়া - আমরা সবাই বাংলাদেশি এবং আমরা সবাই মানুষ।
আগামী ২০ অক্টোবর চট্টগ্রাম অ্যাসোসিয়েশনের আসন্ন নির্বাচন। এ উপলক্ষে আমরা সাজসাজ রবে আমাদের সুযোগ্য, সৎ নেতা চট্টগ্রামের কৃতি সন্তান তাহের এবং আরিফকে নিয়ে আমাদের পরিষদ সাজাই। অপরপক্ষের নির্বাচনী তৎপরতা এবং কর্মকাণ্ডক সাদরে গ্রহণ করে সাধুবাদ জানাই। তাহের-আরিফ পরিষদ যোগ্যতা এবং মেধার ভিত্তিতে এগিয়ে আসা যেকোনো মানুষকে সুযোগ দিতে আগ্রহী।
বিবৃতিতে বলা হয়- নেতৃত্ব দিতে হলে কিছু কোয়ালিটির প্রয়োজন হয়, শুধুমাত্র পরিচিতি, চাটুকারিতা কিংবা মিষ্টিকথা - আবার পদ পদবি না পেলে বড়-ছোট তোয়াক্কা না করে যাকে তাকে যেকোনো মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হেনস্থা করা, এগুলো হলো মানসিকভাবে অপরিপক্কতার অন্যতম লক্ষণ। নিজের পরিবারের বিভিন্ন দাবি দাওয়া, অধিকার, দায়-দায়িত্ব অগ্রাহ্য করে - সমাজসেবার কাজে নিজেকে প্রমাণ করতে চাওয়া “ঘরে বাতি না জ্বালিয়ে অন্যস্থানে বাতি জ্বালানোর সামিল। নিজের ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধ না করলে যেমন বড় কোনো লোন পাওয়া যায়না - ঠিক তেমনি পরিবারের প্রয়োজন না মিটিয়ে সমাজের প্রয়োজন মেটানো যায় না।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়- তাহের-আরিফ প্যানেলের ক্যাম্পেইনের একটি বিশেষ ইশতেহার হলো- নারীর ক্ষমতায়ন। সেই লক্ষ্যে আমরা আমাদের বিভিন্ন নির্বাচনী সভায় আমাদের নারী সদস্যদের আমন্ত্রণ করছি। তাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে আমরা ধন্য, বিনীত। একইধারায় গত ১১ অক্টোবর শুক্রবার ফিলাডেলফিয়ার স্ট্যামফোর্ড-এ আমাদের নির্বাচনী সভায়- রেহানা হানিফ, ফারহা চৌধুরী ও সিপিএ শ্রাবনী প্রমুখ বক্তব্য দেন। তারা সমাজে নারীদের অংশগ্রহণে বৈষম্যের কথা তুলে ধরেন। নিজেদের যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রাণ খুলে কথা বলেন। অ্যাসোসিয়েশন এ নির্বাচিত হলে তারা কি করতে চান এইসব অধিকার, দাবি দাওয়া উত্থাপন করেন। আর সংগঠনের প্রবীণ নেতারা তাদের ঐতিহ্যময় গৌরবগাঁথা দিয়ে কি করে তারা সংগঠনটি চালু করেছিলেন তা সবিস্তারে বর্ণনা করেন।
চট্টগ্রাম অ্যাসোসিয়েশান-এর মশাল সামনে এগিয়ে নেয়ার স্বপ্নে বিভোর নতুন প্রজন্মের কর্মীরা সেসব শুনছিলেন। সব মিলিয়ে একটি অভূতপূর্ব সুন্দর নির্বাচনী সভার পরদিনই জনৈক প্রার্থী বলেন যে তাহের-আরিফ পরিষদের নির্বাচনী সভায় ভাড়া করে বক্তা নিয়ে আসা হয় সমালোচনা করার জন্যে। এই বক্তব্য চট্টগ্রামবাসীর মুখে চপেটাঘাতের শামিল।
পেনসিলভেনিয়ার ফিলাডেফিয়ায় ঢাকা ক্লাবে মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিতে গিয়ে প্রচণ্ড আবেগে অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রেসিয়ডেন্ট পদপ্রার্থী আবু তাহেরকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে তাহের-আরিফ প্যানেলের সকল নেতা কর্মী, চট্টগ্রামের সকল শ্রেণীর মানুষ, মিডিয়া কর্মীরা যখন উৎকণ্ঠিত তখন জনৈক সভাপতি প্রার্থী তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ পোস্ট দেন। এই সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্টটির কারণে ইতিমধ্যেই সর্বমহলে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী তাহের-আরিফ প্যানেল : নির্বাচনে নিজেদের জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তাহের-আরিফ প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী আবু তাহের ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আরিফুল ইসলাম। নির্বাচনে জয়ী হলে চট্টগ্রাম সমিতিকে প্রবাসের একটি আধুনিক সংগঠনে পরিণত করার পাশাপাশি নিউইয়র্কে ‘চট্টগ্রাম কনভেনশন সেন্টার’ প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করেন তারা। বিভিন্ন গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাতকারে এসব কথা বলেন তাহের আরিফ প্যানেলের শীর্ষ দুই নেতা।
