
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, বাংলাদেশের রাজনীতে আঁধারের ছায়া ততই দৃশ্যমান হচ্ছে। মৌলিক রাজনৈতিক দলের বাইরে অনেকেই হস্তক্ষেপ করতে চাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশে নানা সময়ে আলোচিত-সমালোচিত দল জামায়াতে ইসলামী সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে, বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলের সঙ্গেই সখ্য বাড়াতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে। একটি ভিন্ন চাওয়া নিয়ে কাজ করছে জামায়াত। দলটির নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর থেকে বিএনপির সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে চলছে জামায়াত। দল ছাড়াছাড়ি নিয়ে গণমাধ্যমে অনেক কথা এসেছে। তবে প্রকাশ্যে দলীয় ঘোষণা দেয়নি কেউ। এমন টানাটানির মধ্যে বিএনপির পক্ষ থেকে ১০ ডিসেম্বর যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা আসে। তাদের সঙ্গে একই ছকে জামায়াতও সেদিন সংবাদ সম্মেলন করে সারা দেশে কর্মসূচি দেয়। ৩০ ডিসেম্বর মালিবাগ মোড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে দলটির। আটকও হন কয়েকজন নেতাকর্মী। এ নিয়ে বিএনপি কোনো প্রতিক্রিয়া না দেওয়ায় আবারও দূরে সরে যায় দলটি। এখন নির্বাচনকে সামনে রেখে আবারও জামায়াত-বিএনপির সংসার জোড়া লাগছে। জামায়াত বলছে, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য, সংঘাত-সহিংসতামুক্ত নির্বাচনের জন্য তারা এটি চাচ্ছে। এ জন্য বিএনপির কর্মসূচির সঙ্গে তাল মিলিয়ে তারাও আগামী ১০ জুন নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে। ওই দিন যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের বিভাগীয় তারুণ্য সমাবেশ রয়েছে।
একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর জামায়াতে ইসলামী সরকারের সঙ্গে বসে ডোন্ট ডিস্টার্ব নীতি গ্রহণ করে বলে রাজনীতির মাঠে কথা রয়েছে। তবে সেটি তিন বছরের বেশি যায়নি। দলের আমির ডা. শফিকুর রহমান, নায়েবে আমির মাওলানা আ ন ম শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খানকে গ্রেপ্তারের পর সেই নীতিও ভঙ্গ হয়। যদিও দলটির একাংশের দাবি, সরকার বিএনপির বিকল্প তৈরিতে জামায়াতকে ভোটে নিতে নেতাদের আটক করেছে। তবে জামায়াতের হাইকমান্ড এই কথাকে উড়িয়ে দেয়।
এর পরও আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চায় জামায়াতে ইসলামী। সেই দরজা বন্ধ হয়ে গেলে চূড়ান্ত আন্দোলনে যাবে দলটি। জামায়াতের নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো বলছে, সম্প্রতি মার্কিন ভিসা নীতিতে আওয়ামী লীগ যেমন সন্তুষ্ট নয়, তেমনি জামায়াতে ইসলামীও খুশি নয়। তারা বলছে, আমরা দলীয়ভাবে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মতো এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো ওয়েলকাম জানাইনি। জামায়াত মনে করছে, অভ্যন্তরীণ রাজনীতিকে সোজা করতে কারও হস্তক্ষেপ অবশ্যই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য নয়। নিজস্ব পলিসি নিজেরাই বসে ঠিক করা উত্তম। এ জন্য জামায়াতে ইসলামী দেশের স্বার্থে নাগরিক অধিকার নিশ্চিতে প্রয়োজনে আওয়ামী লীগের সঙ্গেও আলোচনায় বসতে রাজি। আন্দোলনের মাধ্যমে সংঘাত তৈরি হোক, এটি জামায়াতে ইসলামী চায় না। দেশের এ পরিস্থিতিতে আন্দোলন অবশ্যই সরকারের জন্য ভালো কিছু নিয়ে আসবে না। আর সরকার যদি আলোচনার পথে না হাঁটে, তাহলে নির্দিষ্ট ছকেই ঢাকাসহ সারা দেশে নেতাকর্মীদের মুক্তি, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ও কেয়ারটেকার সরকারের জন্য আন্দোলন অব্যাহত রাখবে রাজনীতিতে আলোচিত এই দলটি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জামায়াতের শীর্ষ দুই নির্বাহী সদস্য জানান, আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি পক্ষ দেশে সংঘাত চাচ্ছে। এতে করে তৃতীয় পক্ষ রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করতে চাইবে। জামায়াত সেগুলো বুঝেই সতর্কতার সঙ্গে পা বাড়াবে। এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামী চায় না দেশের নেতৃত্ব রাজনৈতিক