প্রতারক মামুন গ্রেপ্তার

প্রকাশ : ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৩:১৫ , অনলাইন ভার্সন
বাংলাদেশ সোসাইটির ১ লাখ ৬৫ হাজার ডলার অর্থ আত্মসাৎ করার চেষ্টা করেছিলেন মামুন আবু। এই অপরাধে তাকে ১৬ এপ্রিল জ্যামাইকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাকে আদালতে হাজির করা হলে আদালত জামিন মঞ্জুর করেননি। তাকে আটক রাখা হয়েছে। আগামী ৮ মে এই মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়েছে। সেদিন তাকে আদালতে হাজির করার কথা রয়েছে। কুইন্সের ক্রিমিনাল কোর্ট থেকে মামুন আবুর বিরুদ্ধে এই আদেশ দেওয়া হয়, যার ডকেট নম্বর সিআর-০১২৫৭০-২৪কিউআর। এদিকে মামলার বাদী মোহাম্মদ নওশেদ হোসেন তার নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছেন।
বাংলাদেশ সোসাইটির কোষাধ্যক্ষ নওশেদ হোসেন বলেন, মামুন আবু বাংলাদেশ সোসাইটির ১ লাখ ৬৫ হাজার ডলার আত্মসাৎ করার চেষ্টা করেন। ১ লাখ ৬৫ হাজার ডলারের মধ্যে মামুন তিন দফায় ব্যাংকে দিয়েছিলেন তিনটি চেক। একটিতে ছিল পাঁচ হাজার ডলার, একটিতে ১ লাখ ৪০ হাজার ডলার এবং আরেকটিতে ২০ হাজার ডলার। এর মধ্যে তিনি চেক জমা দিয়ে সেই অর্থ স্থানান্তরও করেছিলেন। কেবল পাঁচ হাজার ডলার নিতে পারেননি। পাঁচ হাজার ডলারের চেকটি আটকে দেয় ব্যাংক। তিনি আরও বলেন, ১ লাখ ৪০ হাজার ডলার নেওয়া হয়েছিল সোসাইটির কোষাধ্যক্ষ আমার (নওশেদ হোসেন) নামে। সেখানে দেখানো হয়েছিল কনস্ট্রাকশন পারপাসে ১ লাখ ৪০ হাজার ডলার আমি তুলেছি, আমার নিজ স্বাক্ষরে তোলা হয়। প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, আমার স্বাক্ষরটি জাল করা হয়। যারা ঘটনাটি ঘটায়, তারা আমার নামে অর্থ তোলার ষড়যন্ত্র করে। ওই সময়ে আমার বাড়িতে আসলেই কাজ চলছিল। এই সুযোগটি ষড়যন্ত্রকারীরা কাজে লাগিয়ে অর্থ তোলে নেয় এবং আমাকে মামলা দিয়ে ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র করে। এখন মামুন আবু ধরা পড়াতে যারা এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত, তাদের নামও প্রকাশিত হবে। ষড়যন্ত্রকারীরা বিচারের আওতায় আসবে। মামুন আবু কেন এই ঘটনা ঘটিয়েছেন, কারা এই কাজ করতে তাকে ব্যাংকে পাঠিয়েছিল, তাও বের হবে। অর্থ নেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অবশ্য আমরা অর্থ ফিরিয়ে আনতে পেরেছিলাম। না হলে অনেক বড় সর্বনাশ হয়ে যেত।
নওশেদ আরও বলেন, ১ লাখ ৬৫ হাজার ডলারের মধ্যে ২০ হাজার ডলার সোসাইটির সভাপতি মো. আব্দুর রব মিয়ার নামে তোলা হয়। ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে সোসাইটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষÑএই তিনজন অথরাইজ পারসন হওয়ার কারণে ব্যাংক অর্থ দিয়েছিল বলে পরে জানতে পারি। কিন্তু রব ভাই এ ধরনের অর্থ তোলার কোনো চেকে সাইন করেননি।
নওশেদ হোসেন বলেন, পুলিশ মামুন আবুকে ১৬ এপ্রিল রাতে জ্যামাইকা থেকে গ্রেপ্তার করে। তাকে গ্রেপ্তার করায় আমরা অবশ্যই সন্তুষ্ট। এখন তার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করা গেলে ও বিচারের মুখোমুখি করা গেলে ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ অন্য কেউ করতে সাহস পাবে না।
উল্লেখ্য, এর আগে বাংলাদেশ সোসাইটির ১ লাখ ৬৫ হাজার ডলার আত্মসাৎকারীকে চিহ্নিত করে নিউইয়র্ক পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। তখন তারা পরিচয় পায় যে অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম মামুন আবু। তিনি গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর সোসাইটির চেক জালিয়াতি করে এস্টোরিয়ায় টিডি ব্যাংক থেকে অর্থ তোলার চেষ্টা করেন। ব্যাংক কর্মকর্তা ও সোসাইটির নেতাদের দ্রুত হস্তক্ষেপে ডলার উত্তোলন করতে ব্যর্থ হন।
