২০০৮ সাল থেকে নিজেদের শক্তির পরিবর্তে আওয়ামী লীগের সঙ্গে নিরবচ্ছিন্নভাবে গাঁটছড়া বাঁধে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রতিষ্ঠিত দল জাতীয় পার্টি (জাপা)। এতে জাপার কিছু নেতা ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দল ও তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। তারা বারবার আওয়ামী লীগের সঙ্গ ছেড়ে এককভাবে পথ চলতে কেন্দ্রীয় নেতাদের পরামর্শ দিয়েছেন। এতে শীর্ষ নেতাদের কাছে বিরাগভাজন হয়েছেন কেউ কেউ। দলের সমালোচনা করায় বহিষ্কারের ঘটনাও ঘটেছে।
গত তিনটি নির্বাচনেই আওয়ামী লীগের দোসরের ভূমিকায় ছিল জাতীয় পার্টি। দেশের অধিকাংশ দল নির্বাচন বয়কট করলেও নানা নাটকীয়তা তৈরি করে শেষ পর্যন্ত ভোটে গেছে জাতীয় পার্টি। প্রতিবারই সমঝোতার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে আসন বাগিয়ে নেওয়াই ছিল দলটির মূল লক্ষ্য। নামে বিরোধী দল হলেও জাপার আসনে ক্ষমতাসীনরা কোনো প্রার্থী দেয়নি। প্রতিটি নির্বাচনের পরই সংসদে ‘প্রধান বিরোধী দল’ হয়েছে জাতীয় পার্টি। এ ক্ষেত্রে দলটির নেতাদের পেছনে রাষ্ট্রের প্রচুর অর্থ ব্যয় হয়েছে। মন্ত্রীর মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হয়েছিলেন এরশাদ। রওশন এরশাদ ও জি এম কাদেরকে করা হয়েছিল বিরোধীদলীয় নেতা। এ ছাড়া জাপা নেতাদের অনেকে বিরোধীদলীয় নেতা, হুইপ ও সংসদ সদস্য হিসেবে সুবিধা পেয়েছেন; কিন্তু মানুষের কোনো প্রত্যাশাই পূরণ করতে পারেননি তারা।
এদিকে প্রায় সব ইস্যুতে সরকারের সুরে কথা বললেও কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ব্যাপক প্রাণহানি এবং সংঘর্ষের বিষয়ে আওয়ামী লীগের বিপরীতে অবস্থান নিয়েছিল জাতীয় পার্টি। তবে দ্বিমুখী রাজনীতির জেরে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর বেকায়দায় রয়েছে দলটি। সাধারণ মানুষের কাছে বিশ্বাস হারিয়েছেন দলের নেতারা। এ কারণে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মাঝেমধ্যে বিবৃতি দিয়ে অস্তিত্ব জানান দিলেও প্রকাশ্যে কোনো কর্মসূচি দেওয়ার ভরসা পাচ্ছেন না জাপার নীতিনির্ধারকেরা।
জাতীয় পার্টির একাধিক নেতা মনে করেন, শীর্ষ নেতারা আওয়ামী লীগের ওপর এতটাই নির্ভরশীল ছিলেন যে গত ১৫ বছর তারা জনগণের সমস্যা নিয়ে রাজপথে কোনো কর্মসূচি দেননি। নামে ‘প্রধান বিরোধী দল’ হলেও গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগের ইশারায় চলেছে জাতীয় পার্টির সব কার্যক্রম। এসব কারণে একসময় দেশের রাজনীতিতে তৃতীয় শক্তি হিসেবে পরিচিত জাপা ধীরে ধীরে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের মতোই কোণঠাসা অবস্থা জাতীয় পার্টির। দুর্বল সাংগঠনিক ভিত্তি, শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সুবিধাবাদী প্রবণতা এবং কোন্দলের কারণে দলটি নিশ্চিহ্ন হওয়ার কাছাকাছি পৌঁছেছে। দিন দিন কমছে জাপার কর্মী-সমর্থক ও রাজনৈতিক শক্তি। সাধারণ মানুষের কাছেও বিশ্বাস হারিয়েছে দলটি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করেন, গত সাড়ে ১৫ বছর গৃহপালিত বিরোধী দল হিসেবে জাতীয় পার্টিকে ব্যবহার করেছে আওয়ামী লীগ। ২০০৯ সালের পর থেকে আওয়ামী লীগের বিতর্কিত কোনো কাজেই দলটি রাজনৈতিকভাবে শক্ত কোনো অবস্থান নেয়নি। জাপা দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করলে বিগত সরকার একতরফাভাবে বিতর্কিত অনেক সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধাবোধ করত। বাস্তবে জাপা তা করতে পারেনি। বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, ঘুষ, খুন, গুম, ব্যাংক ও শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, অর্থপাচার, নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতি, অনিয়ম, দুর্নীতি, দখল, বাকস্বাধীনতা হরণসহ জনগুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হয়েছে দলটি। সাইবার নিরাপত্তা বিল, নির্বাচন কমিশন আইন, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন নিয়ে সংসদের ভেতরে ও বাইরে নানা বিতর্ক হলেও কার্যকর ভূমিকা নেয়নি জাপা। কোনো কোনো সময় লোক দেখানো বিরোধিতা করলেও সংসদে আইন পাসের সময় হয় সরকারের পক্ষে ভোট দিয়েছে অথবা নীরব থেকেছে। দু-একটি ক্ষেত্রে ওয়াকআউট করার নজির থাকলেও তা লোক দেখানো বলে অনেকে মনে করেন। সংসদ তো বটেই, নিজেদের দল চালাতেও পুরোপুরি সরকারের মুখাপেক্ষী হয়ে ছিল জাতীয় পার্টি।
জাপার বিভিন্ন ধারার অনেক নেতার মূল্যায়ন, জাপায় গণতন্ত্রের লেশমাত্র নেই। শীর্ষ নেতারা ব্যক্তিগত স্বার্থের বিনিময়ে যাকে তাকে দলীয় পদ কিংবা নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়েছেন। চেয়ারম্যান যখন যাকে খুশি বহিষ্কার করেছেন, আবার তা তুলেও নিয়েছেন। এসব প্রবণতার কারণে জাপা নেতারা কখনো গণতন্ত্রের জন্য রাজপথে লড়াই-সংগ্রাম করেননি। জনবান্ধব কর্মসূচিও নেই দলটির। জাপার রওশনপন্থী অংশের নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, কাজের সঙ্গে কথার কোনো মিল না থাকায় জাতীয় পার্টি গণমানুষের দল হতে পারেনি। জাপার বর্তমান চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের কথা ও কাজে কোনো মিল নেই। তিনি পার্টির সংখ্যাগরিষ্ঠ কেন্দ্রীয় নেতা ও তৃণমূলের মতামত উপেক্ষা করে দল পরিচালনাসহ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মূলত আওয়ামী লীগ সরকারের চরম কর্তৃত্ববাদী নীতির অনুষঙ্গ হওয়ার কারণে আমাদের দল দুর্বল হয়ে পড়েছে।
জাপার সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, রাজনৈতিক চাপে স্বাধীনভাবে রাজনীতি করতে পারেনি জাতীয় পার্টি। মূলত এ কারণেই হয়তো সাধারণ মানুষ মনে করতে পারে, তাদের প্রত্যাশা পূরণ করেনি জাতীয় পার্টি।
গত তিনটি নির্বাচনেই আওয়ামী লীগের দোসরের ভূমিকায় ছিল জাতীয় পার্টি। দেশের অধিকাংশ দল নির্বাচন বয়কট করলেও নানা নাটকীয়তা তৈরি করে শেষ পর্যন্ত ভোটে গেছে জাতীয় পার্টি। প্রতিবারই সমঝোতার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে আসন বাগিয়ে নেওয়াই ছিল দলটির মূল লক্ষ্য। নামে বিরোধী দল হলেও জাপার আসনে ক্ষমতাসীনরা কোনো প্রার্থী দেয়নি। প্রতিটি নির্বাচনের পরই সংসদে ‘প্রধান বিরোধী দল’ হয়েছে জাতীয় পার্টি। এ ক্ষেত্রে দলটির নেতাদের পেছনে রাষ্ট্রের প্রচুর অর্থ ব্যয় হয়েছে। মন্ত্রীর মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হয়েছিলেন এরশাদ। রওশন এরশাদ ও জি এম কাদেরকে করা হয়েছিল বিরোধীদলীয় নেতা। এ ছাড়া জাপা নেতাদের অনেকে বিরোধীদলীয় নেতা, হুইপ ও সংসদ সদস্য হিসেবে সুবিধা পেয়েছেন; কিন্তু মানুষের কোনো প্রত্যাশাই পূরণ করতে পারেননি তারা।
এদিকে প্রায় সব ইস্যুতে সরকারের সুরে কথা বললেও কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ব্যাপক প্রাণহানি এবং সংঘর্ষের বিষয়ে আওয়ামী লীগের বিপরীতে অবস্থান নিয়েছিল জাতীয় পার্টি। তবে দ্বিমুখী রাজনীতির জেরে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর বেকায়দায় রয়েছে দলটি। সাধারণ মানুষের কাছে বিশ্বাস হারিয়েছেন দলের নেতারা। এ কারণে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মাঝেমধ্যে বিবৃতি দিয়ে অস্তিত্ব জানান দিলেও প্রকাশ্যে কোনো কর্মসূচি দেওয়ার ভরসা পাচ্ছেন না জাপার নীতিনির্ধারকেরা।
