উত্তাল দেশ

সামারে দেশে যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করছেন অনেকেই

প্রকাশ : ০২ অগাস্ট ২০২৪, ১৯:৫৪ , অনলাইন ভার্সন
যুক্তরাষ্ট্রে এখন সামার চলছে। আগস্টে শেষ হবে সামার। শুরু হবে ফল। এই সময়ের মধ্যে যারা পরিবার-পরিজন নিয়ে দেশে বেড়াতে যেতে চেয়েছিলেন, তারা অনেকেই বাংলাদেশে যেতে পারেননি। দেশে যাওয়ার বিমানের টিকিট কিনেও অনেকেই বাতিল করেছেন। রিফান্ড নিয়েছেন। আন্দোলনের কারণে ওই সময়ে যেসব ফ্লাইট চলাচল করতে পারেনি, সেসব ফ্লাইটের যাত্রীদের জন্য অল্টারনেটিভ ফ্লাইট অফার করা হয়েছে। অল্টারনেট ফ্লাইটে তারা যেতে পারবেন আর না যেতে চাইলে অর্থ রিফান্ড নিতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে এয়ারলাইন্স কিছু অর্থ কেটে রেখে বাকিটা ফেরত দেবে।
সূত্র জানায়, কোটা আন্দোলন ও পুলিশি গ্রেপ্তারের কারণে এই মুহূর্তে  প্রবাসীরা দেশে যেতে নিরাপদ বোধ করছেন না। আবার যারা দেশে গেছেন, তাদের অনেকেই ফিরে আসতে পারছেন না। হঠাৎ করেই কোটা সংস্কার আন্দোলন এতটা ভয়াবহ হবে এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হবে, এটা কারও ধারণার মধ্যেই ছিল না। এই অবস্থায় যারা যে পরিকল্পনা করে গিয়েছেন, তারা কাজ শেষ না করায় ফিরতে পারছেন না।
সূত্র জানায়, যারা জুলাই মাসের মাঝামাঝি দেশে যাবেন, এমন পরিকল্পনা করেছিলেন, তারা যেতে পারেননি। ফলে অনেকেই বছরের ভ্রমণ পরিকল্পনায় পরিবর্তন এসেছেন। এখন অনেকেই সামারে সন্তানদের নিয়ে দেশে যেতে না পারায় তারা যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্টেটে বেড়াতে যাচ্ছেন এবং আশপাশের দেশেও বেড়াতে যাচ্ছেন। লক্ষ্য ছুটি কাটানো, পরিবার-পরিজন নিয়ে একটু ঘুরে বেরিয়ে এসে নগরজীবনের ব্যস্ততা থেকে একটু মুক্তি পাওয়া। তবে যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ভ্রমণপিপাসু মানুষেরা আসছেন। বাংলাদেশ থেকে আন্দোলনের সময়ে যাদের আসার কথা ছিল, তারা পরিকল্পনায় কিছুটা পরিবর্তন করছেন। কেউ আগস্টে, কেউবা সেপ্টেম্বরে আসতে চাইছেন। কেউ কেউ আরও পরে। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আসার চিন্তা করছেন। যারা দেশ থেকে এ দেশে নতুন ইমিগ্র্যান্ট হয়ে এসেছেন, এক-দুই মাস হলো তারা এখানে এসে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন, মনে করছেন এখানে এসে বেঁচে গেছেন। নতুন ইমিগ্র্যান্টদের কেউ কেউ দেশে ফিরে যাওয়ার চিন্তা করলেও আপাতত পরিকল্পনা বাদ দিয়েছেন।
বর্তমানে বাংলাদেশে আছেন এমন একজন বাংলাদেশি আমেরিকান বলেন, সৌদি আরবে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে বাংলাদেশে এসেছি। বাংলাদেশে আসার পর চিন্তা করেছিলাম দ্রুতই ফিরে যাব। সব কাজ শেষ করব। কিন্তু সব কাজ শেষ করতে পারিনি। আন্দোলনের কারণে কয়েক দিন ঘরের বাইরেই বের হতে পারিনি। এখনো ভয়ে আছি, ঘর থেকে বাইরে বের হতে পারছি না। তাই কাজগুলোও শেষ করতে পারছি না। কাজ শেষ করতে পারলে দ্রুতই ফিরব। তিনি বলেন, এখানে তার বাসাবাড়ি ফেলে