বেপরোয়া মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা

প্রকাশ : ১৩ জুন ২০২৪, ১৩:৩৪ , অনলাইন ভার্সন
নিউইয়র্কে মুনাফালোভী একশ্রেণির গ্রোসারি ব্যবসায়ী বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। তারা ক্রেতার সুবিধা-অসুবিধার তোয়াক্কা না করে ইচ্ছামত পণ্যের দাম নিচ্ছেন। এমনকী একই পণ্যের দাম গ্রোসারি ভেদে ভিন্ন ভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে। একই পণ্যের ভিন্ন দামের কারণে বাজার করতে গিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন মধ্যবিত্ত ক্রেতারা। নিউইয়র্কে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের প্রাণকেন্দ্র জ্যাকসন হাইটসে রাস্তার এপার-ওপার ভেদে গ্রোসারি পণ্যের দামে ব্যাপক হেরফের রয়েছে। অন্যদিকে এলাকা ভেদে পণ্যের দামের তারতম্য ব্যাপক। যে পণ্য জ্যাকসন হাইটসে ১ ডলার প্রতি পাউন্ড, তা জ্যামাইকার কোনো কোনো গ্রোসারিতে বিক্রি হচ্ছে ২ ডলার প্রতি পাউন্ড। কোনো কোনো পণ্যের ক্ষেত্রে পার্থক্য ৫ ডলার ছাড়িয়ে যায়। ব্রঙ্কস, ব্রুকলিন ও ওজোনপার্কে গ্রোসারি পণ্যের তারতম্য রয়েছে দূরত্ব ও যোগানের স্বল্পতায়। 
সরেজমিনে দেখা গেছে, জ্যাকসন হাইটসের কোনো গ্রোসারিতে সাদা আলু বিক্রি হচ্ছে ১ ডলার প্রতি পাউন্ড। রাস্তার বিপরীতে আরেকটি গ্রোসারিতে একই ধরনের আলু বিক্রি হচ্ছে দেড় ডলার প্রতি পাউন্ড। লাউ এক দোকানে ৯৯ সেন্টস হলে আরেক দোকানে প্রতি ২৯ থেকে ৪৯ সেন্টস ব্যবধানে বিক্রি হচ্ছে। একই ডিম গ্রোসারি ভেদে বিক্রি হচ্ছে এক ডজন এক থেকে দেড় ডলারের ব্যবধানে। 
গত সপ্তাহে জ্যাকসন হাইটসের একটি বড় গ্রোসারি থেকে ৮ ডলারে এক প্যাকেট চা পাতা কিনেছেন জ্যামাইকার বাসিন্দা আহাদ। এতদিন জ্যামাইকার একটি বড় গ্রোসারি থেকে একই চা পাতা কিনতেন ১১ ডলারে। এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি জানান, আলুর দামের তারতম্য প্রতি পাউন্ডে ২৯ সেন্টস হলে প্রতি সপ্তাহে একটি পরিবারে ৭-৮ পাউন্ড আলুর প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে কমপক্ষে ২ ডলার অতিরিক্ত খরচ হয় আলু কিনতেই। আদা, রসুন, কাঁচা মরিচসহ অন্যান্য সবজির দামে ব্যাপক হেরফের রয়েছে। এভাবে প্রতিটি পণ্যের দামের ব্যবধান গৃহাস্থালীর ব্যয় বাড়িয়ে দিচ্ছে প্রতিনিয়ত। 
নিউজার্সির এলিজাবেথ থেকে প্রতি সপ্তাহে জ্যাকসন হাইটসে বাজার করতে আসেন রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন এখান থেকে পণ্য কিনি। কিন্তু করোয়ার পর থেকে গ্রোসারি মালিকরা এক প্রকার বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। সপ্তাহের খরচ বেড়ে গেছে দামের ব্যাপক তারতম্যের কারণে। তিনি বলেন, একেক পণ্যের গ্রোসারি ভেদে একেক রকম দাম। তবে গ্রোসারি ঘুরে ঘুরে একেক গ্রোসারি থেকে একেক পণ্য কেনা সম্ভব হয়। নিরুপায় হয়ে একই ছাদের নিচ থেকে পণ্য কিনি। আর এতে প্রতি সপ্তাহে ৩০-৪০ ডলার বাড়তি গুনতে হচ্ছে বলে জানান তিনি। 
