দ্রুত নির্বাচনের দাবি আটকে দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অলিখিত সমঝোতাও হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও একমত। সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ আনসার ক্যু-কালে ‘সিএমএইচে’ চিকিৎসা নেন। রাজনৈতিক সমঝোতার জন্য অতিরিক্ত দুদিন কাটান সেখানে। ভিপি নূরের ‘গণ-অধিকার’-কে দিয়ে কিংস পার্টি গঠনের আলোচনা হয়। নতুন দলটি বিএনপির জন্য বিষফোড়া হওয়ার কথাও ওঠে। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোট গড়ার আলোচনা হয়। আওয়ামী লীগের নেতাদের দ্রুত কারাবন্দীকরণে সবাই ঐকমত্য হন। ইতিমধ্যে আটক করা হয়েছে হাসিনা সরকারের আলোচিত দুই আইজিপিকে। এদিকে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে ঘিরে তদবির পার্টি সরব। অপরাধী চক্র রক্ষা পেতে নানা রকম ফাঁদ পাতছে। বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের মাধ্যমেও চলছে সুপারিশ প্রক্রিয়া। সেপ্টেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে জাতিসংঘে সরকারপ্রধানের ভাষণ। তদবির এড়াতে ড. ইউনূসের নিউইয়র্ক সফর হচ্ছে বহরবিহীন, সংক্ষিপ্ততম।
* বাংলাদেশের পালকে দুটি বিজয় ॥ টেস্ট ক্রিকেটে পাকিস্তানকে হারানো, আরব বিশ্বে ৫৭ কয়েদিকে খালাস করানো : সেপ্টেম্বরের শুরুটা বাংলাদেশের জন্য আনন্দময়। টেস্ট ক্রিকেটে পাকিস্তানের মাঠে পাকিস্তানকে হারাল। হোয়াইটওয়াশের মাধ্যমে গড়ল নতুন রেকর্ড। আরেকটি বিজয় সংবাদ এল সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) থেকে। ৫৭ জন প্রবাসী বাংলাদেশিকে মুক্তি দিয়েছে দেশটি। অভিযোগ ছিল রাষ্ট্রীয় আইন ভঙ্গের। তারা প্রধান সড়কে স্লোগান সহকারে মিছিল করেছে। প্রতিবাদে প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ ছিল প্রত্যেকে।
ঘটনাটি ছিল বিশেষ স্পর্শকাতর। বাংলাদেশে তখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলছিল। গত ১৬ জুলাই প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয় ৮ জনকে। বিষয়টি সারা বিশে^ আলোড়ন তোলে। প্রতিবাদে পুরো বাংলাদেশ অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। প্রবাসীরাও দেশে দেশে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। মধ্যপ্রাচ্যের বিপুলসংখ্যক প্রবাসী প্রতিবাদে অংশ নেন।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের সড়কেও মিছিল নামে। সরকার ও মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালায়। বিষয়টি ইউএইর আইন পরিপন্থী কাজ। ফলে শতাধিক প্রতিবাদকারীর ৫৭ জন ধরা পড়েন। তাদেরকে অতিদ্রুত আইনের মুখোমুখি করা হয়। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারও যথাযথ পদক্ষেপ নেয়। মামলা মোকাবিলায় দক্ষ অ্যাটর্নি বা আইনজীবী পাঠায়। পরে সরকারপ্রধান ড. ইউনূস সরাসরি রাষ্ট্রপ্রধানকে ফোন করেন। গত ২৮ আগস্টের ফোনালাপে আল নাহিয়ানকে তিনি বিশেষ অনুরোধ জানান। ফলে ৩ সেপ্টেম্বর সিদ্ধান্ত আসে সাজা মওকুফের।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশকারী তারা। আটক ৫৭ বাংলাদেশির ৩ জন পেয়েছিলেন যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। ৫৩ জনকে ১০ বছর, একজনকে ১১ বছরের কারাদণ্ড। ড. ইউনূসের প্রতি সম্মান জানাতে সাধারণ ক্ষমা করে দেন রাষ্ট্রপ্রধান নাহিয়ান। বর্তমানে তাদের চাকরি ফেরতের চেষ্টাও চালাচ্ছে বাংলাদেশ দূতাবাস।