সভাপতি প্রার্থী আবু তাহের দূর্নীতিমুক্ত চট্টগ্রাম সমিতি গড়ে তুলবেন উল্লেখ করে বলেন, আমরা যদি দায়িত্ব পাই বিগত সময়ের মতো আমাদের কমিটিতে কোন আর্থিক অস্বচ্ছতা থাকবেনা। সমিতির যাবতীয় হিসাব নিকাশ প্রতি চার মাস পরপর উপযুক্ত অডিটের মাধ্যমে সবার সামনে উপস্থাপন করা হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এছাড়াও চট্টগ্রাম সমিতির মাধ্যমে চট্টগ্রামবাসীর কল্যাণের জন্য যা যা করা লাগে সেসব উন্নয়নমূলক কাজ করতে তাহের-আরিফ পরিষদ বদ্ধ পরিকর থাকবে বলেও জানান প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী আবু তাহের।
প্রবাসের বুকে মৃত ব্যক্তিদের কবরস্থ করার ও সার্বিক খরচ বহনের বিষয়ে তিনি বলেন, চট্টগ্রামের কোন লোক এখানে মারা গেলে কবরস্থ করা নিয়ে যে ঝামেলা থাকে আমরা সে সমস্যা সমাধান করব। অতীতেও সম্পূর্ণ বিনামূল্যে আমরা মৃত ব্যক্তিদের বরাদ্ধ দিয়ে এসেছি, ভবিষ্যতেও মৃত ব্যক্তিকে কবরস্থ করাসহ যাবতীয় ব্যয় আমরা বহন করব।
সুষ্ঠু ভোটে জেতার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেন, ভোট যদি অবাধ নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হয় তাহলে আমি বিপুল ভোটে জয়ী হব। নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু ভোটের আয়োজন করার পরও যদি আমি হেরে যাই, সে হার আমি মাথা পেতে নিয়ে জয়ীদের আমি নিজ হাতে বিজয়ের মালা পরিয়ে দিব। এসময় তিনি চট্টগ্রামবাসীকে আগামী ২০ অক্টোবর নিজ ভোটাধিকার প্রয়োগের আহবান জানান।
তাহের-আরিফ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, আমি দীর্ঘদিন যাবৎ চট্টগ্রাম সমিতির সাথে যুক্ত আছি। আমি ও আমার প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী আবু তাহের আমরা বিশ্বাস করি আমরা চট্টগ্রামবাসীর সেবক। অতিতেও আমরা চট্টগ্রাম সমিতিতে থেকে জনগণের জন্য কাজ করেছি, মানুষের জন্য কাজ করেছি, চট্টগ্রামবাসীর জন্য কাজ করেছি। ২০ তারিখের নির্বাচনে আমরা পূর্ণ প্যানেলে ১৯ জনই জয়ী হওয়ার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
মাকসুদ-মাসুদ প্যানেলের পরিচিতি ও সভা : চট্টগ্রাম সমিতির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী মাকসুদ-মাসুদ প্যানেলের প্যানেল পরিচিতি ও নির্বাচনী সভা গত গত ১২ অক্টোবর শনিবার জামাইকার ইকরা পার্টি হলে অনুষ্ঠিত হয়। বিপুলসংখ্যক চট্টগ্রামবাসী ও কমিউনিটির বিশিষ্টজনেরা সভায় যোগ দেন।
চট্টগ্রাম সমিতির সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার আলহাজ মোহাম্মদ জাফরের সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের সাবেক সভাপতি আহসান হাবীবের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য, চট্রগ্রাম সমিতির ট্রাস্টি বোর্ডের সাবেক কো-চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাজাহান সিরাজী। প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাবেক সাধারন সম্পাদক ও বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন কমিশনার মেহবুবর রহমান বাদল, বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জড়িত প্রবীণ সদস্য মো আবু নাসের, সাবেক উপদেষ্টা হাজী শফিউল আলম, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুজিবুল হক, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মফজল আহমদ, সাবেক উপদেষ্টা ও আজীবন সদস্য মন্জুরুল আলম, মিরসরাই সমিতির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান উপদেষ্টা জি এম ফারুক, বর্তমান অন্তর্বর্তিকালীন কমিটির সিনিয়র সদস্য আবুল কাশেম চট্টলা), চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কাজী মোবাশ্বের হাশেমী, সাবেক উপদেষ্টা ও আজীবন সদস্য মোহাম্মদ জসিম উদ্দীন, রাজনীতিবীদ ও সমাজসেবক মোহাম্মদ জাফর আহমদ, ভবন উদ্ধার সংক্রান্ত আহবায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য বাবু সাধন কর, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ নুর ও মোহাম্মদ আলী চৌধুরী প্রমুখ।
