ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যুক্তরাষ্ট্র সফরে। একই সময়ে চীন সফরে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর চীন সফরে অনেক বার্তা। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্র সফরের মাঝেও চলমান ও আগামী দিনের আঞ্চলিক রাজনীতির অনেক রসদ। বিশ্বরাজনীতির এই সন্ধিক্ষণে বাংলাদেশের শেখ হাসিনার সরকার চায় চীন ও ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা করেই যুক্তরাষ্ট্রের চাপ সামলাতে।
বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের তাগিদ এখন আন্তর্জাতিক ঘটনা। এর মূল কারণ ২০১৪ ও ২০১৮ সালে টানা দুটি প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন এবং সেই নির্বাচনে চীন, যুক্তরাষ্ট্র, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সমর্থন। এখন সুষ্ঠু নির্বাচন চাইলেও তারা কেউই ওই দুটি নির্বাচনের দায় এড়াতে পারে না। আবার সামনে কাক্সিক্ষত নির্বাচনটি কার অধীনে হবেÑএ নিয়ে প্যাঁচ ছোটাচ্ছে না কেউ। দলীয় সরকারের অধীনে নাকি মধ্যবর্তী নিরপেক্ষ কোনো সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়, তা পরিষ্কার করছে না। চীন ও ভারত মোটামুটি সংবিধানের অধীনে অর্থাৎ বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনকে প্রচ্ছন্ন সমর্থন করছে। বিরোধিতা করছে শুধু যুক্তরাষ্ট্র। তাও সোজাসাপ্টা নয়। তাদের দেওয়া ভিসা নীতিতে এর আভাস নেই।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুদলের বিরোধিতা একেবারেই ক্ষমতাকেন্দ্রিক। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা ছাড়তে নারাজ। বিএনপি আর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। তৃতীয় কেউ এসে পড়লেও অমত করবে না তারা। কিন্তু রাষ্ট্র ও সরকারের কাঠামোগত পরিবর্তন চায় না কোনো দলই। বর্তমান কাঠামোতে ‘ফেরেশতা’ ক্ষমতাসীন হলেও এখন যা হচ্ছে-চলছে, এর ব্যতিক্রম হওয়ার অবস্থা নেই। ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতাসীন হওয়ার পর আওয়ামী লীগ ও জামায়াত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে যেসব ‘শব্দ ও বাক্য’ চয়ন করেছে, বিএনপিও আপ্তবাক্যের মতো এখন সেগুলোই চয়ন করে যাচ্ছে।
বাংলাদেশের মতো সাংবিধানিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর এত একচ্ছত্র ক্ষমতা দুনিয়ার সভ্য-অসভ্য কোনো দেশেই নেই। ব্রিটেন-যুক্তরাষ্ট্র-জাপান বা কঙ্গো-নাইজেরিয়া-উগান্ডায়ও নেই। বিএনপি এ নিয়ে কোনো কথা বলে না। এরশাদবিরোধী আন্দোলনে ১৯৯০-তে তিন দল এ নিয়ে যে ওয়াদা করেছিল, ক্ষমতায় গিয়ে দুই দলই তা খেলাপ করেছে। দেশের জাতীয় সংসদের ‘কার্যপ্রণালি বিধি’ ব্রিটিশ আমলের। রেজিম পরিবর্তন হলে তাতে কোনো পরিবর্তনের অঙ্গীকারও কারও নেই। সুশীল সমাজের মধ্যে এ নিয়ে সমানে বিশ্লেষণ চলছে। যে কারণে তারা এক পা এগিয়ে দু’পা পেছাচ্ছেন। এর জেরে বাংলাদেশে বিরাজমান সংকটের চূড়ান্ত মীমাংসার লক্ষণ এবারও নেই। পরিস্থিতিও প্রতিবেশীসহ বিদেশি কয়েকটি রাষ্ট্রের বাতলানো অ্যাডহক ব্যবস্থার দিকেই এগোচ্ছে। মোদি ফেরার পর যার কিছুটা নমুনার অপেক্ষায় অনেকে। বাইডেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে মোদির এটি প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর। আবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের বেইজিং সফরও বেশ হাইপ্রোফাইলের।