প্রবাসীদের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে ইউনূস সরকার। রাষ্ট্রপ্রধান আল নাহিয়ানকে ধন্যবাদপত্রও পাঠানো হয়েছে।
* থাকবে না কোনো বহর, সংক্ষিপ্ত হবে সফর ॥ যুদ্ধস্মৃতিময় নিউইয়র্কে ভিন্ন আদলে ড. ইউনূস : জাতিসংঘের ৭৯তম অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন ড. ইউনূস। চলতি সেপ্টেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে নিউইয়র্কে বসবে বিশ্বসভা। তিনি প্রতিবছর এই সময়ে নিউইয়র্কেই থাকতেন। নানা বিষয়ে গ্লোবাল সামিট হয়েই থাকে। ‘ক্লিনটন ইনিশিয়েটিভস’-এর আয়োজনেও বক্তব্য রাখতেন। কিন্তু এবারের ভ্রমণটি তাঁর জন্য ভিন্নমাত্রিক। প্রথমবারের মতো জাতিসংঘে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিত্ব করবেন। দেশে গুম-খুন বন্ধের পক্ষে প্রতিশ্রুতি দেবেন। ছাত্র-গণ অভ্যুত্থানে নিহতদের হত্যার বিচার নিশ্চিতের কথা বলবেন। অর্থপাচারে, দুর্নীতিতে ভঙ্গুর অর্থনীতি পুনর্গঠনের কথাও বলবেন। জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বাংলাদেশের সৈন্যসংখ্যা বৃদ্ধির চেষ্টাও চালাবেন।
ড. ইউনূসের জীবনে নিউইয়র্ক এক বিশাল স্মৃতির শহর। ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধকালে বিপ্লবী ভূমিকা রেখেছিলেন। সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বইয়ে তা লিখেছেন। বলেছেন, ‘একাত্তরের এপ্রিলে অধ্যাপক ইউনূস ওয়াশিংটনে আসে। আমি তখন পাকিস্তান দূতাবাসে জুনিয়র কর্মকর্তা। অন্য স্টেট থেকে আরও ২/৩ জনকে আনায়। তারা আমার বাসার বেজমেন্টে কষ্ট করে ঘুমায়। অতঃপর মার্কিন প্রশাসনের অনেকের সঙ্গে মতবিনিময় করে। বাংলাদেশে পশ্চিম পাকিস্তানের হত্যাকাণ্ডের নৃশংসতা তুলে ধরে। আমি জুন মাস পর্যন্ত চাকরিতে ছিলাম। ফলে তখন ড. ইউনূসদের সঙ্গ দিতে পারিনি। এপ্রিল মাসেই গ্রুপটি নিউইয়র্কে গিয়ে স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করে। ‘লীগ অব আমেরিকা’ সংগঠনটির সঙ্গে তাদের ভূমিকা ছিল ঐতিহাসিক।’
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে ড. ইউনূস ছিলেন সক্রিয় সংগঠক। নিউইয়র্কেই ওই সময়ে যোগসূত্র বিল ক্লিনটন, হিলারি ক্লিনটনের। ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ, গণস্বাস্থ্যের ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরীরও। নিউইয়র্কে বসবাস করেন ইউনুস-কন্যা কণ্ঠশিল্পী মনিকা ইউনুস। স্মৃতিময় শহরে এবারের সফর সংক্ষিপ্ততম। এর প্রধান কারণ দুটি বলে জানা গেছে।
প্রথমত, ইউনূস-পত্নী আফরোজা ইউনূস ডিমেনশিয়ার রোগী। স্বামী ড. ইউনূসকে ছাড়া অন্য কাউকে চেনেন না। ফলে স্ত্রী-সেবায় ড. ইউনূসকে সময় দিতে হয়। তিনি তাই এখন বিদেশে বেশি দিন অবস্থান করেন না। উল্লেখ্য, মিসেস ইউনূস একসময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন। পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যানও ছিলেন। এই সংসারে একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।
