ঈদের আনন্দ ছোটবেলার মতো হয় না কিংবা ছোটবেলার মতো তেমন একটা গুরুত্ব বহন করে না ঠিকই! তার পরও একটা বয়সে সবকিছুর আলাদা গুরুত্ব থাকে। আমি যখন এ দেশে এসেছিলাম, বিশেষ করে আমার এলাকা হলিস, এখানে বাঙালি ছিল না তেমন একটা। বাঙালিপাড়া বলতে জ্যাকসন হাইটসকে বোঝাত। আমি বাড়ির সামনে বসে থাকতাম একজন বাঙালি দেখব বলে। কিন্তু কখনোই দেখতে পেতাম না। গুজরাটি কিছু লোক দেখতাম। তাতেই ভালো লাগত, কারণ তাদের পরনে আমাদের পোশাকের কিছুটা মিল দেখতাম। হোমসিকÑযাকে বলে বাংলাদেশ থেকে এসে নিজেকে এত অসহায় আর একা লাগত। সব সময় স্মৃতির ধূম্রজাল ভেসে উঠত মনের কোণে ঈদের সময় বাংলাদেশে কী কী করতাম। এখানে বাংলা কাপড়ের দোকানপাট তেমন ছিল না। হাতে গোনা কয়েকটি দোকান। তাও বাঙালিরা তেমন একটা কেনাকাটা করতে পারত না দাম বেশি হওয়ার কারণে। বেশির ভাগ বাঙালি দেশ থেকে কাপড় বানিয়ে আনত বা নিয়ে আসত। আর এখন এত বাঙালি, যাকে বলে মিনি বাংলাদেশ।
বিদেশ এখন সব সময় আল্লাহর রহমতে দোস্ত আর গোস্ত পরিবেষ্টিত! এখানে এখন বাংলাদেশি কাপড়ের দোকানের সমারোহ। যারা প্রবাসী বাঙালি, ঈদে এখানে কেউ বাজার করেনি খুব কমই হবে। কী নেই এসব দোকানেÑমেহেদি থেকে শুরু করে প্রসাধনী, জুয়েলারি, শাড়ি, ব্লাউজ, সালোয়ার, কামিজ, ছেলেদের বিভিন্ন ধরনের পাঞ্জাবি, ব্যাগ, জুতা, শাল। এখন প্রতি এলাকায় এবং অ্যাভিনিউতে বাঙালির বাড়ি। সে সুবাদে এখন ঈদ এলে মনে হয় বাঙালি মুসলমানদের ঈদ এসেছে। ঈদ জামাতে শরিক হতে নতুন কাপড় পরে জায়নামাজ হাতে দলে দলে লোকজনকে ঈদগাহ ময়দানের উদ্দেশে রাস্তায় হাঁটতে দেখা যায়। যদিও আমি আহামরি কিছু করি না। তার পরও ঈদ তো ঈদই। গত ঈদগুলোত কী করেছি একটু ভেবে দেখি।
আমি প্রতি ঈদে সকালে উঠে গোসল সেরে নতুন সালোয়ার-কামিজ পরি, সেই সঙ্গে আমার ছেলে ও আমার স্বামীও তৈরি হয়। তারপর তিনজনে ঈদগাহ ময়দানে যাই, নামাজ পড়ি, ছবি তুলি, পরিচিতজনদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করি। সঙ্গে নতুন জায়নামাজ নিতে ভুল হয় না কখনো। আমি ঈদে অনেক ধরনের মিষ্টি রান্না করি। কিন্তু আমার এলাকার মসজিদের নামাজ শেষে এই মসজিদের পক্ষ থেকে সবাইকে কয়েকজন খাদেম একটি করে বড় রসগোল্লা পরিবেশন করতে থাকেন। এটি আমার এলাকার মসজিদের একটি বিশেষত্ব। এটি কিন্তু সত্যি ঈদের আনন্দ দেয়।
