সন্তানদের ফিরে পেতে মার্কিন নাগরিকের মামলা ছয় মাসে নিষ্পত্তির নির্দেশ

প্রকাশ : ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, ১৩:৩০ , অনলাইন ভার্সন

দুই সন্তানের জিম্মা নিয়ে মার্কিন বাবা গ্যারিসন লুটেল ও বাংলাদেশি মা ফারহানা করিমের মামলা ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ঢাকার পারিবারিক আদালতকে এই আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে আমেরিকান বাবা গ্যারিসন লুটেল সপ্তাহে দুদিন তার দুই সন্তানকে দেখতে যেতে পারবেন বলে আদেশে বলা হয়েছে। বাবা-মায়ের সুবিধাজনক স্থানে দেখার স্থান নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে।

আজ সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

পরে মার্কিন নাগরিক গ্যারিসন লুটেল বলেন, ‘বাংলাদেশের আদালতে আইনি লড়াই করে আমি সন্তানদের ও আমার স্ত্রীসহ আমেরিকা নিয়ে যেতে চাই।’  আদালতে গ্যারিসনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ও ব্যারিস্টার সজীব মাহমুদ আলম। ফারহানা করিমের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।

গত বছরের ২৮ নভেম্বর মার্কিন বাবা গ্যারিসন লুটেল সপ্তাহে দুদিন সন্তানদের দেখতে পারবেন বলে আদেশ দেন হাইকোর্ট। ঢাকার উত্তরা ক্লাবে প্রতি শনি ও মঙ্গলবার শিশুদের মা ফারহানা করিম শিশুদের নিয়ে আসবেন। সেখানে বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত শিশুরা মায়ের তত্ত্বাবধানেই থাকবেন। সেখানে বাবা গ্যারিসন লুটেল সন্তানদের সঙ্গে সময় কাটাতে পারবেন।

আদালতে সন্তানের বাবা গ্যারিসনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজ। তাকে সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার সজীব মাহমুদ। ফারহানা করিমের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ব্যবসায়ী গ্যারিসন লুটেলের সঙ্গে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফারহানা করিমকে ২০১৮ সালে বিয়ে করেন। ঢাকার উত্তরাতে তাদের বাসা। ফারহানা স্থায়ীভাবে আমেরিকায় বসবাস করেন। তিন বছর আগে তাদের প্রথম একটি সন্তান হয়। যুক্তরাষ্ট্রে ফারহানা ও গ্যারিসনের নিজস্ব বাসা ছিল। এ বছরের শুরুর দিকে ফারহানা আবার অন্তঃসত্ত্বা হন। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় জুন মাসে ফারহানা করিম বাংলাদেশে চলে আসেন। অন্তঃসত্ত্বা থাকার সময় তার বোন-মায়ের সঙ্গে থাকা জরুরি এই অজুহাত দেখিয়ে বাংলাদেশে আসেন। আসার পর তিনি যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। সন্তানদের কথা চিন্তা করে গ্যারিসন ফারহানাকে নিয়মিত টাকা দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু পরে দেখলেন, অনেকদিন হয়ে গেছে যোগাযোগ করছে না। কোনো আপডেট দিচ্ছে না। গত আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে তিনি চেষ্টা করেছেন যোগাযোগ করতে, কিন্তু পারেননি। যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয়ে অক্টোবর মাসে তিনি বাংলাদেশে এসেছেন। বাংলাদেশে আসার পর গ্যারিসন যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু ফারহানা দেখা করতে চান না, বাচ্চাদেরও দেখাতে চান না। এক পর্যায়ে উত্তরা থানার পুলিশ ও গ্যারিসন যে হোটেলে থাকতেন তাদের সহযোগিতা নিয়ে ফারহানার বাসায় যান। বাসায় গিয়ে জানতে পারেন, ফারহানা করিম কানাডিয়ান একজন ব্যক্তির সঙ্গে বসবাস করছেন। তিনি কানাডিয়ান ওই ব্যক্তিকে বিয়ে করেছেন বলে দাবি করেন। এদিকে, এক মাস আগে আরেকটি ছেলে সন্তান জন্ম দিয়েছেন ফারহানা।

গ্যারিসনের আইনজীবী সজীব মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘ফারহানা তার স্বামী গ্যারিসনকে হাসপাতালের কাগজ দেখিয়ে বলেছেন দ্বিতীয় সন্তান গ্যারিসনের না। এ সন্তান তার পার্টনার কানাডিয়ান নাগরিকের। তিনি একটা ম্যারেজ ডকুমেন্ট দেখিয়ে বলেছেন, কানাডিয়ান নাগরিককে বিয়ে করেছেন। কিন্তু আমেরিকান নাগরিক গ্যারিসনের সঙ্গে তার এখনও ডিভোর্স হয়নি। গ্যারিসনের বাংলাদেশে আসার অন্যতম কারণ–পুরান ঢাকার একজন কাজী যুক্তরাষ্ট্রে একটি কাগজ পাঠায়। সেটি তালাকের নোটিশ। মুসলিম পারিবারিক আইনে একটি তালাকের নোটিশ পাঠান। নোটিশ দেখে গ্যারিসনের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। আমরা আদালতে বলেছি, নোটিশটা ইনভ্যালিড। কারণ তাদের বিয়ে হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট অব মিজোরির আইন অনুযায়ী। ডিভোর্স হলে স্টেট আইনে হতে হবে।’

আইনজীবী সজীব মাহমুদ আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে আসার পর গ্যারিসন উত্তর সিটি করপোরেশনে যান। সিটি করপোরেশন থেকে কাগজপত্র দেখে তারা বলেন, আসলে এটা তো এভাবে হয় না। আমরা তারপর কাজীর কাছে গিয়েছি। তিনি খুব বেশি সহযোগিতা করেননি। তিনি আমাদের থেকে একটি দরখাস্ত রেখেছেন। বিয়ে হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী। অথচ তিনি নোটিশ পাঠিয়েছিলেন মুসলিম পারিবারিক আইনে, এটা তিনি আইনত পারেন না। আর নোটিশ যখন ইস্যু করা হয়েছে তখন ফারহানা অন্তঃসত্ত্বা।’ তিনি বলেন, ‘অন্তঃসত্ত্বা থাকা অবস্থায় তো নোটিশ পাঠানোর কোনো সুযোগ নেই। নোটিশের বিষয়ে তিনি দেওয়ানি মামলা করেছেন। আর সন্তানদের হাজির করার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে হেবিয়ার্স কপার্স রিট করা হয়েছে।’

ঠিকানা/এসআর

M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078