বাংলাদেশে প্রতিদিন অসংখ্য তদবির ড. ইউনূস সমীপে। আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, এমপি, নেতাদের বিরুদ্ধে হাজারো মামলা। দায়েরকৃত মামলা থেকে নাম কাটানোর তদবিরই বেশি। বিদেশে পালানোর সুযোগসন্ধানীরাও তৎপর। এ ছাড়া পদ-পদবি প্রাপ্তির তদবিরও দিনে-রাতে। ব্যবসায়ী মহল ঘুরছেন সুদ মওকুফ বা নতুন ঋণের প্রত্যাশায়। নিউইয়র্ক যাত্রায় সফরসঙ্গী হতেও প্রস্তাবিত হয়েছে শতাধিক নাম। তাদের দাবি, পূর্বতন সরকারপ্রধান আমাদের নিয়েছেন। আমরা দল করি না, কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়েছি। দেশে অনেক বিনিয়োগ এনেছি, আমাদের নিতে হবে।
অন্যদিকে মিডিয়া থেকেও পূর্বে ২৫-৩০ জন সঙ্গী হতেন। ঢাকা-নিউইয়র্ক বার্ষিক ভ্রমণ-ট্যুর চলত। অনেকে যুক্তরাষ্ট্রে নেমে হারিয়েও গিয়েছেন। কিন্তু এবারের অরাজনৈতিক সরকারপ্রধান বেঁকে বসেছেন। বলেছেন, থাকবে না কোনো বহর, সংক্ষিপ্ত হবে সফর।
* বিএনপির বিষফোড়া : জামায়াত না কিংস পার্টি? : পয়লা আগস্ট ’২৪ জামায়াতের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে হাসিনা সরকার। ১৫ দিন পর সেই প্রজ্ঞাপন বাতিল করে ইউনূস সরকার। জঙ্গিত্ব বা সন্ত্রাসী ভূমিকার প্রমাণ পায়নি রাষ্ট্র। এ মর্মে প্রজ্ঞাপনে সই করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব। আব্দুল মোমেন নামের এই সচিব একজন বিশিষ্ট লেখক-গবেষক। আন্দালিব রাশদী নামের লেখকের হাত দিয়ে মুক্তি মিলল জামায়াত-শিবিরের। কিন্তু এখানেই শেষ কথা নয়, নির্বাচনী নিবন্ধন বাতিল হয়েছিল আদালতের মাধ্যমে। ২০১৩-এর বিষয়টি আপিল বিভাগও বাতিল করে। পরে ‘আপিল বিভাগের ফুলকোর্ট রায়’ চায় জামায়াত। সে মতে নতুন তারিখ আগামী ২১ অক্টোবর। মামলাটি শুনানির জন্য গৃহীত হলে চলবে আইনি প্রক্রিয়া।
দেশে-প্রবাসে জামায়াত-শিবির পূর্ণোদ্যমে সক্রিয়। সামরিক বাহিনীর একাংশেও রয়েছে জনপ্রিয়তা। সাবেক আমির গোলাম আযম-পুত্র ব্রিগেডিয়ার (অব.) আজমীও সক্রিয়। প্রায় ১২ বছর তিনি ‘কথিত আয়নাঘরে’ বন্দী ছিলেন। নির্বাচনী নিবন্ধন পেতে সরকারের আনুকূল্য চান নেতারা। আইন ও সংসদ উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলকেও ধরেছেন। ক্ষমতাধর উপদেষ্টা বলেছেন, সরকারের যেটুকু ক্ষমতা, আমরা করেছি। সংগঠন নিষিদ্ধতার প্রজ্ঞাপন বাতিল করেছি। কিন্তু নির্বাচনী নিবন্ধন উচ্চ আদালতে নিষিদ্ধ। সেটির রায় অনুকূলে নেওয়ার বিষয়ে আমাদের হাত-পা বাঁধা। উচ্চ আদালত এক স্পর্শকাতর জায়গা, যেখানে হস্তক্ষেপ করা নীতিবিরুদ্ধ। আপনারা আইনগতভাবে চেষ্টা চালান, আশা করি সুফল পাবেন।
তার পরও দমেননি জামায়াত-শিবির নেতৃবর্গ। সরকারপক্ষের সম্ভাব্য ‘কিংস পার্টি’র সঙ্গেও আলোচনা চলছে। জোটবদ্ধভাবে নির্বাচনের প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। নতুন দলের দ্রুত বিকাশে সহযোগিতা দিতেও আগ্রহ দেখিয়েছে। উল্লেখ্য, দুটি রাজনৈতিক দল নতুন নিবন্ধন পেয়েছে। মাহমুদুর রহমান মান্নার ‘নাগরিক ঐক্য’। নূরুল হক নূরের ‘গণ অধিকার পরিষদ’। কর্ণধার দুজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি। হাসিনা সরকারের বিপক্ষে আন্দোলন-সংগ্রামে নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন। তবে জামায়াতের প্রথম পছন্দ ভিপি নূরের ‘গণ অধিকার পরিষদ।’ এটিই সরকার-সমর্থিত ‘কিংস পার্টি’ হবে বলে প্রত্যাশা। এটির সঙ্গে জোট বেঁধে নির্বাচনে আগ্রহী জামায়াত নেতৃবর্গের একাংশ।