আমরা বলি, ছোটবেলার ঈদ আনন্দ ছিল বেশি। আসলে ছোটবেলার ঈদস্মৃতি এত মধুর কেন? কারণ তখন আর কোনো চিন্তা মাথায় থাকত না। স্কুল বন্ধ থাকত। মা-খালারা উপহার দিত। নতুন জামা পরে বেড়ানো আর আনন্দ এসবই ছিল শুধু ছোটবেলায়। চিন্তামুক্ত জীবনের সবকিছুই মধুর থাকে। গুরুদায়িত্ব থাকত বাবা-মায়ের কাঁধে। এখন গুরুদায়িত্ব আমার কাঁধে। ঈদকে তাই ফ্রিভাবে আলিঙ্গন করতে পারি না। রাজ্যের চিন্তা থাকে মাথায়। ঈদের আগের দিন কাজ থেকে অগ্রিম ছুটি নিয়ে রাখি, যদি ছুটির মধ্যে ঈদ না হয় কীভাবে রান্না করা হবে? কোথায় যাব, কে আসবে-এসব চিন্তা। এ দেশের ঈদে একটি দিক ভালো, কেউ এলে আগেই বলে দেয় তারা আসবে। আবার কারও বাসায় গেলে বলে দেয়, সে যাবে তার বাসায়। সকালে নামাজের আগে বাসা থেকে স্পেশাল কিছু রান্না করা খাবার খেয়ে আমার স্বামী ও বাচ্চা বের হয়। সেটা করতেও ভুল করি না। এটি পারিবারিক ঐতিহ্য। তাই চেষ্টা করি এখনো সেই ঐতিহ্য ধরে রাখতে। তারপর নামাজ শেষে ঘরে ফিরে টেক্সট মেসেজ, মেসেঞ্জারে সবাইকে ঈদ মোবারক জানাই। কেউ আসার থাকলে অপেক্ষা করি। তা না হলে নিজেরা যাই বন্ধু ও পরিচিতজনদের বাসায়। তবে ঈদে নতুন কাপড় পরে ঘরে থাকার চেয়ে আমার বেড়াতেই ভালো লাগে বেশি। একটা মজার ব্যাপার রোজা ও ঈদ এই দুই ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যেসব খাদ্যের তালিকা থাকে, সেসব তালিকায় কম-বেশি সবার ঘরে কিছু না কিছু মিল থাকে। বিদেশের ঈদ এখন অনেক বেশি ভোগবাদী উৎসবে পরিণত হয়েছে। প্রবাসের ঈদ এখন দেশের ইমেজ অনুভবে নয়, সম্পূর্ণ বাস্তবে প্রতিফলিত হয়। দিনের শেষে বাসায় এসে টিভিতে ঈদের অনুষ্ঠান দেখি। এখন অনেক টিভি চ্যানেল, তাই এত আকর্ষণ পাই না। রাতে ঈদ শেষ হয়ে গেল ভেবে খুব খারাপ লাগে। ইশ, প্রতিটি দিনই যদি ঈদ হতো, কী মজাই না হতো। আপনার ঈদ কেমন কাটল, এবার জানাবেন?
বিদেশ এখন সব সময় আল্লাহর রহমতে দোস্ত আর গোস্ত পরিবেষ্টিত! এখানে এখন বাংলাদেশি কাপড়ের দোকানের সমারোহ। যারা প্রবাসী বাঙালি, ঈদে এখানে কেউ বাজার করেনি খুব কমই হবে। কী নেই এসব দোকানেÑমেহেদি থেকে শুরু করে প্রসাধনী, জুয়েলারি, শাড়ি, ব্লাউজ, সালোয়ার, কামিজ, ছেলেদের বিভিন্ন ধরনের পাঞ্জাবি, ব্যাগ, জুতা, শাল। এখন প্রতি এলাকায় এবং অ্যাভিনিউতে বাঙালির বাড়ি। সে সুবাদে এখন ঈদ এলে মনে হয় বাঙালি মুসলমানদের ঈদ এসেছে। ঈদ জামাতে শরিক হতে নতুন কাপড় পরে জায়নামাজ হাতে দলে দলে লোকজনকে ঈদগাহ ময়দানের উদ্দেশে রাস্তায় হাঁটতে দেখা যায়। যদিও আমি আহামরি কিছু করি না। তার পরও ঈদ তো ঈদই। গত ঈদগুলোত কী করেছি একটু ভেবে দেখি।