গত পাঁচ বছরে এই প্রথম চীন সফরে গেলেন যুক্তরাষ্ট্রের কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রী। যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্কের বরফ গলাতে তাইওয়ানসহ বিভিন্ন ইস্যুতে দুই বিশ্বপরাশক্তির মধ্যে চলমান উত্তেজনা প্রশমনের বিষয় রয়েছে এর নেপথ্যে। দুই দেশের মধ্যে তৈরি হওয়া দীর্ঘদিনের ভুল-বোঝাবুঝি দূর করে কার্যকর ‘যোগাযোগ চ্যানেল’ তৈরি করাই এই সফরের উদ্দেশ্য বলে জানিয়েছে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট। দুই দিনের সফরের প্রথম দিনে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিং গ্যাংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক হবে কি না তা নিয়ে ছিল অনিশ্চয়তা। এর আগে এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ব্লিঙ্কেনের চীনে যাওয়ার কথা থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে ‘স্পাই বেলুন’ ভূপাতিত করার বিষয়কে কেন্দ্র করে ওই সফর বাতিল হয়। সর্বশেষ শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তা হিসেবে ২০১৮ সালে বেইজিং সফর করেছেন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর প্রধান মাইক পম্পেও। অনিশ্চয়তা দূর করে শেষ পর্যন্ত চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের। তার সফরের দ্বিতীয় ও শেষ দিনে হয় বৈঠকটি। তা জানানো হয় বৈঠক শুরুর মাত্র এক ঘণ্টা আগে।
পরে সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বরাবরের মতোই এক চীনা নীতি অনুযায়ী তাইওয়ানের স্বাধীনতাকে, যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন না করলেও, তাইওয়ানের ভেতরে বেইজিংয়ের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে। সংবাদ সম্মেলনে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে স্বীকার করে দুই দেশের সম্পর্ককে স্থিতিশীল করার তাগিদ দেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি জানান, জিনজিয়াং, তিব্বত ও হংকংয়ে চীনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে কোনো ধরনের প্রাণঘাতী অস্ত্র সহায়তা না দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও চীন দিয়েছে বলে জানান অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। যুক্তরাষ্ট্র কখনোই চীনকে অর্থনৈতিকভাবে আটকে রাখতে চায় না বলেও আশ্বস্ত করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বাস্তবে কী হবে তা আরও পরের ব্যাপার। কিন্তু ভারত, চীন, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যে কূটনীতি হয়ে গেছে, এর নির্ঘাত ছায়া পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশে। বিষয়টি খোলাসা হতে পারে মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে দেশে ফেরার পর। যার মধ্য দিয়ে মোদিই হয়ে উঠতে পারেন বাংলাদেশের রাজনীতির অনুঘটক। একাত্তরে সোভিয়েত ইউনিয়নকে মোকাবিলা করতে কট্টর কমিউনিস্ট চীনকে হাত করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর চীন সফরের মাঝে সেই ধরনের একটি ইঙ্গিত পাচ্ছেন কূটনৈতিক বোদ্ধারা। কেবল সরকার নয়, নির্বাচন ও রাজনীতিতে বিএনপিসহ দেশের বেশির ভাগ দলই এখন বাঘের পিঠে বসে আছে। কে কীভাবে বাঘ বশে রাখবে বা এর পিঠ থেকে নামবে, সেই নিশানা নেই। বিশেষ করে, চীন-যুক্তরাষ্ট্রের ছন্দে ফেরা কূটনীতির রহস্য ভেদ ও বাংলাদেশসহ এ অঞ্চলের রাজনীতির অনেক কিছু নির্ভর করছে। এখনই সোজাসাপ্টা কিছু নির্ণয়ের অবস্থা নেই।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই পক্ষের মধ্যে সামগ্রিক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে খোলামেলা, গভীর ও গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। উভয় দেশ উচ্চ পর্যায়ের যোগাযোগ বজায় রাখতে সম্মত হয়েছে। ব্লিঙ্কেন কিনকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন এবং কিন পারস্পরিক সুবিধাজনক সময়ে সফর করার জন্য তার প্রস্তুতি ব্যক্ত করেছেন। কূটনীতির এ খেলার দিকে নজর বিশ্ববাসীর। ভূ-রাজনীতির অনিবার্যতায় যার সরাসরি শরিক বাংলাদেশও।
বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের তাগিদ এখন আন্তর্জাতিক ঘটনা। এর মূল কারণ ২০১৪ ও ২০১৮ সালে টানা দুটি প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন এবং সেই নির্বাচনে চীন, যুক্তরাষ্ট্র, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সমর্থন। এখন সুষ্ঠু নির্বাচন চাইলেও তারা কেউই ওই দুটি নির্বাচনের দায় এড়াতে পারে না। আবার সামনে কাক্সিক্ষত নির্বাচনটি কার অধীনে হবেÑএ নিয়ে প্যাঁচ ছোটাচ্ছে না কেউ। দলীয় সরকারের অধীনে নাকি মধ্যবর্তী নিরপেক্ষ কোনো সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়, তা পরিষ্কার করছে না। চীন ও ভারত মোটামুটি সংবিধানের অধীনে অর্থাৎ বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনকে প্রচ্ছন্ন সমর্থন করছে। বিরোধিতা করছে শুধু যুক্তরাষ্ট্র। তাও সোজাসাপ্টা নয়। তাদের দেওয়া ভিসা নীতিতে এর আভাস নেই।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুদলের বিরোধিতা একেবারেই ক্ষমতাকেন্দ্রিক। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা ছাড়তে নারাজ। বিএনপি আর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। তৃতীয় কেউ এসে পড়লেও অমত করবে না তারা। কিন্তু রাষ্ট্র ও সরকারের কাঠামোগত পরিবর্তন চায় না কোনো দলই। বর্তমান কাঠামোতে ‘ফেরেশতা’ ক্ষমতাসীন হলেও এখন যা হচ্ছে-চলছে, এর ব্যতিক্রম হওয়ার অবস্থা নেই। ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতাসীন হওয়ার পর আওয়ামী লীগ ও জামায়াত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে যেসব ‘শব্দ ও বাক্য’ চয়ন করেছে, বিএনপিও আপ্তবাক্যের মতো এখন সেগুলোই চয়ন করে যাচ্ছে।
বাংলাদেশের মতো সাংবিধানিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর এত একচ্ছত্র ক্ষমতা দুনিয়ার সভ্য-অসভ্য কোনো দেশেই নেই। ব্রিটেন-যুক্তরাষ্ট্র-জাপান বা কঙ্গো-নাইজেরিয়া-উগান্ডায়ও নেই। বিএনপি এ নিয়ে কোনো কথা বলে না। এরশাদবিরোধী আন্দোলনে ১৯৯০-তে তিন দল এ নিয়ে যে ওয়াদা করেছিল, ক্ষমতায় গিয়ে দুই দলই তা খেলাপ করেছে। দেশের জাতীয় সংসদের ‘কার্যপ্রণালি বিধি’ ব্রিটিশ আমলের। রেজিম পরিবর্তন হলে তাতে কোনো পরিবর্তনের অঙ্গীকারও কারও নেই। সুশীল সমাজের মধ্যে এ নিয়ে সমানে বিশ্লেষণ চলছে। যে কারণে তারা এক পা এগিয়ে দু’পা পেছাচ্ছেন। এর জেরে বাংলাদেশে বিরাজমান সংকটের চূড়ান্ত মীমাংসার লক্ষণ এবারও নেই। পরিস্থিতিও প্রতিবেশীসহ বিদেশি কয়েকটি রাষ্ট্রের বাতলানো অ্যাডহক ব্যবস্থার দিকেই এগোচ্ছে। মোদি ফেরার পর যার কিছুটা নমুনার অপেক্ষায় অনেকে। বাইডেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে মোদির এটি প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর। আবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের বেইজিং সফরও বেশ হাইপ্রোফাইলের।
