পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তীব্র দাবদাহের খবর পাওয়া গেছে। বিশেষ করে উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপজুড়ে এখন বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপ প্রবাহ। প্রচণ্ড গরমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুরু করে চীন ও জাপান পর্যন্ত উত্তর গোলার্ধের অনেকগুলো দেশে জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এই তাপপ্রবাহকে 'নজিরবিহীন' বলে আখ্যায়িত করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রার রেকর্ড রাখা শুরু হবার পর থেকে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি গরম পড়েছিল এ বছরেরই জুন মাসে।
প্রচণ্ড গরমের কারণে অন্যতম গুরুতর পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে ইউরোপের দক্ষিণ দিকের ভূমধ্যসাগর-সংলগ্ন এলাকায়। ইউরোপ মহাদেশে এখন তাপমাত্রা সর্বোচ্চ রেকর্ডের কাছাকাছি উঠে গেছে। ইতালিজুড়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। স্পেনে লা পালমা দ্বীপে এক দাবানল সৃষ্টি হওয়ায় কমপক্ষে ৫০০ লোককে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিতে হয়েছে। ক্রোয়েশিয়ায় অগ্নিকান্ডে বাড়ি-ঘর ও গাড়ি পুড়ে গেছে।
গ্রীসে শুক্রবার তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি বা তার বেশি। প্রচণ্ড গরমের কারণে পর্যটনের ভরা মৌসুমে এথেন্সের অন্যতম দর্শনীয় স্থান অ্যাক্রোপলিসের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
ইতালি ও গ্রিসে একাধিক পর্যটক গরমের কারণে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে সংজ্ঞা হারান। উত্তর ইতালিতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। লোকজনকে প্রতিদিন অন্তত দুই লিটার পানি পান করতে এবং এ্যালকোহল ও কফি এড়িয়ে চলতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে - কারণ এগুলোতে দেহে পানির পরিমাণ কমে যায়। ইউরোপের মহাকাশ সংস্থা বলছে, আগামী সপ্তাহে আরেকটি বড় তাপপ্রবাহ আসবে এবং ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স, জার্মানি ও পোল্যান্ডে পরিস্থিতি চরম আকার নিতে পারে। উত্তর আফ্রিকার দেশ মরক্কোতেও প্রচণ্ড গরমের জন্য সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। চীন ও জাপানেরও কিছু অঞ্চলে অস্বাভাবিক গরম পড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ : পুরো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর দিয়ে তীব্র তাপ-প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। উত্তর-পশ্চিমের ওয়াশিংটন রাজ্য থেকে শুরু করে ফ্লোরিডা, টেক্সাস, ক্যালিফোর্নিয়া - সবখানেই প্রচণ্ড গরম পড়েছে। শনিবার দিনের বেলা তাপমাত্রা কোথাও কোথাও ৪৬ ডিগ্রি ছাড়াতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে এবং বলা হচ্ছে যে এই তাপপ্রবাহ আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত চলবে। বিশেষ করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অঙ্গরাজ্যগুলোতে গরম পড়েছে সবচেয়ে বেশি।
গত দু'সপ্তাহ ধরে ফিনিক্স শহরে তাপমাত্রা উঠে গেছে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তারও ওপরে । শুক্রবার ১৪ জুলাই ফিনিক্সের তাপমাত্রা ছিল ৪৬ ডিগ্রি, লাস ভেগাসে ৪৫ ডিগ্রি এবং ডেথ ভ্যালিতে ৫১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র গরমের কারণে টেক্সাস রাজ্যে এয়ার কন্ডিশনার ব্যবহারের পরিমাণ আগেকার রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। এ রাজ্যে বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ ব্যবহার হয় ৮১,৪০৬ মেগাওয়াট - যা এক নতুন রেকর্ড। বিভিন্ন জায়গায় পার্ক, জাদুঘর বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হচ্ছে বা খোলা থাকার সময় কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। কানাডায় অন্তত ৯০০টি এলাকায় দাবানল দেখা দিয়েছে - যার মধ্যে প্রায় ৫৬০টিতে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে আগুন জ্বলছে। পশ্চিমাঞ্চলীয় ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় আগুন নেভাতে গিয়ে ১৯ বছরের একজন অগ্নিনির্বাপনকর্মী মারা গেছেন।
কারণ জলবায়ু পরিবর্তন? : গত সপ্তাহে সারা বিশ্বের গড় তাপমাত্রা ছিল ১৭.২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস - যা সর্বকালের উচ্চতম তাপমাত্রার এক নতুন রেকর্ড। বিজ্ঞানীরা বলছেন - এই তাপমাত্রর বৃদ্ধির কারণ হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন এবং 'এল নিনো' নামে প্রাকৃতিক আবহাওয়া-চক্র। প্রতি তিন থেকে সাত বছরের মধ্যে একবার এই এল নিনো দেখা দেয় - যখন তাপমাত্রা উর্ধসুখী হয়।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পৃথিবীজুড়ে আবহাওয়ায় নানা অস্বাভাবিক প্রবণতা দেখা দিচ্ছে এবং অস্বাভাবিক গরম বা ঠাণ্ডা, বৃষ্টিপাত, বন্যা, ঝড়, জলোচ্ছাস, সাইক্লোন, দাবানল - ইত্যাদি নিয়মিত ঘটনা হয়ে যেতে পারে। পৃথিবীতে শিল্প যুগ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত তাপমাত্রা প্রায় ১.১ ডিগ্রি বেড়েছে এবং সরকারগুলো কার্বন নির্গমনে বড় কাটছাঁট না করলে এ বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। সূত্র : বিবিসি
