মন বুঝি মনের ছোঁয়ায়

প্রকাশ : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:২৫ , অনলাইন ভার্সন
বড়ই বিচিত্র মানব মন। কল্পনার জগতে মন এক পঙ্খীরাজ ঘোড়া, যার কূল-কিনারা খুঁজে পাওয়া অনেক কঠিনতর বিষয়। মনের গতি-প্রকৃতি বোঝা অনেক কঠিন কাজ। বিবেকের কড়া শাসনকে উপেক্ষা করে সংযমের বেড়াজাল ছিন্ন করে মন ছুটে চলে তার আপন গন্তব্যে। এই চঞ্চল মন কখনো মানবকে নিয়ে যায় অলোর পথে আবার কখনো নিমজ্জিত করে গভীর অন্ধকারে। মানবের আচার-আচরণ সবকিছুর ওপর এই মনের একচ্ছত্র বিচরণ। মন নিয়ে কিছু কথা আজ এখানে আলোচনা করব, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করছি।
একটা সুন্দর মন অন্ধকারে আলোর মতো, যার মাধ্যমে কলুষতার মাঝেও নিজের অস্তিত্বকে মর্যাদাসম্পন্ন রাখা যায়। মন নিজের হলেও নিয়ন্ত্রণ অন্যের। মনের দিক থেকে যে দুর্বল, কর্মক্ষেত্রেও সে দুর্বল। একটা মন আরেকটা মনকে খুঁজছে নিজের ভাবনার ভার নামিয়ে দেওয়ার জন্য, নিজের মনের ভাবকে অন্যের মনে ভাবিত করার জন্য। চিকিৎসকেরা যে ভুল করেন, তা হলো তারা মনের চিকিৎসা না করে শরীর সারাতে চান। যদিও মন আর শরীর অবিচ্ছেদ্য, তাই আলাদা করে চিকিৎসা করা উচিত নয়। মন হলো সবচেয়ে বড় তর্কশাস্ত্রবিদ।
মন দিয়ে মন বোঝা যায়, গভীর বিশ্বাস শুধু নীরব প্রাণের কথা টেনে নিয়ে আসে। মানুষের মন যেদিনই ক্লান্ত হয়, সেদিনই তার মৃত্যু হয়। কুৎসিত মন একটি সুন্দর মুখের সমস্ত সৌন্দর্য কেড়ে নেয়। মনের কলুষতাই মানুষের আত্মা ও দৃষ্টিকে কদর্যতা দান করে এবং সেই কদর্যতাই নিজের এবং পরিবারের লোকদের জীবনকে বিভীষিকাময় করে তোলে। মনের ওপর কারও হাত নেই। মনের ওপর জোর খাটানোর চেষ্টা করা বৃথা। একটি মহৎ অন্তর পৃথিবীর সমস্ত মাথার চেয়ে ভালো।
সব মানুষের মধ্যে একটি খোকা থাকে যে মনের কবিত্ব, মনের কল্পনা, মনের সৃষ্টিছাড়া অবাস্তবতা, মনের পাগলামিকে নিয়ে সময়ে-অসময়ে এমনিভাবে খেলা করতে ভালোবাসে। প্রাণের অবস্থাটি খুব কোমল করতে হবে। কাদামাটির ন্যায় মনকে গঠন করা চাই। তাহলে ওই মনের দ্বারা অনেক সুন্দর নতুন জিনিস প্রস্তুত হতে পারে। সফল হতে হলে মনের বিরুদ্ধে কাজ করতে হয়। মানুষের মনের সবচেয়ে বড় শত্রু হলো সংশয়, অবিশ্বাস আর সন্দেহ।
বিশ্বে দুটি শক্তি রয়েছে-এগুলো হচ্ছে অসি ও মন। কিন্তু পরিণামে এ দুয়ের দ্বন্দ্বে মনের কাছে অসি শেষ পর্যন্ত পর্যুদস্ত হয়। মন যখন ঘুরে বেড়ায়, কান আর চোখ তখন অকেজো হয়ে দাঁড়ায়। দুর্বল দেহ মনকে দুর্বল করে দেয়। আত্মা কলুষিত হতে শুরু করলেই মন আকারে ছোট হতে থাকে। সন্দেহপ্রবণ মন এক বৃহৎ বোঝাস্বরূপ। আমি তোমার চোখ দ্বারা দেখি কিন্তু বুঝি মন দ্বারা। জীবন আমাদের ইচ্ছাধীন নয়। মনের ওপর কারও হাত নেই, মনের ওপর জোর খাটানোর চেষ্টা করা বৃথা।
