১১ জুলাই যা ঘটতে পারে  ট্রাম্পের ভাগ্যে 

প্রকাশ : ০৫ জুন ২০২৪, ১৭:১৮ , অনলাইন ভার্সন
আমেরিকার ইতিহাসে প্রথম সাবেক প্রেসিডেন্ট হিসেবে ফৌজদারি মামলায় সাজার মুখোমুখি হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর সেই সঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে ৭৭ বছর বয়সী ট্রাম্পের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে। আগামী নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে আমেরিকায় শুরু হয়েছে জল্পনা। শেষ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে কার্যভার গ্রহণ করলে ট্রাম্প নিজেকে ক্ষমা করার ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন বলে কিছু আইনি বিশেষজ্ঞ মনে করছেন। বেশির ভাগ বিশেষজ্ঞ ধারণা করছেন, ট্রাম্পকে জরিমানা করা হতে পারে। এই বিচারের ফলাফল ট্রাম্পের কেবল ব্যক্তিগত স্বাধীনতার জন্য নয়, তার রাজনৈতিক ভাগ্যের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।
ট্রাম্প কখন এবং কতটা দণ্ডিত হবেন? : আগামী ১৫ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর নাম ঘোষণা করবে রিপাবলিকান পার্টি। ইতিমধ্যে প্রার্থী হওয়া প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছেন ট্রাম্প। কিন্তু ১১ জুলাই সাজা ঘোষণা হওয়ার পরে তিনি আদৌ নির্বাচনে লড়তে পারবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নিউইয়র্ক দণ্ডবিধির ১৭৫ ধারা অনুযায়ী ব্যবসায়ী রেকর্ড জালিয়াতির একাধিক অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছিল এই মামলায়। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলোর প্রতিটি নিউইয়র্কে ‘ই’ শ্রেণির বা সর্বনিম্ন স্তরের। সে ক্ষেত্রে প্রতিটি অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ চার বছর করে কারাদণ্ডের মুখোমুখি হতে পারেন তিনি। তবে এই অভিযোগগুলোর ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক কারাদণ্ডের বিধান নেই। ফলে ট্রাম্পের কারাগারে যাওয়ার সম্ভাবনাও ক্ষীণ।
নিউইয়র্ক আদালতের জুরি বোর্ডের সভাপতিত্বকারী বিচারক জুয়ান মার্চানের পরিচিতি রয়েছে ‘অপরাধীদের কঠোর সাজা’ দেওয়ার জন্য। তবে আইন বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, এ ক্ষেত্রে ৭৭ বছরের রিপাবলিকান নেতাকে শুধু জরিমানা দিয়েই ছাড় দিতে পারে আদালত। কারণ, প্রথমত তার বয়স, দ্বিতীয়ত, অপরাধের ধরন ‘অহিংস’ এবং তৃতীয়ত, এটাই তার প্রথম অপরাধ। তা ছাড়া দেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট হিসেবে এ ক্ষেত্রে ট্রাম্পের প্রতি জুরি ‘বাড়তি সহানুভূতি’ দেখাতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। আপিল চলাকালে জামিন নিয়ে ট্রাম্পের মুক্ত জীবন কাটানোর সুযোগ আছে।
আগামী ১১ জুলাই শাস্তি ঘোষণার আগে ট্রাম্প আদালতে তার ‘চরিত্রের’ বিষয়ে পরিজন ও পরিচিতদের প্রশংসাপত্র পেশের সুযোগও পাবেন। আমেরিকার আইনে এমন প্রশংসাপত্রে শাস্তি লাঘব হওয়ার সুযোগ থাকে। জেলের সাজা হলেও এখনই তা কার্যকর না-ও হতে পারে। আমেরিকার আইন অনুযায়ী, এ ক্ষেত্রে ম্যানহাটনের রাষ্ট্রীয় আপিল আদালতে আবেদন জানিয়ে স্থগিতাদেশ পেতে পারেন ট্রাম্প। বস্তুত, রায় ঘোষণার পরই ট্রাম্প উচ্চতর আদালতে আবেদনের বার্তাও দিয়ে রেখেছেন। ট্রাম্পের আবেদন সম্পর্কে রায় জানাতে আপিল আদালতের এক বছরেরও বেশি সময় লাগতে পারে বলে আইনজীবীদের একাংশের মত। তত দিনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়ে যাবে।
কয়েদিরাও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেওয়ার যোগ্য : আমেরিকার সংবিধান অনুসারে যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী নাগরিকদের বয়স ৩৫ বছর হলে এবং তারা একনাগাড়ে ১৪ বছর যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করলে প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার যোগ্যতা অর্জন করেন। তাই কয়েদি কিংবা কারাবন্দী কিংবা দণ্ডিত আমেরিকানরাও অতীতে প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। এদিকে আগামী ১১ জুলাই আদালত ট্রাম্পের শাস্তি ঘোষণা করবেন এবং ট্রাম্পের আইনজীবীরা প্রদত্ত রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের ঘোষণা দিয়েছেন। সংবিধান বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের বিগত রুলিংসে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্টের যোগ্যতাবলির সঙ্গে সংযোজনের এখতিয়ার কংগ্রেসের নেই।
রিপাবলিকানদের প্রতিক্রিয়া : সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করার খবর জানার অব্যবহিত পরপরই আদালতের বাইরে ট্রাম্প বিচারপ্রক্রিয়াকে কারচুপি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, এটি একটি কলঙ্ক। একজন দুর্নীতিগ্রস্ত বিরোধী বিচারকের এটি প্রহসনমূলক বিচার। ম্যানহাটন থেকে বিচার অন্যত্র স্থানান্তরের বিফল দরখাস্ত সম্পর্কে ট্রাম্প বলেন, এই ডিস্ট্রিক্টে আমরা ৫% থেকে ৬% বিধায় বিচারক আমাদের ভেন্যু পরিবর্তন করেননি। ট্রাম্প আরও বলেন, খারাপ লোকেরা তাকে জোরপূর্বক মামলায় জড়িয়েছে এবং তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। এদিকে ওই রায়ে রিপাবলিকানরাও ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। রিপাবলিকান স্পিকার মাইক জনসন একে আমেরিকার ইতিহাসে লজ্জাকর দিবস হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, এখানে আইনের প্রয়োগ হয়নি, রাজনীতির প্রয়োগ হয়েছে। অনেক কংগ্রেশনাল রিপাবলিকানও জনসনের অনুরূপ শাণিত প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। হাউস জুডিশিয়ারি কমিটির চেয়ারম্যান এবং ওয়াশিংটনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অন্তরঙ্গ বন্ধু রিপ্রেজেনটেটিভ জিম জর্ডান প্রদত্ত রায়কে ন্যায় বিচারের হাস্য অনুকরণ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। জর্ডান বলেন, ক্যাঙ্গারু আদালত উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ট্রাম্পকে ২০২৪ সালের ক্যাম্পেইন ট্রেইল থেকে বিরত রাখার লক্ষ্যে বিচারের নামে এমনতর প্রহসন চালাচ্ছে। হাউসে তৃতীয় রিপাবলিকান ব্যক্তিত্ব নিউইয়র্কের রিপ্রেজেনটেটিভ এলিসে স্টেফানিক ওই বিচারকে দুর্নীতিগ্রস্ত এবং কারচুপিপূর্ণ বিচারব্যবস্থার ফলাফলের সংকেত হিসেবে অভিহিত করেছেন।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041