গত ১ সেপ্টেম্বর ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছিল বিএনপির। হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে থাকায় দলটি সর্বোচ্চ নির্যাতনের শিকার। কিন্তু গত ৫ আগস্টের পর দলের একাংশ বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। দলনেতা তারেক রহমান বা মহাসচিব মির্জা ফখরুল কঠোর নির্দেশনা দিচ্ছেন, কিন্তু লাগাম টেনে ধরতে বেগ পেতে হচ্ছে।
এদিকে আসন্ন নির্বাচন নিয়ে চলছে নতুন ‘যোগ-বিয়োগ’। ‘বিএনপি-জামায়াত জোট’ সেতুবন্ধ আর নেই। বিএনপি-প্রধান ২০ দলীয় জোট এখন ১২ দলীয়। ফলে জামায়াতের সঙ্গে প্রতিপক্ষসুলভ আচরণ শুরু হয়ে গেছে। এতে প্রশ্ন উঠেছে, বিএনপির জন্য ‘বিষফোড়া’ কোন দলটি? জামায়াতে ইসলামী নাকি আসন্ন ‘কিংস পার্টি’?
* আগে আওয়ামী লীগারদের গ্রেফতার, পরে নির্বাচন : দেশে ৫ হাজার নেতা-কর্মী-অপরাধীর তালিকা প্রস্তুত। রাজধানীসহ জেলায় জেলায় নেমেছে যৌথবাহিনী। ৬৩টি কারাগারে বিপুল সংস্কার করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে সাঁড়াশি অভিযানের। বলা হয়েছে, দুষ্কৃতকারীদের চিহ্নিত করা ও ধরার অভিযান। সাবেক ১৮ মন্ত্রী, ৮ এমপির বিদেশযাত্রা স্থগিত করেছে। এই সাঁড়াশি অভিযানের প্রধান টার্গেট আওয়ামী লীগ। ১৫ বছরে সারা দেশে প্রচুর দুর্নীতি, অনিয়ম হয়েছে। সরকারি দলের ছত্রচ্ছায়ায় সাধারণ মানুষকে ঠকিয়েছে। এ ছাড়া গত এক মাসের অপরাধীরাও তালিকাভুক্ত হয়েছেন। সরকার বদলের অছিলায় বেড়ে গেছে দখলদারির প্রক্রিয়া। শিক্ষকদের জোর করে পদত্যাগ করানোও অপরাধ বলে গণ্য হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা নিজের হাতে তুলে নেওয়ার বিষয়টিও থাকছে। যৌথ অভিযানে অস্ত্র উদ্ধার গুরুত্ব পাচ্ছে।
দেশে অস্ত্রের লাইসেন্স রয়েছে ৫১ হাজার ৬৮০টির। অরাজনৈতিক ব্যক্তির হাতে অস্ত্র ৪৫ হাজার ২২৬টি। প্রতিষ্ঠানভিত্তিক অস্ত্র ৫ হাজার ৮৪টি। আর পেশাজীবী ও রাজনীতিকের হাতে ২১ হাজার ৬৮০টি। এর বাইরে দেশে ভারী ও হালকা অস্ত্রের ব্যাপক ছড়াছড়ি। ছাত্র-গণঅভ্যুত্থান প্রতিহতকরণে রহস্যজনক বুলেট ও অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে। অবৈধ অস্ত্রের চালান ও মজুদ নিয়ন্ত্রণে শুরু হলো যৌথ অভিযান। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নির্বাচনের কথা ভাববে সরকার। দলগুলোকে তত দিন অপেক্ষার পরামর্শ অন্তর্বর্তী সরকারের।
উল্লেখ্য, সাঁড়াশি অভিযানের শুরুতেই গ্রেফতার দুই সাবেক আইজিপি। ২০১৪-এ নিয়োগপ্রাপ্ত শরীয়তপুরের শহিদুল হক। হাসিনা সরকারের শেষ পুলিশপ্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। সুনামগঞ্জের এই কর্মকর্তা র্যাব-প্রধানও ছিলেন। সাম্প্রতিক স্মরণকালের ছাত্রহত্যা ওনার সময়েই ঘটেছে। বর্তমান গ্রেফতার-কর্ম নির্বিঘ্ন করতে আওয়ামীপন্থী আইজিপিদ্বয় আটক হলেন। যদিও মুচলেকা দিয়ে নিজেদের ছাড়ানোর চেষ্টায় আছেন। একটি বিশেষ দেশের রাষ্ট্রদূত ওপরমহলে তদবির করছেন।
