অকৃতদার

প্রকাশ : ০৩ মার্চ ২০২৪, ১১:২৪ , অনলাইন ভার্সন
করিম আর কার্তিক ভালো বন্ধু, একেবারে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকেই তাদের বন্ধুত্ব। চমকপ্রদ বিষয় হলো এদের দুজনের মধ্যে কোনো মিল নেই। তবু দুজন তাদের বন্ধুত্বটা বজায় রাখে। শত বিরোধ, হাজারো বাগবিতণ্ডা সত্ত্বেও দিন শেষে এক টেবিলে চা-সিগারেট ভাগ করে পান করে। মাঝেমধ্যে যুক্তি, পাল্টা যুক্তি, তর্ক-বিতর্কে দুজনের কণ্ঠই মোটামুটি উচ্চ হয়ে আশপাশের মানুষজন জড়ো করায়, অন্য বন্ধুরা ওদের থামাতে ব্যর্থ হয়ে হাল ছেড়ে দেয়। মন্দের ভালো হলো প্রায়ই ঝগড়াঝাঁটি চরম পর্যায়ে পৌঁছালেও সেটা কখনো হাতাহাতি বা মারামারি পর্যন্ত যায় না। উভয়ের যুক্তি হলো মতের পার্থক্য থাকবেই, সে জন্য বন্ধুত্ব নষ্ট হবে কেন?

ক্লাস নাইনে পড়ার সময় করিমকে জোনাকি অপেরার যাত্রা দেখতে নিয়ে গিয়েছিল কার্তিক। বাড়ির সবাই ঘুমিয়ে পড়লে করিম সন্তর্পণে তার ঘর থেকে বেরিয়ে আসত, আবার খুব ভোরে ঘরে ঢুকে পড়ত। যাত্রা বা সিনেমা দেখার সব খরচ জোগাত কার্তিক। অধিকাংশ সময় করিম যেতে না চাইলেও কার্তিকের পীড়াপীড়িতে শেষ পর্যন্ত যেতেই হতো। ‘সবুজ সাথি’ সিনেমায় দেখেছিল, ওদের বয়সী দুটো কিশোর ধূমপান করছে। একজন অন্যজনকে ধূমপানে উদ্বুদ্ধ করছে এই বলে যে, ধূমপান না করলে কিসের পুরুষমানুষ! সে সময় প্রায়ই কার্তিকদের বাগানের গভীরে যে দিকটায় সহজে কেউ যায় না, সেখানে কাঁঠালগাছের নিচে কার্তিক ধূমপান শুরু করে আর করিমকে ধূমপানে উৎসাহ দেয়।
আম কাঁঠাল নারকেল সুপারিসহ নানাবিধ ফলদ ও বনজ গাছের ঘন বিশাল বাগান কার্তিকদের। সারা বছর ওদের বাড়ির সার্বক্ষণিক কাজের লোক ছিল গোপাল। কার্তিক গোপালকে সঙ্গে নিয়ে প্রতি শনি ও মঙ্গলবার সকালে নারকেল সুপারিসহ ঋতু ভেদে আম জাম বরই কাঁঠাল পেড়ে গরুর গাড়ি ভরে হাটে নিয়ে বিক্রি করত। এসব বিক্রির তিন ভাগের এক ভাগ নিজের পকেটে রেখে বাকি টাকা ওর বাবার হাতে দিত। ফলে কার্তিকের টাকার কোনো অভাব ছিল না।

কার্তিকের বাবা বাজারের আড়তঘরে বসতেন শনি ও মঙ্গলবারে। অন্যান্য দিন বিশেষ প্রয়োজন না হলে আড়তে যেতেন না। মূলত হাটের দিন প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে গরুর গাড়ি ও নৌকায় আসা বিভিন্ন মৌসুমি শস্য তিনি কিনে বেশির ভাগ অন্যান্য জেলা থেকে আসা কাস্টমারদের নিকট বিক্রি করতেন। ক্রেতারা ওইসব শস্যপণ্য ট্রাকভরে নিয়ে যেত আর কিছু শস্য গুদামজাত করে দাম বাড়লে বিক্রি করাই ছিল তার মূল ব্যবসা। কার্তিকের দাদা গণেশ ওদের প্রায় শত বিঘা ধানি জমি ও কয়েকটা বড় বড় পুকুর দেখভাল করত।