চেক জালিয়াতের ঘটনায় বাংলাদেশ সোসাইটি একটি মামলাও দায়ের করে। গোয়েন্দা পুলিশ মামলাটির তদন্ত করে। তারা ব্যাংকের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে তা দেখে মামুন আবুকে চিহ্নিত করে। এরপর মামুন আবুর নামে ওয়ারেন্ট জারি হয়। তাকে গ্রেপ্তার করতে বিভিন্ন এলাকায় পোস্টার লাগানো হয়। সেই সঙ্গে তাকে ধরার জন্য পাঁচ হাজার ডলার পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়।
সোসাইটির অর্থ আত্মসাতের প্রচেষ্টায় সংগঠনের পক্ষে পুলিশ রিপোর্ট করেন কোষাধ্যক্ষ নওশেদ হোসেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত মামুন আবু ও রফিক উল্লাহ নামের দুজন বাংলাদেশির নাম আসে। ঘটনার সময় প্রথম ৫ হাজার ডলারের চেক জালিয়াতির পর তাৎক্ষণিক ব্যাংকে অভিযোগ জানানো হয়। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আরও দুটি চেকে ১ লাখ ৬০ হাজার ডলার ক্লিয়ারেন্স পায়। ঘটনা নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে তৎপর হওয়ায় জালিয়াতির অর্থ পুরোপুরি ফেরত পাওয়া যায়।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর বিকাল ৫টা ৫৫ মিনিটে টিডি ব্যাংক ডিটমার্স বুলেভার্ড শাখা থেকে একটি ফোন আসে। একজন নারী কর্মকর্তা জানান, জনৈক মামুন আবু ৫ হাজার ডলারের একটি চেক জমা দিয়েছেন। চেক নম্বর ২৯০৩। চেক ইস্যুর তারিখ লেখা ১৯ সেপ্টেম্বর। চেকের মেমোতে উল্লেখ করা হয়েছে ৭৩ স্ট্রিটে স্টেজ প্রোগ্রামের। নারী কর্মকর্তার কাছ থেকে এই তথ্য পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চেকটি পরিশোধ না করার অনুরোধ জানানো হয়। ব্যাংক আর চেকের অর্থ পরিশোধ করেনি।
২০ সেপ্টেম্বর শনিবার বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রব মিয়া ও নওশেদ ব্যাংকে গিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে হিসাবের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন। এরপর সতর্কতার সঙ্গে ব্যাংকের হিসাবে নজর রাখছিলেন কর্মকর্তারা। কিন্তু একই দিন বিকেলে নওশেদ দেখতে পান, ব্যাংক হিসাব থেকে ১৪ হাজার ডলার তুলে নেওয়া হয়। ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে জনৈক রফিক উল্লাহ নামে ১ লাখ ৪০ হাজার ডলারের একটি চেক জমা করা হয়। তাৎক্ষণিক ১৪ হাজার ডলার অনুমোদন দেওয়া হয়। ওই সময়ে তাৎক্ষণিক টিডি ব্যাংকের কল সেন্টারে ফোন করে এ ব্যাপারে আপত্তি জানান নওশেদ। সঙ্গে সঙ্গে ১ লাখ ৪০ হাজার ডলার অ্যাকাউন্টে ফেরত আসে। এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ২২ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টা ১০ মিনিটে একই অ্যাকাউন্টে সংগঠনের সভাপতি আব্দুর রব মিয়ার নামে ২০ হাজার ডলার অয়্যার ট্রান্সফার করা হয়। প্রতারক সভাপতি আব্দুর রব মিয়ার নামে নিজে অ্যাকাউন্ট খুলে এ অর্থ ট্রান্সফার করে। মামুন টিডি ব্যাংক সোসাইটির কর্মকর্তাদের জানায়, সংগঠনের সভাপতি আব্দুর রব মিয়ার নামে টিডি ব্যাংকে একটি অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। ওই অ্যাকাউন্টে সভাপতি নিজে অয়্যার ট্রান্সফার করে ২০ হাজার ডলার নিয়েছেন। অথচ সভাপতি আব্দুর রব মিয়া জানান, টিডি ব্যাংকে তার কোনো অ্যাকাউন্টই নেই। আপত্তির পর ২০ হাজার ডলারও ফেরত আসে। কিছুদিন আগে সভাপতির সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বর কম্প্রোমাইজড হয়। তার ফোন নম্বরও ক্লোন হয়। কেউ তার নামে অ্যাকাউন্ট করে ওই কাজটি করে। ঘটনার পর সোসাইটির নামের দুটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা হয়। পরে নতুন অ্যাকাউন্ট খুলে সংগঠনের কাজকর্ম চালানো হয়।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041