* বাংলাদেশের পালকে দুটি বিজয় ॥ টেস্ট ক্রিকেটে পাকিস্তানকে হারানো, আরব বিশ্বে ৫৭ কয়েদিকে খালাস করানো : সেপ্টেম্বরের শুরুটা বাংলাদেশের জন্য আনন্দময়। টেস্ট ক্রিকেটে পাকিস্তানের মাঠে পাকিস্তানকে হারাল। হোয়াইটওয়াশের মাধ্যমে গড়ল নতুন রেকর্ড। আরেকটি বিজয় সংবাদ এল সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) থেকে। ৫৭ জন প্রবাসী বাংলাদেশিকে মুক্তি দিয়েছে দেশটি। অভিযোগ ছিল রাষ্ট্রীয় আইন ভঙ্গের। তারা প্রধান সড়কে স্লোগান সহকারে মিছিল করেছে। প্রতিবাদে প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ ছিল প্রত্যেকে।
ঘটনাটি ছিল বিশেষ স্পর্শকাতর। বাংলাদেশে তখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলছিল। গত ১৬ জুলাই প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয় ৮ জনকে। বিষয়টি সারা বিশে^ আলোড়ন তোলে। প্রতিবাদে পুরো বাংলাদেশ অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। প্রবাসীরাও দেশে দেশে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। মধ্যপ্রাচ্যের বিপুলসংখ্যক প্রবাসী প্রতিবাদে অংশ নেন।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের সড়কেও মিছিল নামে। সরকার ও মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালায়। বিষয়টি ইউএইর আইন পরিপন্থী কাজ। ফলে শতাধিক প্রতিবাদকারীর ৫৭ জন ধরা পড়েন। তাদেরকে অতিদ্রুত আইনের মুখোমুখি করা হয়। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারও যথাযথ পদক্ষেপ নেয়। মামলা মোকাবিলায় দক্ষ অ্যাটর্নি বা আইনজীবী পাঠায়। পরে সরকারপ্রধান ড. ইউনূস সরাসরি রাষ্ট্রপ্রধানকে ফোন করেন। গত ২৮ আগস্টের ফোনালাপে আল নাহিয়ানকে তিনি বিশেষ অনুরোধ জানান। ফলে ৩ সেপ্টেম্বর সিদ্ধান্ত আসে সাজা মওকুফের।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশকারী তারা। আটক ৫৭ বাংলাদেশির ৩ জন পেয়েছিলেন যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। ৫৩ জনকে ১০ বছর, একজনকে ১১ বছরের কারাদণ্ড। ড. ইউনূসের প্রতি সম্মান জানাতে সাধারণ ক্ষমা করে দেন রাষ্ট্রপ্রধান নাহিয়ান। বর্তমানে তাদের চাকরি ফেরতের চেষ্টাও চালাচ্ছে বাংলাদেশ দূতাবাস।
প্রবাসীদের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে ইউনূস সরকার। রাষ্ট্রপ্রধান আল নাহিয়ানকে ধন্যবাদপত্রও পাঠানো হয়েছে।
* থাকবে না কোনো বহর, সংক্ষিপ্ত হবে সফর ॥ যুদ্ধস্মৃতিময় নিউইয়র্কে ভিন্ন আদলে ড. ইউনূস : জাতিসংঘের ৭৯তম অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন ড. ইউনূস। চলতি সেপ্টেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে নিউইয়র্কে বসবে বিশ্বসভা। তিনি প্রতিবছর এই সময়ে নিউইয়র্কেই থাকতেন। নানা বিষয়ে গ্লোবাল সামিট হয়েই থাকে। ‘ক্লিনটন ইনিশিয়েটিভস’-এর আয়োজনেও বক্তব্য রাখতেন। কিন্তু এবারের ভ্রমণটি তাঁর জন্য ভিন্নমাত্রিক। প্রথমবারের মতো জাতিসংঘে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিত্ব করবেন। দেশে গুম-খুন বন্ধের পক্ষে প্রতিশ্রুতি দেবেন। ছাত্র-গণ অভ্যুত্থানে নিহতদের হত্যার বিচার নিশ্চিতের কথা বলবেন। অর্থপাচারে, দুর্নীতিতে ভঙ্গুর অর্থনীতি পুনর্গঠনের কথাও বলবেন। জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বাংলাদেশের সৈন্যসংখ্যা বৃদ্ধির চেষ্টাও চালাবেন।
