খবরটি যেন সত্যি স্বস্তিদায়ক হয়

প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩৬ , অনলাইন ভার্সন
যারা প্রবাস জীবনযাপন করেন, তারাই কেবল অনুভব করতে পারেন, দেশ তাদের জীবনে কতটা জুড়ে থাকে। যেমন প্রবাদে বলা হয়, ‘এক সন্তানের আশা, নদীকূলে বাসা।’ ভাঙনপ্রবণ নদীর কূলে যারা বাস করে, তারাই জানে কতটা শঙ্কার মধ্যে তাদের বাস করতে হয়। দিনরাত ২৪ ঘণ্টা তাদের ভয়ে ভয়ে থাকতে হয়। এই বুঝি ভাঙনে তার সর্বত্র বিলীন হয়ে যায় নদীতে। যেমন এক সন্তানের বাবা-মা সব সময় দুর্ভাবনায় থাকেন, কখন বুঝি চোখের মণি এক সন্তানের কী হয়ে যায়। প্রবাসীদেরও দেশ নিয়ে সে রকমই সব সময় দুর্ভাবনা। দেশ ভালো আছে শুনলে প্রবাসীদের মনটা আনন্দে ভরে থাকে। দেশের যেকোনো দুঃসংবাদেই প্রবাসী হৃদয় কেঁপে ওঠে আতঙ্কে। প্রবাসীদের দেশের প্রতি এই ভালোবাসাটাকেই বুঝি বলা হয় দেশপ্রেম। অনেকেই সে কারণে বলে থাকেন, দেশটা যে স্বর্গের চেয়েও অধিক কাম্য, প্রবাসীদের দেশভাবনা থেকে তা অনুভব করা যায়।
প্রবাসীরা সব সময় দেশের সুসংবাদ কামনা করলেও সে রকম সুসংবাদ তাদের ভাগ্যে কমই জোটে। যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রাজনৈতিক অস্থিরতা প্রবাসী মনকে ভারাক্রান্ত করে তোলে। বিপরীতে যেকোনো সুসংবাদ, তা যত ক্ষুদ্র বা তাৎপর্যহীনই হোক, প্রবাসীরা দারুণ স্বস্তি অনুভব করেন। যদিও সে রকম স্বস্তিদায়ক সংবাদ প্রবাসী জীবনে খুব কমই জোটে। প্রবাসে বসবাসকালে প্রবাসীদের জীবনটাই কেমন নানা অস্থিরতায় ভরে থাকে, দেশে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ কিংবা কোনো প্রয়োজনে দেশে যেতে হলেও তাদের দুর্ভোগ শুরু হয়ে যায় দেশের যেকোনো বিমানবন্দরে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গেই। সে ঢাকার শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হোক বা সিলেট, যশোর, চট্টগ্রাম বিমানবন্দর হোক। কাস্টমস কর্মকর্তাদের যাত্রীসেবা শুরু হয়ে যায় প্রবাসী যাত্রীদের চোর সন্দেহ করার মধ্য দিয়ে। যতই গ্রিন চ্যানেল থাক, আপনাকে নানাভাবে হয়রানি করতে থাকবেন সেবাদানকারী কর্মকর্তারা। আপনার লাগেজ খুলবেন, সব এলোমেলো করে দেবেন। আপনার জন্য তা যত বিব্রতকর এবং নাজেহালমূলক হোক। এই শুরুর শেষ হবে, যদি আপনি সব যন্ত্রণা ও নাজেহাল সত্ত্বেও আপনার অস্তিত্বটা রক্ষা করে টিকে থাকতে পারেন। বিমানবন্দরের এই দুর্ভোগই শেষ নয়, আপনি সারা জীবন যেখানে বড় হয়েছেন, খেলাধুলা করেছেন, আর একসঙ্গে বড় হয়েছেন, যারা একসঙ্গে খেয়েছেন, ঘুমিয়েছেন, সেখানে অনেক দিন পর দেশে গেলে দেখবেন সবাই আপনার দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন। আত্মীয়, বন্ধুবান্ধবের হাতে অনেকে নিজেদের জীবনটাও দিয়ে আসতে বাধ্য হন। মিথ্যা মামলা-মোকদ্দমা তো আছেই। তবে সত্যি যদি স্বস্তিদায়ক কোনো সংবাদ হয়ে থাকে প্রবাসীদের জন্য, তার চেয়ে বড় আনন্দের খবর আর কিছু হয় না।
