মিয়ানমার সংকট ও বাংলাদেশের জনমত

প্রকাশ : ২৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, ১১:১০ , অনলাইন ভার্সন
মিয়ানমার সংকট বাংলাদেশের জন্য গলার কাঁটা সেই ২০১৭ সাল থেকে। ২০১৭ সালের ১৭ আগস্ট বাংলাদেশের ক্যালেন্ডারে অতি গুরুত্বপূর্ণ দিন। মিয়ানমার সংকটের, একই সঙ্গে বাংলাদেশের শুরুও ওই দিন থেকেই। মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংকটও চেপে বসে বাংলাদেশের ঘাড়ে। সে সময় মিয়ানমার সংকট তোলপাড় তুলেছিল বাংলাদেশের জনগণ, বাংলাদেশের সরকার এবং বিশ্ব মতকে। বাংলাদেশের জনমনে মিয়ানমার ইস্যু সেই ২০১৭/১৮ সালের মতো আর খুব ঢেউ তোলে বলে মনে হলো না।

২০২৪ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থানকালে গভীরভাবে লক্ষ করলাম, এটা বাংলাদেশের জনগণের মনে আর তেমন আগের মতো কোনো প্রতিক্রিয়া জাগায় না। বাংলাদেশের জনমনে সেভাবে আর দাগ না কাটলেও মিয়ানমার ও বাংলাদেশের জন্য সেটা কঠিন থেকে কঠিনতর সমীকরণ। রোহিঙ্গা সংকট ও মিয়ানমারের চলমান অস্থিরতার জেরে বাংলাদেশে ও ভারতে ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা জানা যাচ্ছে। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা শুধু নয়, অন্যান্য উপজাতি, এমনকি সামরিক বাহিনীর সদস্যরা পর্যন্ত ঢুকে পড়ে। তার কিছু সদস্য মিয়ানমারে ফিরে গেলেও সংকট নিরসনে তেমন তৎপরতা লক্ষ করা যাচ্ছে না।

কূটনৈতিক বিশ্ব গভীরভাবে বিশ্বাস করে, দুটি স্বাধীন দেশের মধ্যে সৃষ্ট সংকট নিরসনের ব্যবস্থা সংকটে জড়িত দেশের প্রচেষ্টার ওপর নির্ভর করে না। তা সে যত আন্তরিক প্রচেষ্টাই হোক না কেন। এই সংকটের নিরসন হতে পারে কূটনৈতিক তৎপরতার ওপর। বাংলাদেশের কূটনৈতিক দূরদর্শিতার দুর্বলতা সব সময় লক্ষ করা গেছে। স্বীকার করুক বা না করুক, ঘটেছে সে রকমটাই। দ্বিতীয়ত, জনমতের চাপ। সে চাপটা একেবারে নেই বললেই চলে। জনমতের চাপ থাকলে সরকারও সংকট সমাধানের চাপে থাকত এবং সভা-সমিতি, চায়ের আসরে, বন্ধুবান্ধবের গল্প-কথায় প্রকাশ পেত। সে রকম কিছু চোখে পড়েনি। জনগণ প্রায় নির্লিপ্ত বলেই মনে হয়েছে।

সরকারের উন্নয়নের অগ্রগতির কথা দেশের মানুষ, বহির্বিশ্বের মুখে সব সময় শোনা যায়। কিন্তু মিয়ানমার সংকট নিয়ে পাবলিকের মুখে যেমন নেই কোনো আলোচনা, তেমনি নেই সরকারি কার্যক্রমে কোনো সক্রিয় তৎপরতা। তাই এ রকম বিষয়ে তেমন সমালোচনাও সরকার-বিরোধিতা বলে গণ্য হয় না। সাধারণ মানুষ সব সময় দেখতে চান, দেশের মানুষ নিরাপদে আছেন। সবচেয়ে বড় কথা, সব দিক থেকে দেশকে সরকার নিরাপদ রাখতে কতটা সক্রিয়।

একটা বিষয় সব সময় দেশের মানুষ লক্ষ করে আসছে, মিয়ানমার বাংলাদেশের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে নিজেদের স্বার্থরক্ষায় যতটা তৎপরতা দেখাতে পেরেছে, আমরা ততটাই ব্যর্থ হয়েছি। প্রবাদে আমরা বলে থাকি, ‘সন্তানে না কাঁদলে, মাও সন্তানকে দুধ দেয় না।’ কথাটা মনে রাখার মতো। নিজের স্বার্থ নিয়ে নিজেকেই সোচ্চার হতে হয়। নিজের কান্না অন্য কেউ কেঁদে দিতে পারে না। একজনের স্বার্থ স্বেচ্ছায় আরেকজন দিয়ে দেবে না।

বাংলাদেশ তার স্বাধীনতার ৫৩ বছরে যত রকম রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করেছে, তার মধ্যে মিয়ানমারের সঙ্গে যে সংকট বাংলাদেশের মানুষ মোকাবিলা করছেÑমিয়ানমারের বাইরে আর কারও সঙ্গে এমন সংকট মোকাবিলা করতে হয়েছে বলে মনে হয় না। একটা কথাÑপ্রতিবেশী সব রাষ্ট্রকে সব সময় মনে রাখতে পারলে সকলের জন্যই উপকার হবে। প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো যদি সব সময় সুসম্পর্ক রক্ষা করে চলতে পারে, তবে তারা সবাই সমভাবে উপকৃত হবে এবং উন্নয়নের পথে অগ্রসর হবে। এই সম্পর্ক যাতে উন্নত না হয়, তার জন্য পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ানোর রাষ্ট্রের অভাব হবে না। নিজের স্বার্থ সবার আগেÑএটা বুঝতে হবে। তাহলে আর কোনো ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না। এটাই সবার প্রার্থনীয়।



 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041