যেসব ইস্যুতে উত্তেজনাপূর্ণ ছিল ট্রাম্প ও কমালা প্রথম বাহাস 

প্রকাশ : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩:৩৮ , অনলাইন ভার্সন
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কমালা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম টিভি বিতর্ক ছিল রীতিমতো উত্তেজনাপূর্ণ। একে অপরকে একচুলও ছাড় দিতে চাননি তারা।

এই টিভি বিতর্ককে বলা হচ্ছে ‘ফায়ারি ডিবেট’। ফিলাডেলফিয়ায় কমালা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্প এবিসি টিভি চ্যানেল আয়োজিত বিতর্কের মুখোমুখি হয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ তোলেন। যুক্তি-পাল্টা যুক্তি, অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে উঠে এলো অর্থনীতি, গর্ভপাত, অভিবাসন, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন, ক্যাপিটলের দাঙ্গার মতো বিষয়গুলো। দুজনেই একে অপরকে ‘মিথ্যাবাদী’ বলে অভিহিত করেছেন।

অর্থনীতি, ধনী-গরিব বৈষম্য
কমালা হ্যারিস এ বিষয়ে বলেন, ‘আপনাদের জন্য ট্রাম্পের কোনো পরিকল্পনা নেই। ট্রাম্প শুধু ধনীদের জন্য কর ছাড় দেওয়া নিয়ে চিন্তিত। তিনি সুবিধাবাদী অর্থনীতির পক্ষে।’

জবাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘কমালা হ্যারিস হলেন খালি কলসি, যার আওয়াজ বেশি। তাঁর কোনো পরিকল্পনা নেই। তিনি বাইডেনের পরিকল্পনা নকল করে পরিবেশন করছেন।’

কমালা হ্যারিসের অভিযোগ, ‘ট্রাম্প চীন ও অন্য দেশ থেকে আসা জিনিসের ওপর শুল্ক বাড়াতে চান। এটি আসলে মার্কিনিদের ওপর বিক্রয়কর বসানো। এর ফলে জিনিসের দাম বেড়ে যাবে।’ প্রতি মাসে সাধারণ মানুষের ওপর কতটা বোঝা চাপবে সেটাও জানিয়েছেন তিনি।

ট্রাম্প বলেন, (আমদানি) শুল্কের অর্থ দিয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের কর কমাবেন। তার দাবি, শুল্কের ফলে জিনিসের দাম বাড়বে না, বরং এটি না থাকলে বেশি দামে জিনিস কিনতে হবে।

কমালা হ্যারিস দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের জন্য তিনি একটা আর্থিক নীতি নিয়ে এগোচ্ছেন।

ট্রাম্পের পাল্টা অভিযোগ, কমালা হ্যারিস পুলিশের জন্য অর্থ কমাতে চান, সবার কাছ থেকে বন্দুক কেড়ে নিতে চান।

কমালা হ্যারিস এ বিষয়ে বলেন, তার কাছে ও তার রানিংমেট ওয়ালজের কাছে অনুমোদিত বন্দুক আছে। নিজের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য তিনি বন্দুক রেখেছেন।

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যু
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কমালা হ্যারিস দুজনের কাছ থেকেই জানতে চাওয়া হয়, তারা কী করে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ থামাবেন?

কমালা হ্যারিস তার আগের অবস্থানের কথা আবার জানিয়ে বলেন, ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে। গত বছর ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে ঢুকে এক হাজার ২০০ মানুষকে হত্যা করেছিল।

কমালা আরও বলেন, এখন যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধ হওয়া দরকার। গাজায় সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন। সেই সঙ্গে যাদের পণবন্দি করে রাখা হয়েছে, তাদের মুক্তি দিতে হবে।

কমলা হ্যারিস বলেন, ‘আমাদের টু স্টেট সমাধানের পথেই যেতে হবে। এর ফলে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।’

ট্রাম্পের দাবি, তিনি প্রেসিডেন্ট হলে এই লড়াই হতোই না। তার অভিযোগ, কমালা হ্যারিস ইসরায়েলকে ঘৃণা করেন। তিনি প্রেসিডেন্ট হলে দুই বছরের মধ্যে ইসরায়েল বলে কোনো দেশ থাকবে না।