ড. ইউনূসের জীবনে নিউইয়র্ক এক বিশাল স্মৃতির শহর। ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধকালে বিপ্লবী ভূমিকা রেখেছিলেন। সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বইয়ে তা লিখেছেন। বলেছেন, ‘একাত্তরের এপ্রিলে অধ্যাপক ইউনূস ওয়াশিংটনে আসে। আমি তখন পাকিস্তান দূতাবাসে জুনিয়র কর্মকর্তা। অন্য স্টেট থেকে আরও ২/৩ জনকে আনায়। তারা আমার বাসার বেজমেন্টে কষ্ট করে ঘুমায়। অতঃপর মার্কিন প্রশাসনের অনেকের সঙ্গে মতবিনিময় করে। বাংলাদেশে পশ্চিম পাকিস্তানের হত্যাকাণ্ডের নৃশংসতা তুলে ধরে। আমি জুন মাস পর্যন্ত চাকরিতে ছিলাম। ফলে তখন ড. ইউনূসদের সঙ্গ দিতে পারিনি। এপ্রিল মাসেই গ্রুপটি নিউইয়র্কে গিয়ে স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করে। ‘লীগ অব আমেরিকা’ সংগঠনটির সঙ্গে তাদের ভূমিকা ছিল ঐতিহাসিক।’
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে ড. ইউনূস ছিলেন সক্রিয় সংগঠক। নিউইয়র্কেই ওই সময়ে যোগসূত্র বিল ক্লিনটন, হিলারি ক্লিনটনের। ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ, গণস্বাস্থ্যের ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরীরও। নিউইয়র্কে বসবাস করেন ইউনুস-কন্যা কণ্ঠশিল্পী মনিকা ইউনুস। স্মৃতিময় শহরে এবারের সফর সংক্ষিপ্ততম। এর প্রধান কারণ দুটি বলে জানা গেছে।
প্রথমত, ইউনূস-পত্নী আফরোজা ইউনূস ডিমেনশিয়ার রোগী। স্বামী ড. ইউনূসকে ছাড়া অন্য কাউকে চেনেন না। ফলে স্ত্রী-সেবায় ড. ইউনূসকে সময় দিতে হয়। তিনি তাই এখন বিদেশে বেশি দিন অবস্থান করেন না। উল্লেখ্য, মিসেস ইউনূস একসময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন। পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যানও ছিলেন। এই সংসারে একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।
বাংলাদেশে প্রতিদিন অসংখ্য তদবির ড. ইউনূস সমীপে। আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, এমপি, নেতাদের বিরুদ্ধে হাজারো মামলা। দায়েরকৃত মামলা থেকে নাম কাটানোর তদবিরই বেশি। বিদেশে পালানোর সুযোগসন্ধানীরাও তৎপর। এ ছাড়া পদ-পদবি প্রাপ্তির তদবিরও দিনে-রাতে। ব্যবসায়ী মহল ঘুরছেন সুদ মওকুফ বা নতুন ঋণের প্রত্যাশায়। নিউইয়র্ক যাত্রায় সফরসঙ্গী হতেও প্রস্তাবিত হয়েছে শতাধিক নাম। তাদের দাবি, পূর্বতন সরকারপ্রধান আমাদের নিয়েছেন। আমরা দল করি না, কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়েছি। দেশে অনেক বিনিয়োগ এনেছি, আমাদের নিতে হবে।
অন্যদিকে মিডিয়া থেকেও পূর্বে ২৫-৩০ জন সঙ্গী হতেন। ঢাকা-নিউইয়র্ক বার্ষিক ভ্রমণ-ট্যুর চলত। অনেকে যুক্তরাষ্ট্রে নেমে হারিয়েও গিয়েছেন। কিন্তু এবারের অরাজনৈতিক সরকারপ্রধান বেঁকে বসেছেন। বলেছেন, থাকবে না কোনো বহর, সংক্ষিপ্ত হবে সফর।
