অবৈধ ফাঁদে আটকে পড়ে ৬ কিশোর, প্রাণ গেল দু’জনের

প্রকাশ : ২১ জুলাই ২০২৩, ১০:০৮ , অনলাইন ভার্সন
নান্দাইল উপজেলায় নরসুন্দা নদের একটি শাখায় অবৈধ বাঁধে পেতে রাখা জালে আটকা পড়ে ছয় কিশোর। তাদের মধ্যে চারজন বেঁচে ফিরলেও নিখোঁজ থাকে দুইজন। পরে কিশোরগঞ্জ থেকে ডুবুরির একটি দল এসে নিখোঁজ দুই কিশোরের লাশ উদ্ধার করে। বৃহস্পতিবার দুপুরে গারুয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। আগেও একাধিকবার বাঁধে পেতে রাখা মাছ ধরার অবৈধ ফাঁদে আটকে পড়ে গোসল করতে আসা শিশুরা।

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, গারুয়া ও আমোদাবাদ গ্রামের মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে নরসুন্দা নদের একটি শাখা। বৃহস্পতিবার দুপুরে গারুয়া গ্রামের হরমুজ আলীর ছেলে সোহাগ মিয়া (১৩), নজরুল ইসলামের ছেলে কামরুল ইসলাম (১২), উজ্জল মিয়ার ছেলে ওমর ফারুক (১৩), রফিক মিয়ার ছেলে রায়হান মিয়া (১২), ফারুক মিয়ার ছেলে ফাহিম হোসেন (১৩) ও মোবারক হোসেনের ছেলে মোস্তাকিম (১৩) মিলে বাড়ির পাশের নদীতে গোসল করতে যায়। সেখানে একটি কলার ভেলায় চড়ে খেলা করতে থাকে তারা। এক সময় স্রোতের টানে ভেলাটি উত্তর দিকে কিছুটা দূরে এসে নদে থাকা আমোদাবাদ গ্রামের আলীম উদ্দিনের একটি অবৈধ বাঁধের কাছে চলে আসে। পরে তাদের বহনকারী ভেলাটি বাঁধে পেতে রাখা অবৈধ জালে (ড্রিম জালে) ঢুকে পড়ে। এতে ভেলায় থাকা ছয় কিশোর জালে আটকা পড়ে। কোনোমতে চারজন বেঁচে ফিরলেও জাল থেকে বের হতে পারেনি সোহাগ মিয়া ও কামরুল ইসলাম।

খবর পেয়ে গ্রামের লোকজনসহ দমকল বাহিনীর সদস্যরা গিয়েও তাদের খোঁজে অভিযান চালায়। এরপর কিশোরগঞ্জ থেকে একদল ডুবুরি এসে ঘটনাস্থল থেকে দুই কিশোরের লাশ উদ্ধার করে। 

জাল থেকে কৌশলে বের হয়ে আসা কিশোর ওমর ফারুক জানায়, তারা নদীটির সুজিত বাবুর বাড়ির ঘাট থেকে ভেলায় চড়ে খেলা করছিল। কিন্তু কখন যে ভলাটি বাঁধের কাছে এসে জালের ভেতর ঢুকে পড়ে তা বুঝতে পারেনি তারা।

মারা যাওয়া সোহাগের বড় ভাই মিলন মিয়া জানান, তার ভাই মাদ্রাসায় পড়ে। সবাই মিলে নদীতে গোসল করতে গিয়ে যে তাদের এত বড় সর্বনাশ হবে বুঝতেও পারেননি কেউ। 

প্রতিবেশী তসলিম উদ্দিনের দাবি, নদের ওই বাঁধটিতে প্রতি বছরই কোনো কোনো অগঠন ঘটে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগেও একাধিকবার বাঁধে পেতে রাখা মাছ ধরার অবৈধ ফাঁদে আটকে পড়ে গোসল করতে আসা শিশুরা। তবে তাৎক্ষণিক স্থানীয়দের নজরে আসায় বেঁচে যায় তারা। আগের থেকে অবৈধ বাঁধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে আজ দুই কিশোরের সলিল সমাধি হতো না। 

নদের যে জায়গায় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে তার পাশেই বসে ছেলে সোহাগের জন্য বিলাপ করছিলেন মা হোসনে আরা বেগম। অন্যদিকে পাশের জমিতে বসে বিলাপ করতে দেখা যায় ওমর ফারুকের বোন ও খালাকে। বুক চাপড়ে চিৎকার করে বোন বলতে থাকেন, ‘আগে জানলে তো তাদের গোসলের সময় আমরাও সাথে সাথে আইতাম।’

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শাহানা নাজনীন বলেন, ‘আমাদের লোকবলের খুব অভাব। মাত্র তিনজন লোক দিয়ে পুরো উপজেলা দেখা সম্ভব হয় না। তবুও এখন থেকে কার্যক্রম জোরদার করা হবে।’ 

নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান জানান, নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার বেআইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঠিকানা/এসআর
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078