বিশ্বজুড়েই ব্যাংকিং খাতে অস্থিরতা কীসের আলামত

প্রকাশ : ২৬-০৩-২০২৩ ১১:২৮:৪০ এএম , অনলাইন ভার্সন
বাংলাদেশে ব্যাংকিং খাতে অস্থিরতার খবর বেশ কিছুদিন থেকেই প্রকাশ পাচ্ছিল। ব্যাংকে তরল মুদ্রার সংকট। ডলারের সংকট। আমদানির জন্য প্রয়োজনীয় ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। টাকার মারাত্মক দরপতন। আমানতকারীরা ব্যাংকের ওপর আস্থা রাখতে না পেরে টাকা তুলে নেয়ায় সংকট আরও ঘণীভূত হচ্ছে। সরকারের আশ্বাসও আমানতকারীদের আস্থা ফেরাতে পারছে না। অন্যদিকে ব্যাংকের কতিপয় মালিক, বড় বড় ব্যবসায়ী ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ফেরৎ না দেয়া। ব্যাংক ফাঁকা করে টাকা বিদেশে পাচার করে দেয়ার খবর আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। এর পাশাপাশি পাচারকৃত অর্থ দিয়ে বিভিন্ন দেশে বাড়ি কিনে বেগম পল্লী গড়ে তোলার খবর মানুষের আতঙ্ককে উস্কেও দিচ্ছে।

পাশাপাশি বাজারের অরাজকতা সাধারণ মানুষকে পাগল করে দিচ্ছে। বাজারের উপর সরকারের ন্যূনতম নিয়ন্ত্রণও লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। পেঁয়াজ, মরিচ, তেল, লবণ, ছোলা, চাল, ডাল, তরি-তরকারি, মাছ-মাংস সবকিছুতেই আগুন। কোন পণ্যেই সাধারণ মাুনষের হাত দেয়ার ক্ষমতা নেই। মূল্য বৃদ্ধির তাপ সাধারণ ক্রেতার হাতে ছ্যাঁকা দিচ্ছে। মাছ-মাংস এখন নাকি গ্রাম হিসেবে বিক্রি হচ্ছে! যা অতীতে কখনও কল্পনাও করা যায়নি। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যের পাগলা ঘোড়ার লাগাম টানা যাচ্ছে না কোনভাবেই।

সরকারের জনপ্রিয়তার গ্রাফ সবদিক থেকে ভাল হলেও বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় সরকারের কপালেও ভাঁজ দেখছে অনেকেই। সরকার অনেকদিন থেকেই বলার চেষ্টা করে আসছে যে, আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থিতিই টালমাটাল। করোনার ভয়ঙ্কর প্রভাব কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ হলেও এর প্রভাব দুনিয়াজুড়েই বাজারে, জীবনযাত্রায় একটা অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। দুই দেশের যুদ্ধই যেন বিশ্বযুদ্ধের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে ফেলেছে। রাশিয়া যেমন ছিল অনেক দেশের জ্বালানি তেলের প্রধান উৎস, ইউক্রেনও তেমনি বিশ্বের অনেক দেশের খাদ্য-শষ্য পাওয়ার বিরাট উৎস। বিশ্বজুড়েই তাই একটা অস্থিরতা এবং আগামী দিন নিয়ে শঙ্কা। জ্বালানির অভাবে যেমন উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, খাদ্য-শষ্য সরবরাহও ব্যাহত হয়ে সব দেশেই সার্বিক জীবনযাত্রায় সংকট সৃষ্টি করছে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পরিস্থিতি বেগতিক বলে মনে হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে ৭২ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে ২টি ব্যাংক দেউলিয়া ঘোষণা করেছে। এ দুটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাংক হচ্ছে- সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসডিবি) এবং সিগনেচার ব্যাংক। যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশে দুটি ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যাওয়ায় বিশ্বজুড়েই মুদ্রাবাজার টালমাটাল হয়ে পড়েছে। দেশে দেশে শেয়ারের দরপতন দেখা দিয়েছে। কেবল যুক্তরাষ্ট্রেই ব্যাংক ২টি বন্ধ হয়ে যাওয়ার মাত্র একদিনেই ১০ হাজার কোটি ডলারের অধিক দরপতন হয়েছে। ওয়ালস্ট্রিটের আঞ্চলিক ব্যাংকগুলোতে দরপতন হয়েছে শতকরা ৬০ ভাগ।

এই ঘটনার ফলে ইতিমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের ডজন খানেক ব্যাংকে লেনদেন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। গ্রাহকরা আতঙ্কে লেনদেন বন্ধ করে দিয়েছে। নিউইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে অস্থিরতা আগে থেকেই চলে আসছিল। ২টি ব্যাংক দেউলিয়া ঘোষণার পর সার্বিক পরিস্থিতি কোথায় নিয়ে দাঁড়াবে- কে জানে। যদিও গ্রাহকদের স্বার্থ বিবেচনা করে নিউইয়র্ক স্টেট সিগনেচার ব্যাংকের দায়িত্ব নিয়েছে। তারপরও আতঙ্ক একবার নাগরিকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে তার রাশ টেনে ধরা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে।

এখন যেহেতু বিশ্বজুড়েই সমস্যা-সংকট, তাই এ সংকট মোকাবিলার বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সম্মিলিত প্রচেষ্টা কাম্য। অথচ সেই উদ্যোগ একেবারেই লক্ষ্যণীয় নয়। বিশ্ব নেতৃবৃন্দের এই উদাসীনতা মোটেও কাম্য হতে পারে না। এই উদাসীনতা যুদ্ধের গতি-প্রকৃতি নিয়ে বিশ্বের মানুষকে আরও ভাবিয়ে তুলছে। এতে কারো খুব সুবিধা হবে- এমনটা ভাবার কোন কারণ নেই। বরং ক্ষতির আশঙ্কাই অধিক।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041