ব্যক্তির বাইরে অন্য কারও কাছে যাক। জামায়াত অতীতেও চেয়েছে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন। এবারও সেটিই চাচ্ছে। এ জন্য তারা সরকারের সঙ্গেও আলোচনায় বসতে চায়। আন্দোলনে খারাপ পরিস্থিতি কোনো রাজনৈতিক দলের জন্যই শুভ নয়। এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামী সুশীলদের মাধ্যমে কিছু সময় অন্তর্বর্তী সরকারের যে আওয়াজ শোনা যাচ্ছে, সেটিও চায় না। এতে করে দেশের রাজনীতির ইতিহাস বিকৃত হতে পারে বলেও মনে করছেন তারা। এ জন্য চূড়ান্ত আন্দোলনে যাওয়ার আগে সরকারকে যেমন আলোচনার জন্য চেষ্টা করবে, একইভাবে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য বিএনপির সঙ্গেও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করে যাবে দলটি। জামায়াত চায় না দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে কেউ হস্তক্ষেপ করুক। দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নিজেরা বসেই সমাধান করুক। রাজনীতির বাইরে কেউ নিয়ন্ত্রণে না আসুক- এমনই ভাষ্য দলটিতে।
দলটির আরও কয়েকটি সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন বিএনপি থেকে জামায়াত দূরত্ব বজায় রেখে চলছে। কোনো কার্যকর আন্দোলন এখনো পর্যন্ত করতে পারেনি। তাই এবার দুটি ফসল ঘরে তুলতে চায় জামায়াত। প্রথমত, আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের বিদায় ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিশ্চিত করা। দ্বিতীয়ত, কর্মসূচি দিয়ে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত মাঠে থাকা। নিজেদের প্রার্থীদেরকে জনগণের কাছে পরিচিত করা। গেল ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে সারা দেশে ঈদ শুভেচ্ছার পোস্টার করে দলটি। রুকন বৈঠকের মাধ্যমে ৬৪ জেলায় প্রার্থীও চূড়ান্ত করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চালানো হচ্ছে প্রচারণা। সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থীদের নিজ নিজ আসনে কৌশলে গণসংযোগ ও প্রচারণা চালাতে কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জামায়াত মনে করছে, আওয়ামী লীগ ভিসা নীতির পর চাপে রয়েছে আর বিএনপি কার্যত কর্মসূচির পথে না হেঁটে কূটনৈতিক দরবারে ঘুরে বেলা শেষে অতীতের মতো যেকোনো সময় ব্যর্থ হতে পারে। তাই রাজনৈতিক কর্মসূচি অব্যাহত রেখে ভোটের মাঠ গোছানোর কাজেই ব্যস্ত থাকতে চায় দলটি।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, দেশের স্বার্থে আমরা এখনো আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি। একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা খুবই জরুরি। তাই আমি সরকারকে এখনো আলোচনায় বসতে আহ্বান জানাব গণমাধ্যমের মাধ্যমে। আর যদি সেটি না হয়, তাহলে সরকারকে নামাতে আন্দোলনে যেতে আমরা বাধ্য হব। আমরা মনে করি, সরকার নামতে বাধ্য হবে। সব সময় একরকম যায় না। পরিস্থিতি এখন আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।
একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর জামায়াতে ইসলামী সরকারের সঙ্গে বসে ডোন্ট ডিস্টার্ব নীতি গ্রহণ করে বলে রাজনীতির মাঠে কথা রয়েছে। তবে সেটি তিন বছরের বেশি যায়নি। দলের আমির ডা. শফিকুর রহমান, নায়েবে আমির মাওলানা আ ন ম শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খানকে গ্রেপ্তারের পর সেই নীতিও ভঙ্গ হয়। যদিও দলটির একাংশের দাবি, সরকার বিএনপির বিকল্প তৈরিতে জামায়াতকে ভোটে নিতে নেতাদের আটক করেছে। তবে জামায়াতের হাইকমান্ড এই কথাকে উড়িয়ে দেয়।