গত পাঁচ বছরে এই প্রথম চীন সফরে গেলেন যুক্তরাষ্ট্রের কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রী। যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্কের বরফ গলাতে তাইওয়ানসহ বিভিন্ন ইস্যুতে দুই বিশ্বপরাশক্তির মধ্যে চলমান উত্তেজনা প্রশমনের বিষয় রয়েছে এর নেপথ্যে। দুই দেশের মধ্যে তৈরি হওয়া দীর্ঘদিনের ভুল-বোঝাবুঝি দূর করে কার্যকর ‘যোগাযোগ চ্যানেল’ তৈরি করাই এই সফরের উদ্দেশ্য বলে জানিয়েছে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট। দুই দিনের সফরের প্রথম দিনে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিং গ্যাংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক হবে কি না তা নিয়ে ছিল অনিশ্চয়তা। এর আগে এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ব্লিঙ্কেনের চীনে যাওয়ার কথা থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে ‘স্পাই বেলুন’ ভূপাতিত করার বিষয়কে কেন্দ্র করে ওই সফর বাতিল হয়। সর্বশেষ শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তা হিসেবে ২০১৮ সালে বেইজিং সফর করেছেন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর প্রধান মাইক পম্পেও। অনিশ্চয়তা দূর করে শেষ পর্যন্ত চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের। তার সফরের দ্বিতীয় ও শেষ দিনে হয় বৈঠকটি। তা জানানো হয় বৈঠক শুরুর মাত্র এক ঘণ্টা আগে।
পরে সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বরাবরের মতোই এক চীনা নীতি অনুযায়ী তাইওয়ানের স্বাধীনতাকে, যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন না করলেও, তাইওয়ানের ভেতরে বেইজিংয়ের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে। সংবাদ সম্মেলনে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে স্বীকার করে দুই দেশের সম্পর্ককে স্থিতিশীল করার তাগিদ দেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি জানান, জিনজিয়াং, তিব্বত ও হংকংয়ে চীনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে কোনো ধরনের প্রাণঘাতী অস্ত্র সহায়তা না দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও চীন দিয়েছে বলে জানান অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। যুক্তরাষ্ট্র কখনোই চীনকে অর্থনৈতিকভাবে আটকে রাখতে চায় না বলেও আশ্বস্ত করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বাস্তবে কী হবে তা আরও পরের ব্যাপার। কিন্তু ভারত, চীন, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যে কূটনীতি হয়ে গেছে, এর নির্ঘাত ছায়া পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশে। বিষয়টি খোলাসা হতে পারে মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে দেশে ফেরার পর। যার মধ্য দিয়ে মোদিই হয়ে উঠতে পারেন বাংলাদেশের রাজনীতির অনুঘটক। একাত্তরে সোভিয়েত ইউনিয়নকে মোকাবিলা করতে কট্টর কমিউনিস্ট চীনকে হাত করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর চীন সফরের মাঝে সেই ধরনের একটি ইঙ্গিত পাচ্ছেন কূটনৈতিক বোদ্ধারা। কেবল সরকার নয়, নির্বাচন ও রাজনীতিতে বিএনপিসহ দেশের বেশির ভাগ দলই এখন বাঘের পিঠে বসে আছে। কে কীভাবে বাঘ বশে রাখবে বা এর পিঠ থেকে নামবে, সেই নিশানা নেই। বিশেষ করে, চীন-যুক্তরাষ্ট্রের ছন্দে ফেরা কূটনীতির রহস্য ভেদ ও বাংলাদেশসহ এ অঞ্চলের রাজনীতির অনেক কিছু নির্ভর করছে। এখনই সোজাসাপ্টা কিছু নির্ণয়ের অবস্থা নেই।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই পক্ষের মধ্যে সামগ্রিক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে খোলামেলা, গভীর ও গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। উভয় দেশ উচ্চ পর্যায়ের যোগাযোগ বজায় রাখতে সম্মত হয়েছে। ব্লিঙ্কেন কিনকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন এবং কিন পারস্পরিক সুবিধাজনক সময়ে সফর করার জন্য তার প্রস্তুতি ব্যক্ত করেছেন। কূটনীতির এ খেলার দিকে নজর বিশ্ববাসীর। ভূ-রাজনীতির অনিবার্যতায় যার সরাসরি শরিক বাংলাদেশও।