গণেশদা কার্তিকের চেয়ে প্রায় ১০ বছরের বড় আর ওর দিদি প্রায় ছয় বছরের বড়। কার্তিকের দিদির নাম লক্ষ্মী। অত্যন্ত রূপবতী লক্ষ্মীকে এইচএসসি পাস করার পরপরই পশ্চিমবঙ্গের বারাসাতে ওর কাকার বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কলেজে পড়ার সময় মুসলমান এক ছেলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ায় কার্তিকের বাবা লক্ষ্মীকে ওপারে ছোট ভাইয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। পরবর্তী সময়ে ওর কাকা দেখেশুনে খুব সহজেই এপার বাংলার বিক্রমপুর থেকে মাইগ্রেট করা পরিবারের ডাক্তার ছেলের সঙ্গে মোটা অঙ্কের পণ দিয়ে লক্ষ্মীকে বিয়ে দেন।

১৯৭১-এ স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় কার্তিকদের পরিবারের সবাই ভারতে ওদের আত্মীয়দের আশ্রয়ে চলে গিয়েছিল। দেশ স্বাধীনের পর বাবা ফিরে এলেও ওর কাকা আর পিসি ফেরেননি। কার্তিকের বাবা নিয়মিত টাকা পাঠিয়ে এবং ছোট ভাইয়ের ভাগের জমি বিক্রি করে ওই টাকায় ওপারে বাড়িসহ জমিজমা কেনায় সাহায্য করেছিলেন। বোনকে বিশাল অর্থের পণ দিয়ে ১৯৪৭-এ খুলনা থেকে যাওয়া পরিবারের অবস্থাপন্ন ব্যবসায়ী ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলেন। ওপার বাংলায় ভাইবোনের ভালো অবস্থান তৈরির জন্য কার্তিকের বাবা মোটেও কার্পণ্য করেননি। দুই দেশে থাকলেও ভাইবোনদের সঙ্গে ওনার সব সময়ই দারুণ সুসম্পর্ক। বছরে কমপক্ষে একবার ওর দাদা, বাবা আর কার্তিক নিজে পালা করে কাকা ও পিসির বাড়ি বেড়াতে যায়। কার্তিকের বাবা স্থায়ীভাবে ভারত তথা পশ্চিম বাংলায় যাওয়ার পক্ষে নন। মূলত ওখানকার কৃষ্টি-কালচার, আচার-ব্যবহার তার ভালো লাগে না আর বাংলাদেশের মানুষের মতো ওরা আন্তরিক না হওয়ায় ওনার মন্তব্য, ‘মিয়ারা আমারে মেরে ফেলুক, তবু মাতৃভূমি ছেড়ে যাব না।’

করিমের বাবা স্থানীয় সরকারি জুটমিলের হেড ক্লার্ক। করিমের বড় দুই বোন। নিজেদের অল্প কিছু ধানি জমি বর্গা দিয়ে যা পায়, তাতে ওদের ছোট সংসারের সারা বছরের চাল হয়ে যায়। করিম লেখাপড়ায় বেশি ভালো ছাত্র না হলেও কমপক্ষে বিএ পাস করতে হবেÑএই লক্ষ্যে সে পড়ালেখায় তার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যায়। কারণ ভবিষ্যতে তার পিতা অবসরে যাওয়ার সময়ে তার ওই পদে পৈতৃকসূত্রে চাকরি পাওয়ার নিয়ম আছে। করিমের চেয়ে কার্তিক মেধাবী। পড়ালেখায় করিমের দুর্বল স্থানে কার্তিকের আন্তরিক সহযোগিতায় করিম এগিয়ে যায়। পরীক্ষায় পাশাপাশি সিট নিশ্চিত করার জন্য তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিত। এভাবে তারা শুধু বিএ নয়, এমএ পর্যন্ত পাস করে যায়। কার্তিকের যদিও চাকরির প্রতি আগ্রহ ছিল না, তবে করিম তার পৈতৃক চাকরিটা পিতার অবসরের সঙ্গে সঙ্গে সহজেই পেয়ে যায়।