প্রচণ্ড গরমের কারণে অন্যতম গুরুতর পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে ইউরোপের দক্ষিণ দিকের ভূমধ্যসাগর-সংলগ্ন এলাকায়। ইউরোপ মহাদেশে এখন তাপমাত্রা সর্বোচ্চ রেকর্ডের কাছাকাছি উঠে গেছে। ইতালিজুড়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। স্পেনে লা পালমা দ্বীপে এক দাবানল সৃষ্টি হওয়ায় কমপক্ষে ৫০০ লোককে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিতে হয়েছে। ক্রোয়েশিয়ায় অগ্নিকান্ডে বাড়ি-ঘর ও গাড়ি পুড়ে গেছে।
গ্রীসে শুক্রবার তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি বা তার বেশি। প্রচণ্ড গরমের কারণে পর্যটনের ভরা মৌসুমে এথেন্সের অন্যতম দর্শনীয় স্থান অ্যাক্রোপলিসের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
ইতালি ও গ্রিসে একাধিক পর্যটক গরমের কারণে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে সংজ্ঞা হারান। উত্তর ইতালিতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। লোকজনকে প্রতিদিন অন্তত দুই লিটার পানি পান করতে এবং এ্যালকোহল ও কফি এড়িয়ে চলতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে - কারণ এগুলোতে দেহে পানির পরিমাণ কমে যায়। ইউরোপের মহাকাশ সংস্থা বলছে, আগামী সপ্তাহে আরেকটি বড় তাপপ্রবাহ আসবে এবং ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স, জার্মানি ও পোল্যান্ডে পরিস্থিতি চরম আকার নিতে পারে। উত্তর আফ্রিকার দেশ মরক্কোতেও প্রচণ্ড গরমের জন্য সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। চীন ও জাপানেরও কিছু অঞ্চলে অস্বাভাবিক গরম পড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ : পুরো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর দিয়ে তীব্র তাপ-প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। উত্তর-পশ্চিমের ওয়াশিংটন রাজ্য থেকে শুরু করে ফ্লোরিডা, টেক্সাস, ক্যালিফোর্নিয়া - সবখানেই প্রচণ্ড গরম পড়েছে। শনিবার দিনের বেলা তাপমাত্রা কোথাও কোথাও ৪৬ ডিগ্রি ছাড়াতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে এবং বলা হচ্ছে যে এই তাপপ্রবাহ আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত চলবে। বিশেষ করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অঙ্গরাজ্যগুলোতে গরম পড়েছে সবচেয়ে বেশি।
গত দু'সপ্তাহ ধরে ফিনিক্স শহরে তাপমাত্রা উঠে গেছে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তারও ওপরে । শুক্রবার ১৪ জুলাই ফিনিক্সের তাপমাত্রা ছিল ৪৬ ডিগ্রি, লাস ভেগাসে ৪৫ ডিগ্রি এবং ডেথ ভ্যালিতে ৫১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র গরমের কারণে টেক্সাস রাজ্যে এয়ার কন্ডিশনার ব্যবহারের পরিমাণ আগেকার রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। এ রাজ্যে বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ ব্যবহার হয় ৮১,৪০৬ মেগাওয়াট - যা এক নতুন রেকর্ড। বিভিন্ন জায়গায় পার্ক, জাদুঘর বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হচ্ছে বা খোলা থাকার সময় কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। কানাডায় অন্তত ৯০০টি এলাকায় দাবানল দেখা দিয়েছে - যার মধ্যে প্রায় ৫৬০টিতে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে আগুন জ্বলছে। পশ্চিমাঞ্চলীয় ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় আগুন নেভাতে গিয়ে ১৯ বছরের একজন অগ্নিনির্বাপনকর্মী মারা গেছেন।
কারণ জলবায়ু পরিবর্তন? : গত সপ্তাহে সারা বিশ্বের গড় তাপমাত্রা ছিল ১৭.২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস - যা সর্বকালের উচ্চতম তাপমাত্রার এক নতুন রেকর্ড। বিজ্ঞানীরা বলছেন - এই তাপমাত্রর বৃদ্ধির কারণ হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন এবং 'এল নিনো' নামে প্রাকৃতিক আবহাওয়া-চক্র। প্রতি তিন থেকে সাত বছরের মধ্যে একবার এই এল নিনো দেখা দেয় - যখন তাপমাত্রা উর্ধসুখী হয়।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পৃথিবীজুড়ে আবহাওয়ায় নানা অস্বাভাবিক প্রবণতা দেখা দিচ্ছে এবং অস্বাভাবিক গরম বা ঠাণ্ডা, বৃষ্টিপাত, বন্যা, ঝড়, জলোচ্ছাস, সাইক্লোন, দাবানল - ইত্যাদি নিয়মিত ঘটনা হয়ে যেতে পারে। পৃথিবীতে শিল্প যুগ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত তাপমাত্রা প্রায় ১.১ ডিগ্রি বেড়েছে এবং সরকারগুলো কার্বন নির্গমনে বড় কাটছাঁট না করলে এ বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। সূত্র : বিবিসি