ইউরো থেকে রোনালদোর বিদায়, পর্তুগালকে টাইব্রেকারে হারিয়ে সেমিফাইনালে ফ্রান্স,

প্রকাশ : ০৬ জুলাই ২০২৪, ১১:৫১ , অনলাইন ভার্সন
হয়তো রোনালদো, নয়তো এমবাপ্পে, একজনকে বিদায় নিতেই হতো। শেষ পর্যন্ত ইউরোর মঞ্চ থেকে বিদায় নিয়েছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। জার্মানির হামবুর্গে ইউরো ২০২৪-এর কোয়ার্টার ফাইনালে গোলশূন্য ম্যাচে টাইব্রেকারে পেনাল্টি শুটআউটে পর্তুগালকে ৩-৫ ব্যবধানে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠে গেছে ফ্রান্স।

নির্ধারিত সময় ও অতিরিক্ত সময়ের খেলা শেষ হয় কোনও স্কোর না হয়ে। গত সপ্তাহে টাইব্রেকারে স্লোভেনিয়াকে হারানোর আত্মবিশ্বাস ছিল পর্তুগালের। রবার্তো মার্টিনেজের দল হয়তো ভেবেছিল, এবারও পার পেয়ে যাবে। কিন্তু ফ্রান্স পাঁচ পেনাল্টি শটের সবগুলো লক্ষ্যভেদ করলো। আর জোয়াও ফেলিক্সের শট পোস্টে লাগার খেসারত দিলো ২০১৬ সালের চ্যাম্পিয়নরা। পর্তুগালকে বাড়ি ফেরার পথ দেখালো ফরাসিরা। ৫-৩ গোলে জিতে সেমিফাইনালে উঠে গেলো ফ্রান্স।

স্লোভেনিয়াকে হারানোর পর ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো নিশ্চিত করেছিলেন, এটাই তার শেষ ইউরো। তাতে করে জাতীয় দলের জার্সিতে তার ইউরোপীয় অধ্যায় শেষ হলো কোয়ার্টার ফাইনালে, তাও আবার কোনও গোল করতে না পারার হতাশা নিয়ে।

খেলার শুরুতে তেমন একটা আক্রমণ করতে দেখা যায়নি কোনো দলকেই। প্রথমার্ধে বলার মতো কোনো সুযোগও তৈরি করতে পারেনি কোনো দল। ফলে প্রথমার্ধ শেষ হয় সমতায়। প্রথমার্ধে ৫৬ শতাংশ বল দখলে রেখে ফ্রান্সের পোস্টে শট নেয় মাত্র দুটি, যার মধ্যে লক্ষ্যে ছিল না কোনোটিই। অন্যদিকে ৪৪ শতাংশ বল দখলে রেখে ফ্রান্সের শট ছিল মাত্র ৩টি। যার মধ্যে লক্ষ্যে ছিল মাত্র একটি।

ম্যাচের শুরুটা ছিল সাদামাটা। দুই দলই খেলতে থাকে ছন্নছাড়া ফুটবল। ২০ মিনিটের মাথায় প্রথম শট নেয় ফ্রান্স। বক্সের বাইরে থেকে থিও হার্নান্দেজের শট আটকে দেয় গোলরক্ষক কোস্তা। ২৮ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে এদোয়ার্দো কামাভিঙ্গার শট চলে যায় পোস্টের ওপর দিয়ে। ৪২ মিনিটে বক্সের কাছ থেকে ব্রুনো ফার্নান্দেজের ফ্রি কিক চলে যায় পোস্টের ওপর দিয়ে।

দ্বিতীয়ার্ধে গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে দুই দলই। ৫০ মিনিটে আক্রমণে ওঠে ফ্রান্স। প্রথমার্ধ নিজের ছায়া হয়ে থাকা এমবাপ্পে প্রথম শট নেন ঠিক তখনই। তার দুর্বল শট ধরতে কষ্ট হয়নি পর্তুগিজ কিপার ডিয়েগো কস্তার। ফ্রান্স অধিনায়ক আহত হয়ে কিছুক্ষণের জন্য মাঠ ছাড়েন। ৫৫ মিনিটে বার্নার্ডো সিলভার হেড তার মুখের পাশে লাগলে মাটিতে লুটিয়ে যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকেন তিনি। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অবশ্য ফিরে আসেন মাঠে।