কলেজে থাকতেই কার্তিক একাধিক মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ায়। এ বছর পূর্ণিমা তো পরের বছর মাধুরী, তারপর শিপ্রা...। কার্তিক দেখতে একদম কার্তিকের মতোই, চোখ-নাক-কানের সুন্দর আকৃতির সঙ্গে গৌর বর্ণে সে সত্যিই সুদর্শন। আর শ্যাম বর্ণের করিম দেখতে মোটামুটি, তবে কার্তিকের তুলনায় বেঁটে। করিমের বড় দুই বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। পিতার চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর তার জন্যও পাত্রী দেখা চলছে। ওদিকে কার্তিকের বাবা-দাদা ওর বিয়ের জন্য তাগাদা দিলেও কার্তিকের বিয়ের বিষয়ে কোনো আগ্রহ দেখা যায় না।

বছরব্যাপী বিভিন্ন পুজো-পার্বণ ও মেলা উপলক্ষে কার্তিক প্রত্যন্ত অঞ্চলের হিন্দুপ্রধান গ্রামগুলোতে বেড়াতে যায়।

উপলক্ষ ছাড়াও প্রতি মাসে দু-একবার সে ওখানে যাবেই। ধীরে ধীরে ওইসব অজপাড়াগাঁয়ে যাওয়ার বিষয়টি করিমের কাছে প্রকাশিত হয়। মূলত নারীসঙ্গ লোভেই কার্তিকের ওসব গ্রামে যাওয়া। কার্তিক সুদর্শন, তার ওপর সে টাকা-পয়সা খরচ করতে দ্বিধা করে না। কেউ পাঁচ টাকা চাইলে পঞ্চাশ টাকা দিয়ে দেয়। ফলে আর্থিকভাবে দুর্বল বিবাহিতা-অবিবাহিতা সব ধরনের নারীকে সে ধারাবাহিকভাবে ভোগ করে। তখনকার বিদ্যুৎহীন গ্রামাঞ্চলে জারিগান, পালাগান, কীর্তন প্রভৃতি অনুষ্ঠানে বেশির ভাগ নারী-পুরুষ যায়। এই সুযোগে কার্তিক অনায়াসেই তার কামনা চরিতার্থ করতে পারে। পশ্চিম বাংলার মসলন্দপুরে পিসির বাড়ি বেড়াতে যেতে যেতে ওখানকার তিন-চারটি মেয়ের সঙ্গে কার্তিকের সখ্য গড়ে ওঠে। বছরে একবার অন্তত সে ওই মেয়েদের কাউকে না কাউকে নিয়ে দার্জিলিং বা পুরিতে সপ্তাহকাল ঘুরে আসে। এসব শুনে করিমের চোখ কপালে উঠে যায়। সে ভেবে পায় না একটা অবিবাহিত মেয়ে কী করে অন্য ছেলের সঙ্গে কয়েক দিনের জন্য অন্যত্র গিয়ে হোটেলে থাকতে পারে!
এভাবে সময় পেরিয়ে যায়। করিম বিয়ে করে। ছেলে হয়, মেয়ে হয় কিন্তু কার্তিক অকৃতদারই থেকে যায়। বহুগামিতা কার্তিককে বিয়েবিমুখতায় নিয়ে গেছে। বিয়ের বিষয়ে কথাবার্তায় করিমকে কার্তিক বলে, মেয়েরা দারুণ অভিনয় করতে পারে। অন্য পুরুষের বিছানা থেকে উঠে কীভাবে স্বামীর সঙ্গে অত্যন্ত সাধারণ চলাফেরা এবং ব্যবহার করে, সেটা উভয় অবস্থা না দেখলে কারও বিশ্বাস হবে না। অবিবাহিতা মেয়েরাও প্রায় একই। একাধিক ছেলেবন্ধুর সঙ্গে সমন্বয় করে চলে খুব অবলীলায়। তবে এদের বিছানায় নিতে টাকা-পয়সা, উপহারসামগ্রীর পাশাপাশি বহুত ছলাকলা করতে হয়। মাঝেমধ্যে সহজে কাউকে না পেলে নির্দিষ্ট সময়ান্তে কার্তিকের শারীরিক অস্বস্তি শুরু হয়, বমি বমি ভাবসহ অবর্ণনীয় একটা অস্থিরতা তৈরি হয়। নারীদেহের আকাক্সক্ষায় তখন সে পতিতার কাছে পর্যন্ত যায়। কার্তিকের ভাষ্য, বেশ্যাদের টাকা দিলেই হয়, ছলাকলা ন্যাকামি মিথ্যা মিষ্টি কথার ফুলঝুড়ির দরকার নেই। আর ঘরোয়া মেয়েদের টাকা খরচের সঙ্গে নানান ধরনের অভিনয়, ন্যাকামি করা লাগে, যা কার্তিকের কাছে অত্যন্ত বিরক্তিকর।

