সম্পত্তি কিনেই উইল করুন উত্তরাধিকারের নামে

প্রকাশ : ১৬ মে ২০২৪, ১৪:১৮ , অনলাইন ভার্সন
বাংলাদেশিদের মধ্যে অনেকেরই সম্পত্তি কেনার প্রবণতা রয়েছে। এ ছাড়া অনেকের রয়েছে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের আয়। রয়েছে বিনিয়োগজনিত আয়। সেই সঙ্গে রয়েছে টায়ার্ডমেন্ট ফান্ড। পাশাপাশি রয়েছে একাধিক বাড়ি ও ফ্ল্যাট। রয়েছে চেকিং ও সেভিংস হিসাব। এসব সম্পত্তি তারা পরিচালনা করেন। তবে অনেকেই এসবের কোনো উত্তরাধিকারী কিংবা নমিনি ঠিক করেন না। সম্পত্তি কিনলেও কাউকে নমিনি করেন না বা উইল করে রাখেন না যে তিনি মারা যাওয়ার পর তার সম্পত্তির মালিক কে হবে। নমিনি বা উইল না করে সম্পত্তির অধিকারী ব্যক্তিরা মারা গেলে ওই সম্পত্তি নিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই নানা জটিলতা তৈরি হয়। কেননা ওই সম্পত্তির নমিনি বা কোনো উত্তরাধিকারের নামে উইল করা না থাকলে সেটি স্টেটের কাছে চলে যাবে। এরপর সেটির উত্তরাধিকারী প্রমাণ করার পর পরিবারের সদস্যরা সেটি পেতে পারেন। তবে এ ক্ষেত্রে আদালতের মাধ্যমেই সিদ্ধান্ত আসতে হবে। এটি অনেক সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।
বাড়ির বিষয়টি কিছুটা সহজ হলেও যারা কো-অপ কেনেন, তাদের বিষয়টি অনেক জটিল ও কঠিন। কারণ কেউ যখন কোনো কো-অপ কেনেন, তখন তার ক্রেডিট হিস্ট্রি, আয়-ব্যয়, ব্যাংক ব্যালেন্সসহ সবকিছু দেখা হয়। তাই কো-অপের ক্ষেত্রে কেবল উত্তরাধিকারী নির্ধারণ কিংবা উইল করলেই হবে না, উত্তরাধিকারী নিয়োগ করার পরও বা তার নামে সম্পত্তি উইল করার পরও অনেক নিয়ম রয়েছে। প্রথমত হলো ওই সম্পত্তির লোন থাকলে সেটি তাকে পরিশোধ করতে হবে। ওই সময়ে উত্তরাধিকারীর লোন পরিশোধ করার সক্ষমতা আছে কি না, সেটিও একটি বিষয়। যোগ্যতা থাকলে ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করে লোন ট্রান্সফার করতে পারবেন। নিয়ম অনুযায়ী তাকে প্রতি মাসে মেনটেইন্যান্স পরিশোধ করতে হবে। সব বিল পরিশোধ করতে হবে। তার ভালো ইনকাম থাকতে হবে, যা দিয়ে তিনি কো-অপ বোর্ডের কাছে প্রমাণ করতে পারবেন যে তিনি কো-অপ অ্যাপার্টমেন্টটি নিতে সক্ষম। কো-অপ বোর্ডকে স্যাটিসফাইড করতে পারলে এবং তারা অনুমোদন দিলেই সেটি সম্ভব। না হলে সেটি বিক্রি করে দিতে হবে।
এ বিষয়ে রিয়েলটর আসিফ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশি কমিউনিটির অনেকেই বিভিন্ন ধরনের সম্পত্তি কেনেন। এর মধ্যে কো-অপ, অ্যাপার্টমেন্ট, বাড়ি রয়েছে। আবার কেউ কেউ কমার্শিয়াল স্পেস ও ভবন কেনেন। এগুলো কেনার পর দেখা যায়, তারা নিজেরাই সব মেনটেইন করছেন। ভাড়া দিচ্ছেন, সব খরচ চালিয়ে নিচ্ছেন, মর্টগেজ দিচ্ছেন। কিন্তু তিনি মারা যাওয়ার পর ওই সম্পত্তির মালিক কে হবেন, এটা ঠিক করা হয়নি। এতে অনেক জটিলতা তৈরি হতে পারে। বাংলাদেশিদের মধ্যে যারা এখানে সম্পত্তি কিনেছেন, তারা বেশির ভাগই প্রথম জেনারেশনের। এখন