* বিএনপির বিষফোড়া : জামায়াত না কিংস পার্টি? : পয়লা আগস্ট ’২৪ জামায়াতের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে হাসিনা সরকার। ১৫ দিন পর সেই প্রজ্ঞাপন বাতিল করে ইউনূস সরকার। জঙ্গিত্ব বা সন্ত্রাসী ভূমিকার প্রমাণ পায়নি রাষ্ট্র। এ মর্মে প্রজ্ঞাপনে সই করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব। আব্দুল মোমেন নামের এই সচিব একজন বিশিষ্ট লেখক-গবেষক। আন্দালিব রাশদী নামের লেখকের হাত দিয়ে মুক্তি মিলল জামায়াত-শিবিরের। কিন্তু এখানেই শেষ কথা নয়, নির্বাচনী নিবন্ধন বাতিল হয়েছিল আদালতের মাধ্যমে। ২০১৩-এর বিষয়টি আপিল বিভাগও বাতিল করে। পরে ‘আপিল বিভাগের ফুলকোর্ট রায়’ চায় জামায়াত। সে মতে নতুন তারিখ আগামী ২১ অক্টোবর। মামলাটি শুনানির জন্য গৃহীত হলে চলবে আইনি প্রক্রিয়া।
দেশে-প্রবাসে জামায়াত-শিবির পূর্ণোদ্যমে সক্রিয়। সামরিক বাহিনীর একাংশেও রয়েছে জনপ্রিয়তা। সাবেক আমির গোলাম আযম-পুত্র ব্রিগেডিয়ার (অব.) আজমীও সক্রিয়। প্রায় ১২ বছর তিনি ‘কথিত আয়নাঘরে’ বন্দী ছিলেন। নির্বাচনী নিবন্ধন পেতে সরকারের আনুকূল্য চান নেতারা। আইন ও সংসদ উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলকেও ধরেছেন। ক্ষমতাধর উপদেষ্টা বলেছেন, সরকারের যেটুকু ক্ষমতা, আমরা করেছি। সংগঠন নিষিদ্ধতার প্রজ্ঞাপন বাতিল করেছি। কিন্তু নির্বাচনী নিবন্ধন উচ্চ আদালতে নিষিদ্ধ। সেটির রায় অনুকূলে নেওয়ার বিষয়ে আমাদের হাত-পা বাঁধা। উচ্চ আদালত এক স্পর্শকাতর জায়গা, যেখানে হস্তক্ষেপ করা নীতিবিরুদ্ধ। আপনারা আইনগতভাবে চেষ্টা চালান, আশা করি সুফল পাবেন।
তার পরও দমেননি জামায়াত-শিবির নেতৃবর্গ। সরকারপক্ষের সম্ভাব্য ‘কিংস পার্টি’র সঙ্গেও আলোচনা চলছে। জোটবদ্ধভাবে নির্বাচনের প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। নতুন দলের দ্রুত বিকাশে সহযোগিতা দিতেও আগ্রহ দেখিয়েছে। উল্লেখ্য, দুটি রাজনৈতিক দল নতুন নিবন্ধন পেয়েছে। মাহমুদুর রহমান মান্নার ‘নাগরিক ঐক্য’। নূরুল হক নূরের ‘গণ অধিকার পরিষদ’। কর্ণধার দুজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি। হাসিনা সরকারের বিপক্ষে আন্দোলন-সংগ্রামে নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন। তবে জামায়াতের প্রথম পছন্দ ভিপি নূরের ‘গণ অধিকার পরিষদ।’ এটিই সরকার-সমর্থিত ‘কিংস পার্টি’ হবে বলে প্রত্যাশা। এটির সঙ্গে জোট বেঁধে নির্বাচনে আগ্রহী জামায়াত নেতৃবর্গের একাংশ।
গত ১ সেপ্টেম্বর ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছিল বিএনপির। হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে থাকায় দলটি সর্বোচ্চ নির্যাতনের শিকার। কিন্তু গত ৫ আগস্টের পর দলের একাংশ বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। দলনেতা তারেক রহমান বা মহাসচিব মির্জা ফখরুল কঠোর নির্দেশনা দিচ্ছেন, কিন্তু লাগাম টেনে ধরতে বেগ পেতে হচ্ছে।
এদিকে আসন্ন নির্বাচন নিয়ে চলছে নতুন ‘যোগ-বিয়োগ’। ‘বিএনপি-জামায়াত জোট’ সেতুবন্ধ আর নেই। বিএনপি-প্রধান ২০ দলীয় জোট এখন ১২ দলীয়। ফলে জামায়াতের সঙ্গে প্রতিপক্ষসুলভ আচরণ শুরু হয়ে গেছে। এতে প্রশ্ন উঠেছে, বিএনপির জন্য ‘বিষফোড়া’ কোন দলটি? জামায়াতে ইসলামী নাকি আসন্ন ‘কিংস পার্টি’?