দ্বিতীয়ার্ধে ফ্রান্স আক্রমণনির্ভর ফুটবল খেললেও ম্যাচ ঘড়ি এক ঘণ্টা পার হওয়ার পর টানা কয়েকটি সুযোগ তৈরি করে পর্তুগাল। ৬২ মিনিটে কানসেলোর বাড়ানো বলে ব্রুনো ফের্নান্দেস। কিন্তু তার গোল প্রচেষ্টা রুখে দেন ফরাসি কিপার মাইক মাইগনান। কয়েক মুহূর্ত পর কানসেলোর বাঁকানো শট গোলবারের পাশ দিয়ে যায়।

দুই মিনিট পর আবারও আক্রমণে ওঠে পর্তুগাল। রাফায়েল লিয়াও বক্সের মধ্যে ভিতিনহাকে পাস দেন। তিনি বেশ কাছ থেকে শট নিলেও মাইগনান বুক চিতিয়ে বল ফিরিয়ে দেন। বাঁ পাশের পোস্টে দাঁড়ানো রোনালদো ব্যাক হিলে লক্ষ্যভেদ করতে চাইলেও ফরাসি কিপার তাকে থামান।

এরপর বলার মতো সুযোগ তৈরি করতে থাকে ফ্রান্স। ৬৭ মিনিটে মুয়ানি বল নিয়ে পর্তুগালের রক্ষণ চিড়ে বক্সে ঢুকে পড়েন। তার শটে হস্তক্ষেপ করেন রুবেন দিয়াজ। বলের সামনে ডাইভ দিয়ে কর্নার বানান পর্তুগিজ ডিফেন্ডার।

পরের মিনিটে আন্তোয়ান গ্রিয়েজম্যান মাঠ থেকে উঠে জায়গা করে দেন উসমান দেম্বেলেকে। ম্যাচের প্রথম পরিবর্তনের পর বেশ দাপট দেখায় ফরাসিরা। বক্সের মধ্যে পায়ের ভালো কাজ দেখিয়ে সামনে বল বাড়ান। পেপের গায়ে বল লেগে পড়ে এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গার সামনে। ফরাসি ফুটবলারের শট দূরের পোস্টের কয়েক ইঞ্চি সামনে দিয়ে বেরিয়ে যায়।

নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার তিন মিনিট আগে বক্সের বাইরে ফ্রি কিক পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি রোনালদো। তার শট ফরাসি রক্ষণদেয়ালে ধাক্কা দিয়ে ফিরে যায়।

ইনজুরি টাইমে এন’গোলে কাঁতে বক্সের বাইরে থেকে শট নিয়ে কস্তার বাধা টপকাতে পারেননি।

দুই দলই সুযোগ পেলের জালের দেখা পেতে ভুগেছে। তাতে করে নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হয় ১-১ গোলে। অতিরিক্ত সময়েও একের পর আক্রমণ চালাতে থাকে দুই দলই। তবে গোল পায়নি কোনো দলই। যার ফলে অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধও শেষ হয় গোলশূন্য সমতায়। দ্বিতীয়ার্ধে প্রতিপক্ষের ডেরায় আক্রমণ অব্যাহত রাখে দুই দল। তবে অতিরিক্ত সময়েও বারবার চেষ্টা চালিয়ে কোনো গোলের দেখা পায়নি কোনো দল। যে কারণে ম্যাচটি গড়ায় টাইব্রেকারে।

টাইব্রেকারে প্রথম শটে ফ্রান্সের দেম্বেলে কস্তাকে ডানদিকে পাঠিয়ে বাঁ দিক দিয়ে জাল কাঁপান। রোনালদো মাইগনানকে বাঁ দিক দিয়ে পরাস্ত করেন। ফ্রান্সের দ্বিতীয় শটে গোলপোস্টের মাঝখান দিয়ে জাল কাঁপান ফোফানা। বার্নার্ডো সিলভাও ভুল করেননি, স্কোর সমান করেন। তৃতীয় শটে ফ্রান্স গোল করে কোন্দের কিকে। জোয়াও ফেলিক্স বাঁ দিকের পোস্টে আঘাত করে পর্তুগালকে হতাশায় ভাসান। বারকোলাকে থামানোর সুযোগ পাননি কস্তা। মেন্দেস চতুর্থ শটে গোল করে পর্তুগালের আশা বাঁচিয়ে রাখেন। থিও হার্নান্দেজ পঞ্চম শটে গোল করে ফ্রান্সকে সেমিফাইনালে তোলেন।

আগামী মঙ্গলবার মিউনিখে ফ্রান্স ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে স্পেনের মুখোমুখি হবে।

ঠিকানা/এএস 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078