পবিত্র কোরান তেলাওয়াত, গীতা ও ত্রিপিটক পাঠের মাধ্যমে শুরু হওয়া উক্ত সভায় আরো বক্তব্য দেন সভাপতি পদপ্রাথী মাকসুদুল হক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মাসুদ সিরাজী, সিনিয়র সহ-সভাপতি পদপ্রার্থী মোক্তাদির বিল্লাহ, সহ-সভাপতি পদপ্রার্থী আলী আকবর বাপ্পি, আইয়ুব আনসারী, যুগ্ম সম্পাদক পদপ্রার্থী সুশান্ত দত্ত নোটন, সাংগঠনিক সম্পাদক পদপ্রাথী মোহাম্মদ ফরহাদ, মুরাদ চৌধুরী, সাবেক দপ্তর সম্পাদক মুহাম্মদ দিদার, আজীবন সদস্য মাস্টার মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন নাদের, কানেকটিকাট থেকে আগত বখতিয়ার সুন্নী সোসাইটির সহ-সভাপতি মোহাম্মদ জাফর, মোহাম্মদ জসিম উদ্দীন ও কেমারেক্স ফার্মাসিউটিক্যালের সুপারভাইজার মসিউর রহমান প্রমুখ।
সভায় নারী পুরুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ সত্যিই ছিল চোখে পড়ার মত। উপস্থিতিদের মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্যরা হলেন- মিরসরাই সমিতির সাবেক সভাপতি আমজাদ হোসেন ভুঁইয়া, মিরসরাই সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসিফুর রহমান, চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম কর্মকর্তা মোহাম্মদ হানিফ চৌধুরী, মিরসরাই সমিতির সিনিয়র সদস্য আবু তাহের মিয়া, প্রবীণ সদস্য আবদুল মান্নান, অনোয়ার চৌধুরী, সাবেক কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফি সিকদার, মিরসরাই সমিতির অন্যতম সদস্য তাহমিনা আক্তার কলি, মোহাম্মদ ইয়াহিয়া, মনোরঞ্জন দাসসহ বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী প্রচুর নারী ও পুরুষ।
সভাপতি পদপ্রার্থী মাকসুদ চৌধুরী আগামী দিনে চট্টগ্রাম সমিতি কিভাবে চলবে এবং অতীতে এই সংগঠনের অচল অবস্থা সৃষ্টির জন্য কারা দায়ী ছিল তার বিস্তারিত তুলে ধরে বলেন, আসুন আমরা কাঁদা ছোঁড়াছুঁড়ি বন্ধ করে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে সংগঠনটিকে এগিয়ে নিয়ে যাই। আমাদের নতুন প্রজন্মদের জন্য, বৃদ্ধদের জন্য, চট্টগ্রামবাসীর জন্য সম্মিলিত ভাবে কিছু করি। তিনি বলেন, তার প্যানেল নির্বাচিত হলে সংগঠনের পরিধি বৃদ্ধির পাশাপাশি গণমুখী কিছু কর্মসুচী গ্রহণ করবেন। তার মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য সকল ধর্মের জন্য বৈষম্য দুর করা, চট্টগ্রামবাসীর জন্য সুবিধাজনক স্থানে আরো একটি ভবন ক্রয় করে মসজিদ ও কমিউনিটি সেন্টার স্থাপনের ব্যবস্থা করা, অন্যান্য স্টেটগুলোর সাথে সেতুবন্ধনের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট স্টেটে সংগঠনের শাখা গঠন করে কর্মসুচীর বিস্তার করা, নতুন কিংবা অদক্ষ সদস্যদের ট্রেনিং ও কর্মসংস্থানে সহায়তা প্রদান করা, বন্ধ হয়ে যাওয়া আইটি স্কুল পুনরায় চালু করা, নতুন জায়গা খুঁজে চট্রগ্রামবাসীর জন্য কবরস্থান ক্রয়ের ব্যবস্থা করা ইত্যাদি।
কানেক্টিকাটে পরিচিতি সভা : ১৩ অক্টোবর রোববার সন্ধ্যায় স্টামফোর্ডের ইয়ারউড সেন্টারে চট্টগ্রাম সমিতির প্রবীণ সদস্য সালেহ আহমদের সভাপতিত্বে এবং তরুণ সংগঠক মোহাম্মদ জসিম উদ্দীনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অব কানেকটিকাটের (বাক) সভাপতি ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নুরুল আলম নুরু।
প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ও চট্টগ্রাম সমিতির ট্রাস্টি বোর্ডের সাবেক কো চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাজাহান সিরাজী। বিশেষ অতিথি ছিলেন যথাক্রমে চট্টগ্রাম সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন কমিশনার মেহেবুবর রহমান বাদল, সাবেক উপদেষ্টা ও সাবেক কর্মকর্তা হাজী শফিউল আলম, সাবেক সভাপতি আহসান হাবীব, বাক-এর কার্যকরী পরিষদ সদস্য হাবিবুর রহমান, চট্টগ্রাম সমিতির প্রবীণ সদস্য আহমেদ নবী, শাহ আলম, ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ সিদ্দিকী রুবেল, মোহাম্মদ সেলিম, আবু আহমেদ, আবদুস সাত্তার।
নতুন প্রজন্মের সন্তান হাফেজ জামাল আহমদের পবিত্র কোরান তেলায়াত ও নাত পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হওয়া সভায় আরো বক্তব্য রাখে আমিন হায়দার, রঞ্জিত দাস, জসিম উদ্দীন, জাহাঙ্গীর আলম, আবু সাইদ প্রমুখ!
