টি-২০ বিশ্বকাপের ৪ সেমিফাইনালিস্ট

সহজ সুযোগ হাতছাড়া হয়ে গেল বাংলাদেশের

প্রকাশ : ২৭ জুন ২০২৪, ১৩:৫৯ , অনলাইন ভার্সন

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসর শেষ হতে আর মাত্র তিনটি ম্যাচ বাকি। দুটি সেমিফাইনাল, আরেকটি চূড়ান্ত খেলা। অর্থাৎ ফাইনাল। গত ২ জুন যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে পর্দা ওঠে চলতি বিশ্বকাপের। ২০ দলের এই টুর্নামেন্টে গ্রুপ পর্বে ৪০ ও সুপার এইটে ১২ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। এবার শেষ চারের রোমাঞ্চের পালা। তার আগে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচের মধ্য দিয়ে শেষ  হয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইট পর্ব। এখন টুর্নামেন্টে টিকে আছে কেবল চারটি দল। তাদের নিয়ে ২৬ জুন ও ২৭ জুন সেমিফাইনাল। ভারত, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং প্রথমবারের মতো শেষ চারে জায়গা করে নেয় আফগানিস্তান।
সুপার এইটে গ্রুপ-১ থেকে অস্ট্রেলিয়ার কাছে পরাজিত হওয়ার পর বাংলাদেশের বিদায় ছিল অনুষ্ঠানিকতামাত্র। কিন্তু আফগানিস্তানের অস্ট্রেলিয়া-বধ বাংলাদেশকে ফের টুর্নামেন্টে ফিরিয়ে আনে আলোচনায়। অপরদিকে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভারতের রানের পাহাড় সেই হিসাব-নিকাশের সমীকরণ। আরেক দফা বড় সুযোগ বাংলাদেশের সামনে আসে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলার। কিন্তু বোলাররা সফল হলেও ব্যাটারদের ধারাবাহিক ব্যর্থতায় সেই সুযোগকে কাজে লাগাতে পারেনি। তাতে বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা কোটি কোটি বাংলাদেশি ক্রিকেটপ্রেমী মর্মাহত হয়েছেন। ব্যাটারদের কাণ্ডজ্ঞানহীন ব্যাটিং নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। যদিও বাংলাদেশ দলের দলপতি নাজমুল হোসেন শান্ত ম্যাচ শেষে জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। ১১৬ রানের টার্গেট ১২.১ ওভারে চেজ করতে পারলেই শেষ চারে নাম লেখাতে পারত বাংলাদেশ। সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হন শান্ত, সাকিব, মাহমুদউল্লাহরা। ১২.১ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ৮৩ রান করতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ। এরপর সুযোগটা নেমে আসে অস্ট্রেলিয়া ও আফগানিস্তানের মধ্যে। বাংলাদেশের জয়ে সেমির টিকিট কাটতে পারত অজিরা, সেটাও হয়নি। তাই বাংলাদেশের সঙ্গে টুর্নামেন্টে ইতি ঘটাতে হয়েছে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলকেও।
অন্যদিকে আরও একবার আফগানিস্তান বিশ্বমঞ্চে নিজেদের জাত চেনাল দুর্দান্তভাবে। সুপার এইটের গ্রুপ ‘১’ থেকে অস্ট্রেলিয়ার পর বাংলাদেশকে হারিয়ে তারা চলে যায় সেমিফাইনালে। নিউইয়র্ক সময় ২৪ জুন সোমবার রাতের ম্যাচে বাংলাদেশকে ৮ রানে হারিয়ে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবার কোনো আইসিসির বৈশি^ক ইভেন্টের সেমিফাইনালে পা রাখে আফগানিস্তান। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা। আজ ২৬ জুন বুধবার (নিউইয়র্ক সময়) সন্ধ্যা ৮টা ৩০ মিনিটে প্রোটিয়াদের পরীক্ষা নেবে আফগানরা। সান ফার্নান্ডোর ব্রায়ান লারা ক্রিকেট একাডেমি মাঠে অনুষ্ঠিত হবে ম্যাচটি।
আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল সেমিফাইনালে গেলেই দ্বিতীয় সেমিতে লড়বে ভারত। আইসিসির সেই সূচি মেনে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে রোহিত শর্মার দল। ২৭ জুন বৃহস্পতিবার নিউইয়র্ক সময় সকাল সাড়ে ১০টায় গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে দুই দল। ২০২২ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালেও ইংল্যান্ড ও ভারত মুখোমুখি হয়েছিল।
আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী দুই সেমিফাইনালের মাঝে কেবল আফগানিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচেই থাকবে রিজার্ভ ডের ব্যবস্থা। তবে ভারত ও ইংল্যান্ড ম্যাচে নেই এমন ব্যবস্থা। সেমির জয়ী দলকে ফাইনালের ভেন্যুতে দ্রুত যাওয়ার ব্যবস্থা করতেই এই সিদ্ধান্ত। এ ক্ষেত্রে দ্বিতীয় সেমিফাইনাল বৃষ্টিতে ভেসে গেলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুবাদে ভারত যাবে ফাইনালে।
সেমিতে বিজয়ী দুই দল আগামী ২৯ জুন শনিবার নিউইয়র্ক সময় সকাল সাড়ে ১০টায় বার্বাডোজের কেনসিংটন ওভালে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ তথা ফাইনালে মুখোমুখি হবে। ২৪ জুন সোমবার সেন্ট ভিনসেন্টে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন আফগান অধিনায়ক রশিদ খান। ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজের ৫৫ বলে ৪৩ রানে ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১১৫ রান সংগ্রহ করে আফগানিস্তান। বাংলাদেশের পক্ষে রিশাদ নেন ৩টি উইকেট।
১১৬ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফিরে যান তানজিদ হাসান তামিম। দলীয় ৪৮ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। নাজমুল হাসান শান্ত ৫ বলে ৫, সৌম্য সরকার ১০ বলে ১০ ও রানের খাতা খোলার আগেই আউট হন সাকিব আল হাসান। তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে ব্যাট করতে থাকেন লিটন দাস। তবে লিটনকে সঙ্গ দিতে ব্যর্থ হন অন্য ব্যাটাররা। দ্রুতই আরও তিন উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে বাংলাদেশ। তবে এক প্রান্ত আগলে ৪১ বলে ফিফটি তুলে নেন লিটন। লিটন এক প্রান্ত আগলে রাখলেও অন্য প্রান্তের তাসকিন আহমেদ ও মোস্তাফিজুর রহমানকে আউট করে আফগানদের জয় নিশ্চিত করেন নাভিন উল হক। ১৭ ওভার ৫ বলে ১০৫ রানে অল আউট হয় বাংলাদেশ। ৪৯ বলে ৫৪ রানে অপরাজিত থাকেন লিটন। আফগানদের পক্ষে নাভিন ও রশিদ খান নেন ৪টি করে উইকেট। শান্তরা সুপার এইট রাউন্ডের ৩ ম্যাচেই পরাজিত হলেন।
এদিকে পুরো টুর্নামেন্টে দলের ফলে সন্তুষ্ট নন নাজমুল হোসেন শান্ত। আফগানদের কাছে হারের পর সংবাদ সম্মেলনে সমর্থকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। তার মতে, ব্যাটিং ব্যর্থতার কারণে খারাপ করেছে দল। শান্ত বললেন, ‘সব মিলিয়ে টুর্নামেন্ট নিয়ে বলব, আমরা দল হিসেবে পুরো বাংলাদেশের সমর্থকদের হতাশ করেছি। যারা আমাদের খেলা দেখেন, সব সময় আমাদের সমর্থন করেন, তাদের আমরা হতাশ করেছি। আমি দলের পক্ষ থেকে ক্ষমাপ্রার্থী। ব্যাটিং গ্রুপ আমরা দেশের মানুষকে ওইরকম ভালো কিছু দিতে পারিনি। এটার জন্য আমরা দুঃখিত।’
সমর্থনের যোগ্য প্রতিদান দিতে না পারলেও তাদের দিক থেকে চেষ্টার কোনো ত্রুটি ছিল না বলে জানান শান্ত, ‘ইতিবাচক দিক অবশ্যই বোলাররা খুবই ভালো বোলিং করেছে। রিশাদ এ রকম একটা প্রতিযোগিতায় এসে সবগুলো ম্যাচে ভালো বোলিং করেছে। তো বেশ কিছু ইতিবাচক দিকও ছিল। তবে ব্যাটিংয়ের দিক থেকে আমরা সমর্থকদের হতাশ করেছি। দেশের মানুষকে আমরা বলতে গেলে কষ্ট দিয়েছি। তবে এটাও আমি বলতে চাই, চেষ্টার কমতি ছিল না। শতভাগ দিয়ে সবাই চেষ্টা করেছে। সবাই নিজের কাজে সৎ ছিল। তবে দিন শেষে আমরা পারিনি। তাই এটার জন্য দলের পক্ষ থেকে ক্ষমা চাইছি।’
আফগানদের কাছে হারটা মেনে নিতে পারছেন না শান্ত। ৮ রানের এই হার বাংলাদেশের অধিনায়ককে ভীষণ পোড়াচ্ছে, ‘হার অনেক হতাশার এবং অনেক কষ্টেরও। এই ম্যাচ খেলতে আসার আগে সবারই পরিকল্পনা ছিল ম্যাচটা আগে আমরা জিতব। কিন্তু যদি সে রকম পরিস্থিতি হয়, ওই সুযোগটা আমরা নেব (সেমিফাইনালের সমীকরণ)। যেটা আমাদের হাতে ছিল, সেটা নিতে পারিনি। পুরো ব্যাটিং গ্রুপই বাজে বাজে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041