কানেকটিকাট থেকে আসা প্রবাসী জাহিদুল ইসলাম স্বপন জানান, শুধু সবজি নয়, মাছ মাংসের দামেও ১ থেকে দেড় ডলারের তারতম্য রয়েছে। তিনি বলেন, রুই মাছ কোনো গ্রোসারিতে ২ ডলার পাউন্ড। আবার কোনো গ্রোসারিতে ৩ ডলার রাখা হচ্ছে। গরুর মাংসের দামেও পার্থক্য রয়েছে। এটা একেবারেই অনুচিত। কিন্তু বাংলাদেশি কমিউনিটিতে এসব দেখার কেউ নেই। 
নিউইয়র্কে স্বনামধন্য গ্রোসারি মাছবাজারের কর্মী খান শওকত জানান, আমাদের গ্রোসারির প্রতিটি পণ্য ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করছি। বরং আমরা বড় গ্রোসারিগুলোর পণ্যের সঙ্গে সমন্বয় করে দাম নির্ধারণ করছি। এটাই মাছবাজারের বৈশিষ্ট্য। 
৭৩ স্ট্রিটে বাংলাদেশি মালিকানাধীন খামার বাড়ি গ্রোসারির একটি বিক্রয় কর্মী বলেন, আমরা সেরা পণ্য বিক্রি করি। আমাদের প্রতিটি পণ্য তরতাজা। দামও ন্যায্য। বিভিন্ন গ্রোসারিতে দামের তারতম্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেকেই দু-একটি পণ্য কম দাম দেখিয়ে টোপ ফেলে। যেসব পণ্যের দাম কম দেখানো হয় তা একপ্রকার টোপ। অথচ তারা অন্য পণ্যে দাম বেশী নিচ্ছে। তিনি বলেন, এই যুগে কোনো ক্রেতাই বোকা নন। তারা জানেন কোথায় ভালো পণ্য ন্যায্য দামে পাওয়া যায়। যারা দীর্ঘদিন গ্রোসারি ব্যবসা করছেন তারা জানেন, কীভাবে ক্রেতা ধরে রাখতে হয়। অকারণে যারা বেশী মুনাফা করতে চায় তারা বেশীদিন এই ব্যবসায় টিকতে পারছেন না। 
প্রবাসের স্বনামধন্য গ্রোসারি মান্নান গ্রোসারির একজন কর্মী জানান, তাদের গ্রোসারি দীর্ঘদিনের সুনাম ধরে রেখে ব্যবসা করছে। একই ছাদের নিচে সব পণ্য পাওয়া যায়। এ কারণে আমাদের ক্রেতারা অন্য গ্রোসারিতে যান না। ক্রেতাদের সুবিধার কথা চিন্তা করে ন্যায্য দামে পণ্য বিক্রি করে মান্নান।  
তবে- নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস, জ্যামাইকা, ব্রঙ্কস ও ওজোনপার্কে বাংলাদেশি মালিকানাধীন একটি সুপারমার্কেটে প্রতিটি পণ্যের দাম হাকা হচ্ছে খামখেয়ালিভাবে। অনেকে নিরূপায় হয়ে এই সুপারশপে সওদা করেন। প্রতিষ্ঠানটির মালিকের বিরুদ্ধে ক্রেডিট কার্ডসহ বড় ধরণের জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে। অনেকে বলছেন, এই সুপারমার্কেটের মালিকের এক পা থাকে কারাগারে, আরেক পা থাকে ঘরে। এ কারণে বাংলাদেশি কমিউনিটি প্রতি তার দায়বদ্ধতা নেই। ম্যানেজার নির্ভর সুপারমার্কেটে ইচ্ছামত পণ্যের দাম নির্ধারণ করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। 
এ ব্যাপারে নিউইয়র্ক সিটির কনজুমারস অ্যাফেয়ার্সে যোগাযোগ করে জানা গেছে, অতিরিক্ত দাম হাঁকালে যে কেউ ৩১১-এ কল করে অভিযোগ জানাতে পারেন। অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেবে সংশ্লিষ্ট বিভাগ। 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041