সভায় বক্তারা বলেন, যারা ভোটের নামে মানুষের পরিবার নিয়ে মিথ্যা প্রপাগান্ডা করছে তাদের আগামী ২০ তারিখ ব্যালেটের মাধ্যমে জবাব দেয়া হবে।
হাসপাতালে আবু তাহের
ঠিকানা রিপোর্ট : নিজ প্যানেলের প্রচার সভায় বক্তৃতার সময় অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন চট্টগ্রাম সমিতির আসন্ন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী তাহের-আরিফ প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী আবু তাহের। এ ঘটনা ঘটেছে গত ১৪ অক্টোবর সোমবার পেনসিলভেনিয়া স্টেটের ফিলাডেলফিয়ার আপার ডারবিতে। বর্তমানে তার অবস্থা স্থিতিশীল এবং তাকে ৩-৪ দিন চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণে থাকতে হবে।
তাহের-আরিফ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আরিফুল ইসলাম ঠিকানাকে জানান, আপার ডারবিতে তাদের প্যানেলের নির্ধারিত প্রচার সভা ছিল সোমবার। ওই সভায় বক্তৃতা দেওয়ার সময় সভাপতি প্রার্থী আবু তাহের অভিযোগ করেন, তার প্রতিদ্বন্দ্বীরা তার বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করছেন। বক্তৃতার একপর্যায়ে আবু তাহেরের হাত থেকে মাইক্রোফোন নিচে পড়ে যায়। শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন তিনি। একপর্যায়ে তার মাথায় পানি দেওয়া হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় অ্যাম্বুলেন্স কল করা হয়।
আরিফুল ইসলাম জানান, অ্যাম্বুলেন্স এসে আবু তাহেরকে কাছের ল্যানকেনাউ মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে। তবে সার্জারির প্রয়োজন নেই। ৩-৪ দিন তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকতে হবে।
তাহের-আরিফ প্যানেলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান কামাল হোসেন মিঠু জানান, আবু তাহের একজন সজ্জন ব্যক্তি। তিনি একাধিক বার চট্টগ্রাম সমিতিতে সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন। কোষাধ্যক্ষ থাকাকালে তিনি পুক্সক্ষানুপুক্সক্ষ হিসাব দিয়েছেন, যা সাধারণ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। অথচ এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীরা তার বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করছেন। বক্তৃতার সময় এসব বিষয়ের জবাব দিতে গিয়ে তিনি আবেগতাড়িত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
কামাল হোসেন মিঠু আরো বলেন, আমরা সামাজিক সংগঠন করি কমিউনিটিকে সেবা করার জন্য। কিন্তু এসব সংগঠনের নির্বাচন এলে কিছু দুষ্টু লোক অপতৎপরতায় লিপ্ত হন। তারা প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করেন। কিন্তু ৯০ ভাগ লোক এসব পছন্দ করেন না। তিনি বলেন, ২০ অক্টোবরের নির্বাচনে সাধারণ ভোটাররা ব্যালটের মাধ্যমে এসব অপতৎপরতার জবাব দেবেন। নির্বাচনে আমরাই জিতবো ইনশাল্লাহ।
এদিকে ১৫ অক্টোবর মঙ্গলবার নির্বাচনী বিধিমালা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের মুখপাত্র শাহাব উদ্দিন সাগর জানান, ২০ অক্টোবর রোববার ভোটগ্রহণ হবে। নির্বাচনে চারটি কেন্দ্রের মধ্যে ব্রকলিন ও জ্যামাইকা কেন্দ্রে সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা এবং কানেকটিকাটের স্ট্যামফোর্ড ও পেনসিলভেনিয়ার আপার ডারবিতে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হবে। নির্বাচনে প্রার্থী ও ভোটারদের নির্বাচনী বিধিমালা মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে।
নির্বাচনে সর্বমোট ২ হাজার ৮৯৪ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। যার মধ্যে সাধারণ ভোটার ২ হাজার ৬৬৩ জন এবং লাইফ মেম্বার ২৩৩ জন।
এদিকে এবারের নির্বাচনে তাহের-আরিফ এবং মাকসুদ-মাসুদ প্যানেলের প্রার্থীরা দিনরাত প্রচার অব্যাহত রেখেছেন। তারা প্রার্থীদের কাছে নিজেদের যোগ্যতা তুলে ধরে ভোট প্রার্থনা করছেন।