গেছি। সেগুলো নিয়েও চিন্তিত আছি। কী হচ্ছে না হচ্ছে কোনো খবর রাখতে পারছি না। বলেন, কী যে বিপদের মধ্যে ছিলাম ও ভয়ের মধ্যে আছি বলতে পারব না। আসলে ভীষণ উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা কাজ করছে। দেশে এসেছিলাম কিছু কাজ ও বেড়ানোর জন্য, তাও হলো না। কারও সঙ্গে দেখাও করা যাচ্ছে না। কবে ফিরবেন জানতে চাইলে বলেন, এখনো কোনো কিছুই ঠিক নেই। দেখি কবে কাজ শেষ করতে পারি।
ইউরোপ থেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বেড়াতে আসা একটি পরিবারের কর্তা বলেন, বাংলাদেশে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল কিন্তু যেতে পারিনি। হঠাৎই আন্দোলন শুরু হয়ে গেল। এ কারণে আমেরিকায় এসে বেরিয়ে গেলাম। এখানে অন্তত আর যা-ই হোক, কোনো ঝামেলা নেই। নিরাপদে-নিশ্চিতে বেরিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।
এদিকে নিউইয়র্ক থেকেও অনেকেই স্টেটের বাইরে বেড়াতে গেছেন। একজন ইমিগ্রেশন বিশেষজ্ঞ ও প্যারালিগ্যাল বলেন, আমি আমার পরিবার নিয়ে পেনসিলভানিয়ায় বেড়াতে এসেছি। তিন দিন থাকব। পরিকল্পনা ছিল দূরে কোথাও যেতে পারি। সবকিছু মিলিয়ে ও অবস্থা বিবেচনা করে আর সেটি সম্ভব হয়নি। এখন ঠিক করেছি, দেশের বাইরে না গিয়ে দেশের ভেতরেই বেড়ানোর। সে হিসেবেই এখানে বেরিয়ে ফিরে আসব নিউইয়র্কে। এরপর আবার নতুন করে কাজ শুরু হবে। এ ছাড়া বাচ্চাদের স্কুল খুলে যাবে। সেই প্রস্তুতিও নিতে হবে।
উল্লেখ্য, এখন যুক্তরাষ্ট্রে স্কুলে সামারের ছুটি চলছে। আগামী সেশনের স্কুলের ক্লাস শুরু হবে সেপ্টেম্বরের শুরুতে আর বিভিন্ন কলেজে ক্লাস শুরু হবে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে ও আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে স্টুডেন্টদের ক্লাস শুরু হওয়ার আগে বাবা-মায়ের অনেক প্রস্তুতি থাকে। স্টুডেন্টদেরও অনেক প্রস্তুতি থাকে। বই, খাতা কেনা। পোশাক-আশাকসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে হয়। এর মধ্যে বই, ব্যাগ, স্টেশনারি, ইউনিফর্ম, জুতাসহ বিভিন্ন জিনিস রয়েছে। স্কুলের স্টুডেন্টের জন্য কেনাকাটা বেশি করতে হয়। কলেজ স্টুডেন্টরা যখন যা লাগে তা কিনে নেন। তবে সবচেয়ে বেশি কেনাকটার প্রয়োজন হয়, যারা কলেজ শুরু করবেন ও ডর্মে যাবেন, তাদের জন্য। অনেকেই প্রতিবছর বছর সবকিছু নতুন করেই কেনেন। কেউ আছেন সেগুলো স্টোরেজ করেন। সব মিলিয়ে ওই সব পরিবারের সদস্যদের মধ্যে একদিকে সন্তান পরিবার ছেড়ে দূরে যাওয়া নিয়েও অনেকটা টেনশন কাজ করে। তার পরও প্রতিবছর অসংখ্য স্টুডেন্ট বাসাবাড়ি ছেড়ে দূরে কলেজে পড়তে যান, ডর্মে থাকেন। আর কয়েক সপ্তাহ পর থেকেই কলেজ গোয়িং স্টুডেন্টদের ডর্মে যাওয়ার প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়ে যাবে। আগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে যাওয়া শুরু করবেন নতুন জায়গায়। সেখানে গিয়ে মানিয়ে নেওয়াসহ সবকিছু নিজেকেই করতে হবে।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041