এর পরও আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চায় জামায়াতে ইসলামী। সেই দরজা বন্ধ হয়ে গেলে চূড়ান্ত আন্দোলনে যাবে দলটি। জামায়াতের নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো বলছে, সম্প্রতি মার্কিন ভিসা নীতিতে আওয়ামী লীগ যেমন সন্তুষ্ট নয়, তেমনি জামায়াতে ইসলামীও খুশি নয়। তারা বলছে, আমরা দলীয়ভাবে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মতো এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো ওয়েলকাম জানাইনি। জামায়াত মনে করছে, অভ্যন্তরীণ রাজনীতিকে সোজা করতে কারও হস্তক্ষেপ অবশ্যই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য নয়। নিজস্ব পলিসি নিজেরাই বসে ঠিক করা উত্তম। এ জন্য জামায়াতে ইসলামী দেশের স্বার্থে নাগরিক অধিকার নিশ্চিতে প্রয়োজনে আওয়ামী লীগের সঙ্গেও আলোচনায় বসতে রাজি। আন্দোলনের মাধ্যমে সংঘাত তৈরি হোক, এটি জামায়াতে ইসলামী চায় না। দেশের এ পরিস্থিতিতে আন্দোলন অবশ্যই সরকারের জন্য ভালো কিছু নিয়ে আসবে না। আর সরকার যদি আলোচনার পথে না হাঁটে, তাহলে নির্দিষ্ট ছকেই ঢাকাসহ সারা দেশে নেতাকর্মীদের মুক্তি, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ও কেয়ারটেকার সরকারের জন্য আন্দোলন অব্যাহত রাখবে রাজনীতিতে আলোচিত এই দলটি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জামায়াতের শীর্ষ দুই নির্বাহী সদস্য জানান, আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি পক্ষ দেশে সংঘাত চাচ্ছে। এতে করে তৃতীয় পক্ষ রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করতে চাইবে। জামায়াত সেগুলো বুঝেই সতর্কতার সঙ্গে পা বাড়াবে। এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামী চায় না দেশের নেতৃত্ব রাজনৈতিক ব্যক্তির বাইরে অন্য কারও কাছে যাক। জামায়াত অতীতেও চেয়েছে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন। এবারও সেটিই চাচ্ছে। এ জন্য তারা সরকারের সঙ্গেও আলোচনায় বসতে চায়। আন্দোলনে খারাপ পরিস্থিতি কোনো রাজনৈতিক দলের জন্যই শুভ নয়। এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামী সুশীলদের মাধ্যমে কিছু সময় অন্তর্বর্তী সরকারের যে আওয়াজ শোনা যাচ্ছে, সেটিও চায় না। এতে করে দেশের রাজনীতির ইতিহাস বিকৃত হতে পারে বলেও মনে করছেন তারা। এ জন্য চূড়ান্ত আন্দোলনে যাওয়ার আগে সরকারকে যেমন আলোচনার জন্য চেষ্টা করবে, একইভাবে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য বিএনপির সঙ্গেও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করে যাবে দলটি। জামায়াত চায় না দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে কেউ হস্তক্ষেপ করুক। দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নিজেরা বসেই সমাধান করুক। রাজনীতির বাইরে কেউ নিয়ন্ত্রণে না আসুক- এমনই ভাষ্য দলটিতে।
দলটির আরও কয়েকটি সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন বিএনপি থেকে জামায়াত দূরত্ব বজায় রেখে চলছে। কোনো কার্যকর আন্দোলন এখনো পর্যন্ত করতে পারেনি। তাই এবার দুটি ফসল ঘরে তুলতে চায় জামায়াত। প্রথমত, আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের বিদায় ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিশ্চিত করা। দ্বিতীয়ত, কর্মসূচি দিয়ে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত মাঠে থাকা। নিজেদের প্রার্থীদেরকে জনগণের কাছে পরিচিত করা। গেল ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে সারা দেশে ঈদ শুভেচ্ছার পোস্টার করে দলটি। রুকন বৈঠকের মাধ্যমে ৬৪ জেলায় প্রার্থীও চূড়ান্ত করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চালানো হচ্ছে প্রচারণা। সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থীদের নিজ নিজ আসনে কৌশলে গণসংযোগ ও প্রচারণা চালাতে কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জামায়াত মনে করছে, আওয়ামী লীগ ভিসা নীতির পর চাপে রয়েছে আর বিএনপি কার্যত কর্মসূচির পথে না হেঁটে কূটনৈতিক দরবারে ঘুরে বেলা শেষে অতীতের মতো যেকোনো সময় ব্যর্থ হতে পারে। তাই রাজনৈতিক কর্মসূচি অব্যাহত রেখে ভোটের মাঠ গোছানোর কাজেই ব্যস্ত থাকতে চায় দলটি।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, দেশের স্বার্থে আমরা এখনো আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি। একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা খুবই জরুরি। তাই আমি সরকারকে এখনো আলোচনায় বসতে আহ্বান জানাব গণমাধ্যমের মাধ্যমে। আর যদি সেটি না হয়, তাহলে সরকারকে নামাতে আন্দোলনে যেতে আমরা বাধ্য হব। আমরা মনে করি, সরকার নামতে বাধ্য হবে। সব সময় একরকম যায় না। পরিস্থিতি এখন আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।