নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সে এ খাবার সংগ্রহ করেছেন বাংলাদেশি-আমেরিকানসহ বিভিন্ন কমিউনিটির মানুষ।
সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে গত পাঁচ বছর ধরে সংগঠনটি সমাজের পিছিয়ে পড়া সাধারণ মানুষের মধ্যে খাবার বিতরণসহ বিভিন্ন সহায়তা করে আসছে।
এটি আগামী দিনে তাদের সেবার পরিসর বাড়াতেও কাজ করছে।

সাধারণ মানুষকে চাল, ডাল থেকে তেল, লবণ পর্যন্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন খাবার উপকরণ দেয় ভালো। এর ফলে আসন্ন ঈদুল আজহায় তাদের খাবারের কষ্ট অনেকখানি লাঘব হবে।
খাবার সংগ্রহকারীরা ভালোকে ধন্যবাদ জানান।
খাদ্য সহায়তা কর্মসূচিতে আসা এক বাংলাদেশি-আমেরিকান বলেন, ‘আমার জীবনে আমি আমেরিকায় বাঙালি কোম্পানি ডিএইচকেআর এ রকম দেখিনি। গত প্যানডেমিকের থেকে শুরু করছে। তারা সবসময় সবাইকে সাহায্য করে।’
আরেক বাংলাদেশি বলেন, ‘বহুত ভালো হইছে। এগুলা কোনো জাগাত পাওয়া যায় না। আমরার লাগি বহুত ভালো অইছে।’
সমাজের পিছিয়ে পড়া সাধারণ মানুষ দীর্ঘসময় লাইনে অপেক্ষা করে টিকিট নিয়ে এই খাবার সংগ্রহ করেন।
সহায়তা নিতে আসা এক নারী বলেন, ‘কালকে রাত্রে সিরিয়াল দে গেছি। রাতে কষ্ট করছি। সকালতে সারাদিন এই যে কষ্ট করছি। ‘মাগরিবের নামাজ পইড়ি দিয়া গেছি ট্রলি। তারপরে সকালে আইছি। আইসি দেখিটেকি যাই নাস্তা কইরে আবার আইসে আজ এই যে সাড়ে দশটাত্তেন আইসে বইসি আছি।’
ব্যক্তিগত উদ্যেগে ‘ভালো’র শুরুটা হয়েছিল কোভিড মহামারির সময় থেকে। সমাজের সাধারণ মানুষকে সহায়তার নৈতিক তাগিদ থেকেই এ সেবা চালিয়ে আসছেন তারা। তাদের এই সেবার পরিসর বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
এ বিষয়ে ভালোর সিনিয়র ভলান্টিয়ার মো. জাশেম বলেন, ‘নিউইয়র্ক সিটিতে এত বাঙালি যে, আমাদের সাহায্য বা সহযোগিতা লাগে। তাদের জন্যই এসব করা। এটা আমাদের মন থেকেই করা, যাতে আমাদের কমিউনিটিটা আপলিফট হয় এবং যাতে তাদের পাশে আমরা দাঁড়িয়ে থাকতে পারি।’
ভালোর উদ্যোগের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছে দেশের তরুণ প্রজন্ম। এর মাধ্যমে তারাও আগামী দিনে সমাজের পিছিযে পড়া মানুষের উপকারে এগিয়ে আসার দীক্ষা নিচ্ছেন।
স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করা এক তরুণী বলেন, ‘সত্যিকার অর্থে আমি সাধারণত কমিউনিটিকে সহায়তা করতে পছন্দ করি। এটি খুবই হৃদয়ছোঁয়া ও সহানুভূতির মুহূর্ত।’
এক কিশোর বলে, ‘আমি এখানে এসেছি এ কারণে যে, এটি অভিজ্ঞতার এক ধরনের পূর্ণতা।’
নিউইয়র্কে প্রতিনিয়ত নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ছে। আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সঙ্গতি না থাকায় বেসরকারি উদ্যেগে দেয়া খাবার সংগ্রহ করতে দেখা যায় সাধারণ মানুষকে।
ভালোর এ উদ্যোগে সম্পৃক্ত হন নিউইয়র্ক সিটির পাবলিক অ্যাডভোকেট জুমানে উইলিয়ামসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
এ বিষয়ে ডিস্ট্রিক্ট টুয়েন্টি থ্রির কাউন্সিল মেম্বার লিন্ডা লি বলেন, ‘তাদের এটা (খাদ্য সহায়তা) দরকার।’
তিনি আরো বলেন, নিউইয়র্ক সিটির অনেক বাসিন্দা এখানে জীবনযাপনের খরচ মেটাতে পারছেন না। সবকিছু অনেক দামী হওয়ার কারণে তারা কষ্টে আছেন। ভালোর কর্মসূচিতে আসা লোকজন তাদের সর্বোচ্চটা দিয়ে সহায়তার চেষ্টা করছেন।
জুমানে উইলিয়ামস জানান, ঈদ উপলক্ষে ভালোর খাদ্য বিতরণে সহায়তা করতে এসে তিনি খুবই উচ্ছ্বসিত।
তিনি বলেন, কমিউনিটিকে সাহায্য করতে যতটুকু সম্ভব করা উচিত।