ঠিকানাবিহীন পথ

প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৬ , অনলাইন ভার্সন
মাগো বলে চিৎকার করে মাটিতে বসে পড়ল ফারিয়া। আজ সকালে ফারিয়া একটু অন্য রকম সেজেছিল। ফিরোজা রঙের শাড়ির সঙ্গে ব্লাউজ, পেটিকোট, জুতা ম্যাচিং করে পরেছিল। ঠোঁটে ম্যাজেন্ডা কালারের লিপস্টিক। কপালে ফিরোজা রঙের টিপ, খোঁপায় ছিল লাল গোলাপ। সারা শরীরে মিষ্টি পারফিউমের সুগন্ধি। ছোট ছোট সিল্কি চুলগুলো ঝলমল করছিল কাঁধের ওপর। কী অপূর্বই না লাগছিল ফারিয়াকে।
ফারিয়া সাজ্জাদকে আজ সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছিল। তাই সে অফিস থেকে একটু আগে ছুটি নিয়ে বাজারে গেল। সাজ্জাদের জন্য ফিরোজা কালারের একটা পাঞ্জাবি এবং সোনালি কালারের একটা হাতঘড়ি ও একটা ফুলের তোড়া কিনল। ভেবেছিল, সাজ্জাদকে নিয়ে আজ সে রেস্টুরেন্টে খাবে, তাই বাড়িতে কোনো রান্না করল না। ভালোবেসে বিয়ে করেছিল সাজ্জাদকে। আজ ওদের তৃতীয় বিবাহবার্ষিকী। যদিও এ নিয়ে সাজ্জাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। বিয়ের মাত্র তিন বছরে সাজ্জাদের এত পরিবর্তন ফারিয়াকে রীতিমতো ভাবিয়া তোলে। মুক্তমনের সাজ্জাদকে এখন বড্ড অচেনা মনে হয় ফারিয়ার। তবু নিজের পক্ষ থেকে এতটুকু ঘাটতি রাখেনি ফারিয়া। সংসারের যাবতীয় কাজসহ চাকরি সে নিজের হাতেই সব সামলায়।
ফারিয়া মিষ্টি একটা হাসিতে ফুলের তোড়া এগিয়ে দিয়ে বলল, হ্যাপি অ্যানিভার্সারি ডে। তারপর সাজ্জাদের হাতটা ধরে ঘড়িটা পরাতে গেলে সাজ্জাদ হাতটা টান দিয়ে নিজের কাছে নিল। ফারিয়া বলল, ঘড়িটা কি তোমার পছন্দ হয়নি? এই দেখো, আমার শাড়ির সঙ্গে ম্যাচিং করে তোমার পাঞ্জাবি কিনেছি। তাড়াতাড়ি পরে নাও। সেদিকে সাজ্জাদ তাকিয়েও দেখল না। সাজ্জাদকে আজকাল বড় অচেনা মনে হয়। কথায় কথায় ঝগড়া করে। ফারিয়া একটু সাজুগুজু করলে সাজ্জাদের চোখে রক্ত উঠে যায়। চাকরি করা একদমই সহ্য করতে পারে না সাজ্জাদ। অথচ বিয়ের আগে এক উন্মুক্ত আকাশের স্বপ্ন দেখাত। স্বাধীনতার কথা বলত। মুক্তমনের মানুষ ভেবেই ফারিয়া সাজ্জাদের প্রেমে পড়েছিল। অথচ সেই সাজ্জাদ আর এই সাজ্জাদের মধ্যে এখন আকাশ-পাতাল পার্থক্য। তাহলে কি ফারিয়া ভুল লোককে ভালোবেসে ছিল? ভাবতে থাকে ফারিয়া। আবার সাজ্জাদকে বলে, কী হলো? তৈরি হয়ে নাও। আমরা রেস্টুরেন্টে খেতে যাব। সাজ্জাদ কোনো প্রশ্নের উত্তর দিল না। চোখ দুটি গোল্লা গোল্লা করে ফারিয়ার আপাদমস্তক একবার দেখল। ফারিয়ার সাজসজ্জা দেখে সাজ্জাদের চোখ আরও রক্তাক্ত হয়ে উঠল। ভয়ংকর চেহারা নিয়ে ফারিয়ার দিকে আস্তে আস্তে এগিয়ে আসতে লাগল। ফারিয়া ভয়ে তোতলাতে তোতলাতে বলল, কী হয়েছে তোমার? তোমাকে এমন দেখাচ্ছে কেন? আমার কি কোনো অপরাধ হয়েছে? কোনো প্রশ্নের জবাব না দিয়ে সাজ্জাদ ফারিয়ার হাত থেকে পাঞ্জাবি ও ঘড়িটা কেড়ে নিয়ে মাটিতে ফেলে দিল। ফারিয়া ঠেকাতে গেলে তার চোখে গায়ের শক্তিতে একটা ঘুষি মারল। তার চোখ দিয়ে দরদর করে রক্ত ঝরতে লাগল। ফারিয়া আর কিছুই দেখতে পেল না। এক নিকষ আঁধার ফারিয়ার চোখ দুটোর সঙ্গে জীবনটাকে ঢেকে দিল। শুধু এতটুকুই সাজ্জাদ ফারিয়াকে বলল, আমি যেন এসে তোমাকে না দেখি। ফারিয়া জানে না তার কী অপরাধ। সে কোথায় যাবে এখন, কোথায় থাকবে? মা-বাবার কাছে কোন মুখ নিয়ে ফিরে যাবে। তাদের অমতেই বিয়ে করেছিল সে। তা ছাড়া সে যাবে কী করে? চোখে তো কিছুই দেখতে পাচ্ছে না। কোনো কিছুতেই ভ্রুক্ষেপ না করে দ্রুত প্রস্থান করল সাজ্জাদ।
 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078