এ বছরের শুরুতে অ্যাপল ভিশন প্রো হেডসেট বাজারে আনার ঘোষণা দেওয়ার পর মিক্সড রিয়ালিটি হেডসেট বিক্রির প্রতিযোগিতায় মুখোমুখি হয়েছে কোম্পানি দুটি। প্রথমবারের মতো গ্যাজেট আনার প্রতিযোগিতায় মুখোমুখি হতে যাচ্ছে মেটা ও অ্যাপল। মেটার এক কর্মীর দাবি, এই চাপ এরইমধ্যে কোম্পানির কর্মীদের ওপর ছড়িয়ে পড়েছে।
“আমরা অ্যাপলের দক্ষতাকে ভয় পাচ্ছি।” --মার্কিন বাণিজ্য প্রকাশনা ব্লুমবার্গের প্রতিবেদক ও প্রযুক্তি ব্লগার মার্ক গারম্যানকে বলেন মেটার এক কর্মী।
এ বছরের শুরুতে অ্যাপল ভিশন প্রো হেডসেট বাজারে আনার ঘোষণা দেওয়ার পর মিক্সড রিয়ালিটি হেডসেট বিক্রির প্রতিযোগিতায় মুখোমুখি হতে যাচ্ছে কোম্পানি দুটি। তবে, ২০১৭ সালে নিজেদের প্রথম হেডসেট উন্মোচন করে এই খাতে ভালো শুরু করেছে মেটা। গারম্যানের মতে, এ খাতে মার্ক জাকারবার্গের যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠতে পারে অ্যাপল।
নতুন কোনো পণ্যের বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে সময় নেওয়ার জন্য সুপরিচিত অ্যাপল। এ ছাড়া, আগের সংস্করণের চেয়ে ভালমানের পণ্য আনার ক্ষেত্রেও সময় নেয় মার্কিন এই টেক জায়ান্ট।
এর সবচেয়ে ভাল উদাহরণ হল আইফোন। এর প্রথম স্মার্টফোন প্রযুক্তি শিল্পে বিপ্লব ঘটানোর ১৫ বছর পর এখনও মার্কিন বাজারে আধিপত্য বিস্তার করছে অ্যাপল, যেখানে দেশটিতে বিক্রি হওয়া সকল স্মার্টফোনের অর্ধেকেরও বেশি হচ্ছে আইফোন। গত মাসে নিউ ইয়র্ক টাইমসকে এমনই বলেছে গবেষণা কোম্পানি ‘কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চ’।
গারম্যান বলেন, নিজস্ব পণ্য নিয়ে অ্যাপল কর্মীদের ‘আত্মবিশ্বাস’ থাকলেও মেটার কর্মীদের বেলায় বিষয়টি ভিন্ন। তিনি আরও যোগ করেন, অ্যাপলের পারফর্মেন্সের ওপর ভিত্তি করে নিজস্ব পণ্যের প্রচারণায় কিছু বদল আনতে পারে মেটা।
কোয়েস্ট হেডসেটের প্রচারণায় মেটা প্রথাগত গেইমিংয়ের চেয়ে ডিভাইসের উৎপাদনশীলতা, যোগাযোগ ও বিনোদনের মতো বিষয়গুলোতে বেশি মনযোগ দিয়েছে। তবে, অ্যাপল এর পুরো বিপরীত।
সংবাদ সাইট ইনসাইডারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অ্যাপলের পণ্য বেশিরভাগ সময়ই খারিজ করেছেন জাকারবার্গ। জুনে অ্যাপল সিইও টিম কুক ভিশন প্রো হেডসেট উন্মোচনের পরপরই কোম্পানির এক মিটিংয়ে হেডসেটটি নিয়ে সমালোচনা করেছিলেন মেটা সিইও। ভার্জের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জাকারবার্গ ওই বৈঠকে বলেন, অ্যাপলের হেডসেট অনেক আলাদা ও তার এটি ব্যবহারের কোনো ইচ্ছা নেই।
গত মাসে এক সাক্ষাৎকারে জাকারবার্গ বলেন, জুনে অ্যাপল এই যুগান্তকারী হেডসেট উন্মোচনের পর প্রাথমিকভাবে ভয় পেয়েছিলেন তিনি। এর কারণ ছিল, মেটাকে আবার ‘প্রথম থেকে শুরু’ করতে হবে। পরবর্তীতে তিনি বুঝতে পারেন যে বিষয়টি এমন নয়।
জাকারবার্গের মতে, ভিশন প্রো’র দাম প্রায় সাড়ে তিন হাজার ডলার রেখে অ্যাপল ভিন্ন এক বাজারকে লক্ষ্য করেছে। অন্যদিকে, তুলনামূলক কম দামী হেডসেট নিয়ে কাজ করছে মেটা, যেখানে কোম্পানির ‘এন্ট্রি-লেভেল’ হেডসেট কোয়েস্ট ২’র দাম প্রায় তিনশ ডলার। আর আসন্ন কোয়েস্ট ৩ হেডসেটের দাম পড়বে প্রায় পাঁচশ ডলার। এ ছাড়া, মেটার তৈরি করা সবচেয়ে দামী হেডসেট কোয়েস্ট ৩’র দামও এক হাজার ডলারের আশপাশে।
অ্যাপলের সঙ্গে প্রতিযোগিতার বিষয়টি জাকারবার্গ অতীতে স্বীকার করলেও গত বছর তিনি কোম্পানির কর্মীদের বলেন, অ্যাপলের সঙ্গে ‘গভীর দর্শনের প্রতিযোগিতায়’ নেমেছে মেটা ও মেটাভার্স।
এই প্রসঙ্গে ইনসাইডারকে তাৎক্ষণিক মন্তব্য করেননি মেটা ও অ্যাপলের মুখপাত্ররা। অ্যাপলের ভিশন প্রো আসতে পারে ‘আগামী বছরের শুরুতে’। অন্যদিকে, মঙ্গলবারেই কোয়েস্ট ৩ উন্মোচন করছে মেটা।
ঠিকানা/এসআর