কার্তিকের এসব কথাবার্তা করিমের কাছে একপেশে মনে হয়। সে বোঝাতে চেষ্টা করে, তার দেখা নারীজগতের বাইরে আরও অনেক জগৎ আছে। দুর্ভাগ্যবশত তাদের দেখা না পাওয়ায় অথবা ওদেরকে এড়িয়ে যাওয়া বা পাত্তা না পাওয়ায় এমন মনে হচ্ছে।
তা ছাড়া পৃথিবীর সব দেশে ধর্মে জাতিতে বিয়ের রীতি আছে আর রোগে শোকে একাকিত্বে ও শেষ বয়সে স্ত্রী বা স্বামীর কোনো বিকল্প হয় না। কার্তিক এসব বুঝতে চায় না। উল্টো সে করিমকে বলে, তোর বউয়ের সঙ্গে তোর যে সপ্তাহে সাত দিনের চার দিনেই ঝগড়া হয়, প্রতি দু-তিন মাসে রাগ করে বাপের বাড়ি চলে যায়, আবার তোকেই সমঝোতা করতে হয়।

মূলত এরা কেউ কারও মতে একমত হয় না, তর্কেরও শেষ হয় না। পারিবারিক সামাজিক রাজনৈতিক বিষয়ে বিপরীত যুক্তি পাল্টা যুক্তি তর্ক-বিতর্ক চলতেই থাকে। তবে এরা ধর্ম নিয়ে কোনো তর্কে জড়ায় না। ধর্ম হলো বিশ্বাস, যে যার বিশ্বাস নিয়ে থাকাটাই শ্রেয় মনে করে দুজনে। প্রায় প্রতিদিন সন্ধ্যার পরে বাজারে কার্তিকের পৈতৃক আড়তঘরের এক কোণে একটা টেবিল আর কয়েকটি চেয়ারে বসে আড্ডা চলে। সেখানে করিম ছাড়াও ওদের আরও বন্ধুরা জড়ো হয়। রাজনীতিতেও দুই বন্ধু দুই মেরুতে। এরশাদের পতনের পর অন্য সবার মতো কার্তিকও ধরে নিয়েছিল, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জিতবে এবং সরকার গঠন করবে। বাস্তবে কী হয়েছিল, সেটা সবাই জানে। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে যখন শেখ হাসিনা ভোটভিক্ষা শুরু করলেন, তখন কার্তিক করিমের কাছে আওয়ামী লীগের হয়ে ভোটভিক্ষা চাইল। দুই বন্ধুর মধ্যে রাজনীতি নিয়ে ভীষণ তর্কযুদ্ধ চললেও করিম বন্ধুকে দেওয়া কথা রেখেছিল। কার্তিকের মতে, শেখ হাসিনার দূরদর্শিতার জন্য এবং নেতৃত্বের ক্যারিশমায় টানা ১৫ বছর দল ক্ষমতায় আছে। আর করিমের ধারণা, ২০০৮ সালের নির্বাচনে তৎকালীন সেনাপ্রধানের চক্রান্তে বিএনপি ক্ষমতায় আসতে পারেনি, রাতের ভোটের ষড়যন্ত্র তখনই প্রথম হয়েছিল। এরপর ২০১৪-এ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়, ২০১৮-তে জোর করে এবং রাতে ভোটবাক্স ভরে আর ২০২৪-এ আমি ও ডামির নির্বাচনে আবারও ক্ষমতায়। এ বিষয়ে কার্তিকের মন্তব্য, যার রাজ তার নীতিÑএই হলো রাজনীতি। করিমের কথা হলো তাহলে তো মধ্যযুগে চলে যেতে হয়Ñজোর যার মুল্লুক তার। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রধান দাবিদার আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধের কোনো চেতনার প্রতি এখন বিন্দুমাত্র দায় ও শ্রদ্ধা নেই। কার্তিক করিমকে স্মরণ করিয়ে দেয়, ২০১৩ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপি একের পর এক হরতাল দেয়। ওই সময়ে শেখ হাসিনা খালেদা জিয়াকে হরতাল বন্ধ করে আলোচনার টেবিলে আসতে আহ্বান জানান। খালেদা জিয়ার সেই আমন্ত্রণে সাড়া না দেওয়াটা বড় ভুল ছিল। করিমের বক্তব্য হলো অন্য নেতাদের সঙ্গে আলাপ না করে হুট করে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। এ ছাড়া ২০১৮ সালে ভালো নির্বাচন করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিএনপিকে নির্বাচনে নেয় অথচ বাস্তবে তারা কী করেছিল? আসলে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাসী দল নয়। শেখ মুজিব থেকে শেখ হাসিনাÑসবাই একদলীয় শাসন কায়েম করতে চেয়েছে এবং চায়। শেখ মুজিব তার নিজ দলের স্পিকারকে মেরেছিল আর ক্ষমতায় এসে নিজেকে আজীবন প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেছিল।

