৪ জুলাই আমেরিকার স্বাধীনতা দিবস

প্রকাশ : ০৬ জুলাই ২০২৪, ১৭:২৫ , অনলাইন ভার্সন
৪ জুলাই আমেরিকার স্বাধীনতা দিবস। আমেরিকাও শত সংগ্রাম করে বহু মানুষের জীবনদানের পর ৪ জুলাই স্বাধীনতা অর্জন করে ১৭৭৬ সালে। কোনো দেশেরই স্বাধীনতা আলোচনার টেবিলে দু-একটি বৈঠকের পরই হাতের মুঠোয় আসে না। রক্ত দিতে হয়। জীবন দিতে হয়। বনে-বাদাড়ে জীবন কাটাতে হয়, তবেই মেলে প্রাণের চেয়ে প্রিয় স্বাধীনতা, যেমন বাংলাদেশের স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ আমরা মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছিলাম। ৯ মাস যুদ্ধ করে আমরা ৩০ লাখ বাঙালিকে হারিয়ে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করি।
স্বাধীনতার সঙ্গে মানুষের আবেগ জড়িত। ধনে-মানে-জ্ঞানে কোনো মানুষ যত বড়ই হন, তার যদি স্বাধীনতা না থাকে, তবে মানুষটি কখনো সুখী হতে পারে না। স্বাধীনতার লড়াই সব সময় শুরু হয় দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে। যখন স্বাধীনতার লড়াই শুরু হয়, তখন দুর্বলচিত্তের অনেক মানুষই মনে করে, আমাদের যে শক্তি তা নিয়ে তো আমরা হেরে যাব। পৃথিবীর ইতিহাসে কোথাও এমন দৃষ্টান্ত নেই, স্বাধীনতাসংগ্রামী, মুক্তিকামী মানুষকে পৃথিবীর কোনো শক্তিই চূড়ান্ত লড়াইয়ে কখনো পরাজিত করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রকেও পারেনি। বিজয়ী শক্তির সঙ্গে কোনো রকমে জীবন বাঁচাতে রফা করে ভেগে যায়। আমেরিকাতেও প্রায় সে রকম ঘটনাই ঘটে।
আমেরিকা একসময় ওরকমই ছিল। রেড ইন্ডিয়ান, ফ্রান্স, ব্রিটিশ হিসপানিকের হাতে বন্দী ছিল। তারা আমেরিকার সব সম্পদ লুটপাট করে নিয়ে যেত। এই আমেরিকার আজকের রূপলাবণ্য, সম্পদের খোঁজ জানত না বিশ্বসমাজ, চোখের আড়ালেই ছিল আমেরিকা। ক্রিস্টোফার কলম্বাস প্রথম আমেরিকা আবিষ্কার করে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরেন। আমেরিকার শরীরেও একসময় ঔপনিবেশিক শোষকের চাবুকে কশাঘাতের দগদগে ঘা ছিল। সভ্যতার প্রলেপে নির্যাতনের সে চিহ্ন না থাকলেও ইতিহাসে সে অধ্যায় মুছে ফেলা যায়নি।
আমেরিকার স্বাধীনতার লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন অনেকেই। তবে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সামনের কাতারে জর্জ ওয়াশিংটন, রুজভেল্ট, থমাস জেফারসন, জেমস ম্যাডিসন, জন অ্যাডামসন। প্রথমে ১৩ রাজ্য মিলে তারা ইউনিয়ন ঘোষণা করেন। পরে নানা প্রক্রিয়ায় আরও ১৩ রাজ্য ইউনিয়নের সঙ্গে মিলিত হয়। আমেরিকার জাতীয় পতাকার ১৩ সাদা দাগ মূল ১৩টি ইউনিয়নের অংশ। এর বাইরে জর্জ ওয়াশিংটনসহ ৩৭টি তারকা পরে যুক্ত হওয়া স্টেটস। এর বাইরেও প্রতিটি স্টেটের পৃথক পতাকা রয়েছে। প্রতিটি স্টেট যেমন ইউনিয়নভুক্ত, তেমনি আবার তারা পৃথক। প্রতিটা স্টেটের পৃথক সংবিধানও রয়েছে। আইন প্রণয়ন এবং প্রয়োগের ক্ষমতাও রয়েছে।
আমেরিকাকে বলা হয় বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর রাষ্ট্র। অস্ত্রসম্ভার এবং অর্থ-সম্পদেও তাদেরকে অদ্বিতীয়ই ভাবা হয়। যুক্তরাষ্ট্রকে আজকের সময়ে বিশ্ববাসীর অভিভাবক মনে করা হয়। তবে বর্তমান বিশ্বে যে হানাহানি, অস্থিরতা, রক্তক্ষয়-তাতে বিশ্ববাসী আমেরিকার কাছ থেকে আরও বেশি অভিভাবকের ভূমিকা দাবি করে। কিন্তু আমেরিকার সে দায়িত্ব পালনের কোনো উদাহরণ দেখতে পায় না। স্ট্যাচু অব লিবার্টিস বুকে ধারণ করে জর্জ ওয়াশিংটন, আব্রাহাম লিংকনের যে আমেরিকাকে দেশে দেশে স্বাধীনতার রক্ষাকবচ হিসেবে দাঁড়ানোর কথা, সে দায়িত্ব পালনে আমেরিকা ব্যর্থ বলেই মনে করে বিশ্ববাসী। বিশ্ববাসীর প্রত্যাশা পূরণে আমেরিকার ভূমিকা মোটেও আশাব্যঞ্জক নয়। যে আমেরিকাকে ইমিগ্র্যান্টদের দেশ বলা হতো, কোনোভাবে আমেরিকার মাটিতে পা রাখতে পারলেই নতুন করে ভবিষ্যৎ গড়ে নেওয়ার স্বপ্ন দেখত মানুষ, সেই আমেরিকা এখন ইমিগ্র্যান্টদের জন্য দুঃস্বপ্নের দেশে পরিণত হয়েছে।
আজকের এই মহান দিন ৪ জুলাইকে সামনে রেখে বিশ্ববাসী খুব করে বিশ্বাস করে, আমেরিকা আবার তার অতীত ভূমিকায় ফিরে যাবে এবং ইমিগ্রেশন-প্রত্যাশী মানুষ আবার স্বপ্ন দেখবে। আরও বেশি মানবিক হয়ে সব নিপীড়িত মানুষের ভরসাস্থল হয়ে তাদের আশ্রয় দিয়ে মানবিকতার নেতা হয়ে নতুন করে বিশ্বনেতা হয়ে উঠবে।
মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের এই দিনে আমেরিকায় উদযাপিত হয় বর্ণাঢ্য র‌্যালি, ইস্ট রিভারে আতশবাজি। বিশ্বের সব আশ্রয়হীন-নিপীড়িত মানুষসহ বৈধ-অবৈধ সর্বস্তরের মানুষকে এবং ঠিকানার সব পাঠক, লেখক, বিজ্ঞাপনদাতাকে জানাই শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। ৪ জুলাই আমেরিকার স্বাধীনতা দিবসে সবাই ভরসা ফিরে পাক, ফিরে পাক সব স্বপ্ন বাস্তবে রূপদানের পথ।
 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078