আমি প্রতি ঈদে সকালে উঠে গোসল সেরে নতুন সালোয়ার-কামিজ পরি, সেই সঙ্গে আমার ছেলে ও আমার স্বামীও তৈরি হয়। তারপর তিনজনে ঈদগাহ ময়দানে যাই, নামাজ পড়ি, ছবি তুলি, পরিচিতজনদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করি। সঙ্গে নতুন জায়নামাজ নিতে ভুল হয় না কখনো। আমি ঈদে অনেক ধরনের মিষ্টি রান্না করি। কিন্তু আমার এলাকার মসজিদের নামাজ শেষে এই মসজিদের পক্ষ থেকে সবাইকে কয়েকজন খাদেম একটি করে বড় রসগোল্লা পরিবেশন করতে থাকেন। এটি আমার এলাকার মসজিদের একটি বিশেষত্ব। এটি কিন্তু সত্যি ঈদের আনন্দ দেয়।
আমরা বলি, ছোটবেলার ঈদ আনন্দ ছিল বেশি। আসলে ছোটবেলার ঈদস্মৃতি এত মধুর কেন? কারণ তখন আর কোনো চিন্তা মাথায় থাকত না। স্কুল বন্ধ থাকত। মা-খালারা উপহার দিত। নতুন জামা পরে বেড়ানো আর আনন্দ এসবই ছিল শুধু ছোটবেলায়। চিন্তামুক্ত জীবনের সবকিছুই মধুর থাকে। গুরুদায়িত্ব থাকত বাবা-মায়ের কাঁধে। এখন গুরুদায়িত্ব আমার কাঁধে। ঈদকে তাই ফ্রিভাবে আলিঙ্গন করতে পারি না। রাজ্যের চিন্তা থাকে মাথায়। ঈদের আগের দিন কাজ থেকে অগ্রিম ছুটি নিয়ে রাখি, যদি ছুটির মধ্যে ঈদ না হয় কীভাবে রান্না করা হবে? কোথায় যাব, কে আসবে-এসব চিন্তা। এ দেশের ঈদে একটি দিক ভালো, কেউ এলে আগেই বলে দেয় তারা আসবে। আবার কারও বাসায় গেলে বলে দেয়, সে যাবে তার বাসায়। সকালে নামাজের আগে বাসা থেকে স্পেশাল কিছু রান্না করা খাবার খেয়ে আমার স্বামী ও বাচ্চা বের হয়। সেটা করতেও ভুল করি না। এটি পারিবারিক ঐতিহ্য। তাই চেষ্টা করি এখনো সেই ঐতিহ্য ধরে রাখতে। তারপর নামাজ শেষে ঘরে ফিরে টেক্সট মেসেজ, মেসেঞ্জারে সবাইকে ঈদ মোবারক জানাই। কেউ আসার থাকলে অপেক্ষা করি। তা না হলে নিজেরা যাই বন্ধু ও পরিচিতজনদের বাসায়। তবে ঈদে নতুন কাপড় পরে ঘরে থাকার চেয়ে আমার বেড়াতেই ভালো লাগে বেশি। একটা মজার ব্যাপার রোজা ও ঈদ এই দুই ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যেসব খাদ্যের তালিকা থাকে, সেসব তালিকায় কম-বেশি সবার ঘরে কিছু না কিছু মিল থাকে। বিদেশের ঈদ এখন অনেক বেশি ভোগবাদী উৎসবে পরিণত হয়েছে। প্রবাসের ঈদ এখন দেশের ইমেজ অনুভবে নয়, সম্পূর্ণ বাস্তবে প্রতিফলিত হয়। দিনের শেষে বাসায় এসে টিভিতে ঈদের অনুষ্ঠান দেখি। এখন অনেক টিভি চ্যানেল, তাই এত আকর্ষণ পাই না। রাতে ঈদ শেষ হয়ে গেল ভেবে খুব খারাপ লাগে। ইশ, প্রতিটি দিনই যদি ঈদ হতো, কী মজাই না হতো। আপনার ঈদ কেমন কাটল, এবার জানাবেন?