কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে প্রবাসীদের প্রতিক্রিয়া

‘দেশটাকে রক্তাক্ত-বিভক্ত দেখতে চাই না’

প্রকাশ : ১৭ জুলাই ২০২৪, ২৩:২৭ , অনলাইন ভার্সন
কোটা সংস্কারে দাবিতে সৃষ্ট আন্দোলন নিয়ে বিভক্ত বাংলাদেশের মানুষ। রক্তাক্ত বাংলাদেশের রাজনীতি। কিন্তু এই চিত্র দেখতে চান না প্রবাসীরা। তাদের মতে, যে কোনো সঙ্কটকালে প্রবাসীরা দেশের কথা ভেবে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। বর্তমানে যে সঙ্কট তা থেকে উত্তরণের জন্য সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নিক। যে কোনো সহিংসতার পথ পরিহার করে সঙ্কটের সুষ্ঠু সমাধান আসুক। সারা দেশে শিক্ষার্থীদের যে আন্দোলন তা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। আবার শিক্ষার্থীদের দাবিও অযৌক্তিক নয় বলছেন অনেকে। এ ব্যাপারে প্রবাসীদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিলক্ষিত হয়েছে। কেউ আন্দোলনের পক্ষে বলছেন, কেউ বলছেন বিপক্ষে। আবার সাধারণ প্রবাসীরা বলছেন, সঙ্কটের একটা সুষ্ঠু সমাধান জরুরি। এমন রক্তাক্ত-বিভক্ত বাংলাদেশ আমরা দেখতে চাই না। আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়। 
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির পর একজন শিক্ষার্থীর প্রধান কাজ হলো পড়াশোনা করা, বিশ্বমানব হিসেবে নিজেকে মেলে ধরার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা। কিন্তু আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা বিশ্ববিদ্যালয়ে এই কাজটি করতে এসে ক্লাস-পরীক্ষা বাদ দিয়ে রাস্তায় নেমে কখনো সরকারি চাকরিতে বয়স বাড়ানোর সংগ্রাম করতে হচ্ছে, আবার কখনো কোটা সংস্কারের আন্দোলন। আর এসব করতে গিয়ে কখনো তাদের শরীরে রক্ত ঝরছে, আবার কখনো মানসিক নির্যাতন।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান মনে করেন, শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের আন্দোলন রাজনৈকি ইস্যুভিত্তিক। এটা দেশবিরোধী চক্রান্ত। শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কারের নামে দেশে নৈরাজ চালাচ্ছে। একাত্তরে পরাজিত শক্তিরা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করছে। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে আর বিস্তার লাভ করতে দেওয়া যাবে না। প্রধানমন্ত্রী সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন বলে বিশ্বাস করি। 
বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি গিয়াস আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অবশ্যই যৌক্তিক। কিন্তু সরকার এটাকে রাজনীতিকরণ করেছে। তিনি বলেন, হাজার হাজার ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা সৃষ্টি করে চাকরিতে তাদের পোষ্যদের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা রেখেছে। এটা অযৌক্তিক। বরং সরকারের উচিত শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে, তাদের হত্যা করে পিছু হটানো যাবে না। 
নিউইয়র্ক প্রবাসী আওয়ামী স্বেচ্ছসেবক লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা সাখাওয়াত বিশ্বাস বলেন, কোটা সংস্কারের নামে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি সংগঠিত হয়েছে। তারা নিজেদের রাজাকার বলে স্লোগান দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি বিনষ্টের চেষ্টা করেছে। এদের শক্তভাবে প্রতিহত করা উচিত। 
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক গিয়াস আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে, তাদের গুলি করে হত্যা করে সরকার কাপুরুষোচিত কাজ করেছে। এ সরকারের কাছে এর চেয়ে ভালো কিছু আশা করা যায় না। 
নিউইয়র্ক প্রবাসী ব্যবসায়ী শরিফুল ইসলাম বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের সাধারণ শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থার পরিবর্তন (সংস্কার) চেয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন-সংগ্রাম করে আসছে। শেষ পর্যন্ত তা রক্তপাতে গড়িয়েছে। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-শিক্ষকেরা রাতের আঁধারে মারধরের শিকার হয়েছেন। তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর, দেশের উচ্চশিক্ষালয়ে এই চিত্রের যে পরিবর্তন হয়নি, তার দায়দায়িত্ব যেই নিক না কেন, আমাদের বাচ্চাদের মনে যে ঘৃণাবোধ জন্ম নিচ্ছে, তার দায় অন্তত এই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সরকারকে নিতেই হবে।
নিউজার্সি প্রবাসী মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, রক্তপাত-সংঘর্ষের মধ্যে দিয়ে ‘দাবি’ আদায়ের ‘কৌশল’ বহু পুরোনো; কিন্তু পরিবর্তিত বিশ্বের এই সময়ে আমাদের শিক্ষার্থীদের যেখানে দেশ নিয়ে ভাবার কথা, বৈশ্বিক ক্ষেত্রে নিজেদের খাপ খাইয়ে নেওয়ার লড়াই করার কথা, সেখানে এই শিক্ষার্থীদের রাজপথে নামতে হচ্ছে, সেটা ভাবতেই কষ্ট লাগছে। তরুণ প্রজন্মের মনটা বিষিয়ে তোলা হচ্ছে। কিন্তু কেন এমন হবে? কেন আমাদের ছেলেমেয়েদের বারবার রাজপথে নামতে হবে?
কানেকটিকাট প্রবাসী ও সরকারি চাকরিজীবী আব্দুর রউফ বলেন, সরকারি চাকরিতে বৈষম্য দূর করতে একটি ঐক্য তৈরিতে শিক্ষার্থীরা সফল হয়েছেন, এই বিষয়টি আওয়ামী লীগ সরকারের মানা উচিত। এই শিক্ষার্থীদের মানসিক অবস্থা বোঝার সক্ষমতা সরকারের থাকা উচিত। তিনি বলেন, বিরোধী দলের মতো শিক্ষার্থীদের যে প্রতিপক্ষ বিবেচনা করা উচিত নয়, সেই বোধ থাকা দরকার।  
নিউইয়র্কের ওজোনপার্কের বাসিন্দা মুজিবুল হক মান্নার মতে- সাধারণ শিক্ষার্থীদের পিটিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে যে শক্তিশালী করা যাবে না, সরকারকে বিবেচনায় নিতে হবে। এর বদলে তাঁদের যোগ্যতাভিত্তিক সরকারি চাকরির সমঅধিকার ফেরাতে কোটা সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করা জরুরি।
 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078