প্রবাস কমিউনিটির আনন্দ-বেদনার কাব্য

প্রকাশ : ১৫ জুন ২০২৩, ১৪:৫৭ , অনলাইন ভার্সন
মানবজীবন বড় অদ্ভুত, রহস্যময় এবং জটিলও। মানুষের জীবনের কেমিস্ট্রি বুঝতে পারা এবং ব্যাখ্যা করা কঠিন। মানুষের মনস্তত্ত্বও জানতে পারা সাধ্যের অতীত। কখন হাসে, কখন চোখের পানিতে বুক ভিজে যায়Ñমানুষ নিজেই জানে না। তাইতো বলা হয়, জীবনের এক পিঠে আনন্দ, আরেক পিঠে বিষাদ। সকালে রোদ, বিকেলে মেঘের মতো জীবনও। পরম প্রিয়জনকে হারিয়ে বেদনার সাগর থেকে উঠে আবার জীবনের দাবি মেটাতে স্বাভাবিক জীবনযাপন করে। যুদ্ধের ময়দানে সহযোদ্ধার মৃত্যু দেখেও শোক কাটিয়ে আনন্দের জীবনে ফিরে আসে। মৃত্যুর পাশেই জন্ম। তাইতো আমরা যে যেখানেই থাকি, আনন্দ-বেদনা, হাসি-কান্না নিয়েই থাকি।

প্রবাসেও আমরা আমাদের জীবনে হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা নিয়েই আছি। শীত বিদায় নিচ্ছে। আমরাও শীতের খোলস ছেড়ে বের হয়ে আসছি। শীতে যে জীবন জড় হয়ে চাদরমুড়ি দিয়ে ছিল, শীতের বিদায়ে সেই জীবন আবার কোলাহলে, আনন্দ উদ্্যাপনে মেতে উঠেছে। সুখে-দুঃখে মিষ্টিমুখে জীবন কাটছে জীবনের মতো। কমিউনিটি কয়েকজন প্রিয় মানুষকে হারিয়ে ম্রিয়মাণ। তাদের শোক যেমন সবাইকে স্পর্শ করে গেছে, আনন্দের আয়োজন কমিউনিটিকে উজ্জীবিত করে তুলেছে।

ঠিকানার ৭ জুনের সংখ্যা। সেই সংখ্যার শেষের পাতার সংবাদ শিরোনামের দিকে একটু চোখ বোলালেই উপলব্ধি করা যাবে নিউইয়র্কের প্রবাস কমিউনিটির আনন্দ-বেদনার কাব্য। ‘নিউইয়র্কে এক বছরে ৭৮ বাংলাদেশির মৃত্যু/ কারণ ওভারডোজ ও ড্রাগ আসক্তি’; ‘জেমসের গানে ভক্তদের উচ্ছ্বাস’; ‘মেলিন্ডা কাটজকে বাংলাদেশিদের সমর্থন’; ‘নিউইয়র্কে ২৫ জুন ঢালিউড অ্যাওয়ার্ড’; ‘উল্লাপাড়া সোসাইটির বার্ষিক মিলনমেলা’; ‘এক বাংলাদেশিকে গুলি করল আরেক বাংলাদেশি’; ‘জন উদ্দিন আর নেই’; ‘চলে গেলেন জহির মিয়া’। এর বাইরেও আছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টির প্রতিদিনের সভা-সমাবেশ-সংবর্ধনা, প্রতিবাদ সমাবেশ। আছে শানিবার, রোববার পিকনিকের হুল্লোড়-আনন্দ-উচ্ছ্বাস। আছে বিভিন্ন বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকাগুলোয় পথমেলার আয়োজন। নির্বাচন বাংলাদেশে। কিন্তু প্রবাসে, বিশেষ করে নিউইয়র্কে তার উত্তাপ-উত্তেজনা কম নয়। সংগঠন নিয়ে, নেতৃত্ব নিয়ে কলহ আছে, কোন্দল, হানাহানি, ভাঙাভাঙি, মামলা-মোকদ্দমা আছে।

হানাহানি-মনকষাকষির পাশাপাশিই আছে গলাগলি-কোলাকুলি। একজনের শোকে-সন্তাপে আছে সবার সমবেদনা, সহানুভূতি নিয়ে পাশে দাঁড়ানো। কারও বিপদ দেখলে সহমর্মীর অভাব হয় না। ভালোবাসা উজাড় করে তার বিপদ উদ্ধারে এগিয়ে যাবে। আজ যার সঙ্গে কথা নেই, কালই তার অসহায় মুহূর্তে সবার আগে সে হাত বাড়াবে। একজন অসহায় অপারগ মানুষের জানাজা, দেশে লাশ পাঠানোর জন্য দরদি মানুষের অভাব হয় না। বড় বড় দুঃখকে ছোট করে দেখে কষ্ট লাঘব করতে জানে যেমন প্রবাসের মানুষেরা, তেমনি ছোট ছোট সুখ, ছোট ছোট আনন্দও অনেক বড় করে উপভোগ করতে পারে। পুরোনো প্রবাদ-‘প্রয়োজনের বন্ধুই প্রকৃত বন্ধু’-সেই চেতনাই প্রত্যেক প্রবাসী তাদের মন ও মননে লালন করেন। তারই প্রকাশ ঘটে প্রবাসী মানুষের বিপদে, সংকটে। ঠিক দেশের ক্ষেত্রেও প্রবাসী মানুষদের মনে এই ভাবনাই পোষণ করা হয়। নানা অন্যায়, অবজ্ঞা, প্রবঞ্চনায় যতই ক্ষুব্ধ হোক প্রবাসীরা, প্রয়োজনে কখনোই দেশের প্রতি বিমুখ থাকে না।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দুটি পঙ্্ক্তি ঋণ করে এ সম্পাদকীয় উপসংহারে বলা যায়, ‘আছে দুঃখ, আছে মৃত্যু, বিরহ দহন লাগে/ তবুও শান্তি, তবু আনন্দ, তবু আনন্দ জাগে।’ সবার প্রার্থনা-ঝড় আসুক, বিপদ আসুক, প্রয়োজনে যেন প্রবাসীদের এই মনটা সজীব সতেজ থাকে, যেন আমরা ‘সকলের তরে সকলে আমরা/ প্রত্যেকে মোরা পরের তরে’Ñএই চেতনা নিয়ে চলতে পারি।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041