‘বিমানবন্দরে যাত্রীসেবায় স্বস্তি’ এই শিরোনামে ঠিকানার ৪ সেপ্টেম্বর সংখ্যায় প্রথম পৃষ্ঠায় একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে জাহাঙ্গীর কবিরের নামে। এই সংবাদটিতে স্বাভাবিক কারণেই প্রবাসী অনেকের মনে স্বস্তি দেখা দিয়েছে। অনেকেই নিজেদের মতামত ব্যক্ত করে বলেছেন, ‘খবরটির উৎস যদি প্রকৃতই সঠিক হয়, তবে প্রবাসীদের জন্য এর চেয়ে অধিক স্বস্তিদায়ক আর কিছু হতে পারে না। সঠিক মানে যদি খবরটি বস্তুনিষ্ঠভাবে পরিবেশিত হয়ে থাকে। বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সংবাদপত্র এবং সাংবাদিকেরা কতটা সততা ও বস্তুনিষ্ঠভাবে সংবাদ পরিবেশনে অভ্যস্ত হতে উঠতে পেরেছেন, নিজেদের সাংবাদিকতার মানমর্যাদা ও গ্রহণযোগ্যতার নীতিমালা মেনে চলতে শিখেছেন, তা এখনই বলার সময় এসেছে মনে করাটা সঠিক না-ও হতে পারে। তবে জুলাই অভ্যুত্থানের আগে বাংলাদেশের সাংবাদিকতা নিয়ে মানুষের মনে আস্থা খুব একটা দেখা যায়নি। বাংলাদেশের অনেক সাংবাদিক, বিশেষ করে সাংবাদিক নেতারা সরকারের মন জুগিয়ে নিজেদের আখের গোছাতেই অধিক ব্যস্ত ছিলেন। তাদের প্রতি সে কারণে সাধারণ মানুষের মনে ভয় থাকলেও সম্মান করতে এবং সাংবাদিকতা পেশার প্রতি আস্থা রেখে সাংবাদিকদের প্রতি খুব একটা শ্রদ্ধাবোধ লক্ষ করা যেত না। সাংবাদিকদের পেশার প্রতি নিজেদের নিষ্ঠা প্রদর্শন করতে না পারলেও ক্ষমতাসীনদের মন জুগিয়ে চলতে তাদের অধিক নিষ্ঠা দেখা গেছে।
এখন সেই পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটেছে বিশ্বাস থেকেই ঠিকানায় ৪ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত প্রথম পৃষ্ঠার খবর ‘বিমানবন্দরে যাত্রীসেবায় স্বস্তি’তে প্রবাসীদের স্বস্তি লক্ষ করা যাচ্ছে। খবরটিতে বলা হয়েছে, ‘শাহজালাল বিমানবন্দরে যাত্রীসেবায় স্বস্তি ফিরে এসেছে। এত দিন বিমানবন্দরে টেলিফোন সেবা, হেল্প ডেস্ক থাকলেও যাত্রীসেবার কাজে আসেনি। এবার সেগুলো চালুর পাশাপাশি মিলছে ফ্রি ওয়াই-ফাইসহ নানা সুবিধা। লাগেজ কাটা বা চুরি ঠেকাতে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এসবের ফলে প্রবাসী যাত্রীদের মনে স্বস্তিও ফিরে আসতে শুরু করেছে।’ আতঙ্কও আস্তে আস্তে দূর হয়ে যাবে বলে প্রবাসী যাত্রীরা মনে করছেন।
সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষ দৃঢ়তার সঙ্গে জানিয়েছে, যাত্রীসেবায় আর কোনো আপস করা হবে না। ১০টি টেলিফোন বুথ চালু হয়েছে। বদলে গেছে যাত্রীদের পুরোনো ধারা। যাত্রী হেনস্তার অবসান ঘটতে চলেছে। এখন একজন যাত্রী ফ্লাইট অবতরণের ২০ মিনিটের মধ্যে তার লাগেজ পেয়ে যাচ্ছেন। হয়রানিমুক্ত সেবা পেয়ে স্বস্তি ফিরেছে সবার মধ্যে। কল সেন্টারের ১৩৬০০ নম্বরটিও বর্তমানে শতভাগ চালু রয়েছে। প্রবাসীদের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সবারই আন্তরিক প্রার্থনাÑভবিষ্যতে রাজনৈতিক কোনো পটপরিবর্তনে আবার যেন উল্টোটা না হয়। প্রবাসীদের মনে স্বস্তি ফিরে এলে দেশের প্রতি তাদের টান এবং স্ত্রী-পুত্র-পরিজন নিয়ে দেশ ভ্রমণেও তাদের আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে। বিমানবন্দরে জিনিসপত্র চুরি যাওয়াসহ দেশে চলাফেলায় প্রবাসীদের আস্থা ফিরে এলে প্রকৃত অর্থে দেশ এবং দেশের অর্থনীতিই লাভবান হবে।
 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041