* আগে আওয়ামী লীগারদের গ্রেফতার, পরে নির্বাচন : দেশে ৫ হাজার নেতা-কর্মী-অপরাধীর তালিকা প্রস্তুত। রাজধানীসহ জেলায় জেলায় নেমেছে যৌথবাহিনী। ৬৩টি কারাগারে বিপুল সংস্কার করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে সাঁড়াশি অভিযানের। বলা হয়েছে, দুষ্কৃতকারীদের চিহ্নিত করা ও ধরার অভিযান। সাবেক ১৮ মন্ত্রী, ৮ এমপির বিদেশযাত্রা স্থগিত করেছে। এই সাঁড়াশি অভিযানের প্রধান টার্গেট আওয়ামী লীগ। ১৫ বছরে সারা দেশে প্রচুর দুর্নীতি, অনিয়ম হয়েছে। সরকারি দলের ছত্রচ্ছায়ায় সাধারণ মানুষকে ঠকিয়েছে। এ ছাড়া গত এক মাসের অপরাধীরাও তালিকাভুক্ত হয়েছেন। সরকার বদলের অছিলায় বেড়ে গেছে দখলদারির প্রক্রিয়া। শিক্ষকদের জোর করে পদত্যাগ করানোও অপরাধ বলে গণ্য হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা নিজের হাতে তুলে নেওয়ার বিষয়টিও থাকছে। যৌথ অভিযানে অস্ত্র উদ্ধার গুরুত্ব পাচ্ছে।
দেশে অস্ত্রের লাইসেন্স রয়েছে ৫১ হাজার ৬৮০টির। অরাজনৈতিক ব্যক্তির হাতে অস্ত্র ৪৫ হাজার ২২৬টি। প্রতিষ্ঠানভিত্তিক অস্ত্র ৫ হাজার ৮৪টি। আর পেশাজীবী ও রাজনীতিকের হাতে ২১ হাজার ৬৮০টি। এর বাইরে দেশে ভারী ও হালকা অস্ত্রের ব্যাপক ছড়াছড়ি। ছাত্র-গণঅভ্যুত্থান প্রতিহতকরণে রহস্যজনক বুলেট ও অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে। অবৈধ অস্ত্রের চালান ও মজুদ নিয়ন্ত্রণে শুরু হলো যৌথ অভিযান। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নির্বাচনের কথা ভাববে সরকার। দলগুলোকে তত দিন অপেক্ষার পরামর্শ অন্তর্বর্তী সরকারের।
উল্লেখ্য, সাঁড়াশি অভিযানের শুরুতেই গ্রেফতার দুই সাবেক আইজিপি। ২০১৪-এ নিয়োগপ্রাপ্ত শরীয়তপুরের শহিদুল হক। হাসিনা সরকারের শেষ পুলিশপ্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। সুনামগঞ্জের এই কর্মকর্তা র্যাব-প্রধানও ছিলেন। সাম্প্রতিক স্মরণকালের ছাত্রহত্যা ওনার সময়েই ঘটেছে। বর্তমান গ্রেফতার-কর্ম নির্বিঘ্ন করতে আওয়ামীপন্থী আইজিপিদ্বয় আটক হলেন। যদিও মুচলেকা দিয়ে নিজেদের ছাড়ানোর চেষ্টায় আছেন। একটি বিশেষ দেশের রাষ্ট্রদূত ওপরমহলে তদবির করছেন।