পৃথিবীতে অনেক কিছুই নিয়ন্ত্রণ করা যায় কিন্তু মনকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। আর মনকেই যদি নিয়ন্ত্রণ করা যেত, তাহলে দুঃখ কী জিনিস তা মানুষ কখনোই বুঝত না। দোষ, গুণ, ভুলভ্রান্তি মিলেই মানুষের জীবন। অন্যকে ক্ষমা করার মতো মহৎ মন প্রত্যেকের থাকা চাই। যাকে তাকে গছিয়ে দেওয়ার নামই বিয়ে নয়! মনের মিল না হলে বিয়ে করাই ভুল। মন ধর্মের পূর্বগামী, মনই শ্রেষ্ঠ, সকলই মনোময়। মন যদি চোখকে শাসন করে, তবে কখনো চোখ ভুল করবে না। সন্দেহপ্রবণ মন ভালো কাজের অন্তরায়।
একটা সুন্দর মন অন্ধকারে আলোর মতো, যার মাধ্যমে কলুষতার মাঝেও নিজের অস্তিত্বকে মর্যাদাসম্পন্ন রাখা যায়। মনের অনেক দরজা আছে, সেখান দিয়ে অসংখ্যজন প্রবেশ করে এবং বের হয়ে যায়। তাই সবাইকে মনে রাখা সম্ভব হয় না। দুনিয়াতে মানুষের চেয়ে বড় আর কিছু নেই আর মানুষের মাঝে মনের চেয়ে বড় নেই। মন অনেক কিছুই চাইবে কিন্তু তা বিবেক দিয়ে বিচার করবে। তাহলেই তুমি বুঝবে কোনটা তোমার করা উচিত আর কোনটা করা উচিত নয়।
কেউ সময় অপচয় না করলে কমবয়সী মনটাও অনেক বড় হতে পারে। এমন মানবজনম আর কী হবে! মন যা চায় তা-ই করো এই ভবে। তোমার যদি পরিতৃপ্ত মন থাকে, তবেই তুমি জীবনকে উপলব্ধি করতে পারবে। মানুষের মনের ভাব কখনোই মুখে প্রতিফলিত হয় না। মুখের ওপর সর্বদা পর্দা থাকে। শুধু মানুষ যখন হাসে, তখন পর্দা দূরীভূত হয়। হাস্যরত একজন মানুষের মুখে তার মনের ছায়া দেখা যায়।
মন খাঁটি হলে পবিত্র স্থানে গমন অর্থহীন। সন্দেহপ্রবণ মন ভালো কাজের অন্তরায়। মানুষ দ্বিমনা। তার ভেতরে দুটি মন আছে, একটা খোলা মন, একটা ভালো মন, তার একটা অবজাত একটা অভিজাত, তাদের একজন ছোটলোক একজন ভদ্রলোক। পরিপূর্ণ আনন্দের সময় মানুষের মন ভিন্ন ভিন্ন দিকে ধায় না। একটা আনন্দ নিয়ে সে পড়ে থাকতে ভালোবাসে। মনের সৌন্দর্যকে যে অগ্রাধিকার দেয়, সংসারে সেই জয়লাভ করে।
যে মনের দিক থেকে বৃদ্ধ নয়, বার্ধক্য তার জীবনে আসে না। মনের মতো মানুষ ছাড়া সংসার করা আর ডাস্টবিনের পাশে বসে থাকা একই কথা। তুমি যদি মনের সজীবতা ধরে রাখতে চাও, তাহলে সবকিছুকে সহজভাবে গ্রহণ করতে শেখো। শিশুদের মনটা স্বর্গীয় ফুলের মতোই সুন্দর। ভালো কাজ সব সময় করো। বারবার করো। মনকে সব সময় ভালো কাজে নিমগ্ন রাখো। সদাচরণই স্বর্গসুখের পথ।
