রপ্তানিতে বড় ধাক্কা

প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২৪, ২২:৩৬ , অনলাইন ভার্সন
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বড় ধাক্কা লেগেছে দেশের রপ্তানি খাতে। নতুন করে পড়েছে বড় চ্যালেঞ্জ। ফলে রপ্তানিকারকদের মধ্যে উদ্বেগ বিরাজ করছে। 
রপ্তানি খাতের ৮৫ শতাংশই আসে পোশাক খাত থেকে। ফলে পোশাক খাতের বৈরী পরিস্থিতি নানা শঙ্কায় ফেলেছে রপ্তানি খাতকে। পোশাকে বিদেশি অর্ডার কমেছে। অর্ডার যা ছিল তা সঠিক সময়ে ডেলিভারি দিতে না পারায় সৃষ্টি হয়েছে আস্থার সংকট। তাই উৎপাদন বাড়াতে শ্রমিকদের সাপ্তাহিক ছুটিসহ সব ধরনের ছুটি বাতিল করেছেন গার্মেন্টস মালিকরা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ আন্দোলনের মধ্যে ঘটা সহিংসতার যেসব খবর বিদেশি গণমাধ্যমে প্রকাশ হচ্ছে, ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি, এ সময় ফ্যাক্টরি বন্ধ থেকেছে; তাতে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্য ভাবমূর্তি সংকটে পড়ছে, যা নতুন চ্যালেঞ্জ।
ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, কোভিড-১৯ মহামারির পর ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর রপ্তানি খাত সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে। এখন সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এগিয়ে যাওয়ার সময় গত কয়েক দিনে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ঘটে যাওয়া ঘটনা বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের পণ্য ভাবমূর্তি সংকটে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে রপ্তানি খাত, বিশেষ করে পোশাক রপ্তানি খাত আবারও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। নতুন এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় রপ্তানিতে প্রণোদনা বহাল রাখার পাশাপাশি বন্দর কর্তৃপক্ষের সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশের মোট রপ্তানির প্রায় ৮৫ শতাংশই তৈরি পোশাক; বিশ্ববাজারে সেসব পণ্যের দরপতন চলছে বলে জানিয়েছেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা।
এ বিষয়ে পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি এস এম মান্নান কচি বলেন, কোভিড-১৯ এর পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে আমরা একটা চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়েই যাচ্ছি। এ সময়ে বিশ্ববাজারে আমাদের পণ্যের দরপতন হয়েছে। প্রতিনিয়তই আমাদের পণ্যের দর কমাচ্ছে। একই সঙ্গে আমাদের অর্ডারও কমে যাচ্ছে। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গত দুই ঈদে আমাদের ১০-১২টা কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। আমাদের অনেক শ্রমিক বেকার হয়ে গেছে। ঠিক সেই মুহূর্তে আবারও বড় একটা ধাক্কা আমাদের এসে লাগল। তিনি বলেন, গত কয়েক দিনে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সৃষ্ট সহিংসতার কারণে পোশাক খাতেই প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। আন্দোলনের সময় টানা চার দিন আমাদের কারখানা বন্ধ রাখতে হয়েছে। বন্ধ থাকায় প্রতিদিন আমাদের সব মিলে গড়ে ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা করে লস হয়েছে। সেই হিসাবে চার দিনে আমাদের ৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকার লস হয়েছে। এ চার দিনে সব কারখানার পোশাক কর্মীদের বেতন দিতে হবে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। আর সুতা ও বোতাম কারখানার ক্ষতি হয়েছে কমপক্ষে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। সব মিলে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, বহির্বিশ্ব দেখছে আমরা কাজ করতে পারছি না। ভাঙচুর হচ্ছে, জ্বালাও-পোড়াও করছে, সন্ত্রাসীরা মানুষ খুন করছে। এসব নেতিবাচক কর্মকাণ্ড দেশে-বিদেশে সব জায়গায় প্রচারিত হয়েছে। আবার ইন্টারনেট ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দিয়েছে, যার কারণে বেশ কয়েক দিন উদ্যোক্তারা ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারেনি। বহির্বিশ্বে আমাদের ইমেজ, আমাদের ভাবমূর্তি অনেক ক্ষুণ্ন হয়েছে। কারণ, আমাদের ফ্যাক্টরি বন্ধ, আমরা কাজ করতে পারছি না। এসব কারণে পুরো রপ্তানি খাতই আরেকটি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে বলে মনে করছেন বিজিএমই সভাপতি।
নিট পোশাক খাতের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মো. হাতেম বলেন, আমরা আগে থেকেই বলে আসছিলাম কোভিড-১৯ ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশের রপ্তানি খাত ব্যাপক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এবং ইপিবি রপ্তানির যে তথ্য দিচ্ছিল, তা সঠিক নয়। এ সময় বাংলাদেশের রপ্তানি খাত, বিশেষ করে পোশাক রপ্তানি আদেশ এবং পণ্যের দর দুটোই কমেছে। এ সময় আমাদের রপ্তানি নেতিবাচক হয়েছে। বিশেষ করে আমরা ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠছিলাম। হাতেম বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে যা হয়েছে, তা বিদেশি গণমাধ্যমে নেতিবাচকভাবে প্রচারিত হয়েছে। আমাদের ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারণে আমরা ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। এ সময় তারা বিদেশি গণমাধ্যমে যা শুনেছেন তা-ই বিশ্বাস করেছেন। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের রপ্তানি খাত আবারও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078