তাহের-আরিফ প্যানেলের পক্ষে বিবৃতি : এই প্যানেলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির পক্ষে সদস্য সচিব কামাল হোসেন মিঠু মঙ্গলবার রাতে একটি বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিটি বলা হয়েছে- চট্টগ্রাম অ্যাসোসিয়েশান অব নর্থ আমেরিকা ইনক একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠন। এই সংগঠনের সাথে বহু নেতা কর্মী এবং তাদের পরিবারের ত্যাগ, তিতীক্ষা, ভালোবাসা, সমাজসেবার ইতিহাস ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। কমিটি কিংবা নির্বাচন আসে এবং চলে যায়। থেকে যায় ভ্রার্তৃত্ববোধ, হাসি-কান্নায় বিজড়িত স্মৃতি। দিনশেষে আমরা সবাই চাটগাঁইয়া - আমরা সবাই বাংলাদেশি এবং আমরা সবাই মানুষ।
আগামী ২০ অক্টোবর চট্টগ্রাম অ্যাসোসিয়েশনের আসন্ন নির্বাচন। এ উপলক্ষে আমরা সাজসাজ রবে আমাদের সুযোগ্য, সৎ নেতা চট্টগ্রামের কৃতি সন্তান তাহের এবং আরিফকে নিয়ে আমাদের পরিষদ সাজাই। অপরপক্ষের নির্বাচনী তৎপরতা এবং কর্মকাণ্ডক সাদরে গ্রহণ করে সাধুবাদ জানাই। তাহের-আরিফ পরিষদ যোগ্যতা এবং মেধার ভিত্তিতে এগিয়ে আসা যেকোনো মানুষকে সুযোগ দিতে আগ্রহী।
বিবৃতিতে বলা হয়- নেতৃত্ব দিতে হলে কিছু কোয়ালিটির প্রয়োজন হয়, শুধুমাত্র পরিচিতি, চাটুকারিতা কিংবা মিষ্টিকথা - আবার পদ পদবি না পেলে বড়-ছোট তোয়াক্কা না করে যাকে তাকে যেকোনো মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হেনস্থা করা, এগুলো হলো মানসিকভাবে অপরিপক্কতার অন্যতম লক্ষণ। নিজের পরিবারের বিভিন্ন দাবি দাওয়া, অধিকার, দায়-দায়িত্ব অগ্রাহ্য করে - সমাজসেবার কাজে নিজেকে প্রমাণ করতে চাওয়া “ঘরে বাতি না জ্বালিয়ে অন্যস্থানে বাতি জ্বালানোর সামিল। নিজের ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধ না করলে যেমন বড় কোনো লোন পাওয়া যায়না - ঠিক তেমনি পরিবারের প্রয়োজন না মিটিয়ে সমাজের প্রয়োজন মেটানো যায় না।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়- তাহের-আরিফ প্যানেলের ক্যাম্পেইনের একটি বিশেষ ইশতেহার হলো- নারীর ক্ষমতায়ন। সেই লক্ষ্যে আমরা আমাদের বিভিন্ন নির্বাচনী সভায় আমাদের নারী সদস্যদের আমন্ত্রণ করছি। তাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে আমরা ধন্য, বিনীত। একইধারায় গত ১১ অক্টোবর শুক্রবার ফিলাডেলফিয়ার স্ট্যামফোর্ড-এ আমাদের নির্বাচনী সভায়- রেহানা হানিফ, ফারহা চৌধুরী ও সিপিএ শ্রাবনী প্রমুখ বক্তব্য দেন। তারা সমাজে নারীদের অংশগ্রহণে বৈষম্যের কথা তুলে ধরেন। নিজেদের যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রাণ খুলে কথা বলেন। অ্যাসোসিয়েশন এ নির্বাচিত হলে তারা কি করতে চান এইসব অধিকার, দাবি দাওয়া উত্থাপন করেন। আর সংগঠনের প্রবীণ নেতারা তাদের ঐতিহ্যময় গৌরবগাঁথা দিয়ে কি করে তারা সংগঠনটি চালু করেছিলেন তা সবিস্তারে বর্ণনা করেন।
চট্টগ্রাম অ্যাসোসিয়েশান-এর মশাল সামনে এগিয়ে নেয়ার স্বপ্নে বিভোর নতুন প্রজন্মের কর্মীরা সেসব শুনছিলেন। সব মিলিয়ে একটি অভূতপূর্ব সুন্দর নির্বাচনী সভার পরদিনই জনৈক প্রার্থী বলেন যে তাহের-আরিফ পরিষদের নির্বাচনী সভায় ভাড়া করে বক্তা নিয়ে আসা হয় সমালোচনা করার জন্যে। এই বক্তব্য চট্টগ্রামবাসীর মুখে চপেটাঘাতের শামিল।
পেনসিলভেনিয়ার ফিলাডেফিয়ায় ঢাকা ক্লাবে মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিতে গিয়ে প্রচণ্ড আবেগে অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রেসিয়ডেন্ট পদপ্রার্থী আবু তাহেরকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে তাহের-আরিফ প্যানেলের সকল নেতা কর্মী, চট্টগ্রামের সকল শ্রেণীর মানুষ, মিডিয়া কর্মীরা যখন উৎকণ্ঠিত তখন জনৈক সভাপতি প্রার্থী তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ পোস্ট দেন। এই সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্টটির কারণে ইতিমধ্যেই সর্বমহলে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী তাহের-আরিফ প্যানেল : নির্বাচনে নিজেদের জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তাহের-আরিফ প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী আবু তাহের ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আরিফুল ইসলাম। নির্বাচনে জয়ী হলে চট্টগ্রাম সমিতিকে প্রবাসের একটি আধুনিক সংগঠনে পরিণত করার পাশাপাশি নিউইয়র্কে ‘চট্টগ্রাম কনভেনশন সেন্টার’ প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করেন তারা। বিভিন্ন গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাতকারে এসব কথা বলেন তাহের আরিফ প্যানেলের শীর্ষ দুই নেতা।
সভাপতি প্রার্থী আবু তাহের দূর্নীতিমুক্ত চট্টগ্রাম সমিতি গড়ে তুলবেন উল্লেখ করে বলেন, আমরা যদি দায়িত্ব পাই বিগত সময়ের মতো আমাদের কমিটিতে কোন আর্থিক অস্বচ্ছতা থাকবেনা। সমিতির যাবতীয় হিসাব নিকাশ প্রতি চার মাস পরপর উপযুক্ত অডিটের মাধ্যমে সবার সামনে উপস্থাপন করা হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এছাড়াও চট্টগ্রাম সমিতির মাধ্যমে চট্টগ্রামবাসীর কল্যাণের জন্য যা যা করা লাগে সেসব উন্নয়নমূলক কাজ করতে তাহের-আরিফ পরিষদ বদ্ধ পরিকর থাকবে বলেও জানান প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী আবু তাহের।
প্রবাসের বুকে মৃত ব্যক্তিদের কবরস্থ করার ও সার্বিক খরচ বহনের বিষয়ে তিনি বলেন, চট্টগ্রামের কোন লোক এখানে মারা গেলে কবরস্থ করা নিয়ে যে ঝামেলা থাকে আমরা সে সমস্যা সমাধান করব। অতীতেও সম্পূর্ণ বিনামূল্যে আমরা মৃত ব্যক্তিদের বরাদ্ধ দিয়ে এসেছি, ভবিষ্যতেও মৃত ব্যক্তিকে কবরস্থ করাসহ যাবতীয় ব্যয় আমরা বহন করব।
সুষ্ঠু ভোটে জেতার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেন, ভোট যদি অবাধ নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হয় তাহলে আমি বিপুল ভোটে জয়ী হব। নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু ভোটের আয়োজন করার পরও যদি আমি হেরে যাই, সে হার আমি মাথা পেতে নিয়ে জয়ীদের আমি নিজ হাতে বিজয়ের মালা পরিয়ে দিব। এসময় তিনি চট্টগ্রামবাসীকে আগামী ২০ অক্টোবর নিজ ভোটাধিকার প্রয়োগের আহবান জানান।
তাহের-আরিফ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, আমি দীর্ঘদিন যাবৎ চট্টগ্রাম সমিতির সাথে যুক্ত আছি। আমি ও আমার প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী আবু তাহের আমরা বিশ্বাস করি আমরা চট্টগ্রামবাসীর সেবক। অতিতেও আমরা চট্টগ্রাম সমিতিতে থেকে জনগণের জন্য কাজ করেছি, মানুষের জন্য কাজ করেছি, চট্টগ্রামবাসীর জন্য কাজ করেছি। ২০ তারিখের নির্বাচনে আমরা পূর্ণ প্যানেলে ১৯ জনই জয়ী হওয়ার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
মাকসুদ-মাসুদ প্যানেলের পরিচিতি ও সভা : চট্টগ্রাম সমিতির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী মাকসুদ-মাসুদ প্যানেলের প্যানেল পরিচিতি ও নির্বাচনী সভা গত গত ১২ অক্টোবর শনিবার জামাইকার ইকরা পার্টি হলে অনুষ্ঠিত হয়। বিপুলসংখ্যক চট্টগ্রামবাসী ও কমিউনিটির বিশিষ্টজনেরা সভায় যোগ দেন।
চট্টগ্রাম সমিতির সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার আলহাজ মোহাম্মদ জাফরের সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের সাবেক সভাপতি আহসান হাবীবের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য, চট্রগ্রাম সমিতির ট্রাস্টি বোর্ডের সাবেক কো-চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাজাহান সিরাজী। প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাবেক সাধারন সম্পাদক ও বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন কমিশনার মেহবুবর রহমান বাদল, বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জড়িত প্রবীণ সদস্য মো আবু নাসের, সাবেক উপদেষ্টা হাজী শফিউল আলম, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুজিবুল হক, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মফজল আহমদ, সাবেক উপদেষ্টা ও আজীবন সদস্য মন্জুরুল আলম, মিরসরাই সমিতির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান উপদেষ্টা জি এম ফারুক, বর্তমান অন্তর্বর্তিকালীন কমিটির সিনিয়র সদস্য আবুল কাশেম চট্টলা), চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কাজী মোবাশ্বের হাশেমী, সাবেক উপদেষ্টা ও আজীবন সদস্য মোহাম্মদ জসিম উদ্দীন, রাজনীতিবীদ ও সমাজসেবক মোহাম্মদ জাফর আহমদ, ভবন উদ্ধার সংক্রান্ত আহবায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য বাবু সাধন কর, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ নুর ও মোহাম্মদ আলী চৌধুরী প্রমুখ।
পবিত্র কোরান তেলাওয়াত, গীতা ও ত্রিপিটক পাঠের মাধ্যমে শুরু হওয়া উক্ত সভায় আরো বক্তব্য দেন সভাপতি পদপ্রাথী মাকসুদুল হক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মাসুদ সিরাজী, সিনিয়র সহ-সভাপতি পদপ্রার্থী মোক্তাদির বিল্লাহ, সহ-সভাপতি পদপ্রার্থী আলী আকবর বাপ্পি, আইয়ুব আনসারী, যুগ্ম সম্পাদক পদপ্রার্থী সুশান্ত দত্ত নোটন, সাংগঠনিক সম্পাদক পদপ্রাথী মোহাম্মদ ফরহাদ, মুরাদ চৌধুরী, সাবেক দপ্তর সম্পাদক মুহাম্মদ দিদার, আজীবন সদস্য মাস্টার মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন নাদের, কানেকটিকাট থেকে আগত বখতিয়ার সুন্নী সোসাইটির সহ-সভাপতি মোহাম্মদ জাফর, মোহাম্মদ জসিম উদ্দীন ও কেমারেক্স ফার্মাসিউটিক্যালের সুপারভাইজার মসিউর রহমান প্রমুখ।
সভায় নারী পুরুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ সত্যিই ছিল চোখে পড়ার মত। উপস্থিতিদের মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্যরা হলেন- মিরসরাই সমিতির সাবেক সভাপতি আমজাদ হোসেন ভুঁইয়া, মিরসরাই সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসিফুর রহমান, চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম কর্মকর্তা মোহাম্মদ হানিফ চৌধুরী, মিরসরাই সমিতির সিনিয়র সদস্য আবু তাহের মিয়া, প্রবীণ সদস্য আবদুল মান্নান, অনোয়ার চৌধুরী, সাবেক কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফি সিকদার, মিরসরাই সমিতির অন্যতম সদস্য তাহমিনা আক্তার কলি, মোহাম্মদ ইয়াহিয়া, মনোরঞ্জন দাসসহ বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী প্রচুর নারী ও পুরুষ।
সভাপতি পদপ্রার্থী মাকসুদ চৌধুরী আগামী দিনে চট্টগ্রাম সমিতি কিভাবে চলবে এবং অতীতে এই সংগঠনের অচল অবস্থা সৃষ্টির জন্য কারা দায়ী ছিল তার বিস্তারিত তুলে ধরে বলেন, আসুন আমরা কাঁদা ছোঁড়াছুঁড়ি বন্ধ করে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে সংগঠনটিকে এগিয়ে নিয়ে যাই। আমাদের নতুন প্রজন্মদের জন্য, বৃদ্ধদের জন্য, চট্টগ্রামবাসীর জন্য সম্মিলিত ভাবে কিছু করি। তিনি বলেন, তার প্যানেল নির্বাচিত হলে সংগঠনের পরিধি বৃদ্ধির পাশাপাশি গণমুখী কিছু কর্মসুচী গ্রহণ করবেন। তার মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য সকল ধর্মের জন্য বৈষম্য দুর করা, চট্টগ্রামবাসীর জন্য সুবিধাজনক স্থানে আরো একটি ভবন ক্রয় করে মসজিদ ও কমিউনিটি সেন্টার স্থাপনের ব্যবস্থা করা, অন্যান্য স্টেটগুলোর সাথে সেতুবন্ধনের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট স্টেটে সংগঠনের শাখা গঠন করে কর্মসুচীর বিস্তার করা, নতুন কিংবা অদক্ষ সদস্যদের ট্রেনিং ও কর্মসংস্থানে সহায়তা প্রদান করা, বন্ধ হয়ে যাওয়া আইটি স্কুল পুনরায় চালু করা, নতুন জায়গা খুঁজে চট্রগ্রামবাসীর জন্য কবরস্থান ক্রয়ের ব্যবস্থা করা ইত্যাদি।
কানেক্টিকাটে পরিচিতি সভা : ১৩ অক্টোবর রোববার সন্ধ্যায় স্টামফোর্ডের ইয়ারউড সেন্টারে চট্টগ্রাম সমিতির প্রবীণ সদস্য সালেহ আহমদের সভাপতিত্বে এবং তরুণ সংগঠক মোহাম্মদ জসিম উদ্দীনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অব কানেকটিকাটের (বাক) সভাপতি ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নুরুল আলম নুরু।
