বাংলাদেশের উন্নয়ন হচ্ছে অ-সুখের : জিএম কাদের

প্রকাশ : ২৫ মার্চ ২০২৪, ২২:১১ , অনলাইন ভার্সন
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় নেতা জিএম কাদের এমপি বলেছেন, বিশ্বের ১৪৩টি দেশের মধ্যে এবার সুখী দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১২৯তম। ২০২৩ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১১৮তম এবং ২০২২ সালে এই অবস্থান ছিল ৯৪। মানুষের ব্যক্তিগত সুস্থতার অনুভূতি, ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, উদারতা, জিডিপি ও দুর্নীতির মাত্রা বিবেচনা করে প্রতিবছর জাতিসংঘের পৃষ্ঠপোষকতায় এ রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। ২০২২ সালে সুখী দেশের তালিকায় বাংলাদেশ পিছিয়েছে ২৪ ধাপ। আর ২০২৩ সালে ১১ ধাপ পিছিয়ে বাংলাদেশ। সুখী দেশের তালিকায় দুই বছরে বাংলাদেশ পিছিয়েছে ৩৫ ভাগ। 

তিনি আরও বলেন, সুখ থেকে আমরা কতটা পিছিয়ে যাচ্ছি তা এই রিপোর্টেই প্রমাণ হয়। এই রিপোর্ট অনুযায়ী প্রতিবেশী নেপাল (৯৩), পাকিস্তান (১০৮), মিয়ানমার (১১৮), ভারত (১২৬) ও শ্রীলংকা (১২৮)তম স্থানে। প্রতিবেশী সব দেশের থেকেই পিছিয়ে আছি আমরা। স্বাভাবিক কারণে, আফগানিস্তান ১৪৩তম হয়ে সবচেয়ে অসুখী দেশ হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। তবে, যেভাবে অধঃপতন হচ্ছে এরকম চলতে থাকলে কিছু দিনের মধ্যেই আমরা সবচেয়ে অসুখী দেশ হিসাবে গণ্য হতে পারি, আশঙ্কা আছে।

২৫ মার্চ (সোমবার) এজিবি কলোনি কমিউনিটি সেন্টারে জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের পরিচিতি সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্যে জিএম কাদের এসব কথা বলেন। এসময় তিনি আরও বলেন, সুখের অভাব হয় দেশের মানুষের যখন সুশাসনের অভাব হয়। সুশাসনের অর্থ আইনের শাসন, এককথায় আইনের চোখে সবাই সমান। দ্বিতীয় বিষয়টি সামাজিক ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ বা বৈষম্যহীন সাম্যের ভিত্তিতে চলা দেশ। এই দুটি সম্ভব হয় গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার,  গণতন্ত্রের বা জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। কেননা এ পদ্ধতিতেই শুধুমাত্র সব স্তরের সব ধরনের জনগণ জবাবদিহিতার আওতায় থাকে। বর্তমান দেশে গণতন্ত্রের চর্চ্চা নেই। সরকারকে জবাবদিহিতা করার কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেই। ফলশ্র“তিতে, দেখা যাচ্ছে সার্বিকভাবে দেশে প্রায় সকল পর্যায়ে জবাবদিহিতার অভাব। স্বজনপ্রীতি আর দলীয়করণের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মাঝে বৈষম্য সৃষ্টি করা হয়েছে। 

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, সুশাসন নেই কোথাও। এ কারণেই দেশের মানুষ তার প্রাপ্য অধিকার বঞ্চিত হচ্ছে। তৃণমূল থেকে সর্বোচ্চ আসন পর্যন্ত কোথাও জবাবদিহিতা নেই। দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না, তাই বেড়েই চলছে অনিয়ম আর দুর্নীতি। দেশের মানুষের জীবনের যেন কোনো দাম নেই। জীবনের নিরাপত্তা নেই কোথাও। প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। কোন প্রতিকার নেই, কারও যেন কোনো দায় নেই। তিনি বলেন, এখন প্রায় প্রতিদিনই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। এতে প্রতিবছর শত শত মানুষের প্রাণ যাচ্ছে ভয়াবহ আগুনে। পুরো দেশটাই যেন অগ্নিঝুঁকিতে।

জিএম কাদের বলেন, দুর্নীতির বিস্তার অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলছে। টিআই বলেছে, তালিকায় সর্বোচ্চ ১০০ স্কোরের মধ্যে ২৪ স্কোর পেয়ে স্কোরপ্রাপ্তির ক্রমানুসারে বাংলাদেশের অবস্থান ১৮০টি দেশের মধ্যে ১৪৯তম। আগের বছর ১৪৭তম স্থানে ছিল বাংলাদেশ। অর্থাৎ দুর্নীতির বিস্তার লাভ করছে প্রতিদিন। টিআই-এর প্রতিবেদন অনুসারে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ শুধু আফগানিস্তানের চেয়ে ভালো অবস্থানে আছেন। ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকাসহ অন্য দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে দুর্নীতির হার বেশি।

তিনি বলেন, সরকার রমজান মাস সামনে রেখে ২৯টি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে দেন। পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী সরকার কর্তৃক বেধে দেয়া ২৯টি পণ্যের কোনোটিই নির্ধারিত মূল্যে বিক্রয় হচ্ছে না। যারা প্রতিকেজি পণ্যে পঞ্চাশ পয়সা ব্যবসা করে সেই ক্ষুদে ব্যবসায়ীদের জেল-জরিমানা করা হয়। কিন্তু, যারা সিন্ডিকেট করে হাজার কোটি টাকা মুনাফা করে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে না সরকার। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন সরকার কী সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি? সরকার কী সিন্ডিকেটকে ভয় পায়? নাকি সিন্ডিকেটের সদস্যরাই সরকার পরিচালনা করে? সাধারণ মানুষ জানতে চায় সিন্ডিকেটের সঙ্গে সরকারের কী সম্পর্ক?

জিএম কাদের বলেন, কিশোর গ্যাং-এর দৌরাত্ম্যে সাধারণ মানুষ দিশেহারা। কিশোর গ্যাং-এর সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি থেকে মানুষ মুক্তি চায়। সরকার সমর্থকদের ছত্রছায়ায় কিশোর গ্যাং সৃষ্টি হচ্ছে। রাজনৈতিক মদদে কিশোর গ্যাং নামে উঠতি কিশোরদের জীবন ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক জহিরুল আলম রুবেলের সভাপতিত্বে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন,  রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, শেরিফা কাদের, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মো. খলিলুর রহমান খলিল, ইঞ্জিনিয়ার মনির আহমেদ, ভাইস-চেয়ারম্যান মো. আরিফুর রহমান খান, সুলতান আহমেদ সেলিম, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, মো. সামছুল হক, মো. বেলাল হোসেন, আব্দুল হামিদ ভাসানী প্রমুখ। 

ঠিকানা/ছালিক 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041