কার্তিকের কথা হলো খালেদা জিয়া তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থাটাকে নখদন্তহীন করতে চেয়েছিল। আর শেখ হাসিনা তার আন্দোলনের ফসল ওই তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতিটাই বাতিল করে দিল, করিম বলল। করিম কার্তিককে বোঝাতে চেষ্টা করে, যদি এই বড় দুই দলের প্রধানেরা রেষারেষিটা কম করে সার্বিক ও সুদূরপ্রসারীভাবে দেশের কল্যাণে যা যা ভালো সেই কাজগুলো করত, তাহলে সাধারণ জনগণের উপকার ও উন্নয়নের পাশাপাশি তাদেরও সুনাম হতো। দুজনই যদি তার দলীয় নেতাকর্মী ও সাংসদদের কঠোরভাবে ভালো কাজের মূল্যায়নের ভিত্তিতে উচ্চপদে পদায়ন, মন্ত্রিত্ব দেওয়া আর খারাপ কাজের তিরস্কার হিসেবে পদবঞ্চিত করত, তাহলে হয়তো পাঁচ বছর পরে নির্বাচনে হারলেও জনগণই আবার ভালো কাজের মূল্যায়নস্বরূপ তাদের ক্ষমতায় আনত। করিমের মত হলো খালেদা ও হাসিনা যে পর্যায়ে পৌঁছেছে তাদের তো ধন-সম্পদের দরকার নেই, দরকার ভালো কাজের মাধ্যমে সুনামের। ফলে কেন তারা দলীয় নেতাকর্মী সাংসদ মন্ত্রীদের অপকর্মের দায় নেয়? কার্তিক স্মরণ করিয়ে দেয়, মোগল আমলে ক্ষমতার জন্য পিতা পুত্রকে, পুত্র পিতাকে, ভাই ভাইকে খুন করেছিল। এ থেকে বোঝা যায়, সুনাম নয় ক্ষমতাবান হওয়াটাই আসল ব্যাপার। পৃথিবীতে কোটি কোটি মানুষের বহু ধন-সম্পদ আছে কিন্তু ক্ষমতা, বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা নেই। এই ক্ষমতা জাদুকরি, এর নেশা মারাত্মক।
 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041