শক্ত মন আলোচনা করে ধারণা নিয়ে, গড়পড়তা মন আলোচনা করে ঘটনা নিয়ে, দুর্বল মন মানুষ নিয়ে আলোচনা করে। মনে পাপ থাকার এই একটা লক্ষণ। মনে হয়, সকলে বুঝি সব জানে। মনের বাসনাকে দূরীভূত করা উচিত নয়। এই বাসনাগুলোকে গানের গুঞ্জনের মতো কাজে লাগানো উচিত। যে মন সুখী এবং পরিতৃপ্ত, সেই মনই মহৎ। খাঁটি সরল ও সুস্থ হচ্ছে সেই মন, যে ছোট-বড় সকল বস্তুকে সমভাবে গ্রহণ করতে পারে। অল্পবয়সী মনটা হিসেবে বড় হতে পারে, যদি যে সময় নষ্ট না করে।
দুনিয়াতে মানুষের মনই বোধ হয় সবচেয়ে দুর্গম ও দুর্জ্ঞেয়। মনের সৌন্দর্যকে যে অগ্রাধিকার দেয়, সংসারে সেই জয়লাভ করে। আমি তোমার চোখ দ্বারা দেখি, কিন্তু বুঝি মন দ্বারা। কল্পনা বাস্তবের অভাব পূরণ করে। উদ্ভট কল্পনায় মন ক্যাঙ্গারুর মতো লাফিয়ে লাফিয়ে চলে। যেসব দৃশ্য আমরা খুব মন লাগিয়ে দেখতে চাই, সেসব দৃশ্য কখনো ভালোভাবে দেখতে পারি না, সেসব দৃশ্য অতি দ্রুত চোখের সামনে দিয়ে চলে যায়।
যদি তুমি কারও সাথে তোমার ভাষায় কথা বলো, তার কাছে যেতে পারবে; যদি তার ভাষায় কথা বলো, তার হৃদয়ে প্রবেশ করতে পারবে। চোখ কতটুকুই দেখে, কান কতটুকুই শোনে, স্পর্শ কতটুকুই বোধ করে। কিন্তু মন এই আপন ক্ষুদ্রতাকে কেবলই ছড়িয়ে যাচ্ছে। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মনের অনুভূতি পরিবর্তন হয়। মন যদি চোখকে শাসন করে, তবে কখনো চোখ ভুল করবে না। আমার মনই আমার ধর্মশালা।
মন যা চায় তা না পাওয়াই ভালো, আর তাহলেই মানুষ বোঝে না পাওয়ার বেদনা কী! মন দিয়ে মন বোঝা যায়, গভীর বিশ্বাস শুধু নীরব প্রাণের কথা টেনে নিয়ে আসে। যে মনের দিক থেকে বৃদ্ধ নয়, বার্ধক্য তার জীবনে আসে না। কৃতজ্ঞ কুকুর অকৃতজ্ঞ মানুষ অপেক্ষা শ্রেয়। যে দৃষ্টির সঙ্গে মনের যোগাযোগ নেই, সে তো দেখা নয়, তাকানো। ভাবনাশক্তিই হলো অন্তরাত্মার দৃষ্টিশক্তি। যে মন কর্তব্যরত নয়, সে মন অনুভোগ্য। সন্দেহমিশ্রিত মন সঠিক কাজে বিরোধিতা করে। একটা সুন্দর মন অন্ধকারে আলোর মতো, যার দ্বারা পবিত্রতার মাঝেও স্বয়ং সত্ত্বাকে সম্মানজনক রাখা যায়।
মনোবিজ্ঞানীরা মনে করেন, বস্তু অস্তিত্বহীন, মন ব্যতিরেকে। অর্থাৎ বস্তু আছে কি নেই, তা কোনো না কোনো মনের ওপর নির্ভরশীল। অন্ধকারে দড়ি বা রশি সাপ হয়ে থাকে, যতক্ষণ মন ওটাকে সাপ মনে করে। স্থিরতার সঙ্গে মানুষ মন থেকে যা চাইবে, প্রকৃতি তা তাকে হাজির করে দেয়। মন হচ্ছে আধ্যাত্মিক ও বাস্তবিক জীবনের সেতুবন্ধ। তাই মন দিয়ে সবাইকে মনের যত্ন ও মনচর্চার প্রতিবেশ ও পরিবেশ গড়ে তোলা মানসিক ও মানবিক দায়িত্ব।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078