প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ও চট্টগ্রাম সমিতির ট্রাস্টি বোর্ডের সাবেক কো চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাজাহান সিরাজী। বিশেষ অতিথি ছিলেন যথাক্রমে চট্টগ্রাম সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন কমিশনার মেহেবুবর রহমান বাদল, সাবেক উপদেষ্টা ও সাবেক কর্মকর্তা হাজী শফিউল আলম, সাবেক সভাপতি আহসান হাবীব, বাক-এর কার্যকরী পরিষদ সদস্য হাবিবুর রহমান, চট্টগ্রাম সমিতির প্রবীণ সদস্য আহমেদ নবী, শাহ আলম, ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ সিদ্দিকী রুবেল, মোহাম্মদ সেলিম, আবু আহমেদ, আবদুস সাত্তার।
নতুন প্রজন্মের সন্তান হাফেজ জামাল আহমদের পবিত্র কোরান তেলায়াত ও নাত পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হওয়া সভায় আরো বক্তব্য রাখে আমিন হায়দার, রঞ্জিত দাস, জসিম উদ্দীন, জাহাঙ্গীর আলম, আবু সাইদ প্রমুখ!
সভায় বক্তারা বলেন, যারা ভোটের নামে মানুষের পরিবার নিয়ে মিথ্যা প্রপাগান্ডা করছে তাদের আগামী ২০ তারিখ ব্যালেটের মাধ্যমে জবাব দেয়া হবে।
হাসপাতালে আবু তাহের
ঠিকানা রিপোর্ট : নিজ প্যানেলের প্রচার সভায় বক্তৃতার সময় অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন চট্টগ্রাম সমিতির আসন্ন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী তাহের-আরিফ প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী আবু তাহের। এ ঘটনা ঘটেছে গত ১৪ অক্টোবর সোমবার পেনসিলভেনিয়া স্টেটের ফিলাডেলফিয়ার আপার ডারবিতে। বর্তমানে তার অবস্থা স্থিতিশীল এবং তাকে ৩-৪ দিন চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণে থাকতে হবে।
তাহের-আরিফ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আরিফুল ইসলাম ঠিকানাকে জানান, আপার ডারবিতে তাদের প্যানেলের নির্ধারিত প্রচার সভা ছিল সোমবার। ওই সভায় বক্তৃতা দেওয়ার সময় সভাপতি প্রার্থী আবু তাহের অভিযোগ করেন, তার প্রতিদ্বন্দ্বীরা তার বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করছেন। বক্তৃতার একপর্যায়ে আবু তাহেরের হাত থেকে মাইক্রোফোন নিচে পড়ে যায়। শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন তিনি। একপর্যায়ে তার মাথায় পানি দেওয়া হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় অ্যাম্বুলেন্স কল করা হয়।
আরিফুল ইসলাম জানান, অ্যাম্বুলেন্স এসে আবু তাহেরকে কাছের ল্যানকেনাউ মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে। তবে সার্জারির প্রয়োজন নেই। ৩-৪ দিন তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকতে হবে।
তাহের-আরিফ প্যানেলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান কামাল হোসেন মিঠু জানান, আবু তাহের একজন সজ্জন ব্যক্তি। তিনি একাধিক বার চট্টগ্রাম সমিতিতে সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন। কোষাধ্যক্ষ থাকাকালে তিনি পুক্সক্ষানুপুক্সক্ষ হিসাব দিয়েছেন, যা সাধারণ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। অথচ এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীরা তার বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করছেন। বক্তৃতার সময় এসব বিষয়ের জবাব দিতে গিয়ে তিনি আবেগতাড়িত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
কামাল হোসেন মিঠু আরো বলেন, আমরা সামাজিক সংগঠন করি কমিউনিটিকে সেবা করার জন্য। কিন্তু এসব সংগঠনের নির্বাচন এলে কিছু দুষ্টু লোক অপতৎপরতায় লিপ্ত হন। তারা প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করেন। কিন্তু ৯০ ভাগ লোক এসব পছন্দ করেন না। তিনি বলেন, ২০ অক্টোবরের নির্বাচনে সাধারণ ভোটাররা ব্যালটের মাধ্যমে এসব অপতৎপরতার জবাব দেবেন। নির্বাচনে আমরাই জিতবো ইনশাল্লাহ।