‘মা কথাটি ছোট্ট অতি
কিন্তু জেনো ভাই
তাহার চেয়ে মিষ্টি মধুর
ত্রিভূবনে নাই।’
মানুষের জীবনের সব সম্পর্কের সংমিশ্রণ হচ্ছে মা। মা-জননী, প্রিয়া, বধূ, কন্যা। পৃথিবীর সব জাতি, ধর্ম, বর্ণ, ভাষার মানুষের কাছে একইভাবে মা পবিত্রতার প্রতীক। মাতৃসম্মানের উদাহরণে বলা হয়Ñ মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেস্ত। সৃষ্টির ঊষালগ্ন থেকেই মাতৃবন্দনার মূর্ত আকুতি ভাস্বর হয়ে মানবতার অগ্রগামিতায় প্রেরণা যুগিয়ে আসছে। মায়ের সংজ্ঞা মা নিজেই। মা শব্দের ব্যাপ্তি এক পৃথিবীর চেয়েও বিশাল। একে নানাভাবে প্রকাশের চেষ্টা করা হয় মাত্র।
মানব শিশু বড় হতে হতে যেভাবে মাকে ডাকুক না কেনো- সেই ডাকের মধ্যে আমরা ‘মা’ ধ্বনির মিল খুঁজে পাই। বিভিন্ন দেশের ভাষায় মাকে ডাকার ধ্বনিমালায় আমাদের দৃষ্টি উন্মোচিত করতে বোধের আঙিনায় উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। মানব গোষ্ঠীর মাকে ডাকার মূলসুর প্রায় সমসূত্রে বাঁধা। মায়ের সাথে আমাদের নাড়ীর বন্ধন আমাদের জন্মের প্রথম স্পন্দনের সাথে মায়ের হৃদস্পন্দন এক উৎসমূলে গাঁথা।
বিভিন্ন ভাষায় ‘মা’-
আরবি- উম্মু; আফ্রিকান- মোডার; বুলগেরিয়ান- মাজকা; বেলারুসান- মাতকা; অস্ট্রেরিয়ান- মা; ডেনিকা- মোর; ডাচ- মৌডা; ইংলিশ- মাদার; ফ্রান্স- মেআ; জার্মান- মুটার; গ্রিক- মানা; হিন্দি- মা, মাজি; আইরিশÑ মথের; কানাডা- আমমা; ল্যাটিন- মাটার; পার্শিয়ান- মদর; পলিশ- মাতকা; পর্তুগিজ- মা-ই; পাঞ্জাবি- মাই; রুশিয়ান- মার্ট; স্পেনিশ- মাডার; সুইডিশ- মাম্মা; উর্দু- আম্মি এবং ভিয়েতনামিজ- মে।
পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় ‘মা’কে ডাকার মূলধ্বনি প্রায় একই। তাই মায়ের বুকে লালিত হবার মতো আমরা মাটির বুকে নীড় বেঁধেছি। মাটির বুকের ফলমূল ফসল খেয়ে, জলপান করে জীবনধারণ করি। আবার এই মাটিতে শেষ আশ্রয় গ্রহণ করি। তাই আমরা সবংসহা প্রিয় জন্মভূমিকে কখনো- ‘সুন্দরী মম জননী’, কখনো ‘ওগো মা মৃন্ময়ী’, কখনো ‘জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরীয়সী’ বলে সম্বোধন করি।
মা-সন্তান। শব্দ দুটি আন্তঃনিরপেক্ষ শব্দ। একটি অপরটির উপর নির্ভরশীল। একটি ব্যতিত অপরটি অস্তিত্বহীন। একই নাড়ি থেকে মা-সন্তানকে বিচ্ছিন্ন করা হলেও মা-সন্তানের দেহে একই রক্ত প্রবাহিত। তাইতো মা সম্বোধন এতো মধুরতম। মধুর আমার মায়ের হাসি।
যুগ বিবর্তনের সাথে সাথে বাস্তবতার প্রেক্ষিতে মানুষের ব্যক্তিকেন্দ্রিক সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনের কর্মব্যস্তায় মায়ের মমতার আকর্ষণও সন্তানকে আঁচলের তলায় আর আটকাতে পারে না।
ব্যক্তিকেন্দ্রিক সমাজে বড় যৌথ পরিবার ভেঙে সৃষ্টি হয় ছোট পরিবার। সেকারণে মা-সন্তানের আশা-ভালোবাসা, মায়া-মমতার ধরণেও বাহ্যিক পরিবর্তন আসে। তাই সন্তান আজ বিশেষভাবে নির্দিষ্ট একটি দিনে মায়ের সান্নিধ্যে গিয়ে তার উজাড় করা ভালোবাসায় অবগাহণ করে নিজেকে ধন্য করে। মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানায় মাতৃস্নেহে ধন্য সন্তানেরা। সব দিনের প্রতীক হিসেবে নির্দিষ্ট একটি দিনে মাতৃঋণের কথা প্রকাশ্যে স্মরণ করে। মাতৃদিবসের সূচনা নানা সময়ে বিভিন্ন দেশে ও ধর্মে একেক সময়ে আসলেও এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মাতৃ সান্নিধ্যলাভ ও মাতৃবন্দনা।