ট্রাম্পের অভিযোগ, ‘হ্যারিস আরবদেরও ঘৃণা করেন। আমি প্রেসিডেন্ট হলে দ্রুত এর সমাধান করে ফেলব।’

কমালা হ্যারিস বারবার শপথ করে বলেন, তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করছেন। তিনি ইসরায়েলের নিরাপত্তার অধিকার সমর্থন করেন। তার পাল্টা দাবি, বিশ্বনেতারা ট্রাম্পের কথায় হাসছেন।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি এই যুদ্ধ বন্ধ করতে চাই। আমি মানুষের জীবন বাঁচাতে চাই। বাইডেন প্রশাসন ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন হতে দিয়েছে।’ আপনি কি চান ইউক্রেন যুদ্ধে জিতুক? ট্রাম্প এই প্রশ্ন পাশ কাটিয়ে যান।

কমালা হ্যারিসের অভিযোগ, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে তিনি পুতিনকে ইউক্রেন দখল করে নিতে দেবেন। তিনি বলেন, ‘ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে পুতিন এতক্ষণে কিয়েভে বসে থাকতেন। তার নজর থাকত বাকি ইউরোপের দিকে।’

কমালা হ্যারিস বলেন, ‘ইউরোপীয় নেতারাও চান না, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হোন।’

ক্যাপিটল হিলের দাঙ্গা
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘ক্যাপিটলের ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো লেনদেন নেই। আমাকে ওরা একটা ভাষণ দিতে বলেছিল, এইটুকুই।’

তার সমর্থকরা ক্যাপিটলে প্রবেশের আগে ট্রাম্প ভাষণ দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন, ‘ফাইট লাইক হেল।’ তিনি সেসময় তার সমর্থকদের শান্তিপূর্ণভাবে ক্যাপিটলে যেতে বলেছিলেন।

ট্রাম্প এই কথা বলতে অস্বীকার করেন যে তিনি অনুতপ্ত।

কমালা হ্যারিস বলেন, ‘পাতা উল্টে দেখুন। ওইদিন কী বিশৃঙ্খলা হয়েছিল সেটা দেখুন।’

গর্ভপাত ইস্যু
ট্রাম্পকে গর্ভপাত নিয়ে তার মতামত জানতে চাওয়া হয়। ট্রাম্প বলেন, ডেমোক্র্যাটরা চায় গর্ভধারণের ৯ মাস পরেও গর্ভপাত করার অধিকার দিতে। তিনি চান, গর্ভপাতের বিষয়টি রাজ্যগুলো ঠিক করুক। তারা আইন করুক। ধর্ষণ বা কিছু ক্ষেত্রে তিনি গর্ভপাতের অধিকারের পক্ষে। ট্রাম্পের অভিযোগ, কিছু রাজ্যে শিশু জন্মানোর পরেও তাদের মারার ব্যবস্থা আছে।

বিতর্ক যারা পরিচালনা করছিলেন, তারা বলেন, কোনো রাজ্যেই এই ধরনের কোনো ব্যবস্থা নেই।

কমলা হ্যারিস বলেন, ট্রাম্পের আমলে যে তিনজন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগ করা হয়, তারাই দুই বছর আগে গর্ভপাত নিয়ে কেন্দ্রীয় স্তরে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার বাতিল করেছেন। তিনি আবেগতাড়িত হয়ে বলেন, ট্রাম্পের গর্ভপাত নিয়ে নিষেধাজ্ঞায় ধর্ষণের শিকার নারীদের ক্ষেত্রেও কোনো ছাড় দেওয়া হয়নি।

শেষ মন্তব্য
কমলা হ্যারিস বিতর্ক শেষ করেন এই বলে, ‘আমরা আর পিছনে ফিরে যেতে চাই না। আমরা সামনের দিকে তাকাতে চাই। আমরা নতুন পথে হাঁটতে চাই।’

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, কমলা হ্যারিস ছিলেন বাইডেন প্রশাসনের অঙ্গ। তিনি মানুষকে চাকরি দিতে পারেননি, যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত সমস্যার সমাধান করতে পারেননি। তাঁর উচিত, এখনই সরে দাঁড়ানো।

ঠিকানা/এসআর
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041