জাতীয় পার্টির একাধিক নেতা মনে করেন, শীর্ষ নেতারা আওয়ামী লীগের ওপর এতটাই নির্ভরশীল ছিলেন যে গত ১৫ বছর তারা জনগণের সমস্যা নিয়ে রাজপথে কোনো কর্মসূচি দেননি। নামে ‘প্রধান বিরোধী দল’ হলেও গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগের ইশারায় চলেছে জাতীয় পার্টির সব কার্যক্রম। এসব কারণে একসময় দেশের রাজনীতিতে তৃতীয় শক্তি হিসেবে পরিচিত জাপা ধীরে ধীরে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের মতোই কোণঠাসা অবস্থা জাতীয় পার্টির। দুর্বল সাংগঠনিক ভিত্তি, শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সুবিধাবাদী প্রবণতা এবং কোন্দলের কারণে দলটি নিশ্চিহ্ন হওয়ার কাছাকাছি পৌঁছেছে। দিন দিন কমছে জাপার কর্মী-সমর্থক ও রাজনৈতিক শক্তি। সাধারণ মানুষের কাছেও বিশ্বাস হারিয়েছে দলটি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করেন, গত সাড়ে ১৫ বছর গৃহপালিত বিরোধী দল হিসেবে জাতীয় পার্টিকে ব্যবহার করেছে আওয়ামী লীগ। ২০০৯ সালের পর থেকে আওয়ামী লীগের বিতর্কিত কোনো কাজেই দলটি রাজনৈতিকভাবে শক্ত কোনো অবস্থান নেয়নি। জাপা দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করলে বিগত সরকার একতরফাভাবে বিতর্কিত অনেক সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধাবোধ করত। বাস্তবে জাপা তা করতে পারেনি। বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, ঘুষ, খুন, গুম, ব্যাংক ও শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, অর্থপাচার, নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতি, অনিয়ম, দুর্নীতি, দখল, বাকস্বাধীনতা হরণসহ জনগুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হয়েছে দলটি। সাইবার নিরাপত্তা বিল, নির্বাচন কমিশন আইন, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন নিয়ে সংসদের ভেতরে ও বাইরে নানা বিতর্ক হলেও কার্যকর ভূমিকা নেয়নি জাপা। কোনো কোনো সময় লোক দেখানো বিরোধিতা করলেও সংসদে আইন পাসের সময় হয় সরকারের পক্ষে ভোট দিয়েছে অথবা নীরব থেকেছে। দু-একটি ক্ষেত্রে ওয়াকআউট করার নজির থাকলেও তা লোক দেখানো বলে অনেকে মনে করেন। সংসদ তো বটেই, নিজেদের দল চালাতেও পুরোপুরি সরকারের মুখাপেক্ষী হয়ে ছিল জাতীয় পার্টি।
জাপার বিভিন্ন ধারার অনেক নেতার মূল্যায়ন, জাপায় গণতন্ত্রের লেশমাত্র নেই। শীর্ষ নেতারা ব্যক্তিগত স্বার্থের বিনিময়ে যাকে তাকে দলীয় পদ কিংবা নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়েছেন। চেয়ারম্যান যখন যাকে খুশি বহিষ্কার করেছেন, আবার তা তুলেও নিয়েছেন। এসব প্রবণতার কারণে জাপা নেতারা কখনো গণতন্ত্রের জন্য রাজপথে লড়াই-সংগ্রাম করেননি। জনবান্ধব কর্মসূচিও নেই দলটির। জাপার রওশনপন্থী অংশের নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, কাজের সঙ্গে কথার কোনো মিল না থাকায় জাতীয় পার্টি গণমানুষের দল হতে পারেনি। জাপার বর্তমান চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের কথা ও কাজে কোনো মিল নেই। তিনি পার্টির সংখ্যাগরিষ্ঠ কেন্দ্রীয় নেতা ও তৃণমূলের মতামত উপেক্ষা করে দল পরিচালনাসহ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মূলত আওয়ামী লীগ সরকারের চরম কর্তৃত্ববাদী নীতির অনুষঙ্গ হওয়ার কারণে আমাদের দল দুর্বল হয়ে পড়েছে।
জাপার সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, রাজনৈতিক চাপে স্বাধীনভাবে রাজনীতি করতে পারেনি জাতীয় পার্টি। মূলত এ কারণেই হয়তো সাধারণ মানুষ মনে করতে পারে, তাদের প্রত্যাশা পূরণ করেনি জাতীয় পার্টি।