বিশ্বব্যাপী মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার মাতৃদিবস পালিত হয়। আমরা মায়ের প্রাপ্য মাকে দিয়ে নিজেরাই গর্বিত হই। এই মা দিবস উদযাপনে স্বদেশে অবস্থানকারী পাশ্চাত্য সংস্কৃতি ধারণ করেও এই দিনে মা দিবস উদযাপনÑ মায়ের অবমূল্যায়ণ ও পাশ্চাত্যের অন্ধ অনুকরণ বলে কেউ কেউ মত প্রকাশ করেন। যাই হোকÑ মা সেতো কন্যা, জায়া, জননী। বিশ্বের সব দুর্লভ ও মহৎ কাজের পেছনে মায়ের ভূমিকা লক্ষ্যণীয়। যেমনÑ গোর্কির মায়ের কথা কে না জানে। আট ঘণ্টা কাজের দাবিতে ১লা মে শিকাগো শহরে গুলিতে নিহত সন্তানের মা তার সন্তানের রক্তমাখা কাপড় পতাকা হিসেবে উড়িয়ে দৃঢ় প্রতিবাদ প্রকাশ করেন। যা আজ বিশ্বে মে দিবস-শ্রমিক দিবস হিসেবে খ্যাত। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পেছনে লাখো মায়ের অবদান অনস্বীকার্য। নিরস্ত্র অবস্থায় স্বামী-সন্তানকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জনে তুলনাহীন উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন এই মায়েরা।
মায়ের জাতি নারীজাতি নিজেদের শ্রেষ্ঠ বলে দাবি করতেই পারেন। আধুনিক বিশ্বে কোনো একজন ব্যক্তি দাবি করতে পারবেন কি যে- তিনি তার মায়ের গর্ভ থেকে আসেননি!
আন্তর্জাতিক ‘মা’ দিবসের এই ক্ষণে বিশ্বের সব মায়ের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা। এই সুবাদে স্মরণ করি আমার পূর্ব মাতৃপ্রজন্ম ও পর প্রজন্মকে- সয়াজাম-রোয়াজান-বিবিজান (আমার নানি)-হালিমা-হাসি-মম-এ্যামিকে।
প্রতিটি মায়ের প্রার্থনায় এ বিশ্ব হয়ে উঠুক সুন্দর, মানবিক, যুদ্ধমুক্ত, প্রেম ও প্রীতিময়।
কিন্তু জেনো ভাই
তাহার চেয়ে মিষ্টি মধুর
ত্রিভূবনে নাই।’
মানুষের জীবনের সব সম্পর্কের সংমিশ্রণ হচ্ছে মা। মা-জননী, প্রিয়া, বধূ, কন্যা। পৃথিবীর সব জাতি, ধর্ম, বর্ণ, ভাষার মানুষের কাছে একইভাবে মা পবিত্রতার প্রতীক। মাতৃসম্মানের উদাহরণে বলা হয়Ñ মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেস্ত। সৃষ্টির ঊষালগ্ন থেকেই মাতৃবন্দনার মূর্ত আকুতি ভাস্বর হয়ে মানবতার অগ্রগামিতায় প্রেরণা যুগিয়ে আসছে। মায়ের সংজ্ঞা মা নিজেই। মা শব্দের ব্যাপ্তি এক পৃথিবীর চেয়েও বিশাল। একে নানাভাবে প্রকাশের চেষ্টা করা হয় মাত্র।
মানব শিশু বড় হতে হতে যেভাবে মাকে ডাকুক না কেনো- সেই ডাকের মধ্যে আমরা ‘মা’ ধ্বনির মিল খুঁজে পাই। বিভিন্ন দেশের ভাষায় মাকে ডাকার ধ্বনিমালায় আমাদের দৃষ্টি উন্মোচিত করতে বোধের আঙিনায় উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। মানব গোষ্ঠীর মাকে ডাকার মূলসুর প্রায় সমসূত্রে বাঁধা। মায়ের সাথে আমাদের নাড়ীর বন্ধন আমাদের জন্মের প্রথম স্পন্দনের সাথে মায়ের হৃদস্পন্দন এক উৎসমূলে গাঁথা।
বিভিন্ন ভাষায় ‘মা’-
আরবি- উম্মু; আফ্রিকান- মোডার; বুলগেরিয়ান- মাজকা; বেলারুসান- মাতকা; অস্ট্রেরিয়ান- মা; ডেনিকা- মোর; ডাচ- মৌডা; ইংলিশ- মাদার; ফ্রান্স- মেআ; জার্মান- মুটার; গ্রিক- মানা; হিন্দি- মা, মাজি; আইরিশÑ মথের; কানাডা- আমমা; ল্যাটিন- মাটার; পার্শিয়ান- মদর; পলিশ- মাতকা; পর্তুগিজ- মা-ই; পাঞ্জাবি- মাই; রুশিয়ান- মার্ট; স্পেনিশ- মাডার; সুইডিশ- মাম্মা; উর্দু- আম্মি এবং ভিয়েতনামিজ- মে।
পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় ‘মা’কে ডাকার মূলধ্বনি প্রায় একই। তাই মায়ের বুকে লালিত হবার মতো আমরা মাটির বুকে নীড় বেঁধেছি। মাটির বুকের ফলমূল ফসল খেয়ে, জলপান করে জীবনধারণ করি। আবার এই মাটিতে শেষ আশ্রয় গ্রহণ করি। তাই আমরা সবংসহা প্রিয় জন্মভূমিকে কখনো- ‘সুন্দরী মম জননী’, কখনো ‘ওগো মা মৃন্ময়ী’, কখনো ‘জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরীয়সী’ বলে সম্বোধন করি।
মা-সন্তান। শব্দ দুটি আন্তঃনিরপেক্ষ শব্দ। একটি অপরটির উপর নির্ভরশীল। একটি ব্যতিত অপরটি অস্তিত্বহীন। একই নাড়ি থেকে মা-সন্তানকে বিচ্ছিন্ন করা হলেও মা-সন্তানের দেহে একই রক্ত প্রবাহিত। তাইতো মা সম্বোধন এতো মধুরতম। মধুর আমার মায়ের হাসি।
যুগ বিবর্তনের সাথে সাথে বাস্তবতার প্রেক্ষিতে মানুষের ব্যক্তিকেন্দ্রিক সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনের কর্মব্যস্তায় মায়ের মমতার আকর্ষণও সন্তানকে আঁচলের তলায় আর আটকাতে পারে না।
ব্যক্তিকেন্দ্রিক সমাজে বড় যৌথ পরিবার ভেঙে সৃষ্টি হয় ছোট পরিবার। সেকারণে মা-সন্তানের আশা-ভালোবাসা, মায়া-মমতার ধরণেও বাহ্যিক পরিবর্তন আসে। তাই সন্তান আজ বিশেষভাবে নির্দিষ্ট একটি দিনে মায়ের সান্নিধ্যে গিয়ে তার উজাড় করা ভালোবাসায় অবগাহণ করে নিজেকে ধন্য করে। মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানায় মাতৃস্নেহে ধন্য সন্তানেরা। সব দিনের প্রতীক হিসেবে নির্দিষ্ট একটি দিনে মাতৃঋণের কথা প্রকাশ্যে স্মরণ করে। মাতৃদিবসের সূচনা নানা সময়ে বিভিন্ন দেশে ও ধর্মে একেক সময়ে আসলেও এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মাতৃ সান্নিধ্যলাভ ও মাতৃবন্দনা।
বিশ্বব্যাপী মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার মাতৃদিবস পালিত হয়। আমরা মায়ের প্রাপ্য মাকে দিয়ে নিজেরাই গর্বিত হই। এই মা দিবস উদযাপনে স্বদেশে অবস্থানকারী পাশ্চাত্য সংস্কৃতি ধারণ করেও এই দিনে মা দিবস উদযাপনÑ মায়ের অবমূল্যায়ণ ও পাশ্চাত্যের অন্ধ অনুকরণ বলে কেউ কেউ মত প্রকাশ করেন। যাই হোকÑ মা সেতো কন্যা, জায়া, জননী। বিশ্বের সব দুর্লভ ও মহৎ কাজের পেছনে মায়ের ভূমিকা লক্ষ্যণীয়। যেমনÑ গোর্কির মায়ের কথা কে না জানে। আট ঘণ্টা কাজের দাবিতে ১লা মে শিকাগো শহরে গুলিতে নিহত সন্তানের মা তার সন্তানের রক্তমাখা কাপড় পতাকা হিসেবে উড়িয়ে দৃঢ় প্রতিবাদ প্রকাশ করেন। যা আজ বিশ্বে মে দিবস-শ্রমিক দিবস হিসেবে খ্যাত। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পেছনে লাখো মায়ের অবদান অনস্বীকার্য। নিরস্ত্র অবস্থায় স্বামী-সন্তানকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জনে তুলনাহীন উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন এই মায়েরা।
মায়ের জাতি নারীজাতি নিজেদের শ্রেষ্ঠ বলে দাবি করতেই পারেন। আধুনিক বিশ্বে কোনো একজন ব্যক্তি দাবি করতে পারবেন কি যে- তিনি তার মায়ের গর্ভ থেকে আসেননি!
আন্তর্জাতিক ‘মা’ দিবসের এই ক্ষণে বিশ্বের সব মায়ের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা। এই সুবাদে স্মরণ করি আমার পূর্ব মাতৃপ্রজন্ম ও পর প্রজন্মকে- সয়াজাম-রোয়াজান-বিবিজান (আমার নানি)-হালিমা-হাসি-মম-এ্যামিকে।
প্রতিটি মায়ের প্রার্থনায় এ বিশ্ব হয়ে উঠুক সুন্দর, মানবিক, যুদ্ধমুক্ত, প্রেম ও প্রীতিময়।