দ্বিতীয় জেনারেশন চলছে। তৃতীয় জেনারেশন শুরু হলেও তা সেভাবে এখনো বাড়েনি। ফলে যারা বাড়ি কিনেছেন, তারাই মূল মালিকানায় রয়ে গেছেন। তাদের মধ্যে অনেকে মারা গেলেও সম্পত্তির উত্তরাধিকারী ঠিক করেননি। যেসব সম্পত্তি নিয়ে জটিলতা তৈরি হচ্ছে। তাই কেউ যখনই কোনো সম্পত্তি কিনবেন, তার উচিত সঙ্গে সঙ্গে ওই সম্পত্তির উইল করা। উইল করার জন্য অ্যাটর্নি রয়েছেন, তারা সহায়তা করবেন। পাশাপাশি যেসব অফিস রিয়েল এস্টেট অ্যাটর্নির অফিসের মাধ্যমে ক্লোজিং হয়, তারাও এ ব্যাপারে কাজ করে থাকেন। এ জন্য নির্ধারিত ফর্ম পূরণ করতে হবে।
তিনি বলেন, উইল করার জন্য সম্পত্তির মালিককে বিভিন্ন তথ্য দিতে হবে। সেই তথ্য অনুযায়ীই অ্যাটর্নি কাজ করবেন। একজন মানুষের বাড়ি বা বাসা ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের অ্যাসেট থাকে। সেসব অ্যাসেটেরও উইল থাকা দরকার। যারা ব্যাংকে বিভিন্ন ধরনের হিসাব খোলেন ও বিনিয়োগ করেন, তারা হিসাব খোলার সময়ই পরিবারের কাউকে নমিনি করতে পারেন। এখানে নমিনি অর্থাৎ বেনিফিশিয়ারি কে হবেন, এটা ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট হোল্ডার ঠিক করবেন। তবে বেনিফিশিয়ারির নাম-ঠিকানাসহ তার সোশ্যাল সিকিউরিটি কার্ডের নম্বরও দিতে হবে। মূল হিসাবধারী মারা গেলে ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী বেনিফিশিয়ারি মালিক হবেন। সিঙ্গেল ব্যক্তি তার বাবা-মা, ভাইবোন যে কাউকে বেনিফিশিয়ারি করতে পারেন। বিয়ের পর তিনি সন্তানসন্ততি হলে বেনিফিশিয়ারির নাম পরিবর্তন করতে পারবেন।
আসিফ চৌধুরী আরও বলেন, যারা সরকারি চাকরি বা করপোরেট জব করেন, তাদের জন্য ৪০১ (কে) কিংবা বিভিন্ন ধরনের রিটায়ার্ডমেন্ট বেনিফিট রয়েছে। ওই সব হিসাবেও কাউকে বেনিফিশিয়ারি করতে হবে। কারণ বেনিফিশিয়ারি না করলে ওই হিসাবে যে অর্থ থাকবে, সেই অর্থের মালিক তার উত্তরাধিকারের পেতে সময় লাগবে। অনেকেই ইন্স্যুরেন্স করে থাকেন। ইন্স্যুরেন্সের জন্যও একজন বেনিফিশিয়ারি দিতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশি কমিউনিটির মধ্যে অনেককেই দেখা যায়, পরিবারের কর্তা নিজের নামে না করে স্ত্রীর নামে সম্পত্তি করেন। ওই ব্যক্তি জীবিত থাকতে সম্পত্তি নিয়ে তার স্ত্রী ও সন্তানদের মধ্যে বিরোধ না হলেও তিনি মারা যাওয়ার পর সমস্যা তৈরি হয়। কারণ মায়ের নামে সম্পত্তির একক মালিকানা তখন সন্তানেরা মানতে চান না। তারা সম্পত্তির ভাগ চান। বাধ্য হয়ে তখন মাকে সম্পত্তি বিক্রি করে সন্তানদের মধ্যে ভাগ করে নিজের অংশ নিতে হয়। এভাবে একটি সম্পত্তির মালিকানা বদল হয়ে যায়। তবে এমন অনেক সন্তানও আছেন, যারা বাবা-মায়ের সম্পত্তি নিতে চান না। বরং তারা নিজেরাই বাড়ি কেনেন। তাই পারিবারিক দ্বন্দ্ব ও বিশৃঙ্খলা এড়াতে সবার উচিত সম্পত্তি কেনার পরপরই এর উইল করে ফেলা।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041